নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাদা মনের সাদা কথা বলি

সাদা মনের সাদা কথা বলি

সাদাকালো টেলিভিশন

পৃথিবীতে দুধরনের মানুষ আছে। এক, যারা নিজের দুঃখ কষ্টের কথা অনায়াসে আরেকজকে বলতে পারে আর আরেকদল যারা নিজের কষ্টের কথা কোন দিনই বলতে পারেনা, এরা নিশ্চুপ থেকেই নিজেদের কষ্টগুলো আশেপাশের সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। এই দুটির বাইরেও আরেকটি অসংজ্ঞায়িত গোত্র আছে যার বাসিন্দা আমি, একজন পশু ...

সাদাকালো টেলিভিশন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্পঃ চিত্রাপারুল

০৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭





আমি আজও জানালায় বহুদূর ... শুনি কান পেতে বুকে বেজে ওঠা চেনা সুর ...



সকালে গানটা শুনছিলাম এলোমেলো বিছানায় উপর শুয়ে । ঘুমের জড়তা কাটেনি তখনো । কেউ একজন হোস্টেল এর টিনের দরজায় ধাক্কা দিল , বুঝলামনা কে । সারে ১০টা বাজে , হোস্টেল এর বাকি সবাই তো যে যার ক্লাস এ চলে গেছে । আমিই একমাত্র ছাত্র হোস্টেল এর মধ্যে নিয়মিত ফাকি দিই , ক্লাস করিনা । পরীক্ষার আগের দিন ক্লাস এ যায় , তাও আবার প্রশ্ন আনতে । চোখের ময়লা মুছতে মুছতে এগিয়ে গেলাম গেটের দিকে । গেট খুলে যাকে দেখালাম তাকে দেখে অবাক হবার কিছু নেই । এসেছে পিয়ন ।



- চিত্র কে ??

- আমিই চিত্র । কেন বলুন তো !

- আপনার নামে চিঠি এসেছে

- চিঠি !! কে পাঠিয়েয়ছে ?

- জানিনা , ঠিকানা নেই । ধরেন ,আমি যায় ।





চিঠিটা না খুলে ফ্রেশ হলাম নিলাম আগে । মা-বাবার সাথে দুই দিন আগেই ফোনে কথা হয়েছে । এই দুই দিনের মাঝে তাদের চিঠি আসার কথা না ,পাঠালে ফোন এ বলে দিত । তাহলে কে পাঠিয়েছে !! সন্ধি ?? না ও তো আগের চিঠিতে বলেছে আগামি দুই মাস অনেক ব্যস্ত থাকবে । কে তাহলে !! ভাবতে ভাবতে নাস্তা করে নিলাম একটি বন রুটি আর ছোলার ডাল ঘণ্ট দিয়ে । মোমিন চাচার দোকানের চা কখনো খেতে ভুলি না , চা খেয়ে আমি আমার রুমে চলে এলাম । চিঠি টা হাতে তুলে খুলতে যাবো , এমন সময় শাহেদ ( আমার বন্ধু ,পাশের একটি ফ্লাট এ থাকে ) রুমের দরজায় ধাক্কা -





- চিত্র ! এই চিত্র দরজা খোল ।

- কে ? শাহেদ ?

- হ্যা । দরজা খোল জলদি ।

- খুলছি , একটু দাড়া ।



চিঠিটা টেবিল এর উপর একটি বইয়ের পাতার মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা খুলতে এগিয়ে গেলাম । খুলেই -





- কিরে , হয়েছে কি ?

- হ্যা , অনেক সমস্যা হয়েছে ।

- কি হয়েছে বলবি তো

- সাথী ...

- সাথী কি ?

- সাথীর ...

- সাথীর কি হয়েছে ? আবার ঝামেলা করছে নাকি ?

- না , ওর বাবা সাথীর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে ।

- কি বলিস ?? সাথী কি বলে ? ও রাজি ?

