নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা আতংকের একদিন ( ব্যাক্তিগত ডাইরি)

১৯ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫২

১৮ মার্চ ২০২০

সকাল ৭.৩০, বসন্তের সকাল। ঢাকা শহরে কোকিলের ডাক শোনার সৌভাগ্য অনেকেই হয় না তবে আমি প্রতিদিনই ঘুমে থেকে উঠে কোকিলের কু-কু ডাক শুনতে পাই আজও পেলাম। শাওয়ার শেষ করে অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি এরই মধ্যে আমার মোবাইলে রিং বেজে উঠলো। যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই আমার আম্মার ফোন, এত সকালে আম্মা ছাড়া কেউ ফোন দেয় না।
- হ্যালো আম্মা আচ্ছালামুয়ালাইকুম
-ওলাইকুম আচ্ছালাম, তোরা ভাল আছিস? সবসময় তোদের নিয়ে চিন্তায় থাকি।
শুনলাম থানকুনি পাতা খেলে নাকি করোনা হয় না কথা সত্যি না?
-আম্মা এসব গুজবে কান দেবেন না।

যদিও আম্মার ফেসবুক একাউন্ট নাই তবু কিভাবে যেন আম্মা বেশিরভাগ গুজবের খবরগুলো আমার আগেই পেয়ে থাকেন। কয়েকবছর আগে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে চাদে দেখতে পাওয়ার গুজবটাও প্রথম আম্মার কাছ থেকেই পেয়েছিলাম। সকালটা শুরুই হল একটা গুজবের খবর দিয়ে।

সকাল আটটায় পাবলিক বাসে উঠে পড়লাম। যদিও গণপরিবহন এড়িয়ে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কিন্তু আমাদের মত ছাপোষা চাকুরীজীবিদের জন্য গণপরিবহনই একমাত্র ভরসা। গাড়িতে বেশিরভাগ লোকেরই আমার মত মাস্ক পরা। রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাকা অন্যদিন যে পথ পাড়ি দিতে দুই ঘন্টা লাগে আজ সেখানে একঘন্টায় অফিসে পৌছালাম।

মতিঝিল পৌঁছে দেখলাম আমার সহকর্মীরাসহ অন্যান্য সব ব্যাংক কর্মকর্তারাই মুজিব বর্ষের বিশেষ টি-শার্ট পড়ে ব্যাংকের সামনের রাস্তায় অবস্থান করছেন। চলছে ফটোসেশান। আমিও তাদের সাথে যোগ দিলাম। অন্তত দশ মিনিটের জন্য হলেও ভুলে গেলাম দেশে করোনার মত প্রাণঘাতী ভাইরাস আক্রমণ করেছে। অনেকেই এই আয়োজনের সমালোচনা করছেন এতে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশংকা করছেন।

অফিসে ফিরে জাতির জনকের জন্মদিনের কেক কাটা হল। আমাদের কেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিল না কিন্তু কোন কোন ব্যাংকের কেকের ছবিতে দেখলাম বঙ্গবন্ধুর ছবি যা কেটে কেটে খাওয়া হচ্ছে এটা কি ধরনের সম্মান দেখানো? কোন কোন ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে যে মূর্খ লোকেরা বসে আছে তা এই কেক দেখেই বোঝা যায় কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবেই এটা করা হয়েছে।

