নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তন্ত্র,মন্ত্র যতই জপি না কেন জবানে,যৌবনের আসিলে ঋতু রাজে,কোকিল কুহু কুহু সুরে গান করে, আমি পাগল তোমারি,প্রেম সুধা পানে, ভোমর পান করে মধু ফুলে বসে ,সে হোক গোলাপ বৈকি ঘাঁস ফুলে।আমার পরিচয় ছন্দের মাঝে।।

তারেক সালমান জাবেদ

কবি

তারেক সালমান জাবেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প - আবার দেখা হবে

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৫:৫৩


তারেক বিছানায় শুইয়া দুর দিগন্তের দিকে চাইয়া কি যেন ভাবিতেছে,আজ পাঁচ মাস হইল তারেক ব্লাড ক্যানসারে ভুগিতেছে, ডাক্তার বলিয়াছে আর ক'দিনের মধ্যে সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করিয়া পরলোকে গমন করিবে তার কোন সঠিক ইয়েত্যা নেই। তারেক জানে সে এই পৃথীবির মায়া ছাড়িয়া নতুন পৃথীবিতে যাত্রা শুরু করিবে তাহাকে চলিয়া যাইতে হইবে,পৃথীবি তাহাকে বিদায় দেবার অপেক্ষায় পুস্প হস্তে দাঁডাইয়া আছে। তারেকের চোখের সম্মুখে একে একে ছবির মতো প্রিয়জনের মুখবয় ভাঁসিয়া উঠিতাছে,মা-বাবা,ভাই-বোন, প্রিয়তমা আর একটি শিশু কন্যার কোমল স্নেহময়ী ভালোবাসা। তারেকের মনে পড়িলো তাহার প্রিয়তমা স্ত্রী'র ভালোবাসা,এইতো বছর পনের পূর্বে ফাহমিদা যখন ক্লাস নাইনে পড়িতো তখন মাঝে মধ্যে গনিত বা ইংরেজীতে সমস্যা হইলেই আসিয়া বলিত তারেক ভাই আমাকে ঐ সমস্যাটা সমাধান করিয়া দাও, তারেক মেয়েটার কথা কখনো ফেলিয়া দিতে পারিতো না,নির্বোধ বালকের মতো গনিত বুঝাইয়া দিতো,মেয়েটা মাঝে মাঝে অপলক নয়নে তাহার দিকে চাইয়া থাকিতো। তারেক জানিতো মেয়েটা তাহাকে ভালোবাসে কিন্তু বুঝিয়াও না বুঝিবার ভান করিয়া থাকিতে হইতো,কেনইনা তাহার ভালোবাসার জগতে-মনের কোমল স্থানে ভালোবাসার রাজ সিংহাসনে রানী হইয়া বসিয়া আছে অন্য একজন। তারেক যখন এইচ এস সি তে মৌলভীবাজার সরকারী কলেজে ভর্তি হইলো তখন আশা নামের একটি মেয়ের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়িয়া উঠিলো তারপর একসময় ঐ বন্ধুত্ব প্রেমে রূপান্তর হইলো,সম্পর্ক এতটুকু গভীরে গড়াইলো যে একজন অপরজন কে একদিন নাই দেখিলে বাডিতে ছুটিয়া যাইতো,কি হইলো কোন অসুখ-বিসুখ হইলো কিনা জানিবার জন্য,তখন আজকের এই মহাবিশ্বে দিনে দিনে যেই ভাবে সবার হাতে হাতে ব্যাঙের ছাতার মতো মোবাইল ফোনের ছড়া-ছড়ি,তেমনি ছিলো না অত্যন্ত বাংলাদেশ মানুষের হাতে। কিন্তু ভালোবাসা মানে না খড় স্রোত,মাঝি ভাটি হইতে ভালোবাসার টানে মনের আনন্দে উজানে নৌকা বাইয়া বসিয়া থাকে মনের মানুষের দেখা পাইবার লোভে ঘাটে। তেমনি প্রতিদিন রাতের অন্ধকারে বাঁশ বাগানের নীচে তারেক বসিয়া থাকিতো ভালোবাসার মানুষটির দেখা পাইবার আশে,ঘোট ঘোটে অন্ধকার রাত্রি আকাশ হইতে পড়িতেছে অঢেল বৃষ্টি,সাপ-বৃচ্ছু দংশনে মরিবে এমন শংকা উপেক্ষা করিয়া জুইলেটের অপেক্ষায় নির্ঘুম নয়নে কাঁটিয়াছে শত রজনী।