- জানিনা । ওর সাথে গত এক সপ্তাহ যোগাযোগ নেই । ক্লাসে আসে না ।

- তাহলে এখন কি করবি ? ফোন দে ।

- নাম্বার অফ । যেভাবেই হোক বিয়ে ঠেকাতে হবে, নইলে আমি ...

- থাম ! তো ! এখন কিভাবে কি করবি । তুই বিয়ে করতে পারবি এখন ?

- হ্যা পারবো ।

- তারপর ! বিয়ে করে খাওয়াবি কি ? আর সাথী রাজি হবে বেকার ছেলেকে বিয়ে করতে ?

- আমি জানিনা দোস্ত । প্লিজ তুই কিছু কর ।

- আচ্ছা দেখছি কি করা যায় । সাথীর বিয়ে তোকে এই খবর কে দিল ?

- ওদের ভার্সিটির একটা ছেলে ।

- আমি একটু বের হবো , তুই বিকেলে আই । তারপর দেখছি ।





কোথাও বের হাওয়ার কোন উদ্দেশ্য ছিল না , তবুও শাহেদ কে মিথ্যা বললাম । চিঠিটা আবার বের করলাম টেবিলে গিয়ে , এবার চিঠি খুললাম । সম্বোধন দেখে বুঝলাম পারুল এর চিঠি ।







প্রিয় চিত্র ,



ভাল আছো কিনা আর জানতে চাইনা , সব সময় ভাল থেকো শুধু এটাই চাই । হয়ত আমাকে এখন মনে পড়েনা , পড়বে কেমন করে তুমি এখন যেখানে আছো সেখানে ঘাঁট বাঁধা কোন দিঘি নেই । থাকলে সে দীঘির ঠেউ এর মাঝে আমাকে খুজতে । তোমার পড়াশোনা খুব মূল্যবান জানি কিন্তু একটি চিঠির উত্তর ও কি লেখার সময় পাওনা ? প্রেমের চিঠিটা না হয় তুচ্ছ , কিন্তু আমাদের প্রেম তো বিশাল ছিল , তুমিই বলতে । এটা তোমার আলস্য নাকি অবহেলা ? তোমাকে কি করে বোঝায় পড়াশোনার চেয়ে একটা প্রেমের চিঠি কম মুল্যবান নয়। এটা যে মন ভাঙ্গার সমান ।



যে জন্যে তোমার কাছে আজকের এই চিঠি , আজ বৈশাখের ৪ তারিখ । একদিন দেখা করো , না করতে পারবে না । ১৭ তারিখ কিনবা এর আগেই দেখা করো । ঐ রেইল লাইন এর ধারে , যেখানে সব সময় যেতাম ; রঙ খেলতাম । রোদ বৃষ্টিতে তোমার হাত দুটো আমার মাথার উপর রাখতে । আজ তুমি আমার থেকে অনেক দূরে । জীবনের প্রয়োজনে, সময়ের ঘূর্ণাবর্তে চলে গিয়েছো বহুদুরে । এজন্য তোমাকে আমি কখনই দোষারোপ করিনা , করি নিজের ভাগ্য আর তোমার খাম খেয়ালি কে । আমাকে বলতে তোমার স্বপ্নগুলো ছিল আমাকে নিয়ে , শুধুমাত্র তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে আমাকেই ভুলে গেলে ।



আমার চিঠি পড়তেও তোমার সময়ের অপচয় হবে তাই আর কিছু না লিখি , জমানো শেষ কথা গুলো যদি আসো তাহলে শুনবে । অপেক্ষায় রইবো । ওই রেইল লাইন এর পাশে , সেই সকালের মত ।





