নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জননী ও জন্মভূমি আমার অহংকার

তিথীডোর

Busy working mother with two child, work as an Architect. Love reading, painting, involved in designing interior, gardening and most of all, love to having quality time with family. Have strong connection with desh and family in back home..beleive in future bangladesh with beautiful infrastucture, low cost housing for street people and lot more improvements..I have a dream on this that Me and my kids will be part of that improvement!

তিথীডোর › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরামর্শ চাই!

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৩

একটা বিষয়ে পরামর্শ বা এডভাইস চাইছি---
ঘটনা হলো আমার মেয়ে কে নিয়ে। বড় য্ন্ত্রনায় ফেলেছে সে আমাদের!..ও এখন টুয়েলভ গ্রেডে পড়ে, এ বছর কলেজে যাবে। বেশ কটা ইউনিভারসিটি তে এ্যপ্লাই করেছে, তাও আমাদের জোড়াজুড়িতে..সে ঘাড় ত্যাড়া করে বলছে বাংলাদেশে গিয়ে মেডিকেলে পড়বে! ভালো কথা, কিন্তু আর আমেরিকা ফিরে এসে প্র্যাকটিস করার জন্য লাইসেন্স পরীক্ষা দিবেনা-- মোট কথা সে বাংলাদেশেই গিয়ে সেটল করবে!..

ব্লগে আমার প্রথম দিকের লেখায় আমার মেয়ের পাগলামির কথা লিখেছিলাম, ওর (যার জন্ম কিনা আমেরিকাতে!)বাংলাদেশের জন্য অদ্ভুত, প্রচন্ড টানের কথা ..কিন্তু বাস্তব বড় কঠিন!, এখানে আমার আর আমার স্বামীর কাজ, ছেলের স্কুল (এইটথ্‌ গ্রেডে), বাড়ীঘর...সব ছেড়ে এই বয়সে চলে যাওয়া এত সোজা?
গেলেও আবার নতুন করে জীবন শুরু করা..নতুন কর্মস্থলে এডজাস্ট করা, সর্বোপরি, আমার ১৩ বছরের ছেলেটা তো আমার মেয়েটার মত নয়! ও এখান থেকে যাবেনা, বেড়াতে যাওয়া পর্যন্তই! দু নৌকায় পা দিয়ে দিয়ে মেয়ে আমার খাবি খাচ্ছে!..ওর দিকে তাকালে আমার কস্ট হয়, কিন্তু ও দেশে গিয়ে পড়লে আমার সংসার দু ভাগ হয় যাবে!.. ছেলেকে নিয়ে আমার প্রবাসে থাকতে হবেই, ওর হাইস্কুল শেষ না হওয়া পর্যন্ত।
দেশ আমার বোনেরা আছে, তবুও ফুটফুটে মেয়েটি আমার থেকে হাজার হাজার মাইল দুরে থাকবে!, তার উপরে কত সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ!
হ্যা, আমি সেলফিস, আনপ্যাট্রিয়ীক আচরন করছি!...আমার অবস্থা বড় জটিল, বড় আনপ্রেডিকটেবল!
....পরামর্শ চাই, অবশ্যই হেলপফুল, গঠনমূলক!

