নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ দাদুর বন্ধু

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৩

নবগঙ্গা নদীর খেয়া নৌকা পার হয়ে ব্রাক্ষণডাঙ্গা গ্রামের মানুষদের পাশের গ্রামে যেতে হয় দৈনন্দিন বাজার সদাই করতে। অথচ একসময় এই গ্রামেই ছিল জেলার সবচেয়ে বড় হাট।গ্রাম্য দলাদলি আর রেশারেশির কারণে নবগঙ্গা পাড়ের বিরাট হাটটি ভেঙ্গে যায় সেই আশির দশকে। এই হাট এখন আমাদের কাছে শুধুই একটা গল্প।বুড়ো বটগাছটা এখন শুধুই ইতিহাসের সাক্ষী।

দাদুর কাছ থেকে শুনেছি আশপাশের দশ গ্রামের মানুষ এখানে বাজার সদাই কিনতে আসতো।সপ্তাহে দুইদিন হাট বসতো, সোম ও বৃহস্পতিবার। এ দুইদিন সকাল থেকেই বেচাকেনা শুরু হতো, দূর দুরন্ত মানুষ নৌকা নিয়ে হাটে আসতো। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় নৌকা ই ছিল মানুষের একমাত্র ভরসা। অনেকের নিজের নৌকা না থাকলেও অন্যের নৌকায় করে হাটে পৌছাতো। হাটবারে নদীর ঘাটে শত শত নৌকা ভিড়তো, দূরদুরন্ত থেকে পাইকারি ব্যাবসায়ী এখানে এসে তাদের নৌকা ভর্তি করে মাল কিনে নিয়ে ফিরে যেতো। এটা ছিল আশপাশের গ্রামের মানুষের মৌসুমি ফসল বিক্রির প্রধাণ কেন্দ্র। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের এই হাটকে ঘিরে অতিরিক্ত লোভের খেসারত দিতে হয়েছে এই এলাকার সাধারণ মানুষকে। জমজমাট হাটের স্থানটিতে সন্ধ্যা লাগলেই যেন শুনশান নীরবতা নেমে আসে। এই সুযোগে নব্বইয়ের দশক থেকেই আশপাশের গ্রামগুলোতে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি হাট গড়ে উঠেছে। আমাদেরকে তখন অনেকটা বাধ্য হয়েই নদী পার হয়ে পাশের গ্রামে গিয়ে বাজার সদাই করতে হতো।

বাবা শহরে চাকুরি করায় মাত্র আট বছর বয়সেই আমাকে অনেকটা বাধ্য হয়েই বাজারের থলি হাতে তুলে নিতে হয়।আর দাদু গো ধরেছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গ্রাম ছেড়ে কোথাও যাবেন না, তাই আমাদেরকে অনেকটা বাধ্য হয়েই গ্রামে থাকতে হতো।

এক হাতে ব্যাগ ভর্তি বাজার সদাই অন্য হাতে পাটের শিকের মধ্যে রাখা কাচের বোতলে এক বোতল কেরসিন তেল,এই আট নয় বছর বয়সে যেটা আমার জন্য বয়ে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসা সত্যি কষ্টকর ছিল। কিন্তু এছাড়া আর উপায় কি?দাদুর বয়স হয়েছে, উনার পক্ষে হাটে গিয়ে বাজার করে আনা সম্ভব নয়।

আমাদের বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে খেয়াঘাট। নদীর ঘাটে একটাই মাত্র খেয়া নৌকা। হাটের দিন বাড়ি ফেরার সময় নৌকায় প্রচন্ড ভিড় হতো। তাই কোন কোনদিন আমাকে কেনাকাটা সেরে বাড়ি ফিরতে নৌকা পারাপারের জন্য অনেক রাত পর্যন্ত নদীর ঘাটে বসে থাকতে হতো।নদী পার হয়ে নিজ গ্রামের কাউকে পেলে তার সাথে তিন কিলোমিটার পায়ে হেটে বাড়ি ফিরে আসতাম। কিন্তু কোন কোনদিন আমাকে একাই বাড়ি ফিরতে হতো। ভয়ে আমার গা ছমছম করতো,সারা রাস্তা দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে বাড়ি ফিরতাম।

একদিন বাজার করে ফিরতে একটু বেশিই দেরি হয়ে গিয়েছিল। তার উপর নৌকায় অনেক ভিড়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও নৌকায় উঠতে পারছিলাম না। নৌকা পার হয়ে আমাদের পাড়ে আসতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। আমার ধারণা সাড়ে আটটা নয়টার বেশি হবে না,তবে সেসময় গ্রামে ইলেট্রিসিটি না থাকায় সবাই সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়তো, ওটাই তখন অনেক রাত। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ সারাদিনের পরিশ্রমের পর সন্ধ্যার সাথে সাথে কেরসিনের কুপিগুলো নিভিয়ে হারিকেনের আলো টিমটিম করে জ্বালিয়ে রেখে ঘুমিয়ে পড়তো।