ইতি তোমার ,

পারুল











থমকে গেলাম চিঠিটা পড়ে , পিঠ চম্বুক এর মত লেগে রইলো চেয়ারে । ক্যালেন্ডার দেখলাম , ১৫ তারিখ । ভাবতে শুরু করলাম ঢাকাতে আশার পর পারুলের দেওয়া তিনটা চিঠিরই জবাব দিয়েছি । ওর দেওয়া ঠিকানায় চাচাতো ভাই ফারুকের কাছে । পারুল এর ঠিকানা দেইনি যদি চিঠি ওর বাবা-মা কাছে গিয়ে পরে । ফোন নেই ওদের , তাই ফোনে যোগাযোগ হয়না । তাহলে ফারুক কি চিঠি গুলো দেইনি !! এখন আর ভাবার সময় নেই , শাহেদ কে ফোন করে আবার বিকেলে আসতে বললাম । বিকেলে ব্যাগ গোছাতে ছিলাম , সেই মুহূর্তে শাহেদ এসে আবার দরজায় নক করলো -





- চিত্র , দরজা খোল । আমি শাহেদ ।

- দাঁরা , খুলছি ।

- হ্যা , তারাতারি ।

- আই ভেতরে , কথা আছে

- হ্যা বল ।

- সাথীর সাথে যোগাযোগ করতে পারলি ?

- না , পারিনি । কোন উপাই খুজে পাচ্ছিনা ।

- হুম । শোন আমার খুব দরকার এ আজকেই বাড়ি যেতে হবে ।

- কেন , আজকেই বাড়ি যাবি মানে , কি হয়েছে ?

- তেমন কিছুনা , এসে সব বলবো । আর কোন সমস্যা হলে জানাবি ।

- আচ্ছা ঠিক আছে । আসবি কবে ?

- তিন দিন এর মধ্যেই চলে আসবো । চিন্তা করিস না , আমি ফিরে এসে সাথীর বেপার দেখবো ।

- আচ্ছা সাবধানে যা । কিছু হলে জানাবি ।





শাহেদ চলে গেল , আমি আমার ব্যাগ গুছিয়ে আবার চিঠিটা পড়লাম । বার বার মনে হচ্ছিল আমার চিঠির লেখা গুলো ভুল দেখছি কিনা । সন্ধায় নাস্তা করেই কল্যাণপুর এর উদ্দেশ্য বের হলাম , রাতের গাড়ি ধরতে হবে । কল্যাণপুরে যেয়ে রাত ৯টার গাড়িতে তে টিকিট পেয়ে গেলাম । রাস্তা খারাপ , কুষ্টিয়া যেতে যেতে ভোর ৫-৬টা বাজবে । ঠিক সময়েই গাড়ি ছেরে দিল ।



-



পারুলের সাথে আমার পরিচয় হয় এক বড় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে । গায়ে হলুদ এর দিন । ভাইয়ের এক দুঃসম্পর্কের খালাতো বোন পারুল । বিয়ের এক সপ্তাহ আগেই ওরা ভাইয়ের বাড়িতে এসেছিল । তখন ও নতুন ক্লাস টেনে উঠেছে । বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেরামারা থানাতে । কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় ২৫ কিঃমিঃ দূরত্ব । পারুল ওই দিন দেখার পরেই মনে হয়েছিল আকাশের লক্ষ তারার মাঝ থেকে একটা তারা আমার জন্য পাঠিয়েছে । একটা ছোট কবিতা লিখেছিলাম ওর জন্য , শুনিয়েও ছিলাম । পারুল শুনে হা হা করে হেসে দিয়েছিলে । সেদিন পারুল ওই হাসির কাছে আমার কবিতা ছিল অতি তুচ্ছ ।







পারুল ,

তুমি বাংলার ফুল আমার জোস্নার জল

হালকা বেগুনী ছোয়া তোমার রুপ

ভেবে ভেবে প্রতিটি রাত কাটে নির্ঘুম ।



দেখতে তুমি অতি মনোরম

আমার তারা গুলো নীলা খেলে অবিরাম ।



পারুল ,

তুমি শত শত কবির হৃদয় ছোয়া প্রেমের প্রলাপ

তুমি শত শত কবিতার বর্ণ মাখা একটি নাম ।

শুনবে কি আমার আঃত্তার আহ্বান

প্রেম যমুনায় ভাসাবো তোমায় নিয়ে বহুবার ।





''



এর পর থেকেই তুমি আমার সাথে একটু মিশতে শুরু করলে । আমি তোমাকে কবিতা শোনাতাম , তুমি শোনাতে গান ; রবি ঠাকুরের গান ।







''যদি তারে নাই চিনিগো সেকি ,

সেকি আমায় নেবে চিনে ... !!

