নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটিই লক্ষ্য- ডিজিটাল বাংলাদেশের এবং মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে অনিরপেক্ষতা..।

তানভীর এলিন

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট

তানভীর এলিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অ্যামেরিকা-ব্রিটেনের কু-রাজনীতির ফল আজকের ইসরাইল

০৬ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বা ইহুদি-মুসলিম দ্বন্দ্ব আজ নতুন কোনো বিষয় নয়। জন্মের পর থেকেই আমরা শুনে আসছি ইহুদি-মুসলিম দ্বন্দ্ব বা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ। কিন্তু কিভাবে এর শুরু?? ইতিহাসের পাতা থেকে ঘুরে আসা যাক।
মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ এবং একটা বৃহৎ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই নব্য ইহুদিদের উৎপত্তি করা হয়েছিল এবং কৌশলে ইসরাইল রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটানো হয়েছিল। ইসলাম অধ্যুষিত এলাকার একেবারে কেন্দ্রে ইহুদিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনে যে সুদূরপ্রসারী এক অশুভ লক্ষ্য কাজ করেছে, তা তো এখন ক্রিস্টাল ক্লিয়ার। আর ব্যক্তিগত ভাবে আমি বলবো- আরব রাষ্ট্রগুলো ইহুদিদের এই অশুভ লক্ষ্য হয় ঠেকাতে তো পারেনি, নয়তো তাদের চাল বুঝতে পারে নাই।...........................
ফিলিস্তীন বা প্যালেষ্টাইন ভূখন্ডটি একটি প্রাচীন উপত্যকা।প্রাচীনকাল থেকেই এই এলাকা বিভিন্ন জাতি ও শাসকের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে।
ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে পর্যায়ক্রমে ইহুদী, খৃষ্টান ও মুসলমানরা জনবসতি গড়ে তোলে। প্রথম দিকে ছিল ইহুদীদের জেরুজালেম ভিত্তক জুডাহ রাষ্ট্র যার রাজা ছিলেন দাউদ নবী। খৃস্টপূর্ব ৯৬২ অব্দে তার ছেলে সোলেমান নবী প্রথম ইহুদী মন্দির নির্মান করেন জেরুজালেমে। যা ব্যবলনীয় রাজা নেবুচাদনেজা ধ্বংস করে দেয়। পরে রোমানদের আক্রমনে ইহুদীরা জেরুজালেম থেকে বিতারিত হয়। রোমানদের আক্রমনে বিপর্যস্ত ইহুদীরা ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পরে এবং নির্বাসিত জীবন যাপন শুরু করে। পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তারা বস্তিতে এবং শহরের উপকন্ঠে বাস করতো। সপ্তম শতাব্দীতে মুসলমানরা জেরুজালেম জয়ের পর থেকে অটোম্যান সাম্রাজ্যের শেষ পর্যন্ত এই ভূখণ্ড মুসলমানদের অধীনে থাকে।
এবার আসি কিভাবে ইহুদিরা জেরুজালেমের দিকে প্রবেশ করে তার ইতিহাসের দিকে। ঊনবিংশ শতাব্দির দ্বিতীয়ার্ধে আধিপত্যের বলয় বাড়ানো নিয়ে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এই তিন দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য তারা নানা কৌশল অবলম্বন করে। ফিলিস্তীন ভূখণ্ডের ওপরও তাদের দৃষ্টি ছিল। নেপোলিয়ন বোনাপার্টের শাসনামলে ফিলিস্তীনকে নিজের উপনিবেশে পরিণত করার জন্য চেষ্টা চালায় ফ্রান্স। আর ব্রিটেন এ বিষয়টি টের পেয়ে এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নেয়। এ পরিকল্পনার আওতায় সাম্রাজ্যবাদ ও ইহুদিবাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি করে তারা। ওসমানীয় সাম্রাজ্য যখন আরব বিদ্রোহের কারনে পতনের মুখে, তখন পাশ্চাত্যে চলছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি। এ সময় ব্রিটেন সুচারু ভাবে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে নেয়। তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য দুটি জিনিস প্রয়োজন ছিল; এক- মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও ইউরোপের একাংশ নিয়ে গঠিত উসমানীয় সাম্রাজ্যকে ভেঙে ফেলা এবং দুই- পাশ্চাত্যের স্বার্থ সংরক্ষণকারী সরকার বসানো।