পরিশেষে, আমার পাগলী মেয়ের একটা রচনার কিছু অংশ(যেটা ওর গত সামারে ইংলিশ এডভান্স রাইটিং ক্লাসের এসাইনমেন্ট ছিল- 'Dancing fairy on the rain' আর ওর টীচার এটা পড়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেছিলেন,--oh Lord!, please go back to Bangladesh, the place you love..) বাংলায় অনূবাদ দিচ্ছি---ওর বাংলাদেশের প্রতি অস্বাভাবিক টান কিছটা হলেও বুঝতে পারবেন!
"..আমি এখন এই মুহূর্তে, এই প্রানবন্ত- কিন্তু গুমোট, নিঝুম দুপুরে পারুলদের ছোট্ট মাটির দাওয়ায় বসে আছি!..আমার দীদার বাসা ওদের ছোট্ট কুঁড়ে ঘরটা থেকে মাত্র কয়েক গজ দুরে..আমি পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি, দীদা আমাকে পাহাড়া দেবার জন্যই হাসনাহেনা, আর কি কি ফুল গাছে ছাওয়া বারান্দার, সবুজ প্লাস্টিকের বসে ঝিমাচ্ছে- হাতের তসবীটা দূর থেকে স্পস্ট দেখতে পাচ্ছি!..পারুলের মা মাটির চুলায় কি যেন রান্না করছে- নরম, মশলার গন্ধ ভরা ধোঁয়ায় ভরে উঠেছে চারপাশটা! পারুলের ছোট্ট ভাইটা ন্যাংটো হয়ে ধূলায় শুয়ে শুয়ে খেলছে, আর পাশের কচুরীপানায় ভরা ডোবায় কানাই নামের কিশোর ছেলেটা ডিঙি নৌকাটাকে এমনি এমনিই স্থির করে রেখে, অলস ভঙিতে বসে আছে...কি একটা গানের অস্পস্ট সুর দুরের কোথাও থেকে ভেসে আসছে!....কি অপূর্ব, কি সুন্দর এই দেশ!..আর এই দেশ ছেড়েই কিনা আমাকে চলে যেতে হবে ঠান্ডা, অস্বাভাবিক শান্ত, যান্ত্রিক ঐ দেশটা তে!..কান্না পাচ্ছে, আমার বড্ড কান্না পাচ্ছে!..কিন্তু লজ্জায় কাঁদতে পারছিনা, কেউ দেখে ফেলে যদি?..আমার এই মুহূর্তের অনুভূতিটা আত্মহত্যার সামিল, আমার এতোই কস্ট হচ্ছে!
..চারিদিকটা কেমন কালো হয়ে এলো, ঝুপঝুপিয়ে বৃস্টি নেমে আসলো হঠাৎ করেই--পারুলের মা দৌড়ে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে, চুলা নিভায়ে আমাকে ডাকলো ওদের কুঁড়ের ভেতরে আসার জন্য...দীদা ব্যকুল হয়ে আমাকে ডাকছেন, পারুল ভিজতে ভিজতে আমার কাছে চলে আসলো--"ইস্‌রে! ভিজ্যা গ্যাছো আপমনি! নানী ডাকতেসে, বাসায় চল!"..পারুলের কথা আমার কানে যায়না, চোখ দিয়ে অবিরল ধারায় কান্না গড়িয়ে পড়ছে আমার অভিমানী গাল বেয়ে...ওদের নড়বড়ে, পুরোনো কিন্তু মায়াভরা টীনের চালে রিমঝিম শব্দে বৃস্টি পড়ছে, যেনো এক ঝাঁক পরী আকাশ থেকে নেমে ওদের ছাতে নাচ্‌ছে..আমি কেঁদেই চলেছি, আর আমার সাথে পারুলও ফোঁপাচ্ছে--" ও আপামনি! এমন কইরা কাইন্দ না... দেহো তোমার লেইগ্যা আসমানও কানতেসে, আপামনিরে!"..আসলেই!, এই সু্ন্দর বাংলাদেশে প্রকৃতি আমার কস্ট বুঝতে পেড়ে আমাকে একঝাঁক পরী পাঠিয়ে দিয়েছে, ওরা নেচে নেচে আমার কান্না ধুয়ে দিচ্ছে!.."

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এটা মাটির ডাক। রক্তের ডাক। সাড়া না দিলে ওর মননের একটা অংশ মরে যাবে। চেষ্টা করুন যতটা সেফ-লি পারুন পাঠাতে, নজর রাখতে। বাংলাদেশে মেডিকেলের মান যথেষ্ট ভাল। শুরু করতে দিন, যদি মতামত শেষে পালটায় তবে অনেক সুযোগ থাকবে শুধরে নেবার।

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:৪১

তিথীডোর বলেছেন: Thanks a lot!

