নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর চেহাড়া মানুষকে মুখোশ দেয় আর সুন্দর মন মানুষকে সুন্দর করে! কুৎসিত মনকে সুন্দর চেহারা দিয়ে স্বল্প সময় আড়াল করা যায় কিন্তু বেশিক্ষন লুকিয়ে রাখা যায় না।

আসিফ ইকবাল তােরক

অনুবাদকঃ আমি ঘৃনার শব্দকে ভালোবাসায় অনুবাদ করি।

আসিফ ইকবাল তােরক › বিস্তারিত পোস্টঃ

লন্ডন ড্রীমস স্মৃতিচারন (পার্ট - ২)

২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:০২

লন্ডনে থাকাটা আমার জন্য একটা শিক্ষা সফরের মতন ছিলো। অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন হইছে লন্ডনে থেকে। কত আজব আজব ধরনের মানুষের সাথে দেখা হইছে আর থাকা হইছে। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে বেনেডিক্ট! বেনেডিক্টের ব্যাপারে বলার আগে একটু পিছনের কাহিনী বলে নেই।


Photo Credit: Google.

লন্ডনে আমরা সাধারনত একটা বাসা ভাড়া নিতাম এজেন্সির কাছ থেকে তারপর সেই বাসার কোনো রুম খালি থাকলে সেটা আবার আমরা অন্য মানুষের কাছে ভাড়া দিয়ে দিতাম। এতে করে বাড়ি ভাড়ার পরিমানটা অনেক কমে যেতো। সেরকমি একটি বাসা ছিলো আমার। সেই বাসায় আমি আর আমার কাজিন আর আরো দুইজন বাঙ্গালী ভাই মিলে টোটাল চার জন থাকতাম। তো সেই বাসার একটা রুম খালি থাকায় আমি ইন্টারনেটে এড দেই একরুম ভাড়া দেবার জন্যে। এখানে বলে নেওয়া ভালো যে লন্ডন বা বাইরের কোনো দেশে কেউ কালোদের ভাড়া দিতে চায় না বা ভাড়া দিতে ভয় পায়। তো এড দেখে সন্ধা বেলা একজন বাসা দেখতে আসলো নাম ইউসুফ ভারতীয় মুসলিম। কথা বার্তা বলে বেশ ভালো লাগলো এবং তখনই সে বাসা ভাড়া নিয়ে নিলো। বললো যে সে আর তার এক কলিগ থাকবে। তখনই টাকা এডভান্স দিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে নিলো।


ইউসুফ ভাই খুব অমায়িক মানুষ ছিলো। অত্যান্ত ভদ্র একজন মানুষ। সে যাই হোক পরের দিন কলিগ আসতেই তো আক্কেলগুরুম! এ দেখি কালো ভাই যার নাম হচ্ছে বেনেডিক্ট। মূলত ইউসুফ ভাই আর বেনেডিক্ট কার ওয়াশের কাজ করে এর মধ্যে ইউসুফ হচ্ছে বস আর বেনেডিক্ট হচ্ছে কর্মচারী। কিছুদিন বেনেডিক্টের সাথে থাকার পর অবশ্য আমাদের ভুল কিছুটা ভান্গে। কারন বেনেডিক্ট অন্য কালোদের মত এগ্রেসিভ ছিলো না বরং একটু বোকাসোকাই ছিলো।


বেনেডিক্ট হচ্ছে নাইজেরিয়ান। সমস্যা একটাই ছিলো মাঝে মধ্যে রান্নাঘরে তার দেশিয় খাবার রান্না করলে গন্ধে ঘরে টেকা যাইতো না। তার ফেভারিট খাবার ছিলো সম্ভবত ফুফু। ফুফু দেখতে অনেকটা আলু ভর্তার মতন। খাইতে কেমন সেটা অবশ্য জানা হইনাই কারন কখনো চেখে দেখা হইনাই। তবে ফুফু সম্ভবত চাল বা গমের গুরা দিয়ে বানানো। তার আরেকটা প্রিয় খাবার ছিলো মনে হয় টমেটো। কারন প্রায়ই দেখতাম সে দুই তিন কেজি টমেটো এনে সেটাকে সেদ্ধো করে ফ্রীজে রেখে দিতো। বেনেডিক্ট একদিন কোথা থেকে জানি বিশাল এক গরুর না ছাগলের মাথা কিনে নিয়ে কিচেনে সিংকের মধ্যে পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখছে। সেই দিনই আমাদের বাসার গ্যাসের বয়লার ইনস্পেকশনের জন্য লোক আসার কথা। যথা সময়ে এক সাদা লোক বয়লার ইনস্পেকশন করতে আসছে। এসে সিংকের মধ্যে ঐ মাংসপিন্ড দেইখা আমারে জিজ্ঞেস করছিল ইজ ইট এ ডেড বডি পার্ট! সাচ এ এম্বেরেসিং মোমেন্ট। যাওয়ার সময় সন্দেহে চোখ নিয়ে তাকাইতে তাকাইতে ঘর থেকে বের হইছে। ভাগ্যিস পুলিশে কল করে নাই।