আর দ্বিতীয় প্রয়োজনের ফসলই হচ্ছে ইসরাইল প্রতিষ্ঠা। ততদিনে বিভিন্ন দেশের বস্তি এবং শহরের উপকন্ঠের নির্বাসিত জীবন থেকে মুক্তির জন্য ইহুদীরা ইহুদীবাদী আন্দোলন শুরু করে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে কিছু সংখ্যক ইহুদী ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ফিরে এসে জেরুজালেম, সাফেদ এবং ত্রিবেরীতে বসবাস শুরু করে। এরা হালুকাহ হিসাবে পরিচিত। প্রথমে আসে রাশিয়া থেকে এবং পরে আসে পূর্ব ইউরোপ থেকে। যারা আসে, তাদের সিংহভাগ ছিল সেদেশের সরকার কর্তৃক অত্যাচারিত। এই দলটি “লাভারস অব জিয়োনিসম” নামে এক সংগঠন গড়ে তোলে। এই সংগঠন ১৮৮২ সালে প্যালেষ্টাইনে একটা জায়ন কলোনী গড়ে তোলে। পশ্চিমা ধনী ইহুদীরা জায়ন কলোনীতে থাকা ইহুদীদের প্রয়োজনীয় উপকরণ ও মূলধন দিতে থাকে এবং অর্থ দিতে থাকে আরবদের কাছ থেকে জমিজমা কেনার জন্য। আর এতে করে এ দলটি ধীরে ধীরে সংগঠিত হয়ে রাজনৈতিক রুপ ধারনের পথে আরো আগ্রসর হলো। ইহুদীবাদী দর্শনকে রাজনৈতিক রুপ দিয়েছে বুদাপেস্টের একজন সাংবাদিক ডঃ থিওডোর হাজের্ল। ১৮৯৭ সালে সুইজারল্যান্ডের বাসেল শহরে তারই প্রচেষ্টায় প্রথম জায়ানবাদী কংগ্রেস আহবান করা হয়। জায়নবাদ দাবি করে যে, আল্লাহর সঙ্গে ইহুদিদের একটা চুক্তি হয়েছে, অতএব ফিলিস্তীনে তাদের দাবি অনুযায়ী একটি ইহুদি রাষ্ট্র কায়েম করতেই হবে, এর বিরুদ্ধে কোন ইহলৌকিক যুক্তি খাটবে না, অন্য কোন ধর্মের যুক্তিও খাটবে না। আর সেসময় সেই সম্মেলনটি সফলও হয় এবং সিদ্বান্ত হয় যে ফিলিস্তীনে ইহুদীদের জন্য একটি আবাসভূমি প্রতিষ্ঠা করতে হবে, ইহুদীদের জাতীয় গৌরব ও আকাঙ্খাকে শক্তিশালী করতে হবে এবং ইহুদী কৃষিজীবি ও শ্রমিকদের সাহায্যে ফিলিস্তিনকে ইহুদী উপনিবেশ হিসেবে তৈরী করতে হবে। মূলত সেই সম্মেলনে নেয়া সিধান্ত গুলো এখনো ইহুদীদের / ইসরাইলের আগ্রাসনের চাবিকাঠি। সে সময় আরব মুসলমানেরা পরিণতি না চিন্তা করেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুরস্কের উসমানি খেলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এর সাথে যোগ হয়, কিছু মুসলমান শাসকদের অদূরদর্শিতা এবং ব্রিটিশদের যথাযথপররাষ্ট্র কৌশল প্রয়োগ। ফলে ভেঙ্গে যায় তুরস্কে মুসলিম খিলাফত, পতন হয় তুর্কি অটোমান সাম্রাজ্যের। ফিলিস্তিনসহ বেশ কিছু আরব এলাকা চলে যায় ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের দখলে। ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনী ১৯১৭ সালে ফিলিস্তীন ও জেরুজালেম দখল করে নেয়। এর পরের বছর ১৯১৮ সালে নবপ্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রসংঘ ফিলিস্তীনের ওপর ব্রিটেনের একক আধিপত্যকে স্বীকৃতি দেয়। ইহুদীদের থাকার কোন জায়গা তখন নেই, তারা ইউরোপের নানা দেশে ছড়িয়ে আছে। ব্রিটিশ সরকার তখন এ অঞ্চলের অধিকর্তা। তারা চায়নি ইউরোপে ইহুদীদের জায়গা দিতে। কিছু বিশ্লেষণের পর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরামর্শ করে ব্রিটিশরা ঠিক করলো মধ্যপ্রাচ্যেই দেয়া হবে ইহুদীদের থাকার জায়গা। ১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আর্থার জেমস বালফো্, ফিলিস্তীন এলাকায় ইহুদিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পরপরই বিপুল সংখ্যক ইহুদি ইউরোপের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে ফিলিস্তীনে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমান রাষ্ট্রগুলো তখন নিজেদের মধ্যে কলহে ব্যস্ত ছিল। উপরিপুরি তাদের ছিলনা কোন দূরদর্শিতা। তারা ব্যর্থ হয় ইহুদীদের প্রাথমিক আগমনকে বন্ধ করতে। ১৯১৮ সালে ফিলিস্তীনে ইহুদীদের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার। ১৯২৩ সালের মধ্যে ব্রিটিশদের সহযোগিতায় ইহুদীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫ হাজারে পৌঁছে। ইহুদীরা দ্রুত সংগঠিত হতে থাকে, উৎপাদন বাড়াতে থাকে। এ সময় পাশ্চাত্যের পুঁজিপতিরা ইহুদিদেরকে অর্থ সাহায্য দেয়া শুরু করে। তাতে করে ইহুদিরা নিজেদেরকে গুছানো শুরু করে। ১৯১৮ সালেই ইহুদীরা গুপ্ত বাহিনী হাগানাহ গঠন করে। ব্রিটিশরা তাদের সাহায্য করে এই গুপ্ত বাহিনী গঠনে। ফিলিস্তীনিদের বাড়িঘর ও ক্ষেতখামার দখল করা, বাজার ও রাস্তাঘাটসহ জনসমাবেশস্থলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফিলিস্তীনিদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং ফিলিস্তীনি নেতাদের গুপ্তহত্যা ছিল হাগানাহ বাহিনীর দায়িত্ব। আস্তে আস্তে হাগানাহ শক্তিশালী হতে থাকে, অপকর্ম বাড়াতে থাকে। ফিলিস্তীনিরা জমি হারাতে থাকে, ইহুদীরা জমি দখল করতে থাকে। ১৯৪৮ সালে প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে এ এলাকায় ইহুদীদের সংখ্যা ৬ লাখে এসে দাড়ায়।
এবার আসি ইসরাইল নামক রাষ্ট্রটি’র পথচলা কিভাবে শুরু হয়ঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘ, মার্কিন ও ব্রিটেনের চক্রান্তের অংশ হয়ে ফিলিস্তীনকে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করা হয়। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডটি একচ্ছত্র মুসলমানদের এলাকা হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপর, ১৯৪৭ সালে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডকে দ্বিখণ্ডিত করা সংক্রান্ত ১৮১ নং প্রস্তাব গ্রহণ করে। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিনেরা হয়ে যায় মুল শাসক। আর তাদের সুরে গান গেয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দ্বিখণ্ডিত করে দেয় ফিলিস্তিনী ভূখণ্ড। মুসলিম দেশগুলো কঠিন বিরোধিতা করে, কিন্তু কোন লাভ হয় না। মুসলমানরা পায় ফিলিস্তীনের ৪৫ শতাংশ আর ইহুদীরা পায় ৫৫ শতাংশ। মুসলমানরা যে এলাকাটুকু পায় তাও ছিল দুই ভাগে বিভক্ত, যেন দু’টি দ্বীপ যার তিন দিকে ইহুদিরা। এই ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডের ৫৫ শতাংশ নিয়ে শুরু হয় ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের পথচলা। আমেরিকা সবার আগে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়। অন্য রাষ্ট্রগুলোরও স্বীকৃতি পেতে দেরী হয়না কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছোট দেশগুলোকে অনবরত চাপ দিতে থাকে জাতিসংঘে ইসরাইলের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য। এর মধ্যে অনেক আরব রাষ্ট্রই অ্যামেরিকার দালালে পরিনত হয়, তাই আবারো কূটনৈতিক ভাবে ব্যর্থ হয় মুসলিম সমাজ। তারপরই জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েলকে স্বাধীনতা প্রদান করে। আর স্বাধীনতার পরপরই আরবদের সম্মিলিত বাহিনীর সাথে ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হয়। প্রায় পনেরো হাজার মানুষ এতে মারা যায়। ফিলিস্তীনের অধিকাংশ আরবরা ভিটেমাটি ছেড়ে শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয় জর্ডান, পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকায়। যুদ্ধে ইসরাইল জয়ী হয়ে ভূখণ্ডের বেশিরভাগ জায়গা নিজের দখলে রাখে। পশ্চিম তীর যায় জর্ডনের দখলে, গাজা উপত্যকা যায় মিশরের দখলে। পরে এই দুই ভূখণ্ড মিলিয়ে ফিলিস্তিনীকে “অল প্যালেস্টাইন গভর্নম্যান্ট” নামে স্বীকৃতি দেয় আরব লীগ। ১৯৪৯ থেকে শুরু হয় ইসরায়েলকে আরও অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত করা। এখানেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন আগ্রনী ভুমিকা পালন করে। সাথে সাথে চলতে থাকে পাশ্চাত্যের পুঁজিপতিদের অর্থ জোগান। ইসরাইল একই সাথে অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হতে থাকে। যে ফিলিস্তীনি ভূমি