এই নব ফাল্গুন এর দিনে

জানিনে জানিনে ...



ভালোবাসা ভালোবাসা বলে ,

দু'হাত পেতে দাঁড়ালে

ফিরিয়ে দিলেই

বুঝতে পারি ভালোবাসা আছে ...



সেকি আমার কুড়ির কানে

কবে কথা গানে গানে

পরান তাহার নেবে কিনে

এই নব ফাল্গুন এর দিনে'' (রবি ঠাকুরের একটি গানের লিরিক)



এই গানটা শুনিয়ে তুমি তোমার দুর্বলতা প্রকাশ করেছিলে আমার কাছে । আমি তখন একটুও কৃপণতা করিনি আমার ভালোলাগার কথা জানাতে , বলেছিলাম -





''ওই আকাশের লক্ষ তারা , তারার মাঝে তোমার ছায়া

ছায়ায় খুজি আমার হিয়া , ভালোবাসার নিরকুশ চাওয়া''





এর পর ওই বড় ভাইয়ের বাড়িতে আর তিন দিন ছিলে তুমি । প্রতিদিনই আমি কবিতা শোনাতাম , তুমি গান শোনাতে । তুমি চলে যাওয়ার পরও আমি সেই ভেরামারা তে গিয়ে তোমার সাথে দেখা করে আসতাম । সকালে যেতাম , বিকেলে ফিরতাম । তুমি স্কুল ফাঁকি দিয়ে দেখা করতে , আমিও কলেজ ফাঁকি দিতাম । এর পর আরো কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে তোমাদের পাশের গ্রামের বড় পুকুর এর ঘাট বাধা জলের রাশিতে । তুমি পা ভেজাতে চাইতে না , বলতে আলতা ধুয়ে যাবে । তুমি আমার সাথে যত বার দেখা করতে আসতে পায়ে আলতা পড়তে । আমি বলতাম ,





''আলতা রাঙা চরন দুটি ,

একটু ভাসাও জলের তরি

ভালোবাসায় মাখাও তাহায় ,

ভেসে যাও আজ জলের মায়ায়''







তুমি তবুও শুনতে না । বলতে ,



''আমার ভালোবাসার পৃথিবীর কিছু অংশ জুড়ে আছে এই আলতা ,

কেমন করে ডুবাই বলো জলের অভিশিখায় ?

যদি ধুয়ে যায় ? ''







আমি তখন চিৎকার করে বলেছিলাম ,





পারুল ,

তুমি নিদ্রাহীন রাত্রির শেষ রাতের নীল ধ্রুব তারা

পশ্চিমা প্রান্তরে জ্বলো মিটিমিটি , আলো আবছায়া

তুমি ভোরের শিশির , কচুরি পাতায় জমে থাকা

বিশুদ্ধ জল , যাহা আমার মধুরই সমান ।



পারুল ,

তুমি কাক ডাকা ভোরের পূর্বের আভা

শীতল শরীরে বয়ে আনা উত্তাপের মায়া

ভালোবাসি তোমায় ,ভুলে সব অবহেলা ।



-



পুরোনো স্মৃতি গুলো ভাবতে ভাবতে রাত শেষ এ ভোরের দিকে কুষ্টিয়া পৌঁছে গেলাম । নেমেই পারুলের কাজিন ফারুক এর কাছে ফোন দিলাম , কয়েক বার দেওয়ার পর রিসিভ করল না । হয়ত বিভোর ঘুমে আচ্ছন্ন আছে বেচারা । একটা মেসেজ দিয়ে দিলাম যেন পারুল কে জানিয়ে দেই আমি কুষ্টিয়া আসছি এবং ওর সাথে কাল দেখা করব । রাতে ঘুম হল না , ফোলা চোখে সকালে বের হলাম দেখা করতে যাওয়ার জন্য ।