আমার কর্মস্থল ব্যাংকের ব্রোকারেজ হাউজ সেকশনে আমার কাজ শেয়ার মার্কেটে। তাই সকালে সাড়ে দশটার মধ্যেই নিজের সীটে বসে পড়লাম। একেএকে আমার ক্লায়েন্টরা আসতে শুরু করেছেন। সবাইকে হাত ধুয়ে আসতে অনুরোধ করলাম, সবাই আমার অনুরোধ রক্ষা করলেন। শুরু হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন। গত এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সুচকের অবস্থা ভয়াবহ। গত কয়েক বছর ধরেই ঢাকার শেয়ার বাজারের অবস্থা খুবই নাজুক। তারমধ্যে গত এক সপ্তাহে সুচক পড়েছে প্রায় ৮০০ পয়েন্টের মত। কোনভাবেই সূচকের এই নিন্মমুখী প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না। গতকাল সকালে শুরুতে ১০০ পয়েন্ট বাড়লেই দিনশেষে ১৫০ কমে যায়। কোনভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না সুচকের এই নিন্মমুখী প্রবণতা। এখনই ঢাকার শেয়ার বাজার অন্তত এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেওয়া জরুরি। আমরা যারা চাকুরী করি তারা মাস শেষে একটা নিদিষ্ট অংকের টাকা বেতন হিসেবে পাই কিন্তু আমাদের বিনিয়োগকারীদের অবস্থা একটু ভাবুন?

দুপুর বারোটা থেকে অপেক্ষা করছিলাম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের নতুন কি খবর আসে তা দেখার জন্য। বিকাল সাড়ে তিনটার পেলাম ভয়াবহ খবর একজনের মৃত্যু আরও নতুন চার জনের আক্রান্ত হওয়ার । আমার সহকর্মীদের সকলের মুখে ভয় এবং আতংকের ছায়া দেখতে পেলাম।

অফিস শেষ করে বাসায় ফেরার পথে দেখলাম রাস্তাঘাট একেবারে ফাকা, গাড়িতে অর্ধেকের বেশি সীট ফাকা সকলের চোখেমুখে আতংক আর বিষাদের ছায়া। লাজফার্মার সামনে দেখলাম ৩০-৪০ জনের লম্বা লাইন এরা সবাই হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনার জন্য দাড়িয়ে আছেন।
নিজের জন্য একটা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনে বাসায় ফিরে এলাম।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫৯

নীল আকাশ বলেছেন: এটাই বাংলাদেশ। আর আমরা এভাবেই চলবো।

১৯ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৬

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ধন্যবাদ ও শুভকামনা, নিরাপদে থাকুন এই প্রত্যাশা রইলো ।

২| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
একজন লোক মারা গেছে আর ৪/৫জন আক্রান্ত হয়েছে তাতে প্যানিক হবার
বা আতকিংত না হয়ে কি ভাবে নিজে এবং নিজের পরিবারকে সুরক্ষা করবে
সে দিকে সবার নিজ নিজ দ্বায়িত্ব পালন করা জরুরী। সবাই সচেতন হলে
করোনা আমাদের কিছু ক্ষতি করতে পারবে না। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো
চলুন সবাই।

১৯ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ নুরু ভাই, সচেতনতাই সবচেয়ে বড় সমাধান, নিজে সাবধানে থাকুন সবাইকে সাবধানে থাকতে বলুন।

৩| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: দেশপ্রেম আর মানবপ্রেম যদি সামান্যও থাকতো এই মানুষের বাচ্চারা দেশে আসতো না। দেশকে বিপদের মুখে ফেলতো না।

১৯ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৩৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কিচ্ছু বলার নেই। নিরাপদে থাকুন নিজের পরিবারকে নিরাপদে রাখুন।

৪| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:০৭

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: কঠিন অবস্থা। শুভকামনা

১৯ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৪০

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ, নিরাপদে থাকুন।

৫| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৫৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ব্যাক্তিগত ডাইরিটা পড়তে ভালোই লাগলো।

লোকজনের ভয় পাওয়ার দরকার আছে। বিদেশ ফেরত আর দেশে থাকা ছাগল দু'একটাকে বড় ধরনের পানিশম্যান্ট দেয়া দরকার। অবশ্য আরো বড় ছাগলেরাই তো ক্ষমতায়.....কারে কি কমু!!! :(

১৯ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:২৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: প্রবাসীরা যখন দেশে আসেন তখন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করেন না এটা আসলেই ঠিক নয়, ভাল থাকুন সাবধানে থাকুন।

৬| ১৯ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সাবধানে থাকুন।

১৯ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৫১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সকলের সচেতনতাই প্রত্যাশা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.