নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তুমি কেমন করে গান করো হে গুনী, আমি অবাক হয়ে শুনি, কেবল শুনি ।।

ঠাকুরমাহমুদ

sometimes blue sometimes white sometimes black even red, even golden ! yes dear - its me - i am sky ! color your life, than your life will be colorful

ঠাকুরমাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময় মধ্যরাত, ১২ই নভেম্বর ১৯৭০

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৭



বাবা মা হয়তো আদর করে নাম রেখেছিলেন ফয়জুর রহমনার অথবা ফজলুর রহমান, এখন তাকে কেউ এ নামে চেনে না, ফজু মাঝি নামে পরিচিত এলাকায়। ফজুর বৃদ্ধ কুঁজো অন্ধ মা’ও তাকে ফজু বলেই ডাকেন গালাগালি করেন। ফজুর ঘরে দুইবেলা জাও ভাত রান্না হয়। ঘরে ক্ষুধার্ত সদস্য মাছ তরকারি বিহীন সাদা জাও ভাত গিলে বেঁচে আছে - বেশ ভালোভাবেই বেঁচে আছে। আজ দুদিন যাবত মুষলধারে বৃষ্টিতে ঘরের বাইরে কারো কাজ কারবার নেই তাই নৌকা পারাপারও নেই, ফজুর দুই মেয়ে এক ছেলে সহ ঘরে খানেওয়ালা ছয়জন। আগামীকাল কি রান্না হবে ফজু - ফজুর বউ মোমেনা জানেনা, ঘরে বাচ্চাদের কান্না আর শাশুরির বকা গালি খেয়ে মোমেনা নিরব থাকে, মোমেনা বোবা কালা না! - তারপরও সে আজন্ম নিরব থাকবে এই যেনো তার পণ।

জামাল উদ্দিন মাতবর এলাকার মেম্বার, তার বাড়িতে বড় মেয়ে পোয়াতি জোসনা বানু। আজ সারাদিন দুই দাই বেটির কসরতেও জোসনা বানুর সন্তানের কোনো কুল কিনারা করতে না পেরে হাল ছেড়ে মেম্বার সাবকে জানান দেয় তাদের পক্ষে সম্ভব না, সন্তান ও মাকে বাঁচাতে হলে সদরে নিতে হবে। মেম্বার সাব লোক না পাঠিয়ে নিজে দৌড়ে আসেন ফজু মাঝির বাড়িতে সাথে মেয়ে জামাই লঞ্চ ড্রাইভার আলাউদ্দিন মাতবর। মেম্বার সাব ধমক ছাড়া কথা বলতে পারেন না। আজ ফজু মাঝিকে অনুরোধ করেন “বাবা চল, দেড়ি করিস না, মেয়ে আমার বাঁচবে না” শশুরের সাথে মেয়ে জামাই আলাউদ্দিন কান্নাচোখে।

ফজু মাঝির বৃদ্ধ মা মেম্বার সাবকে আশ্বস্ত করেন - “বেটা আল্লার নাম ল, আল্লার নাম ল। মেম্বার সাব আল্লার নাম নেন - এছাড়া আর কি করার আছে?

মেঘনা নদীর মোহনায় নৌকাতে যাত্রী মেম্বার সাব, তার স্ত্রী মালকা বানু, প্রায় অজ্ঞান পোয়াতি মেয়ে জোসনা বানু, মেয়ে জামাই আলাউদ্দিন, দুই দাই বেটি সহ ফজু মাঝি। নৌকার দাড় বাইছেন ফজু মাঝি আর আলাউদ্দিন। হ হ শব্দে অন্ধকার রাত চিড়ে ফুলে ফেপে আসমান সমান উচু হয়ে আসা ঢেউ তারা চিনতে পারেন, পানির ঢেউ - মরণঘাত জলোচ্ছাস। মেম্বার সাবের পুরো পরিবার সহ এক রাতে ভেসে গেলো প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষের প্রাণ। সময় মধ্যরাত, ১২ই নভেম্বর ১৯৭০

