নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার বলা হল না, আর ফেরা হল না

রহমান,তানভীর

বই পড়তে ভালবাসি । কবিতার বই হলে কথাই নেই । হেলাল হাফিজের অন্ধ ভক্ত ।

রহমান,তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের বান্দরবন ঘুরে আসা : পর্ব ১ (ইটস নেভার দ্য প্লেস, ইটস আস)

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৭





স্কুল বা কলেজে থাকতেও কিন্তু আমরা বাসায় বসে থাকা দলের কেউ নই ৷ অন্তত আমরা নিজের বাসাতে থাকতাম না ৷ বিশেষ উৎসবে একে অপরের বাসায় গিয়ে হুল্লোড়ে মেতে খাওয়া বা টার্ম ফাইনালের পর সিনেমা দেখতে যাওয়াটা একটু প্রসারতা পাবে এটা নতুন তো নয় ৷ এর আগেও সিলেট, রাজশাহী-চাঁপাই বা বিরিশিরি (শেষটায় আমার যাওয়া হয় নি) যাওয়া হয়েছে আমাদের ৷ সেদিক দিয়েও এবার নতুন কিছু হয়েছে বলে মনে নাও হতে পারে ৷ নতুন সেরকম নয়ও ৷ তবু যাদের সাথে একসাথে না বসার কারণ একটা সময় শুধু শিক্ষকদের শাস্তি ছিল, তাদের সাথে এখন প্রতি তিন মাসে একবার দেখা করাও কঠিন ৷ এবারের ট্যুরেও সবাই আমরা যাই নি, যেতে পারেনি, সেটা সম্ভব নয়ও ৷ তাই এভাবে একসাথে বান্দরবনের যাওয়াটা সব সময় নতুন, রোমাঞ্চের অভাব হবার আশঙ্কাও নেই ৷ এবার হয়েছেও তাই, সবটা খুব চেনা জানা নয় ৷ মজাটা সেখানেই ৷ এটা ধারাবাহিক একটা দিনলিপি হতে যাচ্ছে ৷ কেউ ভ্রমণ নির্দেশিকা ভেবে ভুল করবেন না আশা করি ৷ আমি এখানে আমাদের ভ্রমণের কথা বলব, ভ্রামণিক অভিজ্ঞতা বলব, ভ্রমণ সওদা করতে নয় ৷



"দোস্ত একটা প্ল্যান কর, ছুটি আসে সবারই ৷ আমি আছি ৷ চল ঢাকার বাইরে কোথাও যাই ৷" লোকমান এইকথাগুলো যখন বলছিল তখন আমি জানতাম কোথায় যাওয়াটা ঠিক হবে ৷ মানে আমি তো আর আগে ঘুরিনি ! মাসখানেক আগে মুহি যখন ঘুরে আসল ওর স্কুল বন্ধুদের সাথে বান্দরবন থেকে তখন আমি একটা ধারণা পেলাম আরকি ৷ তখনই ঠিক হল পার্বত্য চট্টগ্রামে গেলে এবার বান্দরবন, রাঙ্গামাটি নয় ৷ তো মেহরাবের পরীক্ষা শেষ হতে সপ্তাহখানেক বাকি, নূর তো বরিশালে - এমন অবস্থায় লোকমানের সাথে ওয়াটসঅ্যাপে বসে প্ল্যান মোটামুটি হল ৷ মেহরাব, নূর বা লোকমান যাকেই ধরেন ফোনে পাওয়া আর সহজ নাই! মানে এখন শুধু ছেলেদের সাথেই কথা বলার মত ছোট হয়ে তো আর নেই কেউই ! যা হোক একটা প্ল্যান দাঁড় করানো গেল ৷ খরচের এস্টিমেশন দাঁড় করিয়ে সবাইকে জানানোও হল ৷ বাকি থাকল টিকিটের বন্দোবস্ত করা ৷ যাওয়ার একদিন আগে আরামবাগে একসাথে মিলিত হবার একটা সিদ্ধান্তও হল ৷ তখনো উত্তেজনা এতটুকু কমে নি, ভাবছি আমরা সবাই-ই যে আমাদের প্ল্যান অনুযায়ী সব হবে ৷ ভ্রান্তের লিস্টি এরপর শুধু বড়ই হয়েছে ৷



সেদিন বিকেলে যথারীতি বিখ্যাত মেরুর কোনখানে সবান্ধব প্রোগ্রাম ছিল, স্কুলের পোকেমন ভক্ত আজ তার ভক্তির জায়গাটায় নারীদের নিয়ে এসেছে দেখলে ওর পুরনো বন্ধুদের যে কেউই ভিরমি খাবে ৷ লোকও ঠিক সময়ে আসতে পারল না, ওর ঢাল অবশ্য অভেদ্য - জ্যাম ! সবাই একসাথে হয়ে গেলাম (নূরু তখনো বরিশালে) শ্যামলী বাস কাউন্টারে ৷ খরচ কমানোর অংশ হিসেবে নন-এসি আমাদের প্রেফারেন্সে ছিল ৷ তবে শ্যামলীর নির্দেশনা যে দিয়েছে সে ঠিক বলে নি ৷আর ফরিকাপুলে না গিয়ে ভুলই হয়েছিল ৷ কারণ শ্যামলীতে টিকিট কেটে ভুলই করেছিলাম ৷ যাত্রার প্রথম দিনের প্ল্যান বদলাতে হয় এদের কারণে ৷ চট্টলার কোন এক অজগ্রামে গাড়িটার চাকা নষ্ট হয়ে গেল ৷ দু দুটো ঘণ্টা নষ্ট হল ওখানেই ৷ আগের দিন সারা দিন গাড়িতে থাকা নূরের আর হোটেলে গিয়ে বিশ্রামর সময় রইল না ৷ বেচারার শরীর আর কত নিবে ৷ সকালে বরিশাল থেকে ঢাকা আর রাতে ঢাকা থেকে বান্দরবন !



