![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিভীষিকা। ভয়ঙ্কর।রণকবি নজরুলের ‘দুরন্ত পথিক’এর বিভীষিকা।ছাড়ে না কাউকে।ছাড়েনি সবুজ প্রাণের অকুতোভয়ী পথিককেও।পথিকও ছাড়েনি বিভীষিকাকে।পথিকের মৃত্যু সহস্র প্রাণের উদ্বোধন করবে।আর এ সান্ত্বনায় পথিক নিজের তরতাজা প্রাণটি বিলিয়ে দেয়।ব্যাকরণও বিভীষিকা আজকালকার বাচ্চাদের কাছে।
‘দুরন্ত পথিক’ এর বিভীষিকা পথিককে বলা-কওয়ার মাধ্যমে কতল করে।কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের ব্যাকরণ বিভীষিকা কার্বন-মনো-অক্সাইডের মতো নীরবে নিভৃতি দিচ্ছে।বাংলা একাডেমি বানান নিয়ে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরি করলেও ব্যাকরণ বিষয়ে তারা তেমন মুখ্য কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছে না।যদিও না বাংলা একাডেমি থেকে ‘প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ’ নামে দুই খণ্ডের ব্যাকরণগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে কয়েক বছর আগে। এই আকরকরণে পাণ্ডিত্য জাহির করেছেন দুই বাংলার বৈয়াকরণরা।উচ্চতর পর্যায়ের জন্য গ্রন্থদ্বয় সুপ্রশিদ্ধ। কিন্তু সমস্যাটা হলো প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও হাইয়ার সেকেন্ডোরি পর্যায়ে।সন্ধি, সমাস, প্রকৃতি-প্রত্যয়, উপসর্গ, অনুসর্গ আরো কতো কি।যা সেকেন্ডারিতে পড়ানো হয় তা আবার হাইয়ার সেকেন্ডারিতেও.... বলা যায়, যা বট তা’ই বৃক্ষ।আচ্ছা যদি তা’ই হয় তবে শিক্ষার্থীদের বেশী জানার কথা.... কিন্তু যিনি জজ তিনি’ই সাহেব।সমাস কঠিন....প্রাদি, উপপদ, নিত্য, অলুক আরো কতো কি। প্রকৃতি-প্রত্যয় আরো কঠিন....ইৎ, উৎ, অনুবন্ধ, গুণ, বৃদ্ধি, সম্প্রসারণ উহ্....।ব্যাকরণ ক্লাসে স্টুডেন্ট পাওয়া যায় না।না জানি ভট্টোজি দীক্ষিতের ‘সিদ্ধান্তকৌমুদী’ কিভাবে বিদ্যাসাগর প্রমুখ শ্রেণি আয়ত্ত করেছিল।আর বিদ্যাসাগরের ‘ব্যাকরণ কৌমুদী’ কিভাবে তাঁর ছাত্র...ছাত্রীরা আয়ত্ত করেছিল।দিন দিনান্তে আমরা কেমন জানি বেয়াড়া হয়ে যাচ্ছি।পণ্ডিতবর্গের উদাহরণ টানলে বাচ্চারা নাকের ডগা লাল করে কি জেনো বলতে চায়।হয়তো এ দিন পাল্টে গেছে। দিনটি ছিল শাদাকালো আর এখন ফকফকা সব কিছু ধবধবা।ই-কমার্সের দৌরাত্মে আজ মানবিকতা অনবরত গোল হজম করছে।এখানে বাংলা ভাষার ব্যাকরণের স্তম্ভ বড়ই ন্যুজ্ব।তবুও বলব জাতিকে ভাষার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা আনায়নের লক্ষ্যে ব্যাকরণচর্চা করতে হবে।কেননা ভাষাকে জিয়ে রাখতে হলে এ চর্চা ব্যতি অসম্ভব।এর জন্য আলাদা একটি সমন্বিত ব্যাকরণ কমিটি গঠন করত প্রাইমারি থেকে এর প্রায়োগিক দিক নিয়ে পঠন-পাঠন করানো উচিত।ব্যাকরণের জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগ অত্যাবশ্যাক।শোনা যাচ্ছে চলতি বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায়োগিক ব্যাকরণ চালু হতে যাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য সুসংবাদ।এর মধ্য দিয়ে চেষ্টা করতে হবে ব্যাকরণভীতি যেনো দূর করা যায়। একটি কাল্পনিক ঘটনা দিয়ে শেষ করবো।মূর্খ কালিদাস স্বয়ম্ভরা উৎসবে বিজয়ি হয়ে বিয়ে করলো এক রাজকন্যাকে।বিয়ে পরবর্তী রাজকন্যা খোশ গপ্প করছে কালিদাসের সাথে।আর অমনি শুরু হলো বৃষ্টি।বৃষ্টিতে বাইরে কি যেন ডাকছে....
রাজকন্যা : কো রইতি (কী ডাকছে)
কালিদাস : উট্ট (উটপাখি)
রাজকন্যা : কিমিতি....কিমিতি....(কী বলছো....কী বলছো)
কালিদাস : উষ্ট (উটপাখি)
তখন রাজকন্যা বললো...
উষ্ট্রে লুম্পতি রংবা ষম্বা
তাস্বৈ দত্তা নিড়ম্ব নিতম্বা....
রাজকন্যা সংস্পর্শে মূর্খ কালিদাস বিদ্বান হয়ে ওঠলো।আর কালিদাসকে রাজকন্যা যদি পাণিনি ব্যাকরণের কঠিন কঠিন শ্লোক আয়ত্ত করাতে পারে আমরা কেনো পারবো না।আমাদের ব্যাকরণে কঠিন তো কিছু নেই।
©somewhere in net ltd.