আজ ভয়াল ১২ই নভেম্বর। ১৯৭০ সালের ভোলা ঘূর্ণিঝড় ছিলো একটি শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় যা ১৯৭০ সালের ১১ - ১৩ই নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে। এ পর্যন্ত রেকর্ডকৃত ঘূর্নিঝড়সমূহের মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্নিঝড় এবং এটি সর্বকালের সবচেয়ে ভয়ঙ্করতম প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি। এ ঝড়ের কারণে প্রায় পাঁচ লক্ষ (৫,০০,০০০) মানুষ প্রাণ হারায়। যার অধিকাংশই গাঙ্গেয় বদ্বীপের সমুদ্র সমতলের ভূমিতে জলোচ্ছ্বাসে ডুবে মারা যান। এটি ১৯৭০-এর উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের ৬ষ্ঠ ঘূর্ণিঝড় এবং মৌসুমের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ছিলো। এটি সিম্পসন স্কেলে 'ক্যাটাগরি ৩' মাত্রার ঘূর্ণিঝড়। খাদ্য, পানীয় পানি ও ঔষধের অভাবে আরও এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মানুষের হয় অকাল মৃত্যু।

ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরে ৮ই নভেম্বর সৃষ্ট হয় এবং ক্রমশ শক্তিশালী হতে হতে এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ১১ই নভেম্বর এটির গতিবেগ সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৮৫ কিমি (১১৫ মাইল) এ পৌঁছায় এবং সে রাতেই তা উপকূলে আঘাত করে। জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল ও দ্বীপসমূহ প্লাবিত হয়। এতে ঐসব এলাকার বাড়ি-ঘর, গ্রাম ও শস্য স্রোতে তলিয়ে যায়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ছিল তজুমদ্দিন উপজেলা। তজুমদ্দিন উপজেলাস্থ ১,৬৭,০০০ জন অধিবাসীর মধ্যে ৭৭,০০০ জনই (৪৬%) প্রাণ হারান।

সরকারের ভূমিকা: পাকিস্তানের সামরিক সরকার এমন ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরও জরুরি ত্রাণকার্য পরিচালনায় গড়িমসি করেন। ঘূর্ণিঝড়ের পরও যারা বেঁচে ছিলো তারা মারা যায় খাবার ঔষধ আর পানীয় জলের অভাবে। ঘূর্ণিঝড়ের এক সপ্তাহ পরে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান স্বীকার করেন - সরকার দুর্যোগের ভয়াবহতা বুঝতে না পারার কারণেই ত্রাণকার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।

উপসংহার: বাংলার মানুষ আজন্ম মোমেনার মতো নিরব থাকার মানুষ, নিরব থেকেই এরা মারা যান, বাংলার মানুষের ভাগ্যে ঝড় জলোচ্ছাস দুঃখ কষ্ট নিয়েই জন্ম নিয়েছেন। ভাগ্য আর নিয়তির কাছেই বন্দি আজীবন।

ব্লগার জনাব আহমেদ জী এস এর তথ্য অনুসারে: আজ ১২ই নভেম্বর সেই ভয়ঙ্কর কালো দিনটি। নিরবে চলে যাচ্ছে। যেমন সেদিনও জলোচ্ছাস ও ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকার লাখো মানুষ নিরবে মারা গেলেও ৩/৪দিনের আগে সে খবর দেশের আর কোথাও পৌঁছেনি। এমনকি দশহাত দূরের বরিশাল শহরের মানুষজনও টের পায়নি শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দূর্যোগটি উপকূলে হানা দিয়ে গেছে ক'দিন আগে। দুঃসহ ছিলো সে মরন ছোবলের ছবি। কচুরিপানার মতো লাশ ভেসে আছে সাগরের কূলে কূলে। সন্তান সম্ভবা অসংখ্য মায়েদের লাশ মোচড়ানো অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো উপকূল জুড়ে। কারো কারো আঁচলে বাঁধা ছিলো কোলের সন্তান, আঁকড়ে ছিলো গাছের ডাল কিম্বা টিনের চাল। পানির তোড়ে যেন ভেসে যেতে না পারে তাই আঁচলে বেঁধে রাখা। তবুও শেষ রক্ষা করতে পারেনি ঐসব অসহায় মায়েরা। ভেসে গেছে গভীর সমুদ্রে। প্রকৃতির রুদ্র রোষ ছাড় দেয়নি কাউকে।