দখল করে ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন হলো, অত্যন্ত সুচারুভাবে সেই ফিলিস্তীনের বাকি ভূমিগুলোকেও দখল শুরু করলো ইসরাইল। মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে বিনা অপরাধে, বিনা উস্কানিতে হত্যা করতে লাগলো ফিলিস্তীনের মানুষদের। মাথামোটা আরব মুসলিম নেতারা চতুর ইহুদিদের কুটচালের কাছে বারবার বিপর্যস্ত হতে লাগলো। এর ফলে ফিলিস্তীনি মুসলমানরা হয়ে পড়ে একেবারে অসহায়। ফিলিস্তিনি মুসলমানদের প্রতিবাদ কে সন্ত্রাস হিসাবে আখ্যায়িত করে ইসরাইল চালাতে লাগলো আরও ধ্বংসজজ্ঞ ও হত্যা। ২০০৬ সালে ফিলিস্তীনে প্রথমবারের মত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেই হামাস অপ্রত্যাশিতভাবে জয়ী হয়। কিন্তু হামাসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে পশ্চিমা দেশগুলো কখনও স্বীকৃতি দেয়নি৷ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা না চালিয়ে হামাস বেছে নেয় সংঘাতের পথ। ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশে হামাসকেও দায়ী মনে হয়। পরিণতি চিন্তা না করে ইসরাইলের শক্তিশালী বাহিনীর সাথে যুদ্ধ বাধানো স্রেফ বোকামি ছাড়া কিছু ছিল বলে মনে হয় না। কষ্টভোগ করছে আর মরছে সাধারণ মানুষ, হামাসের সৈন্যরা না। ক্ষেত্র বিশেষে মনে হয় হামাস বারবার ইসরাইয়েলকে সুযোগ করে দিচ্ছে গণহত্যা চালানোর। তবে পুরো ব্যপারটা যে ইসরাইয়েলের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ তা স্পষ্টবোঝা যায়, যখন দেখলাম, ইয়াসির আরাফাতের সংঘটন পিএলওকে নাস্তানাবুদ করে যাচ্ছে হামাস। এই হামাসের উত্থান হয়েছিল ১৯৮৭ সালে যাতে সহায়তা দিয়েছিলো ইসরায়েল। উদ্দ্যেশ্য ছিল আরাফাতের সেক্যুলার ফাতাহ মুভমেন্টকে প্রতিহত করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদদ পুষ্ট ইসরাইল এখন বিশ্বের কোনও দেশকেই পাত্তা দেয়না যদিও এই মুহূর্তে একমাত্র ইরান ছাড়া আর কোন আরব দেশই ফিলিস্তিনী মুসলমানদের পক্ষে জোরদার অবস্থানে নেই। সব আরব দেশ পরিণত হয়েছে মার্কিনীদের তাবেদারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব বড় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নীতিনির্ধারক সংস্থায় ইহুদিদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব রয়েছে। এসব ইহুদিরা মূলত আমেরিকা ও ইউরোপের বাসিন্দা। পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ সব রাজধানী ও বাণিজ্যিক শহরে রয়েছে ইহুদিদের বিপুল সম্পত্তি; যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের উল্লেখযোগ্য এক অংশের মালিকানাও ইহুদিদের। বিজ্ঞানে, চিকিৎসায়, ব্যবসায়, ইহুদীরা শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে, তাই সুচারু ভাবে তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারছে। গণহত্যা আর ভূমীদখলকে করে ফেলেছে ন্যায়সঙ্গত। ................................................
ইতিহাসের পাতা থেকে যেই ইসরাইলকে জানতে পারলাম, যেই ইসরাইলের বর্তমান লিকুদ পার্টি প্রতিদিন আজও ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে যাচ্ছে, যেখানে নেই মানবতা, যেসসব কারণে বাংলাদেশের সাথে সেই দেশটির সম্পর্ক ছিন্ন করা হয় স্বাধীনতার পরপরই, সেই ইসরাইলের সাথে শুধু মাত্র ক্ষমাতায় যাওয়ার জন্য যখন আমাদের দেশের একটি বড় দল হাত মিলায়, তখন সত্যি কষ্ট লাগে না; বরং অবাক হই। আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের বুঝ জ্ঞান ফিরে আসুক এই কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। খোদা হাফেজ, ভালো থাকবেন সবাই।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৫:০০

ফয়সাল খানঁ বলেছেন: দারুন লিখেছিস

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.