তারেকে চোখের সামনে ভাঁসিয়া উঠিতে লাগিলো অতীতের তৈল চিত্র-মনে হইলো-লোকে বলিতো মানুষ মৃত্যুর পূর্বে তার জীবনের অতীতের কৃত-কর্ম চোখের সামনে ভাঁসিয়া উঠে তা আজ তাহার জীবনের অন্তিম সময়ে মর্মে-মর্মে বোধগম্য হইল । যাহাকে ভালবাসিয়া তাহার কোলে মাথা রাখিয়া মরিবার স্বাদ ছিলো,যাহার লাগিয়া তারেক এইচ এস সি পরিক্ষায় অপরের খাতা আনিয়া লিখণের অপরাধে পনের মিনিট পরিক্ষা হলের বাহিরে থাকিতে হইয়াছে,যাহাকে লইয়া ভালোবাসার ঘর বাঁধিবার স্বপ্ন মনের গহিনে লালন করিয়া যাহার হাত ধইরা শাহাজালাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হইয়া সুখের হাওয়া পালে লাগাইয়া সুরমা নদীতে নৌকা ভাঁসাইয়া ছিলো,অতপর"বসন্ত আসিলে যেমন বাগানে ফুলের সমারূহ দেখা দিতো তেমনি রঙ্গীন পাখার প্রজাপতির মতো তারেক জুইলেটের চারদিকই গুনগুন করতো।কিন্তু কপালের লিখন যায় কি খন্ডন,হঠাৎ অঘোষিত কালবৈশাখী আসিয়া স্বপ্ন ভালোবাসা লইয়া গেল উড়াইয়া,মাঝ নদীতে নৌকা দিলো ডুবাইয়া। ভালোবাসার পাখী খাঁচা ভাংঙিয়া দুর গগনে উড়াইয়া গেলো,মন ভাংঙিয়া খান খান হইলো, মনের বীণার তারে বিরহের সূর ক্ষণে ক্ষণে বাঁজিতে লাগিলো,ধীরে ধীরে তারেকের জীবনে অন্ধকার আসিয়া বাসা বাঁধিতে লাগিলো,পড়া লেখা জীবনের এখানেই ইতি হইলো, তারেকের জীবনে এমন এক দিন আসিয়া উপস্থিত হইলো বিছানা ছাড়িয়া উঠিবার ক্ষমতা হারালো। তখন ফাহমিদা আশার দ্রুত হইয়া তারেকের পাশে দাঁড়ালো,একটি আধমরা গাছ পূর্নতা ফিরাইয়া পাওয়ার আশায় মালি যে ভাবে প্রতিদিন ঐ গাছের গুঁড়ায় জল ঢালিয়া যতন করিয়া যায়,সেই ভাবে ফাহমিদা তারেকের যতনে ধ্যান জ্ঞান লাগাইয়া ভালোবাসার ক্ষতস্থানে আদর সোহাগ দিয়া ধীরে ধীরে সুস্থ করিয়া তুলিতে লাগিলো।তারেক আবার ও ভালোবাসার নতুন স্বপ্ন দেখিতে লাগিলো মেয়েটার সাথে প্রেম হলো-বিয়ে হলো, বিয়ের একবছরের মাথায় একটি কন্যা সন্তান আসিয়া ঘরের অন্ধকার দুর করিয়া দিলো,প্রিয়তমা স্ত্রী ফাহমিদা জীবনটাকে নীজের হাতে তাজমহলের মতো করিয়া সাজাইতে লাগিলো,ভালোবাসার সূগন্ধি মনের বাতায়ন দিয়া জীবনের ঘরে মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর করিয়া রাখিতো,সন্তানের বয়স যখন পাঁচ বছর তারেক জীবনের তাগিদে ইউরোপে পাড়ি জমাইলো, কিন্তু পোড়া কপালে সুখ আর কই বা সহিলো - যে মালী মরা গাছে পানি ঢালিয়া ফুল ফুটাইলো,সে ফুলের সুগন্ধি গ্রহন করিবার পূর্বেই ইহলোক ত্যাগ করিয়া পরলোকের ডাকে সারা দিলো,চলে গেলো অজানা -অনন্ত কালের যাত্রায় যেখান থাকিয়া পৃথিবীর মানুষ আর ফিরিয়া আসে না।আজ তারেক প্রিয়তমা স্ত্রীর কে ডাকিতেছে ফাহমিদা তুমি কই আর ক'টা দিন অপেক্ষা করো আমি আসছি,আমার সময় শেষ হইয়া আসিয়াছে।তারেকে চোখ থাকিয়া ফোঁটা ফোঁটা জল গাল বেয়ে গড়াইয়া পড়িলো আর আনমনে বলিতে লাগিলো:-
জেৎস্না রাত,নির্রঘুম চোখে
আমি তারে দেখি দু-হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে
শিহরের পাশে,তার আঁখি দুটি জলে গেছে ভরে,
আমি যে দেখলাম তারে ভ্রম মনে,
সে যে চলে গেছে আজি হতে এক যুগ আগে
অমরকাননে,শ্রাবনের রাতে।

