![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনুগল্প : ঊষা ও সূর্য
ওর নাম ইল। বন্ধুমহলে ইলা। স্কুলের রেজিস্ট্রি খাতায় অবশ্য অন্য নাম।
ইল ইলা’র বাবার দেয়া নাম-ঊষা। ঊষাকালে জন্ম বলে এমন নামকরণ।
প্রমোশন খাতায় দুটো নাম দেখে দ্বিধায় পড়েন স্কুলের সেকেন্ড মাস্টার হরহরিবাবু।
অভিভাবক ডেকে নাম শুধরানোর কথা বলে-ইল ইলা ঊষা সূর্য’কে।
মা’র অসুস্থতা এবং অপারগতার কথা বলে বাবা ঠিক করে-
ঊষা সামান্ত।
ক’দিন পর মা প্রকৃত অভিভাবকের দোহায় দিয়ে ঠিক করে যায়-
সূর্য সামান্ত।
নাম জটিলতায় প্রমোশন আটকে পড়ে। আসল নাম ঠিক না হলে প্রমোশন হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় স্কুল কমিটির বড়কর্তা।
কথার বরখেলাপ হলো না।
অতঃপর ডিমোশন।
স্কুলের সহপাঠিরা তার ছবি স্কেচ করে। মাথায় শিঙ গজিয়ে আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের জিন বানিয়ে দেয়। কখনো নাকফুল। কানফুল। আবার কখনো উসকো চুলে বেণী ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রমোশন পাওয়া বন্ধুরা কবিতা বানিয়ে টিফিন ছুটিতে সবাইকে পড়ে শোনায়।
অবশ্য ব্যঙ্গ কবিতা।
মা-বাবা সূর্য, ঊষা রাখলেও ইল নামটি যে কে রেখেছে এ রহস্যের জট খুললো সহসা।
- ইল, তুই আবার এই ক্লাসে!
বাক্যটি বাংলার হেড পণ্ডিত বশিষ্ঠদেবের করা। সুতরাং.....
নাম নিয়ে মা-বাবার দ্বৈত মত থাকায় ইল নামটিই তার পছন্দের ছিল। বন্ধুরা ইলা বললেও সে বড়ো বেশি নারাজ হতো না।
এভাবে বছরান্তে আবার প্রমোশন পরীক্ষা।
ক্লাস টিচার বশিষ্ঠদেব। এর একটা বিহিত করতে চান।
লোক মারফত অভিহিত করেন, ইলের মা-বাবা’কে। এবার তারা দু জনেই আসলেন। তবে এক সাথে নয়। সঙ্গে করে আরো দু জনকে নিয়ে।
- আপনাদের আদরের সন্তান ইলের জীবন ধ্বংসের পেছনে আপনারা শিক্ষক দম্পতিই দায়ী।
চটে ওঠলেন-দু জনেই।
‘ইল’ নামটি কে রেখেছে? কোরাস কণ্ঠে রাগান্বিত স্বরে প্রশ্ন তুলে শিক্ষক দম্পতি।
- আমি। হেড পণ্ডিত গাম্ভীর্যে উত্তর করে।
তৎক্ষণাৎ একের ধেয়ে আসা আগুনে হালকা পানির ছিটা পড়লেও অন্যজন অস্ফুটে হাওয়ার কানে কী যেনো বলছে।
তা-ই বলে ‘ইল’। চাপাস্বরে আওয়াজ আসে ইথারে ভেসে।
- মাস্টার মশায়, তার নাম ঊষা’ই থাক। বিবাদ তুলে ইলের মা।
- মোটেও সে ঊষাকালে জন্মেনি। রাঙা অরুণের ছেঁকা পেয়ে প্রশববেদনা প্রশমিত হয়ে ওর জন্ম হয়। সূর্য তখন নরম তুলতুলে। হাতে নিয়ে আদর করার মতো।
সূর্য নামটিই থাকবে মশায়।
- বড়ো আহ্লাদ করে নামটা রেখেছি। সূর্য কিনা প্রয়াগের পরাক্রমশালী রাজা পুরুরবার’ই আরেক নাম। আদিগ্রন্থ ঋগ্বেদের স্পষ্ট বয়ান।
মাস্টার মশায় বললেন-
সূর্য ওঠার আগে ঊষা; কিন্তু সূর্য উদিত হলে কি ঊষা থাকে ?
আলবদ সত্য...থাকে না।
উত্তর করলেন ইলের মায়ের সঙ্গীটা।
ইলের বাবা’র সঙ্গিনীটা ঠোঁট ফুলিয়ে কী যেনো বলতে চেয়ে চেপে গেলেন।
শেষ পর্যন্ত ইলই ফয়সালা করলো তার নাম ‘ইল’ই থাকবে।
তবে ঊষা নামটি তার বড়ো পছন্দের।
২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৪
স্মার্ত স্বাতী বলেছেন: পৌরাণিক চরিত্রের সংমিশ্রিণ হেতু বুঝতে একটু কষ্ট হবে হয়তো। চেষ্টা চালাচ্ছি ভালো করবার। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, হাসান মাহবুব ভাইকে।
৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৩
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভালোই লেগেছে| বাক্যগুলো কাব্যিক
৪| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৪
স্মার্ত স্বাতী বলেছেন: ধন্যবাদ। আরণ্যক রাখাল
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগে নাই।