সেদিন এর সকালটায় একটু বেশি হাসি ছিল , রিতিমত আগুন জ্বলছিল । আচ্ছা এই মাথা ভেজানো গরমে দেখা করতে কেন চাইলে সেদিন ! বিকেলে দেখা করতে । তাও আবার এই রেইল লাইন এর পাশে , খোলা আকাশের নিচে । তোমার উত্তর ছিল ''একটু বেশি সময় থাকতে চাও আমার সাথে , আমার যতসব কবিতা আছে সব নিংরিয়ে বের করতে চাও । আমার চোখের মনিতে তোমাকে খুজতে চাও । হাতের শিরা গুলো গুনে শেষ করতে চাও , তুমি জানতে মাঝ আকাশের তারা কখনো গুনে শেষ হয়না । হাতের শিরা গুলোতো সন্ধার সপ্তশি বা শেষ রাতের নীল ধ্রব তারা না'' যে গুনে শেষ করবে ।





তুমি প্রশ্ন করেছিলে , হাতের নখ গুলো কেন কাটিনা ! আমার কাছে কোন উত্তর ছিল না । তুমি তোমার ব্যাগ থেকে গোলাপের সটীক বের করে দিতে যাচ্ছিলে আর বলছিলে এটাই হয়ত শেষ বার । আর লাল গোলাপ কখনো তোমার হাতে শুকাবেনা ।স্নিগ্ধ সাদা আকাশের মত তোমার হাতে গোলাপের কালো কাঁটা বিধলো । সাথে কয়েক চিমটি রক্ততে সাদা আকাশ টায় লাল বৃষ্টিতে ভিজে গেল । আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না , তুমি তোমার হাতের কুনই দিয়ে আমাকে বললে ''আমি কষ্ট পাচ্ছি ,তোমার নখ গুলো বুঝতে পারে না আমার কষ্ট?'' ।





আমি অবুঝ ছিলাম , অনেক অবুঝ । আমি নির্বাক হয়ে চেয়েছিলাম সুধু তোমার দিকে । অনেক কথা হলো , কথা বলতে বলতে কখন দুপুর গরিয়ে বিকেল হয়ে গিয়েছিল দুজনের কেউ খেয়াল করিনি । শেষে পারুল বলল ,





- চিত্র , আমাকে আজকের পর থেকে আর মনে করবে না , ভুলে যাবে ।

- কেন , চিঠির উত্তর দিইনি বলে অভিমান করেছো ? আমি কিন্তু তোমার প্রতিটা চিঠিরই উত্তর দিয়েছিলাম ... ( পারুল থামিয়ে দিল)

- আমি জানি , ফারুক সেগুলো আমাকে দিতে ভুলে গিয়েছিল ।

- তাহলে আবার অভিমান কিসের ? এইতো আমি এখন তোমার পাশে । আজ থেকে যখন যেখানে বলবে আমি তোমার সামনে হাজির হব । কথা দিলাম ।

- হয়ত আসবে , কিন্তু আমি যে আর পারবোনা , চাইলেইও পারবোনা । আমার পৃথিবীতে আমি বন্দি হতে যাচ্ছি ।

- মানে কি ? আচ্ছা বন্দি হও , আমি তাহলে ওই বন্দি খাঁচার তালা-চাবি হব । যখন ইচ্ছে তোমাকে বের করে অজানায় হারিয়ে যাবো ।

- চিত্র ... ( কান্না চোখে পারুল , থামিয়ে দিল চিত্র )

- পারুন কাঁদছো কেন ? আমি সত্যি বলছি ।

- আমি জানি তুমি মিথ্যে না , আমি সত্যি ... ( থামিয়ে দিল চিত্র )

- তুমি কি ?আমাকে আর মেনে নিতে পারছো না ?

- চিত্র এমন কথা বোলো না । আমি অন্যের খাঁচায় বন্দি হতে যাচ্ছি । আজ ১৭ , ২০ তারিখ এ বিয়ে । আব্বুর বন্ধুর ছেলের সাথে । জানোই বাবা অসুস্থ , কখন চলে যায় । বাবা আগেই উনাকে কথা দিয়েছে, আমি না করতে পারিনি । আমি চলি , ভালো থেকো...