১৯৭০ এর ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসটি ছিলো সে সময় পর্য্যন্ত রেকর্ডকৃত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে ভয়ঙ্করতমটি। প্রশান্ত মহাসাগরে উদ্ভুত ঘূর্ণিঝড় “নোরা” দক্ষিন চীন সাগরে দুই দিন ঘোরাফেরা করে ৫ই নভেম্বর পশ্চিম দিকে মালয় পেনিনসূলায় এসে থেমে যায়। এর ফলে ৮ই ডিসেম্বর বঙ্গোপসাগরের মধ্যভাগে সৃষ্টি হয় একটি নিম্নচাপের। নিম্নচাপটি উত্তরের দিকে ধাবিত হলে এটা ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের নজরে আসে। ভারত পাকিস্তানের সম্পর্ক সে সময় ভালো না থাকায় এই খবরটি তারা আর পাকিস্তান কে দেয়নি। তখনকার দিনে তো আর ঐ সব নিম্নচাপ বা ঝড়ের নামকরন করা হতো না বড় একটা( যেমন “আইলা” নার্গিস” “নিনো” “ ক্যাটারিনা” ইত্যাদি ) তাই এই নিম্নচাপটিরও কোনও নাম ছিলোনা সেদিন। দুটো দিন নিম্নচাপটি শান্ত থাকে ঐ জায়গাতেই। ১১ নভেম্বর তা যখন আরো উত্তরপূবে অগ্রসর হতে থাকে তখন সে ধরে তার রুদ্র রূপ। বাতাসের গতিবেগ দাঁড়ায় ঘন্টায় ১১৫ মাইল থেকে ১৩৪ মাইলে। আরো উত্তরপূবে এগিয়ে এলে নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি আরো বেশী গতিবেগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে উপকূলীয় ভোলা, হাতিয়া , সন্দীপ এলাকায় ১২ই নভেম্বরের রাতে। ঘটনাটি ঘটে ভরা জোয়ারের সময়। এতে সাগর ফুঁসে ওঠে স্মরণকালের ভয়ঙ্কর জলোচ্ছাসের ঘটনাটি ঘটিয়ে ফেলে। জলোচ্ছাসের মাত্রা দাঁড়ায় ১৫/২০ ফুটে। স্থলভাগে আছড়ে পড়ায় এর গতিবেগ কমে যায় আর তা দূর্বল হয়ে ভারতের আগরতলায় আঘাত হানে।

তৎকালীন পাকিস্তান আবহাওয়া দপ্তর শুরু থেকেই সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টিকে পাত্তা দেয়নি। কেবল মাত্র ১২ তারিখের দিনের বেলা একটি “ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহন” ঘোষনা প্রচার করে শুধু। এর বেশ পরে পাকিস্তান রেডিও থেকে প্রচার করা হয় মহাবিপদ সংকেতের কথা। আর এর মধ্যেই ঘটে যায় যা ঘটার। জলোচ্ছাসে ভেসে যায় সব। কেবলমাত্র পরের দিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার দূর্গতস্থল ঘুরে এসে খবরটি জানায় সামরিক জান্তার কাছে। ঘটনাটি সামরিক সরকার তাদের নিজেদের মধ্যেই রাখে প্রশাসনকে জানায়নি। এতে দুদিন যাবৎ বিধ্বস্ত এলাকার তেমন কোনও খবরই পৌঁছেনি মানুষের কাছে। মানুষ বুঝতে পারেনি যে কী ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেছে তাদের ঘরের কাছেই।

এই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ থেকে ৫ লাখে। ১৩টি দ্বীপে একজনকেও জীবিত পাওয়া যায়নি। সম্পূর্ণ ভাবে বিধ্বস্ত হয় হাতিয়া, সন্দীপ, কুতুবদিয়া আর ভোলার দক্ষিনাঞ্চল। ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেও কোনও ত্রানসামগ্রী পৌছেনি কোথাও, চালানো হয়নি উদ্ধার কাজও। সব মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় পাকিস্তান সরকারের প্রস্তুতির অপ্রতুলতা ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি অবহেলা সেদিন বড় বেশি করে বুকে বাজে বাঙালীদের।

আর একটা কথা স্মরণ করিয়ে দেই, ৭০ এর এই জলোচ্ছাসে বাঙালীদের প্রতি পাকিস্তানী শাসকদের উদাসীন্য এবং বিমাতা সুলভ আচরনও কিন্তু বাঙালীদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে। এবং এর একমাসের মাথায় অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারন নির্বাচনে তাই সারা বাঙালী এক হয়ে মুজিবকে ভোট দিয়েছিলো।




তথ্যসূত্র: উকিপিডিয়া, বিবিসি বাংলা, ব্লগার আহমেদ জী এস
ছবি: গুগল সার্চ ইঞ্জিন

কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষ।








মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

১৯৭০ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড় গোর্কির আঘাতে বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চল পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আমি মন্তব্য উত্তরগুলো শেষ করে আপনার পোস্টে আসছি। ধন্যবাদ, তথ্যবহুল একটি পোস্ট দিয়েছিন।

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া :)

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আপনাকেও ধন্যবাদ ও শুভ কামনা।

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ১৯৭০ থেকে ২০২০।
এদেশের মানুষ এখনো ভাগ্য আর নিয়তির কব্জা থেকে বেরুতে পারেননি।

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




এদেশের মানুষের ভাগ্য আর নিয়তি কব্জা করে রেখেছে মানুষ! সৃস্টিকর্তা না এটিও একটি কারণ হতে পারে। ৫০ বছর! নট এ জোক!

৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



তমজুদ্দিন উপজেলাটি কোন জেলায়?

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:

ভোলা জেলার উপকূলীয় উপজেলা তজুমদ্দিন।

৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৮

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সর্ব প্রথম মাওলানা ভাসানী ত্রান সামগ্রী নিয়ে ছুটে যান ভোলায়।ঢাকায় ফিরে এসে বলেন ভোট বন্ধ কর, ভোলায় কেয়ামত হয়ে গেছে,আগে মানুষ বাঁচাও।আমরাও তখন মানুষের কাছ থেকে জামা কাপড় এটা সেটা নিয়ে ত্রান কমিটিতে জমা দিতাম।

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




মাওলানা সাহেব খুবই জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তখন। মাওলানা সাহেবকে হয়তো ইতিহাসের পাতায় মনে রেখেছে কিন্তু মাওলানা সাহেবের তাৎক্ষনিক এই পদক্ষেপে ভোলার মৃত লাশও হয়তো দোয়া দিয়েছেন। মাওলানা সাহেবের শেষ জীবন ভালোই কেটেছে।

৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯

শাহ আজিজ বলেছেন: ১৪ নভেম্বর সকালে একটি লঞ্চ সদরঘাটে ভেড়ে অল্প কিছু যাত্রী নিয়ে । লঞ্চ দুর্যোগ পরবর্তী প্রথম যান যা সন্ধ্যায় ভোলা ছেড়ে ঢাকা এল । ভোলার চেয়ারম্যান দৌড়ালেন দৈনিক পাকিস্তান অফিসে । সেখান হতে মার্শাল ল শাসকের অফিসে । এত বড় দুর্যোগ কিন্তু ঢাকার কেউ জানেনা শুধু যোগাযোগের অভাবে । ইয়াহিয়া খান হেলিকপ্টারে চললেন ভোলায় , বিমান বাহিনী রিলিফ নিয়ে দুপুরের মধ্যেই হাজির । ১৫ তারিখ আমরা পত্রিকায় খবর পেলাম ছবি সহ । হাজার হাজার লাশ ভাসছে সমুদ্রে , নদীতে , ক্ষেতে , চরে । শুকনা খাবার নিয়ে সবাই ছুটল ভোলা আর সংলগ্ন চর গুলোতে । সেনাবাহিনী এসময় অনেক কাজ করেছে লাশ দাফনে , পুনর্বাসনে । ওই সময় দক্ষিনাঞ্চলের সব মানুষ যে যেভাবে পেরেছে ছুটেছে ভোলায় । আমার বড় ভাই বন্ধুদের নিয়ে দুবলার রাশ যাত্রায় আটকে গেলেন দুবলার আগে সুন্দরবনের শেষ প্রান্তে । তারা প্রানে বেচেছিলেন জঙ্গলের কারনে । ওই সময় ওইসব এলাকায় কোন যোগাযোগ ব্যাবস্থা ছিলনা লঞ্চ আর দাড়টানা নৌকা ছাড়া । সরকার ওই সময় একটি রেডিও যোগাযোগ ব্যাবস্থা স্থাপন করেন ভোলায় যার ব্যাটারি চার্জ হত চাঁদপুরে ।

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আমি আমাদের আহমেদ জী এস ভাই এর সরম্পূর্ণ মন্তব্য মূল পোস্টে সংযোজন করেছি অনুগ্রহ করে পোস্টটি অথবা আহমেদ জী এস ভাইয়ের মন্তব্যটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। কি যাতনা কি বেদনা নিয়ে এই বাংলার মানুষ বেঁচে আছেন তা কল্পনা করারও বাইরে।