সেদিন ছিল অমাবস্যার রাত,চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। ভেবেছিলাম আমাদের গ্রামের কাউকে পেলে তার সাথে সাথে বাড়ি যাবো কিন্তু একেবারেই মন্দভাগ্য। নৌকা পার হয়ে গ্রামের কাউকেই পেলাম না। এমন অমাবশ্যার রাতে একাএকা বাড়ির পথে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলাম না। কিন্তু কিছুই করার নেই একা একা দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।চেনা পথটাকে সেদিন বড্ড অচেনা মনে হচ্ছিল, অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না, ভয়ে গা ছমছম করছে।রাস্তার পাশের গাছগুলোকে দেখে মনে হচ্ছিল প্রকান্ড এক একটা দৈত্য দাড়িয়ে আছে। এই বুঝি সামনের শ্যাওড়া গাছ থেকে থেকে সাদা কাফনের কাফনের কাপড় পরে কেউ নেমে আসবে। সামনের কিছুই দেখা যাচ্ছে না অনেকটা আইডিয়া করেই পথ চলতে হচ্ছে। কিছুদুর এগোনোর পর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হল। অন্ধকার রাস্তায় আমার দাদুর বয়সী একজন লোককে দেখলাম লাঠি ভর দিয়ে ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগোচ্ছেন। উনাকে দেখে ধড়ে প্রাণ ফিরে পেলাম। অন্ধকারে চেহারা দেখা যাচ্ছে না , তবে বয়স্ক মানুষ সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না।

-দাদু কোথায় যাবেন? আমি জিজ্ঞাসা করলাম।

প্রথমে কি বললো বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলাম উনি আমাদের গ্রাম দুইতিনটি গ্রাম পর উনার বাড়ি। আমার কাছে মনে হল উনি যে গতিতে এগুচ্ছেন তাতে সারা রাতেও বাড়ি পৌঁছাতে পারবেন না।

-তোমাদের বাড়ি কোন গ্রাম?তিনি জিজ্ঞেস করলেন।
-এইতো এই গ্রামের শেষ মাথায়।
-তোমার আব্বার নাম কি?
আমার আব্বার নাম বললাম কিন্তু তিনি চিনতে পারলেন না।
-তোমার দাদুর নাম কি?
দাদুর নাম বলার সঙ্গে সঙ্গেই চিনে ফেললেন।
-আরে তোমার দাদুতো আমার ছেলেবেলার বন্ধু! তোমার দাদু কেমন আছে?
- জি ভাল আছে।
-চলাফেরা করতে পারে?
-দাদু লাঠি ভর দিয়ে চলাফেরা করতে পারেন।
-আপনার নাম কি দাদু?
-মফিজুদ্দীন শেখ, তোমার দাদুকে আমার কথা বলবে সে আমার ছোট বেলার বন্ধু।
-আচ্ছা বলবো।
-তোমার দাদুর সাথে একসাথে কত হাডুডু খেলেছি। যশোর খুলনা এমনকি ঢাকাতেও আমরা একসাথে হাডুডু খেলতে গিয়েছি।
আমার সাথে কথা বলতে বলতে তিনি নস্টালজিক হয়ে পড়লেন। এরপর শুরু করলেন ইলিশ মাছ ধরার গল্পঃ

‌সে সময় মধুমতী নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যেতো। একবার তোমার দাদু আর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম মধুমতি নদীতে ইলিশ মাছ ধরতে যাবো।কিন্তু আমরাতো ইলিশ মাছ ধরার কলাকৌশল জানিনা, তাই গ্রামের তিনজন জেলেকেও সঙ্গে নিলাম। আমরা মোট পাচজন মাঝারি সাইজের একটা নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ইলিশের খোঁজে । নদীতে জাল ফেলে কিছু সময় পর জাল তুলতেই দেখি রূপালী ইলিশে জাল চকচক করছে। রাত দুইটা আড়াইটা পর্যন্ত প্রচুর মাছ পেয়েছি নৌকায় আর মাছ রাখার জায়গা নেই।তাই নৌকাকে একটা চরে ভিড়িয়ে আমরা একটু ঘুমিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। এই সুযোগে তোমার দাদুসহ অন্যরা ঘুমাচ্ছে। আমার ঘুম আসছে না চুপচাপ শুয়ে আছি। একসময় অন্ধকারে খেয়াল করলাম বানরের মত একটা লোমশ প্রাণী আমাদের নৌকায় উঠে পড়েছে। আমি তাকে তাড়ানোর জন্য
‌'হেই হেই যাহ'
‌এই টাইপের শব্দ করলাম। প্রাণীটির চোখ অন্ধকারে বিড়ালের মত জ্বল জ্বল করছিল । এমনভাবে আমার দিকে তাকিয়ে দাত ভেংচি কাটলো যা দেখে আমার পিলে চমকে গেল আমি ভয়ে সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারালাম। তোমার দাদুসহ অন্যরা আমার মুখে পানির ছিটা দেওয়ার পর আমার জ্ঞান ফিরলো।
ওদেরকে পুরো ঘটনা খুলে বললাম প্রথমে কেউই আমার গল্প বিশ্বাস করলো না, এই নির্জন চরে কোন প্রাণী থাকার কথা নয়। আমি যখন একটা আধ খাওয়া ইলিশ মাছের টুকরো দেখালাম তখনতো সবার চোখ ছানাবড়া। কেউ ই বুঝতে পারলো না ওটা কি ধরনের প্রাণী ছিল।

