নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দের ক্যানভাসে চিন্তা আঁকা, একটি চিরকুট...

তানজীম আফরোজ

শব্দের ক্যানভাসে যদি চিন্তা আঁকা যায় তবে কোটি বছরের পুরোনো চিরকুটও জীবন্ত লাগে। কারণ, সময়কে আটকানো যায় অক্ষরের ভাঁজে ভাঁজে...।

তানজীম আফরোজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধোঁয়াশার কুয়াশা

২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৫১


জমাট বাঁধা শীতের কুয়াশা বোধহয় মস্তিষ্কেও হানা দেয়। প্রকৃতি জমে যায়.....বাতাস স্তব্ধ হয়....আকাশ- বাতাস সব ধূসর মনে হয় । মস্তিষ্কে কুয়াশা হানা দেয়াটা কষ্টকর । তখন পৃষ্ঠা বরফ খন্ড মনে হয় । জমাট বাঁধা কলমের কালি এক অস্বস্তিকর নীরবতার জন্ম দেয়.....আর এই অন্ধকারের মাঝে ১০০ ওয়াটের বাল্বগুলোর কৃত্রিম রশ্মি অনেকগুলো ছেদবিন্দু তৈরি করে । তারার মত ছেদবিন্দু । ছেদবিন্দু দিয়ে বৃত্ত তৈরি হয়। ধোঁয়ার বৃত্ত ....বৃত্তের ভেতর বৃত্ত ...তার ভেতর বৃত্ত ...হাজার হাজার বৃত্ত ।
এই বৃত্তগুলো আমাদের শেখাতে চায়.....অনেক কিছু ....। আমরা শিখি না। তাই বৃত্তগুলো পাশ কাটিয়ে চলে যায়....তাই শিক্ষাগুলো বইপত্র কিংবা ধর্মগ্রন্থেই আটকে থাকে....আমাদের স্পর্শ করে না । উপলব্ধি ছাড়া কোনো কিছুই বোঝা সম্ভব না । দুর্ভাগ্য কিংবা সৌভাগ্যবশত কোনো বৃত্ত যদি আমাদের ভেতর একবার ঢুকে ...তবে তার চক্রতা আমাদের সারা জীবন বোঝায়। আমরা সারা জীবন উপলব্ধি করি ।
পাঁচ বছর আগে এমন-ই একটি বৃত্ত আমার ভেতর স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছিল । অন্যদের কাছে বিষয়টি নিতান্তই সাধারণ হলেও এর মর্মার্থটা খুব গভীর । কারণ সেই চক্রাটা সুপ্তাবস্থা থেকে হঠাৎ-ই অসাঢ় করে....প্রাণ দেয়...তাণ্ডবলীলা চালায়...আবার নিজেই অসাঢ় হয়ে যায়।
মানুষ ঠিক নিষ্ঠুর না......। নির্বোধ.... । কারণ , মানুষ মূল্যবান আর মূল্যহীন চিনতে ভুল করে। "নিঃস্ব" মানুষ তখনই হয় যখন সে "সম্পদ" চিনতে ভুল করে । সম্পদ যে কখনোই "টাকা" হতে পারে না - এই উপলব্ধির বৃত্তটা প্রতিটি মানুষের ভেতর -ই প্রবেশ করে ...কিন্তু সমস্যা হলো, তখন তার কিছুই করার থাকে না । মানুষ নিজে এভাবে নিঃস্ব হয় এবং সেই আঁচ চারিদিকে ছড়িয়ে দেয় । আর এভাবেই একটি গভীর আলোচনার বৈঠকে আঁচ লাগে...সম্পর্কের ভালোবাসায় আঁচ লাগে....আনন্দের স্মৃতিগুলোতে আঁচ লাগে....সামান্য একজন শিষ্য হতে চাওয়া সাহিত্যলোভী স্বপ্নে আঁচ লাগে । এই আঁচগুলো ধূলিসাৎ করে ....শুধু নির্বোধতায়। সমুদ্রের বুকে কোটি কোটি মুক্তো । কিন্তু সমুদ্রের সৌন্দর্য জ্বলজ্বলে মুক্তো নয় , বারবার বালু ভিজিয়ে দিয়ে ফিরে আসা ঢেউ আর সূর্যের প্রতিদিন পানিতে গলে পড়ার বর্ণিলতায়। ডুব দেয়ার প্রয়োজন হয় না...শুদ্ধ প্রাণে তীরে দাঁড়ালেই সবটুকু সম্পদ লুফে নেয়া যায়।
সত্যিকারের সম্পদ সত্যিই কেনা যায় না।
" আকাশটা দেখো দাদা " । কথাটা শুনে আমি আকাশের দিকে তাকাই । সচরাচর বিকেলের আলোকচ্ছটা ....হলুদ, কমলা, বেগুনি....আরো কিছু রঙের আভা ছাড়া আমি আর কিছু দেখিনি । সাধারণ মনে হয়েছিল ....। তবে তিনি একদৃষ্টে সেই সাধারণ রংগুলো-ই দেখছিলেন । অনেকক্ষণ ....। আর কি ছিলো সেখানে আমি জানি না । তবে ছিলো......অনেক কিছু । আমি সেইরকম আকাশ কখনো পেলে খুঁজি কি ছিলো সেখানে ....। খুঁজে পাই না ....। কিভাবে পাব.....আমার এই জ্বলজ্বলে প্রদীপ পাঁচ বছর আগেই নিভে গেছে....। একজন কবি .....একজন লেখক। যার সামান্য কথা , হাসি , আনন্দ সঞ্চয় করে বছরের বাকি দিনগুলো পার করতাম ....আর এখন আমাকে বছরের পর বছর পার করতে হয়। এই পৃথিবীর একমাত্র সবচাইতে বড় কষ্টকর সত্য হলো মানুষ সত্যিই হারিয়ে যায়.....একেবারে নিশ্চিন্হ হয়ে যায়। একটি বৃত্ত আমাকে উপলব্ধি করিয়েছিল। তার আগে বহুবার শুনেছি ...বিশ্বাস করেছি ...কিন্তু উপলব্ধি করতে পারিনি ....।
কিছু অনুভূতি কথায় গোছানো কঠিন.......। পুরু একটি ডায়েরির দুটি পৃষ্ঠার মাঝে পেন্সিল আটকে খাতা বন্ধ পড়ে আছে অনেকক্ষণ ....। আর আটকে আছে চিন্তার একাংশ -ও ঠিকভাবে তুলে ধরতে না পারার আফসোস । ফিনকি দিয়ে চাঁদের আলো কুয়াশা ভেদ করে হাত ভিজিয়ে দিচ্ছে ......। আদুরে আলো....।
এই আলোর গভীরে কি তারার ঠিকানা লেখা থাকে......? আমি কেন পড়তে পারি না ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.