ঘুরে গেছে অপার সময়ের দিবা-রাত
দুধের শিশু আজ দেখিতে কৈশোরপ্রাপ্ত,
তার মুখে পেয়েছে মায়ের মুখের দর্পণ চাপ,
আমি চেয়ে থাকি নির্বাক,ঐ যে বছর পাঁচেক আগ
প্রশ্নের কষাটে কষ্টে কেটেছে মোর নক্ত,
চলে গেছে সে,ফিরবে না আর
জানবে না সে মেয়েটার চৌদ্দ বছর আজ।

ওহ! পশ্চিম গগণে আইফেল টাওয়ারের ডগায়
দাঁড়িয়ে আছে বাঁকা চাঁদ,সারি সারি বাতি
প্লাবিত পুর্নিমা রাত,যুগলের পদচারণায় নিখিলে আহ্লাদ,কোন ছলে অন্তরে মাতাবো সুখানুভাব,
বাতায়ন দিয়ে মগজে ঢুকিতেছে,চার চাঁকার যানের
বিকট কান্নার আওয়াজ।

অশুভ পেচকের ডাক থেমে থেমে  উঠে,
লাইট পোস্টের আলোয় পোকা মরে আলেয়া ভেবে, মাঁকড়শার জালে চেনা ভুত আটকা পড়ে,
তবু ও তো প্রভাতের অপক্ষায় দোয়েল প্রহর গুণে-
উষ্ণ অনুরাগে,জীবনের সংগ্রামে বেঁচে থাকার তাগিদে,আয়ুষ্কাল ভালোবেসে।

আকাশের চাঁদ আর তারার মেলা
উল্কারা করিয়াছে ছুটা-ছুটির খেলা-আমি দেখিয়াছি,
বিশাল আকাশ যেন-আলো আঁধারের ছলাকলা,
তবু মৃত্তিকার মাঝে ঝিলে-বিলে পদ্মের খেলা,
চাঁদ অস্ত গেলে তুমি দাঁডিয়ে রয়েছ ঝিলের পাড়ে
নি:সঙ্গ - একা, নিয়ম করে রেখেছে যে ঐ অদেখা
জগৎ স্রষ্টা,যেখানে তোমার সাথে এপারে জীবন আর আত্মার  হবে না দেখা।

জীবনের আশা,প্রেম,ভালোবাসা
বিবাহিত জীবনের মধু চন্দ্রিমা,
সাধ,প্রণয়ে,
তোমার অন্তরে ছিলো না কোথায় কুহেলিকা,
রাখনি অতৃপ্ত কোন দোহদ,
জানিতে দিয়েছ জীবন আর মউ
তোমার পরশে ঘুমন্ত দেহ,মন
হয়েছিল উত্তাল উদধি বউ,
জানো তুমি পৃথিবীতে
পদচারণায়-পরিচালনায় জীবন
ঘুর ফিরে নীড়ে আসে
বিষাধ-ক্লান্তি,অশান্তি,
তুমি চলেগেছ
ভোগেছি আমি আর শিশু কন্যাটি।

রাত শেষ চাঁদ ডুব দিয়েছে,
কাল আসিবে আরেকটি রাত,
আসিবে পেচক,মাকঁড়শা,চেনা ভুতের
শুনা যাবে পন পন ডাক,
বাহ! দারুন
আমিও ডুব দিবো ঘুমের ঘরে
অচেনা ঘুম,রেখে যাব মেয়েটার কাঁধে
পৃথিবীর ভার।।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৬:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভালো লাগেনি, ক্যান্সার প্যানসার ব্যতিত লেখা যায়?

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৬:২৮

তারেক সালমান জাবেদ বলেছেন: চেষ্টা করবো ভালো লিখার জন্য,ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৬:২৪

নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ভালো লাগলো।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৬:২৭

তারেক সালমান জাবেদ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৭

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ভালো লেগেছে।
কিছু কিছু বানান চলিত রীতিতে রয়ে গেছে। সেটা ঠিক করে নিলে আরো সুন্দর দেখাবে।

৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৭

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ

৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:২২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: পৃথিবীর বানান যদি ভুল হয়, তাহলে আর গল্প পড়ে কি হবে ? :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.