![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Busy working mother with two child, work as an Architect. Love reading, painting, involved in designing interior, gardening and most of all, love to having quality time with family. Have strong connection with desh and family in back home..beleive in future bangladesh with beautiful infrastucture, low cost housing for street people and lot more improvements..I have a dream on this that Me and my kids will be part of that improvement!
দুপরবেলা মৃন্ময়ীর বেশ পছন্দ! বিশেষ করে চৈত্রের দুপর--কেমন তীব্র গরম আর খাঁ খাঁ গুমোট নীরবতা! ওদের বাড়ীর উত্তর কোনে বড় দাদুর ঘর পেরিয়ে কুয়োতলা, তার পরে আম বাগান বেস্টিত পুকুর, তারও পেছনে বিশাল পতিত জমি। চৈত্রের তাপে সেটা ফেঁটে চৌচির হয়ে আছে-- সেই ধূ ধূ জমির পশ্চিম সীমানা জুড়ে ঘন জঙ্গল, বড় বড় তাল, জারুল, শিমুল, গাব- কি গাছ নেই সেখানে! ছোট ছোট পেঁজা শিমলের তুলো সারাক্ষনই সেই ধূ ধূ মাঠে উড়ে উড়ে এসে পাক খাচ্ছে। এক ভয়াবহ বিষন্নতা আর অদ্ভূত নীরবতা এই তপ্ত ফাঁটা বুকের জমিতে, অথচ মৃন্ময়ীর খুব ভালোলাগে এখানে--অপার্থিব ভয় আর নিঃস্বঙ্গতায় মেশানো সে অদ্ভূত আনন্দের অনুভূতি! কাউকে তা বোঝাতে পারবেনা বলেই মৃন্ময়ী গোপনে চলে আসে সেখানে, আর আাসে ভর দুপুরেই--বাবা মা দুপুরে খেয়ে একটু ভাতঘুম দেয় মাঝখানে ঝুমু-মৃন্ময়ীর ছোট বোন কে নিয়ে। নীহার মানে মেজো আপা কলেজের প্র্যাকটিকাল ক্লাস শেষ করে আসতে বিকেল গড়িয়ে যায়, এই কাঠফাঁটা ভর দুপুর তাই মৃন্ময়ীর এক টুকরো, অসীম স্বাধীনতা!
"এই মেয়্যা, এই তুমি এহানে কী কইরতেছো!--ভূত আসবিনি দেইখোনি, কার পাগল মেয়্যারে এডা, ভর দুফুরে চালার জমিত বইস্যা রইছে কও দেহি!" মৃন্ময়ীর উদ্যেশে ওপাড়ার কোন ঘোমটা টানা বউ বলতে বলতে দ্রুত জমির রুক্ষ আল পেরোতে থাকে। সিঁদূর দেয়া সিঁথীতে বউটিকে কমবয়সী মনে হয় মৃন্ময়ীর। "মা দুগ্গা গো" বলে কপালে হাত জোড় করা বউটি মুহূর্তে জমি পার হয়ে দূরের পূর্ব দিকের সাহা বাড়ী পানে ছুটতে থাকে! মৃন্ময়ী বা মিনু হাসতে থাকে মিটিমিটি-- এমনিতে ও খুবই ভীতু, অথচ চালা অর্থাৎ জঙ্গলের এই পতিত জমিতে মৃন্ময়ীর একটুও ভয় লাগেনা! এই জমিরই এক কোণে শুকনো, কাটা গাছের গুড়িতে বসে ও রেবেকা বুয়েনিয়ার গল্প পড়ে, অথবা অচেনা চিন্তার জগতে বুঁদ হয়ে পড়ে। খাঁ খাঁ লু হাওয়ায় ওর জ্বর জ্বর লাগে, সেটাও উপভোগ করে মৃন্ময়ী।
হঠাৎ করেই পুরো পরিবেশটা অজাগতিক হয়ে ওঠে, একটু ভয় ভয়ও লাগে ওর! তবু কি অসীম নেশায় ওখানে বসেই থাকে মৃন্ময়ী। ঘাড় ঘুড়িয়ে দক্ষিনের আম বাগানের দিকে বড় দাদুদের কুয়োতলার পানে তাকিয়ে কিছু খুঁজতে থাকে ও। জায়গাটা মানে কুয়োতলাটা বড় বিশ্রী! সবসময় জমাট বাধা অন্ধকার আর স্যাতসেতে ভাব সেখানে, মা বলেছিলো সেদিন উনি নাকি সেখানে ঘোমটা টানা, লাল শাড়ী পরা হিন্দু বউকে বাসন মাজতে দেখেন ওনার স্বপ্নে! এই তপ্ত দুপুরের রোদেও শীত শীত লাগে মৃন্ময়ীর। ভয় এখন পুরোই গ্রাস করে ফেলেছে ওকে--এখান থেকে যাওয়া মানে প্রথমে আম বাগান, তারপরে পুকুরের পাড়ের স্তব্ধ পথ, তারও পরে সেই বিশ্রী কুয়োতলা,--তারপরে বড় দাদুদের উঠোন পেরিয়ে ওদের বাড়ী! মৃন্ময়ীর কান্না পায়, বড্ড একাকী লাগে এই মুহূর্তে! আম বাগানে কোন কিছুর সর সর শব্দে চমকে ওঠে ও। মনের অজান্তেই সেখানটায় এগিয়ে এসে উঁকি দেয় ডালপালার ফাঁকে, যা দেখে তার জন্য প্রস্তুত ছিলোনা মৃন্ময়ী! ওর জগতে একটা বড়সড় ঝাঁকুনি লাগে, শ্যামলা কিশোরী গাল লালচে হয়ে ওঠে। মাথা নীচু করে, ঠোঁট কামড়ে বাড়ীর দিকে স্লথ গতিতে হাটতে থাকে ও। ঘরে আলগোছে ঢুকতেই মা চেচিঁয়ে ওঠে-"আবার ঐ পোড়ো মাঠে গেছিলি মিনু! কতবার মানা করসি তোকে ওদিক যাসনা! আবার হাসুকেও পাঠালাম কতক্ষন আগে তোকে আনতে! ও পোড়ারমূখী গ্যালো কই?" মা' র কথায় আবার চমকে ওঠে মৃন্ময়ী! হাসু, হ্যা ওটা হাসুই ছিলো ওখানে! বিছানায় গুটিসুটি হয়ে শুলো ও, মা আবার রেগে ওঠে "আবার এই অসময় শুলি, আসর ওয়াক্ত হয়ে আসলো!"
