![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ষড়ঋতুর মাঝে দুটা ঋতু আমার খুব প্রিয়৷ একটা হল বসন্ত আরেকটা বর্ষা৷ বসন্তে প্রকৃতি নতুন রং রূপে সেজে ওঠে একবার আর বর্ষায় বৃষ্টির জলে ধুয়ে প্রকৃতি আরো একবার স্বরূপে স্ববর্নে সেজে ওঠে৷ আর বাংলার প্রকৃতির এই সাজসজ্জাই খুব প্রিয় আমার৷
পরদিন খুব সকালে উঠলাম৷ কারন নীলগিরি যাওয়ার প্লান আজ৷নীলগিরি শুনেছি বান্দরবান শহর থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলো দুরে আর যেতে হয় নাকি সাধারনত চান্দের গাড়ি চড়ে৷ পকেটে টাকাও বেশি নাই আর আজই ফিরতে হবে চিটাগাং এ৷ অবশ্য এ সবকিছু মাথায় রাখলে নীলগিরি যাওয়া হবে না৷ আর নীলগিরি যাওয়া না হলে বান্দরবান ট্যুর মোটামুটি ব্যর্থ ৷ তাই আপাতত সবকিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে আমরা চারজন চলে আসলাম বান্দরবান শহরের হিলবার্ড নামক স্থানে৷ এখান থেকে নীলগিরির পথে চান্দের গাড়ি যায়৷ এসব গাড়ি চৌদ্দ পনেরো জন নিয়ে চার-পাঁচ হাজার টাকায় নীলগিরি যায় এবং আসে৷ এত টাকা শুনেতো পুরো হতাশ হয়ে গেলাম৷ কারন সবার মিলেও এত টাকা নাই আমাদের কাছে৷ আর কিছুক্ষন পর শেষ গাড়ি যাবে নীলগিরির পথে৷ যখন আশা প্রায় ছেড়েই দিলাম তখন দশজনের এক পার্টি আসলো নীলগিরি যাবার জন্য৷ হাফ ছেড়ে বাঁচলাম আর উঠে পড়লাম চান্দের গাড়িতে৷ এক দম্পতিকে দেখলাম মনে হয় হানিমুন কাপল নীলগিরি যাবে কিন্তু দুজনের যাওয়ার মত কোন যানবাহন পাচ্ছে না বলে বেশ হতাশ মনে হয় ৷ মায়া লাগলো তাদের এই অবস্থা দেখে৷ আমাদের গাড়িতে জায়গা থাকলে আমাদের সাথে যাবার আমন্ত্রন জানানো যেতো৷ ধুর একটু জায়গাও অবশিষ্ট নাই! সবাই উঠে পড়তেছে৷ আর আমি যখন বসে বসে সুইট কাপলের দিকে তাকিয়ে এসব ভাবছিলাম আর ভাবছিলাম এরকম আমি কখন আসবো তখনই চান্দের গাড়ি স্টার্ট হল আর আমাদের যাত্রা শুরু হল চান্দের দেশে মানে নীলগিরির পথে৷ শহর থেকে বের হতেই আস্তে আস্তে পথের দুপাশে পাহাড়ী বন বাড়তে লাগলো আর রাস্তা সোজা থেকে সর্পিল হতে থাকল৷ আকাঁবাঁকা পথের পাশে মাঝে মাঝেই গভীর খাদ৷ একটু ভুল হলেই মৃত্যুর হাতছানি ভেবে হালকা ভয়ই লাগলো ৷এরই মাঝে আমরা কজন গান ধরলাম৷ কখনো জাগরনের গান কখনো কমেডি বা রোমান্টিক গান চললো৷ সবার চেয়ে আমাদের চারজনের বয়স কম ছিল বলেই হয়ত মজাও বেশি করছিলাম আমরা তারপর আবার আমাদের ভ্রমনের মাঝে ঘরপালানো একটা ভাব আছে৷ কোন পর্যটকদেরগাড়ী ওভারটেক বা পাশ দিয়ে গেলেই ত্রাহি চিৎকারে ভ্যাবাচ্যাকা খাচ্ছিল পর্যটকরা৷ তবে মজা বেশিক্ষন স্থায়ী হল না৷ আকাঁবাঁকা লম্বা পথের জার্নি বলেই কিছুক্ষন পর গাড়ির ইন্জিনের শব্দ আর সা সা ছাড়া কিছুই শোনা যাচ্ছিল না আর৷ মাঝে চিম্বুকে থামলো আমাদের গাড়ি৷ চিম্বুকে উঠে যত দূর চোখ যায় শুধু সবুজ পাহাড় পাহাড়৷ হালকা কুয়াশার মাঝেদূরে সাংগু নদীটা যেনো একটা রুপালী ফিতা৷অনেক পর্যটকের সমাগম চিম্বুকের উপর৷ এক বিদেশি দম্পতি তাদের কিশোর কিশোরী সন্তান নিয়ে চিম্বুক দেখতে এসেছে৷ তারা চিম্বুকে এসে বেশ মুগ্ধ তা তাদের মুখের ভাব দেখেই প্রকাশ পাচ্ছিল৷ কিছুক্ষন পর আমরা আবার চান্দের গাড়িতে নীলগিরির দিকে যাত্রা শুরু করলাম৷মাঝে মাঝে পাহাড়ী বসতভিটে আর তাদের জীবনযাত্রা চোখে পড়ছিল৷
©somewhere in net ltd.