যাত্রার উত্তেজনায় বাসা থেকে না খেয়েই আমি বেরিয়ে পড়ি ৷ রাত ১০ টা ৪৫ এ টিকেট, আমি সাড়ে সাতটাতেই বেরিয়ে যাই ৷ কারণটা অনুমিতই ৷ তারপর সবাই আসলে হিরাঝিলে গিয়ে আমি আর নূর খিচুড়ি খেলাম ৷ পরে চা নিব বলে তিনটে চার অর্ডার দেয়া হল ৷ খিচুড়ি বেশ মজা করেই খেলাম, তবে চা টা আর ভাগ্যে হল না ৷ হিরাঝিলে গিয়েইছিলাম চা খাব বলে আর আমার ভাগ্যেই হল না ! বাসের টিকেট ছিল শেষ লাইনের আগের চারটায় ৷ গাড়ি শ্যামলী - ধকলটা আরও বেড়েছিল যখন দেখি মাথায় কী যেন পড়ছে ধুলা মতন ৷ তারউপর গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে থাকার কাহিনি তো বললামই একবার ৷ মোটের উপর ঢাকা থেকে বান্দরবন যেতে গিয়ে পাওয়া অভিজ্ঞতা সুখের ছিলনা ৷ তারপরও উত্তেজনার আতিশাজ্য সবকিছুকেই হার মানাচ্ছিল তখনো পর্যন্ত ৷ তাছাড়া মেহরাবের হা-করা ঘুমের মুখ বা নূরের মাতলামো মতন চেহারাটা কম বিনোদনের নয় ৷ আর ক্ষণে ক্ষণে লোকমানের বাড়িতে, অ-বাড়িতে(:প) আপডেট দেয়ার একটা প্যাটার্ন বের করতে চাচ্ছিলাম আমি ৷ শেষতক, হোটেলে পৌঁছুনো গেল নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর ৷ আর হোটেলে গিয়ে দেখছি আমাদের বুক দেয়া রুম তখনো খালি হয়নি ৷ ইন্টারিম একটা রুমে ফ্রেশ হতে বলল ৷ ওতে অবশ্য সুবিধে খুব বেশি হল না ৷ একজনের শাওয়ার নেয়ার মাত্রই নিজেদের রুমে যেতে বলা হল ৷ গেলাম ব্যাগ পত্র ওভাবে নিয়েই ৷ বেশ বড় রুম, দুটো ডাবল বেড; প্রতিদিন ১৪৫০ টাকা ৷ একটু বেশিই, তবে থাকার জায়গা হিসেবে মন্দ নয় ৷ এত কথা বলতে গিয়ে হোটেলের নামটাই বলা হয় নি, হোটেল প্লাজা বান্দরবন ৷ খুব সুইটেবল একটা জায়গায়, বাস স্টেশন বলুন আর শহর বলুন- সব জায়গা থেকেই পা হাঁটা দূরত্বে ৷ রেস্ট নিতে পারা গেল ঐ সবার গোসল করা পর্যন্তই ৷ মেরু আর নূরের টেক্সট দেয়া শুরু হয়ে গেল তখন থেকেই ৷ দুজনের মানসিক অবস্থা বিপরীত, মেরুর মন হাসিখুশিই ছিল ৷ বের হলাম এবার গাড়ি ঠিক করতে, উদ্দেশ্য নীলগিরি ৷ তখনো জানি ভয় পাওয়ায় মজা আছে ৷ অদ্ভুত ইনটক্সিকেটিং ভয় ৷ বারবার এর মধ্য দিয়ে যেতে গিয়ে হেসিটেট হলেও প্রতিবারই আপনি এটার মধ্যে দিয়েই যেতে চাইবেন ৷



(চলবে)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৯

কাচু বলেছেন: ছবি কোথায়...........??

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৫

রহমান,তানভীর বলেছেন: এর পরেরটাতে দেব ভাই..:)

২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৪

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কিছু ছবি থাকলে আরও ভালো হত :)

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৮

রহমান,তানভীর বলেছেন: এবার দেব ভাই । :)

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৬

মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেছেন:
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

আমরাও গিয়েছিলাম গত বছরের জুনে। বর্ষায় বান্দরবনের সৌন্দর্যই অন্যরকম। যারা শুধুই শীতকালে বেড়াতে যায় তাতের জন্য আফসোস লাগে! বান্দরবনের মূল চেহারাটাই তারা দেখতে পায় না।

একটা সাজেশন- যারা নন এসিতে বান্দরবন যেতে চান তাদের বলল আমনারা ইউনিক পরিবহনে যাবেন। এদের সীট এর কোয়ালিটি খুবই ভাল। সাধারণত এসি গাড়ীর সীট এমন হয়, আর গাড়ী চালানোও বেশ ভাল। আমরা একেবারে সময়মতই বান্দরবন পৌছেছিলাম।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৯

রহমান,তানভীর বলেছেন: আসবার সময় ইউনিকে এসেছিলাম । বর্ষাকালে গেলে যাতায়াতে কিছু সমস্যা হয়, তবে আসল মজাটাও পাওয়া যায় । আসা করছি পরশু রাতে পরের পর্ব দিতে পারব । ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.