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



পড়লাম, ভেবে দেখবো, কোন উপদেশ দেয়া যায় কিনা!

৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:৩৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



মনে হচ্ছে, ফি লাগবে এডভাইজ পেতে; কেহ কিছু বলছে না, দেখছি!

৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৯

ফেলুদার তোপসে বলেছেন: ও যদি সত্যিই মেডিক্যাল পড়তে চায়, প্লিজ বাংলাদেশ এভোয়েড করুন, আপনার শুনতে খারাপ লাগলেও বলছি শিক্ষার গুনগত মান যথেষ্ট নয় এখানে।
তবে পড়াশুনোর শেষে এখানে প্রাকটিশ করতেই পারে।।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:৪৬

তিথীডোর বলেছেন: পরামর্শের জন্য অনেক ধন্যবাদ!..দেখা যাক কি হয়!

৫| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার মেয়ের লেখা পড়ে চোখে পানি চলে এল বিশ্বাস করবেন কিনা আমি সত্যি কাঁদছি ।
আপু বাংলাদেশে ঢাকা ম্যাডিকেল এ যদি এডমিশন নিতে পারে ,খুবই ভাল মেয়েদের হোস্টেল ক্যাম্পাসের মাঝেই হরতাল বা যানজট থেকে মুক্ত ,আর্মি দের টা ও ভাল ।প্রাইভেট বাজিত পুর , গণস্বাস্থ্য অনেক ভাল ভাল আছে ।
কিন্তু এখানে একটা শুভংকরের ফাঁকি থেকে যাচ্ছে আপু ,ও যে বাংলাদেশ কে মিস করে সেখানে ওর দাদী , পারুল ,কুঁড়ে ঘড় আর ঝম ঝম বর্ষা আছে ঢাকার জীবনে ও সেটা পাবে না মোহ ভঙ্গ হবে । ওকে আপনি ওর ভ্যাকেশনের ভলান্টিয়ারি সার্ভিসের জন্য পাঠাতে পারেন ।
শুভ কামনা আপনার লক্ষি মেয়ে টার জন্য :)

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪০

তিথীডোর বলেছেন: আপনার সুন্দর মতামতের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ!...মার্চের মধ্যে জানতে পারব ও কোন ইউনিভারসিটি তে যাবে এখানে, ভালো কোথায় না হলে দেশে পাঠিয়ে দেব মেডিকেলে পড়ার জন্য..দোয়া করবেন ওর জন্য!

৬| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫১

আরজু পনি বলেছেন:

প্রচণ্ড আবেগাপ্লুত হলাম আপনার কন্যার লেখা পড়ে ।
তবে আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে বাংলাদেশকে আপনি যতটা প্রকাশ করেন তারচেয়ে অনেক বেশি ভালোবাসেন...যার প্রকাশটা আপনার মেয়ের মাঝে দেখা যাচ্ছে । আমি এটাকে নাড়ীর টান বলবো না...আপনার ভালোবাসা দ্বারা ও প্রচণ্ডভাবে প্রভাবিত...হতে পারে আপনি হয়তো পুরোপুরি বুঝতে পারছেন না ওর পাগলামীর জন্যে । কিন্তু ওর এই পাগলামীটাও আপনি অবচেতন মনে হয়তো পছন্দও করছেন ।
আর ওকে বাংলাদেশে কিছুদিন রেখে দেখতে পারেন তবে অবশ্যই ঢাকা শহরে...গ্রামে গেলে ও বাংলাদেশের প্রেমে পড়বে এটাই স্বাভাবিক...ঢাকা শহরের যান্ত্রিক জীবন, জ্যামে যদি ওর খারাপ না লাগে...তাহলে ভাবতেও পারেন...মেয়ে ইচ্ছের বিরুদ্ধে কোন কিছু পড়লে সেটাতে তার সারাজীবনের দুঃখ থেকে যাবে ।