গল্প করতে প্রায় আমাদের বাড়ির কাছে চলে এসেছি। একটু দূরে রাস্তার পাশে হারিকেন নিয়ে কেউ একজন দাড়িয়ে আছে। আমার বুঝতে বাকি রইলো না ওটা আমার মা, আমার ফেরার প্রতিক্ষায় রাস্তার পাশে হারিকেন নিয়ে দাড়িয়ে আছেন।

-দাদু ওই যে আমাদের বাড়ি, এতো রাতে আপনাকে কিছুতেই যেতে দেবো না,কাল সকালে না হয় বাড়ি চলে যাবেন, আমি বললাম।
পিছনে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই। মূহুর্তের মাঝে কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে গেলেন।

সামনে আমার মা দাঁড়িয়ে আছেন।
-কিরে হাট থেকে ফিরতে তোর এত দেরি হল কেন?
আম্মা জিজ্ঞেস করলেন।
আম্মার কথার জবাব না দিয়ে আমি দাদু দাদু বলে ডাকতে লাগলাম।
-কিরে কাকে ডাকছিস তোর সাথেতো কাউকেই দেখছি না।
আম্মাকে দাদুর বন্ধু মফিজুদ্দীন শেখের গল্প বললাম।
-চল বাড়ি চল, তোর দাদুর কাছে উনার কথা জিজ্ঞেস করিস।

বাড়ি ফিরে দেখি দাদু ঘুমিয়ে পড়েছেন, পরদিন সকালে দাদুকে তার বন্ধু মফিজুদ্দীন শেখের সাথে আমার বাড়ি ফেরার গল্প শোনালাম।
দাদু খুবই অবাক হলেন।
-আরে মফিজুদ্দীন তো আরও দশ বছর আগেই মারা গেছেন! ইলিশ মাছ ধরার গল্প শুনে আরও অবাক হলেন,
আরে এই গল্পতো আমি কাউকে কখনোই বলিনি তুই কি করে জানলি?
দাদুর বন্ধু সেদিন কেন যে আমাকে ওই অন্ধকারে বাড়ি পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলেন সেই রহস্য আজও অজানা। নাকি পুরোটাই আমার কল্পনা ।




মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:০৯

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: চমৎকার গল্প , ভাল লাগল ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: কল্পনা নয়। হয়তো কোন ভাল জ্বীন আপনাকে সাহায্য করেছে নয়তো বিপদে পড়তেন।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা মাইদুল ভাই।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০২

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল ভাষায় খুব সুন্দর লিখেছেন।
মধুমতি নদীতে নৌকায় করে খুব ঘুরে বেড়িয়েছি।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৬

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ওভালবাসা।

৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৫৫

গোধুলী বেলা বলেছেন: শুরুতেই বুজতে পেরেছিলাম। যাই হোক আপনি নিরাপদে বাসায় ফিরেছিলেন এইটাই অনেক।
আর হা দাদুর বন্ধুর জন্য দোয়া করতে ভুলবেন না।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সমঝদার পাঠকরা পাঠকরা অল্পতেই বুঝতে পারবে এটাই স্বাভাবিক। অনেক ধন্যবাদ প্রিয় গোধূলি বেলা ।

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার মত আমারও হাতে মাত্র আট বছর বয়সে বাজারের থলে উঠেছিল। সেই যে উঠেছিল, আর নামেনি, এখনও না। তবে কথা হলো, আমি নিজে বাজার করতে ভালবাসি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মাস ছয়েকের জন্য গ্রামের বাড়ীতে ছিলাম। আমাদের গ্রামের দুই দিকে দুটো হাট বসতো। দেড় কি,মি উত্তর পূর্বে বুড়ীর হাট, সেটা বসতো মঙ্গল ও শুক্রবারে। তিন কি,মি দক্ষিণ-পশ্চিমে মহিষখোঁচার হাট, সেটা বসতো রবি ও বৃহস্পতিবারে। আমাদেরকে অবশ্য কোন নদী পার হতে হতো না, তবে একটা বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে একটা সরু খাল পার হতে হতো। সেই সাঁকোর নীচ দিয়ে দেখতাম "পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ী, দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি"।
এ রকম ভয়ের কাহিনীর কথা তখনও বেশ শুনতাম। তবে প্রত্যক্ষ তেমন অভিজ্ঞতা হয়নি।
সুন্দর গল্পে ভাল লাগা +

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৮

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ স্যার কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য। গল্পটি বাস্তবতা এবং কিছু কল্পনার সম্বনয়ে লেখা। আপনার অভিজ্ঞতা জেনে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ ও ভালবাসা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.