আমি আবার নিচ্চুপ , পারুল'কে কি বলব নিজেই বুঝতে পারছিলাম না । সজল চোখে ওর দিকে ফিরে চাইতেই দেখলাম ও উঠে চলে যাচ্ছে । ওর আনা গোলাপ ফুলের পাপড়ি গুলো ঝরে পরেছে সব গুলো মাটিতে । কষ্ট বুকে নিয়ে উঠে গিয়ে ওর হাতটা ধরব সেই সাহস ও হারিয়ে ফেলেছি । ভালোবাসায় আছে সুখ নামক এক পৃথিবী , আছে নরক নামক এক ছোট্ট ঘর । কষ্ট নামক নরক ঘর । কষ্ট গুলো আপনার মনে বিষ তৈরি করে । কাল বিশেষ , কখনো মাঝ রাতে ; কখনও আবার সুখের স্মৃতি গুলো মনে করিয়ে বিষ গুলো চোখের জল হয়ে ঝরে । আমার তখনই চোখের কোণে বিষ গুলো জমতে শুরু করেছে । এক সময় পারুল হারিয়ে গেল । তখন ফোনটা টিং টিং করে বেজে উঠলো , বের করে দেখি শাহেদের ফোন -





- হ্যালো শাহেদ

- হ্যাঁ চিত্র , কোথায় তুই ?

- এইতো আছি , বল ?

- খবর ভাল

- কিসের খবর ?

- সাথীর বিয়ের খবরটা ঠিক ছিল না , আজ দেখা হয়েছে ।







আমি আর কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম । নিজেকে সান্ত্বনা দেবার মত কিছুই ছিল না আমার কাছে । পৃথিবীটা আমার কাছে ছোট হয়ে এলো । এর পর কেটে গেল চারটি বছর । পড়াশোনা শেষ করলাম , এর মধ্যে পারুলের সাথে আর কখনো দেখা হয়নি । ফারুক এর কাছ থেকে শুনেছিলাম পারুলের একটা মেয়ে হয়েছে ।



মেয়ের নাম রেখেছে ''চিত্রা'' । নামটা শুনে অবাক হলাম । চিত্র থেকে চিত্রা নাকি অন্য কিছু ? নাকি আমাকে ভুল যাবার ভয়ে এই নাম রেখেছে । নাম টা ভাল লেগেছে ভীষণ । ঠিক পেলাম আমার মুখে একরাশ হাসি ফুটেছে , না পাওয়া , তবুও সুখের হাসি ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: গল্পের প্লট চেনাজানা,কিন্তু বর্ণনা অনেক ভালো!

০৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৫২

সাদাকালো টেলিভিশন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ :)

২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:০৬

বৃষ্টিধারা বলেছেন: হুম,ভালো লাগলো ।

০৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১:৩১

সাদাকালো টেলিভিশন বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ :)

৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৩৪

সকাল রয় বলেছেন:

পারুল ,
তুমি বাংলার ফুল আমার জোস্নার জল
হালকা বেগুনী ছোয়া তোমার রুপ
ভেবে ভেবে প্রতিটি রাত কাটে নির্ঘুম ।


খুব ভালো লাগলো

০৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১:২৮

সাদাকালো টেলিভিশন বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ :)

৪| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৫৯

মামুন রশিদ বলেছেন: স্মৃতিচারণের জায়গায় কবিতা-গানের অংশ অনেক দীর্ঘ হয়ে গেছে । গল্প মোটামুটি লাগল ।

০৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১:২৭

সাদাকালো টেলিভিশন বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ :)

৫| ০৬ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২১

সাদা আকাশ বলেছেন: গল্পটা ভালো হয়েছে। তবে বিয়োগাত্মক তবুও কোথায় জানি মিল আছে।

০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:১৫

সাদাকালো টেলিভিশন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.