আর যদি নাই পারেন...যেখানে পড়াতে চান সেখানকার পরিবেশ, পড়ার বিষয়কে যেন সে ভালোবাসতে পারে সেভাবে তাকে মোটিভেট করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন ।

আমার কন্যা ক্লাস ফাইভে পড়ে ওর মাথা ঠাণ্ডা রাখতেই আমাকে অনেক ভাবতে হচ্ছে...
আপনার এই পোস্ট আমাকেও ভাবতে সহায়তা করবে নিজের কন্যার জন্যে ।

৭| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৯

তিথীডোর বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আরজুপু!..।আমার মেয়ের ঢাকার জ্যাম, ধূলা তেও কিছু হয়না, ছোট্ট বেলা থেকেই ওকে যখন দেশে নিয়ে যেতাম--কোন কিছুই প্রভাব ফেলতনা! কি মশা, কি গরম, কিছুইনা! এটা অব্শ্য ঠিক, আমার আর ওর বাবার, দুজনেরই বাংলাদেশের উপরে প্রচন্ড টান-- ওটার একটা ইনফ্লুয়েন্স তো আছেই।
একবার নিউইয়র্ক সিটির এক জ্যামে গাড়িতে আটকা অবস্থায় কোথা থেকে পেট্রোলের গন্ধ ভেসে আসছিলো--আমার মেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বলে উঠেছিল, "আম্মু দেখো, কেমন গন্ধটা!..ঠিক যেন ঢাকার বাস টার্মিনালের মত!, যখন আমরা দীদা-নানাভাইয়ের বাসায় যাই..." প্রতিদিন সকলে স্কুলে আমি ওকে গাড়িতে নামিয়ে দেই-- ১০ মিনিটের জার্নীতে ঘুম ঘুম অবস্থায় অর্নব, বারী সিদ্দিকী, কিংবা শচীন দেবের (গাড়ীতে হিন্দী গান কখনো রাখিনি) গান শোনে আর মৃদু ঝগড়া করে আমার সাথে, কেন আমি আমেরিকা এসেছিলাম, কেন আমরা এই বর্ণহীন, হীমশীতল, প্রাণহীন দেশে পড়ে আছি!---আরও কতকি! কত বোঝাই দেশে কত সমস্যা!..কিছুতেই কিছু হয়না!
ইউনিভার্সিটি অফ বাফেলো তে ও আ্যকসেপ্টেড হয়েছে, আর কর্ণেল ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারভীউ অফার পেয়েছে (এখানে আ্যকসেপ্টেড হলে আমার এ দেশে এতদিনের পরিশ্রমের সার্থকতা মনে করব!)..প্লীজ দোয়া করবেন!

৮| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫৯

আরজু পনি বলেছেন:

আমিতো নোটিফিকেশন না পেয়ে অভিমানে গাল ফুলিয়েছিলাম ...জেনে ভালো লাগলো ।

অনেক দোয়া রইল আপনার কন্যার জন্যে ।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৫

তিথীডোর বলেছেন: :`>

৯| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩২

জ্বি হুজুর বলেছেন: এখানে দেখুন এবং এখানে দেখুন । ভর্তি পরীক্ষা হয়ে গেছে কিনা খোজ নিয়ে তারপর বলতে পারব। খুবই ভাল। আমার স্কুলের বন্ধু এখন এখানের লেকচারার।

১০| ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৫

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: খুব ভাল লাগল আপনার মেয়ের লেখা পড়ে। পড়াশোনা শেষ হলে ওকে দেশে পাঠিয়ে দেবেন, ভাল একটা ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দিবেন। এতে ওর মনটাও রক্ষা হবে। বাংলাদেশে শত সমস্যার মধ্যেও ও লড়াই করেই ভাল থাকবে, কারণ ও এই দেশটাকে মন থেকে ভালবাসে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.