আপনার মন্তব্য ধরে আপনাকে একটি তথ্য দিচ্ছি সুন্দরবন উজাড় করে বাংলাদেশে খাল কেটে কুমির হাঙ্গর তিমি আনার ব্যবস্থা হচ্ছে। এই দেশে সামনে জলোচ্ছাসে আরও বড় ধরনের ক্ষয় ক্ষতি হবার সম্ভবনা হবে। আমরা নিরব দর্শক নিরবে চলে যাবো। কিছুই করার নেই।

বাংলাদেশে সম্ভবত সবচেয়ে মরণঘাতি জলোচ্ছাস ১৯৭০ আর ১৯৯১ এ ছিনিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ প্রাণ যার হিসাব সরকার প্রশাসন দেশের মানুষ কখনো প্রয়োজন বোধ করেনি।

আপনাকে ধন্যবাদ।

৭| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ,




শুরুটা হয়েছে গ্রামবাংলার এককালের যাপিত দিনকাল নিয়ে। এমন দৃশ্য কিম্বা জীবনের চালচিত্র এখনকার প্রজন্মের কাছে অচেনা। যেমন অচেনা -অজানা ৭০ এর ঘূর্ণিঝড়ের ছবি।
আজ সে্ই ভয়ঙ্কর কালো দিনটি । নিরবে চলে যাচ্ছে । যেমন সেদিনও জলোচ্ছাস ও ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকার লাখো মানুষ
নিরবে মারা গেলেও ৩/৪দিনের আগে সে খবর দেশের আর কোথাও পৌঁছেনি । এমনকি দশহাত দূরের বরিশাল শহরের মানুষজনও টের পায়নি শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দূর্যোগটি উপকূলে হানা দিয়ে গেছে ক'দিন আগে।

দুঃসহ ছিলো সে মরন ছোবলের ছবি। কচুরিপানার মতো লাশ ভেসে আছে সাগরের কূলে কূলে। সন্তান সম্ভবা অসংখ্য মায়েদের লাশ মোচড়ানো অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো উপকূল জুড়ে । কারো কারো আঁচলে বাঁধা ছিলো কোলের সন্তান, আঁকড়ে ছিলো গাছের ডাল কিম্বা টিনের চাল । পানির তোড়ে যেন ভেসে যেতে না পারে তাই আঁচলে বেঁধে রাখা । তবুও শেষ রক্ষা করতে পারেনি ঐসব অসহায় মায়েরা । ভেসে গেছে গভীর সমুদ্রে । প্রকৃতির রুদ্র রোষ ছাড় দেয়নি কাউকে ।

১৯৭০ এর ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসটি ছিলো সে সময় পর্য্যন্ত রেকর্ডকৃত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে ভয়ঙ্করতমটি । প্রশান্ত মহাসাগরে উদ্ভুত ঘূর্ণিঝড় “নোরা” দক্ষিন চীন সাগরে দুই দিন ঘোরাফেরা করে ৫ই নভেম্বর পশ্চিম দিকে মালয় পেনিনসূলায় এসে থেমে যায় । এর ফলে ৮ই ডিসেম্বর বঙ্গোপসাগরের মধ্যভাগে সৃষ্টি হয় একটি নিম্নচাপের । নিম্নচাপটি উত্তরের দিকে ধাবিত হলে এটা ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের নজরে আসে । ভারত পাকিস্তানের সম্পর্ক সে সময় ভালো না থাকায় এই খবরটি তারা আর পাকিস্তান কে দেয়নি । তখনকার দিনে তো আর ঐ সব নিম্নচাপ বা ঝড়ের নামকরন করা হতো না বড় একটা( যেমন “আইলা” নার্গিস” “নিনো” “ ক্যাটারিনা” ইত্যাদি ) তাই এই নিম্নচাপটিরও কোনও নাম ছিলোনা সেদিন । দুটো দিন নিম্নচাপটি শান্ত থাকে ঐ জায়গাতেই । ১১ নভেম্বর তা যখন আরো উত্তরপূবে অগ্রসর হতে থাকে তখন সে ধরে তার রুদ্র রূপ । বাতাসের গতিবেগ দাঁড়ায় ঘন্টায় ১১৫ মাইল থেকে ১৩৪ মাইলে । আরো উত্তরপূবে এগিয়ে এলে নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি আরো বেশী গতিবেগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে উপকূলীয় ভোলা, হাতিয়া , সন্দীপ এলাকায় ১২ই নভেম্বরের রাতে। ঘটনাটি ঘটে ভরা জোয়ারের সময় । এতে সাগর ফুঁসে ওঠে স্মরণকালের ভয়ঙ্কর জলোচ্ছাসের ঘটনাটি ঘটিয়ে ফেলে । জলোচ্ছাসের মাত্রা দাঁড়ায় ১৫/২০ ফুটে । স্থলভাগে আছড়ে পড়ায় এর গতিবেগ কমে যায় আর তা দূর্বল হয়ে ভারতের আগরতলায় আঘাত হানে ।