মৃন্ময়ী শুয়ে শুয়ে আম বাগানের আলো আধারী মেশা, শুকনো পাতায় ছাওয়া মাটিতে নগ্ন হাসুর অদ্ভুত আনন্দ আর পরিশ্রান্ত ঘর্মাক্ত মুখের অভিব্যক্তির কথা মনে করতে থাকে--ছোট বেলা থেকেই হাসু ওদের বাড়ীতে আছে, মাকে সব কাজে সাহায্য করে। মৃন্ময়ীর থেকে বছর খানিক বড় হাসু কুচকুচে কালো আর ঢ্যাঙা লম্বা হলেও চেহারা থেকে লাবন্য ঝড়ে পড়ছে যেন সবসময়! কোথায় যেন একটু স্মিতা পাতীলের মতো লাগে, সারাক্ষন হাসিমুখের হাসু কেমন অদ্ভুতভাবে শব্দ করছিলো আম বাগানে শুয়ে! হ্যাংলা পাতলা হাসুর উপরে কি বিশ্রীভাবে চেপে শুয়ে কেমন করছিলো পটলু! হ্যা পটলু! হাসুর মতো পটলুও মৃন্ময়ী দের নতুন বাড়ীতে বহুদিন ধরে আছে, হাসুর মতোই তীব্র কালো পটলু , তবে সাস্থ্য ভালো ওর--মৃন্ময়ী দের বিশ্বস্ত কামলা।বেশ কদিন হলো ওরা অকারনে হাসাহাসি করে, মেজো আপা ক্ষেপে গিয়ে প্রায়ই ওদের বকাঝকা করে।মৃন্ময়ী রেবেকা বুয়েনিয়া আর আরকাদিওর অবৈধ প্রেম কল্পনা করে যতটুকু নরনারীর প্রগার ভালোবাসা ঊপলব্ধি করেছিলো, তার ধারে কাছেও ছিলোনা হাসু আর পটলুর এই ভর দুপুরের প্রেম! অজানা অনেক কিছুই যেন অবাধে দুয়ার খুলে দেয় মৃন্ময়ীর মনজগতে, কল্পনাপ্রবন আর প্রাকিৃতিক শিল্পীমনের কিশোরী বাস্তবতার নগ্নতায় আপ্লুত হয়ে ওঠে! মা আর মেজো আপা ব্যপারটা জেনে গেলে হাসুর কি হবে ভেবে ভয়ে কেঁপে ওঠে ও।মৃন্ময়ীর কিন্তু খারাপ লাগেনা এখন ঘটনার সত্যতা ভেবে,-- রেবেকা বুয়েনিয়ার প্রেম এমনই ছিলো আারকাদিওর জন্য! হাসুকে রেবেকার চেয়েও সুখী আর আনন্দিত মনে হচ্ছিল, শুধু পটলুর অভিব্যক্তিতে ওর এখনও গা ঘিন ঘিন করছে! উঠোনে মায়ের চেঁচামেচি শোনা যায় হাসুর আগমনে, দুমদুম করে কীলের শব্দ ছাপিয়ে হাসুর কান্না মৃন্ময়ীদের টীনের ঘরে সমানে বাড়ি খেতে থাকে!
২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৭
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: এখানেই কি শেষ নাকি চলবে ?
ভালো লাগলো ।
শুভকামনা
৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৬
তিথীডোর বলেছেন: ধন্যবাদ অপূর্ন!-- চেস্টা করে যাচ্ছি লেখায় আরও পরিপক্কতা আনার জন্য :#>
হ্যা, মৃন্ময়ীর গল্প পাঠকদের মাঝে ইতিবাচক সাড়া পেলে চলতে থাকবে!
৪| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩৬
খেলাঘর বলেছেন:
সাড়া পাওয়ার নির্ভর করা ঠিক হবে না; আপনার নিজের ভালো লাগলে লিখে যান, পাঠক আছে।
৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:৫৩
মহান অতন্দ্র বলেছেন: ভালো লাগলো আপ.। মৃন্ময়ীর ডায়রিটা বেশ লাগছে । লিখতে থাকুন ।
শুভকামনা।
৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৮
তুষার কাব্য বলেছেন: চলুক মৃন্ময়ীর গল্প।ভালো লাগছে
৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪০
খেলাঘর বলেছেন:
লিখেন, থেমে গেলেন নাকি!
৮| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫২
খেলাঘর বলেছেন:
থেমে গেলেন নাকি?
৯| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪
নবাব চৌধুরী বলেছেন: রচনাশৈলী খুব ভালো,বিশেষ করে সূচনায় প্রকৃতির যে বর্ণনা আপনি দিয়েছেন,সেটা খুব ভালো লেগেছে।চালিয়ে যান।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২৪
খেলাঘর বলেছেন:
বেচারী হাসু, কোন বেকুব ওকে মারলো?