নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাব্যগ্রন্থ : ট্রাফিক সিগন্যালে প্রজাপতি, না গৃহী না সন্ন্যাসী; \nরম্যগল্পগ্রন্থ : কান্না হাসি রম্য রাশি। \nছোটদের বই : রহস্যে ঘেরা রেইনফরেস্ট \nইতিহাস গ্রন্থ: শেরে বাংলা ও যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন কিছু দুষ্প্রাপ্য দলিল

তরুন ইউসুফ

ভিজলে বলিস ই্চ্ছেমত তোর শরীরে স্নান হবো

তরুন ইউসুফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথ

০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:২৮



কেউ যদি আমাকে এখন জিজ্ঞেস করে তুমি কি হতে চাও, আমি দ্বিতীয় কোন চিন্তা না করেই বলে দিতাম রবীন্দ্রনাথ হতে চাই। ইচ্ছেটার কথা শুনে সবাই মুচকি হাসবেন এবং সেটাই স্বাভাবিক। কারণ রবীন্দ্রনাথের মতো জ্ঞান, মেধা, প্রাজ্ঞতা, দৃষ্টিভঙ্গি কোনটাই আমার নেই। শুধু নেই বললেও ধৃষ্টতা হয়ে যায়। বলতে হবে এক চুল পরিমাণও নেই। তারপরও কেউ যদি দুইটা অপশন দেয় যার একটা রবীন্দ্রনাথ হওয়া অন্যটা পৃথিবীর বাদশাহি আমি আবারো বলছি আমি রবীন্দ্রনাথ হতে চাইতাম।
রবিঠাকুরকে নিয়ে ছোটবেলার বেশ কিছু স্মৃতি আছে আমার। তাঁর বাঁকে বাঁকে চলা ছোটনদী, তাঁর মা রাজি থাকলে মাঝি হওয়ার ইচ্ছে কিংবা মাকে নিয়ে অনেক দূর যেতে গিয়ে ডাকাতের কবলে পরা আবার সেখান থেকে মাকে উদ্ধার করা আমাকে দারুনভাবে রোমাঞ্চিত করত। আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে পড়তে পড়তে ভাবতাম আমার গাঁয়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট গারুদহটার কথাই বুঝি উনি লিখেছেন। কতদিন উদাস মনে নদীর পাড়ে বসে কবিতা লেখার চেষ্টা করতাম। বড় চমৎকার সে স্মৃতি।
আমরা সবাই জানি রবীন্দ্রনাথ একই সাথে কবি, দারসনিক,উপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সমাজ সংস্কারক, ভাষাবিদ আরও অনেক কিছু। সাধু পুরুষ বলতে যা বুঝায় রবিঠাকুর সেটাই ছিলেন। শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনী নিয়ে যেমন একটি সাহিত্য ধারার সৃষ্টি হয়েছে তেমনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী নিয়ে সেই ধরনের সাহিত্য ধারা সৃষ্টি করা সম্ভব বললে অত্যুক্তি করা হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। রবীন্দ্রনাথ সাধনা দিয়ে, ভালবাসা দিয়ে লিখেছেন এবং তার ফলশ্রুতিতে বাংলা সাহিত্য শুধু সমৃদ্ধই হয়নি, বিশ্বদরবারে পোঁছে গেছে। রবীন্দ্রনাথ বাংলা সংস্কৃতিতেও নানা আচার যোগ করেছেন। বাংলা ভাষায় যোগ করেছেন নতুন নতুন শব্দ। তিনি শুধু শিল্প স্রষ্টাই ছিলেন না, শিল্প সংগ্রাহকও বটে। লালন ফকিরের যে গানগুলো আমরা এখন শুনতে পারি তা তাঁরই সগ্রহের ফল। কুষ্টিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ঘুরে তিনি গানগুলো সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি শুধু শিল্প নিয়েই কাজ করেন নি । সমাজের কাছে, মানুষের কাছে তাঁর দায়বদ্ধতা ছিল। তাইত তিনি কৃষকদের দুর্দশা ঘুচানোর জন্য নিজ জমিদারির অর্থ থেকে ফান্ড গঠন করলেন যার আধুনিক ফসল আজকের এই কৃষি ব্যাংক।
কি দেননি আমাদের রবীন্দ্রনাথ। আমাদের মনোজগতের যে ভাবনাগুলো সব ভাবনার সাথেই যেন উনি পরিচিত ছিলেন। আমাদের ভাবনার প্রতিটি মুহূর্ত রবীন্দ্রনাথ দিয়ে প্রকাশ করা যায়। যেমন ধরুন বৃষ্টি দিনের জন্য উনি লিখলেন
“ আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে”
অথবা “পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে”
অথবা ছোটদের জন্য লিখলেন
“বৃষ্টি পরে টাপুর টুপুর
নদে এল বান”
এরকম আরও কত গান, কবিতা, লেখনি দিয়ে রবীন্দ্রনাথ বর্ষা এবং বৃষ্টিকে প্রকাশ করেছেন। শুধু বর্ষাই নয় গ্রীষ্ম থেকে শুরু করে বসন্ত পর্যন্ত ছয়টি ঋতুই তাঁর লেখনির মধ্য দিয়ে আমাদের সামনে মূর্ত হয়ে ফুটে উঠেছে।
এবার মানব মনের বিভিন্ন ভাবনার কথা বলি। যেমন প্রেমিক প্রেমিকাকে মনের কথা বলতে পারছে না, উপরন্তু তার সামনে যেতে লজ্জা পাচ্ছে। রবিঠাকুর লিখলেন
“সেই ভাল সেই ভাল
আমারে নাহয় না জানো
দূরে গিয়ে নয় দুঃখ দেবে
কাছে কেন লাজে লাজান”

আবার ধরুন প্রেম হয়ে গেছে প্রেমিকাকে হারানোর ভয়ে অস্থির প্রেমিক। রবীন্দ্রনাথ লিখলেন
“জয় করে তবু ভয় কেন তোর যায় না
হায় ভিরু প্রেম হায়রে”

আবার যখন প্রেমিকাকে বিদায় দিতে হচ্ছে আমরা ফিরে যেতে পারি শেষের কবিতার লাবন্যের প্রতি অমিতের সেই বিদায় বানীর কাছে,
“ তোমারে যা দিয়েছিনু
সে তোমারি দান
গ্রহন করেছ যত
ঋণী তত করেছ আমায়
হে বন্ধু বিদায়”

শুধু প্রেমের ক্ষেত্রেই নয় সঙ্কোচের বিহ্বলতায়, নিঃশেষে প্রান দান করা, যুদ্ধের সময় শান্তি সবকিছুই রবীন্দ্রনাথ তাঁর কলমের আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। নিঃসন্দেহে একথা বলা যায় যে, রবীন্দ্রনাথ শুধু ব্যক্তিই নন, উনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি। উনি একটি প্রতিষ্ঠান। দর্শনের ক্ষেত্রে সক্রেতিসের আবেদন যেমন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক, তেমনি বিশ্বসাহিত্যে বিশেষ করে বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের আসন সকলের উপরে। এই মহাপুরুষের জন্মদিনে তাঁর প্রতি রইল শুভেচ্ছা আর মুগ্ধতা।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৫১

শান্তির বার্তা বলেছেন: রবী ঠাকুরের মাঝে হারিয়ে গেলাম।

০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:৫১

তরুন ইউসুফ বলেছেন: রবিঠাকুর তেমনি একজন যার মাঝে হারিয়ে যাওয়া যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.