নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাব্যগ্রন্থ : ট্রাফিক সিগন্যালে প্রজাপতি, না গৃহী না সন্ন্যাসী; \nরম্যগল্পগ্রন্থ : কান্না হাসি রম্য রাশি। \nছোটদের বই : রহস্যে ঘেরা রেইনফরেস্ট \nইতিহাস গ্রন্থ: শেরে বাংলা ও যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন কিছু দুষ্প্রাপ্য দলিল

তরুন ইউসুফ

ভিজলে বলিস ই্চ্ছেমত তোর শরীরে স্নান হবো

তরুন ইউসুফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মকথন

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:১৭

আর পারছি না । ভিতরে অনেক কথা জমে জমে এত বড় পাথরের আকার ধারন করেছে যে, সেই বোঝা বহন করা সম্ভব হচ্ছে না আর। নিজেকে একটু মুক্ত করা দরকার। তাই লিখতে বসলাম।
একটা গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। গল্পটি মহামতি সক্রেতিসকে নিয়ে। কোথায় পড়েছি মনে নেই। হুবাহু বয়ানও করতে পারব না। শুধু গল্পটির সারকথা বলছি-
“ সক্রেতিস এর কোন এক শিষ্য সক্রেতিস কে নিয়ে একটি রকমারি জিনিসের দোকানে গেলেন গুরুকে সুন্দর সুন্দর জিনিস দেখাবেন বলে । কিন্তু সেইখানে গিয়ে শিষ্য পড়লেন চরম অস্বস্তিতে কারন সক্রেতিস যাই দেখছিলেন তাতেই তার চোখ ঝলমল করে উঠছিল। শিষ্য ভাবলেন সক্রেতিস এতদিন কিছু দেখেননি তাই তার মধ্যে কোন মোহ জন্মায়নি কিন্তু আজকে এতকিছু দেখে তার মধ্যে মোহ জন্মেছে তাহলে সক্রেতিসও বস্তুগত জিনিসের লোভে পড়ল! একটু পড়ে সক্রেতিস শিষ্যকে ডেকে আনন্দিত গলায় বললেন দেখো দেখি কাণ্ড পৃথিবীতে কত আজব জিনিস আছে কিন্তু মজার ব্যাপার হল কোন কিছুরই আমার প্রয়োজন নেই।“
সক্রেতিস দার্শনিক ছিলেন। প্রয়জনের বাইরে তাঁর বস্তুগত তেমন কোন চাহিদা ছিল না। নিজের ভাবনা দিয়ে, মনের সৌন্দর্য দিয়ে যে জগত তিনি গড়েছিলেন সেই জগতের মধ্যে বসবাস করতেন। বাইরের কলুষতা বস্তুগত মোহ তাদের চিন্তাকে কখনো প্রতারিত করতে পারেনি।
কিন্তু সাধারন মানুষ এই যেমন আমি যখন বাইরে বের হই চারিদিকে হাজারো লোভনীয় জিনিসের পসরা দেখি। যেন চারিদিকে চকচকে রঙিন লোভ। আমার চোখও চকচক করে ওঠে । হাজারো বাসনা আমার চিন্তাকে গ্রাস করে ফেলে। আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলি । মনগত ভালবাসা মায়া স্নেহ সবকিছু আমার কাছে ম্লান হয়ে যায় । আমি তুচ্ছ জিনিসটাকে বড় করে নিজের ভেতরটাকে মারিয়ে দেই ।
( গাড়ি দেখলেই ইচ্ছা জাগে কিনা ফালাই)
একটি মনোমালিন্য