আমরা প্রতিদিন সকলে নাস্তার সময় কাচা মরিচ পেয়াজ দিয়ে ডিম মিশিয়ে ভাজি করে পরোটা দিয়ে খেতাম। ডিম ভাজির প্রক্রিয়াটা বেনডিক্ট খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতো। তো একদিন কোন কুক্ষনে আমার খালাতো ভাই বেনেডিক্টরে ডিম ভাজি করা শিখায় দেয়। এর পর থেকে আর যায় কোথায় প্রতিদিন সকালে বা যখনি চান্স পাইতো ডিম ভাজি কইরা খাইতো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে প্রায় ২০/৩০ মিনিট বাটির মধ্যে পেয়াজ মরিচ ডিম দিয়ে ফেটটেই থাকতো। টুং টাং টুাং শব্দে একাকার অবস্থা। মাঝে মধ্যে সকালে ঘুমের বারোটা বাজতো বেনেডিক্টের এই ডিম ভাজির চক্করে।


তবে বেনেডিক্টের একটা অভ্যাস ভালো ছিলো। সে প্রতিদিন রাতে এসে মেট্রিক্সের অংক করত। ঘন্টার পর ঘন্টা দেখা যাইতো খাতায় অংক মিলাচ্ছে। এক রাতে আমি আর আমার কাজিন ঘুমাইয়া আছি। হঠাৎ রাতে দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা। কাহিনী কি পুলিশ আসছে। কাহিনী আর কিছুই না। আমাদের নম্র ভদ্র ইউসুফ ভাই কম্পানীর সেফ ভেংগে টাকা নিয়ে ভেগে গেছে। তো পুলিশ তার খোজে বাসায় আসছে। পুলিশ কি আর ইউসুফকে বাসায় পাবে। সে তো চম্পট। তারপর ইউসুফ ভাইয়ের রুম চেক টেক করে বিদায় নিছে। কিন্তু সেই রাতে আমাদের বেনেডিক্ট পিছনের দরজা দিয়ে পালাইছিল। পরের দিন বাসায় এসে অবশ্য সব আমাদের খুলে বলছে। সে তখনো বিশ্বাস করতে পারতেছিলনা যে তার রুমমেট এই রকম একটা কাজ করতে পারে। যদিও আমাদের ধারনা ছিলো ইউসুফ ভাই ফেরেস্তার মতন মানুষ আর বেনেডিক্ট হয়তো খারাপ মানুষ কিন্ত হইছে তার উল্টাটা। এই জন্যই বোধহয় এই কথাটার প্রচলন হইছে যে, "Never Judge a book by its cover!"

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: কালোরা কি এখন দুষ্ট আছে?

ছবি আরও দুই একটা দিতেন।

২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:১৯

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: সত্যি বলতে হে কালোরা এখনো দুষ্ট আছে। ছবি আরো দিতাম কিন্তু নিজের তোলা না গুগলের থেকে ধার নেওয়া তাই আর বেশি দেই নাই। তবে আমার তোলা কিছু ছবি আছে সেগুলো হার্ডডিস্কের চিপাচাপা থেকে বের করতে হবে...