একটা গল্প বানাই আপনাকে দিয়ে । আপনার মেয়ে বন্ধুটি যে আপনাকে ভীষণ ভালবাসে তাকে নিয়ে বেশ সুখেই আপনার দিন কাটছিল । হঠাত করে আপনাদের সাথে আরেকটি জুটির পরিচয় হল । আপনি লক্ষ্য করলেন ছেলেটি প্রতিদিন নতুন নতুন শার্ট পড়ে আসে এবং জানতে পারলেন শার্টগুলো তাঁর মেয়ে বন্ধুর গিফট করা । আপনি এই বিষয়টি নিয়ে আপনার মেয়ে বন্ধুর কাছে গল্প করলেন । সে মজা করে গল্পটি শুনল এবং বলল তোমাকেও একটি শার্ট দেয়া দরকার । আপনি দ্বিতীয় দিন একই গল্প করলেন এবং সে গল্পটি শোনার পর একই কথা বলল । আপনি তৃতীয় দিন একই ধরনের গল্প করতে গিয়ে দেখলেন মেয়েটির মুখ শুকনো এবং সে গল্পটি শুনতে চাচ্ছে না । আপনি ভাবলেন বা রে! মুখ শুকানোর কি আছে আমি তো শার্ট গিফট চাইনি । নিঃসন্দেহে আপনার ভাবনা ঠিক । আবার আপনি যখন শার্ট বিষয়ক গল্প করেছেন আপনার বন্ধুটি ধরেই নিয়েছে গিফট বিষয়টি আপনার ভাল লেগেছে এবং সেজন্য আপনাকে শার্ট গিফট করতে চেয়েছে । কিন্তু কোন কারনে সে পারছেনা বলে সে কষ্ট পাচ্ছে । সুতরাং এটাও ঠিক আপনি যখন শার্ট বিষয়ক কোন গল্প করেন তখন তাঁর নিজের অক্ষমতার কথা মনে পড়ে এবং তাঁর ভেতরটা রক্তাক্ত হয় । আপনি বুঝতেই পারলেন না তাঁর কষ্টের কথা । মনে মনে বললেন ভালোবাসার গুষ্ঠি কিলাই ।
কি চাই
আসলে জানেন, মানুষ কি চায় নিজেই জানে না । বলবেন পুরান কথা । ঠিক, আবার সত্য কথাও বটে । এইযে আপনি আমি আমাদের চারপাশের সবাই প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু চাই । না পেলে হতাশ হই । আবার যখন কোনকিছু পাই চেয়ে দেখি যা চেয়েছিলাম আসলে সেটা আমার চাওয়াই ছিল না । যখন শরীর ছাড়া প্রেম পাই তখন ভাবি সবকিছুই যদি না দিলা তো কিসের প্রেম । আবার শরীরের চাহিদা মিটে গেলে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ি তখন ইচ্ছে জাগে একটু মানবিক প্রেম পেতে । আর যখন দুটোই পাই তখন মনে হয় ব্রহ্মচারী হওয়াই ভাল ছিল ।
শেষ কথা
শুরু করেছিলাম গল্প দিয়ে শেষ করছি ঘটনা দিয়ে । আমার ছোট খালু, জানতে পেরেছি উনি ব্রেন ক্যানছারে আক্রান্ত । কিছুদিনের মধ্যেই মারা যেতে পারেন । কতই আর বয়স । বড়জোর পঁয়তাল্লিশ হবে । উনি কিন্তু জানেন ওনার মাথার ভিতরে একটি টিউমার হয়েছে সেটা অপসারণ করলে ভাল হয়ে যাবেন । তাঁর কথা শুনলে, চোখের চাহনি দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন তিনি ভীষণ ভাবে বাঁচতে চান । তাঁর সমস্ত কিছুর বিনিময়ে আরও কিছুদিন সন্তান, স্ত্রী, স্বজনদের ভালোবাসার মাঝে থকতে চান । আবার আমরা মাঝে মাঝেই দেখতে পাই অনেক মানুষ সুস্থ সবল, সবকিছুই আছে কিন্তু একটু ভালবাসা নেই বলে ইচ্ছে করে মরে যাচ্ছে । কোথায় যেন পরেছিলাম ভালবাসা মানুষের জীবনকে মূল্যবান করে । তাইত মনে হয় । তাহলে কি চাই, ভালবাসা কিন্তু কিভাবে ? তা তো জানিনা ।
শেষ করছি, কিন্তু শেষ করার আগে………..নেড়ি কুকুর গুলো দেখেছেন নিশ্চয়ই । শক্ত সামর্থ্য কারও দ্বারা তাড়া খাওয়ার পর যখন দৌড়াতে না পারে তখন দাঁত বের করে রুখে দাঁড়ায় ।আমার অবস্থা ঠিক তাই । যদি বলেন কে তাড়াচ্ছে আপনাকে । নিজেই নিজেকে তাড়াই প্রতিনিয়ত । নিশ্চয়ই মনে মনে গাল দিলেন বেটা উল্লুক । খালি ফাইজলামি

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.