২| ২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:১১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার স্মৃতিচারন ভাল লাগল।
মানুষ চেনা সত্যি অনেক কঠিন।

২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:২১

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: মানুষ চেনা আসলেই অনেক কঠিন। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।

৩| ২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:২৮

অচেনা হৃদি বলেছেন: ব্লগে অনেকেই লন্ডন শহর নিয়ে লিখছেন । এসব লেখা থেকে লন্ডনকে যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি । ধন্যবাদ লেখককে । কিন্তু এই ব্লগে লন্ডন ছাড়া অন্য শহর নিয়ে লেখা পোস্ট হচ্ছে না নাকি ? ব্লগে ঢোকার পর হতে শুধু লন্ডন দেখতে পাচ্ছি । অন্যান্য শহরের ভ্রমণ বা বসবাসের অভিজ্ঞতা কেন্দ্রিক লেখা পড়তে পারলে আর ভালো লাগতো ।

২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: বলেন কি আমি তো আগের পোস্টেই মেক্সিকো নিয়ে লিখলাম। না পড়ে থাকলে লিংক দিয়ে দিচ্ছে:
http://www.somewhereinblog.net/blog/tareq00325/30240449

২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৩৯

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: Click This Link

৪| ২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৩৮

ইব্রাহীম সাজ্জাদ বলেছেন: ভাই, লন্ডন যামুনা, ইচ্ছা আছে হুলু-লুলু যামু যদি কোনদিন কপালে জোটে। কেউ হুলু-লুলু নিয়া একটা রিভিউ দিয়েন।।।

২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪০

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: হা হা হা লন্ডনে না যাওয়াই ভালো.... এর থেকে হনুলুলু ভালো হবে.

৫| ২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩

ইব্রাহীম সাজ্জাদ বলেছেন: এই জন্যেই হুনুলুলু যাওয়ার প্রচেষ্টায় আছি ভাই

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:৫৬

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: হুনুলুলুর ভিসা পাইলে আমাদের জানাইয়েন ভাই।

৬| ২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

কাইকর বলেছেন: উকান্ডা আমু ভাই।ভিসা আছে?

২৪ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫৪

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: ব্ল্যাক পেনথারের সাথে দেখা করেন উকান্ডার ভিসার জন্যে।

৭| ২৪ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:০০

নীল মনি বলেছেন: কী চমৎকার বর্ণনা ভঙ্গি।পড়তে কিন্তু ভীষণ ভালো লেগেছে।পোস্টে প্রথম পর্বের লিংক যোগ করে দিলে ভালো হয়।
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।

২৪ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২১

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: Click This Link

৮| ২৪ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:১২

অনুতপ্ত হৃদয় বলেছেন: মানুষ চেনা বড় দায় …………„

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২০

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: সত্যি বড় দায়।

৯| ২৪ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আপনার লন্ডনের স্মৃতিচারণ মূলক লেখাটি পড়ে ভাল লাগলো।

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২১

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: আপনার ব্লগ থেকে ঘুরে আসলাম। আপনার লন্ডন নিয়ে লেখা গুলো অসাধারন।

১০| ২৪ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: সত্যি বলতে হে কালোরা এখনো দুষ্ট আছে। ছবি আরো দিতাম কিন্তু নিজের তোলা না গুগলের থেকে ধার নেওয়া তাই আর বেশি দেই নাই। তবে আমার তোলা কিছু ছবি আছে সেগুলো হার্ডডিস্কের চিপাচাপা থেকে বের করতে হবে...


মুভিতে দেখি কালোরা বেশ ভালো মনের মানুষ।
ছবি তুলবেন। সাথে মোবাইল আছে। আমাদের কথা মাথায় রেখে ছবি দিবেন।

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২৩

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: কালোদের মধ্যেও ভালো মানুষ আছে তবে বেশির ভাগই কিছুটা উগ্র। সাদারা কালোদের আফ্রিকা থেকে নিয়ে এসে দাস বানিয়ে রেখেছিল কয়েকশো বছর এখনো সেটার রেশ রয়ে গেছে। অবশ্যই ছবি তুলবো এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

১১| ২৬ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১৩

কাইকর বলেছেন: খুব ভাল লাগলো পড়ে।দেশে থেকেও আপনার লেখার মাধ্যমে লন্ডন থেকে ঘুরে আসলাম।আপনি ব্লগার ও বয়সে আমার অনেক সিনিয়র। তাই সময় পেলে আমার ব্লগে গিয়ে ঘুরে আসবেন।তাহলে অনেক খুশি ও অনুপ্রেরণা পাবো

২৮ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:১১

আসিফ ইকবাল তােরক বলেছেন: কয়েকটা লেখা পড়লাম আপনার। পড়ে ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.