তৎকালীন পাকিস্তান আবহাওয়া দপ্তর শুরু থেকেই সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টিকে পাত্তা দেয়নি । কেবল মাত্র ১২ তারিখের দিনের বেলা একটি “ ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতিগ্রহন” ঘোষনা প্রচার করে শুধু। এর বেশ পরে পাকিস্তান রেডিও থেকে প্রচার করা হয় মহাবিপদ সংকেতের কথা । আর এর মধ্যেই ঘটে যায় যা ঘটার । জলোচ্ছাসে ভেসে যায় সব ।
কেবলমাত্র পরের দিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার দূর্গতস্থল ঘুরে এসে খবরটি জানায় সামরিক জান্তার কাছে । ঘটনাটি সামরিক সরকার তাদের নিজেদের মধ্যেই রাখে । প্রশাসনকে জানায়নি । এতে দুদিন যাবৎ বিধ্বস্ত এলাকার তেমন কোনও খবরই পৌঁছেনি মানুষের কাছে । মানুষ বুঝতে পারেনি যে কী ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেছে তাদের ঘরের কাছেই ।

এই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ থেকে ৫ লাখে । ১৩টি দ্বীপে একজনকেও জীবিত পাওয়া যায়নি । সম্পূর্ণ ভাবে বিধ্বস্ত হয় হাতিয়া, সন্দীপ, কুতুবদিয়া আর ভোলার দক্ষিনাঞ্চল । ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেও কোনও ত্রানসামগ্রী পৌছেনি কোথাও, চালানো হয়নি উদ্ধার কাজও । সব মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় পাকিস্তান সরকারের প্রস্তুতির অপ্রতুলতা ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি অবহেলা সেদিন বড় বেশি করে বুকে বাজে বাঙালীদের ।

আর একটা কথা স্মরণ করিয়ে দেই , ৭০ এর এই জলোচ্ছাসে বাঙালীদের প্রতি পাকিস্তানী শাসকদের উদাসীন্য এবং বিমাতা সুলভ আচরনও কিন্তু বাঙালীদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে । এবং এর একমাসের মাথায় অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারন নির্বাচনে তাই সারা বাঙালী এক হয়ে মুজিবকে ভোট দিয়েছিলো ।






১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আহমেদ জী এস ভাই,
পূর্বের দুইটি মন্তব্য বাদ দিয়ে আপনার মন্তব্য উত্তর দিচ্ছি, আপনার লেখা মন্তব্যটি আমি আমার মূল পোস্টের সাথে সংযোজন করতে চাচ্ছি আপনার অনুমতি পেলে।

বিনিত - ঠাকুরমাহমুদ।

বিস্তারিত আলোচনা করবো পরে - - -


১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আহমেদ জী এস ভাই,
মানুষ বাতাসকে ভয় পায়না, ভয় পায় পানিকে। আর জোয়ারের সময় ঘূর্ণিঝড় হলে তা বিশাল রূপ নেয়। ৭০ এর সময় সেটাই হয়েছিল। ক্ষয়ক্ষতির চিত্রটি সবসময় পূর্ণাঙ্গভাবে উঠে আসেনা। কারণ, তখন তথ্য সংরক্ষণের ততোটা ব্যবস্থা ছিলোনা। তাছাড়া কর্তৃপক্ষ ডেডবডি কাউন্ট করে, সরকার ডেডবডি না পেলে মৃত হিসেবে লিপিবদ্ধ করে না। সাগরে যারা হারিয়ে গেছে তাদের হিসাব তো করা হয় না। সিডরে ১০,০০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলেছিলো রেডক্রস। কিন্তু সরকার বলেছিলো ৬,০০০ । সুতরাং ক্ষয়ক্ষতির হিসাব সবসময় ঠিকভাবে উঠে আসেনা।

৭০ এর ১২ নভেম্বরের সে দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে যারা বেঁচে আছেন, তাদের সকলকেই আজো তাড়া করছে ভয়াল সে রাত। ভয়াল ১২ নভেম্বর আজ। দেশের উপকূলের ৭১০ কিলোমিটার এলাকার দেড় কোটি মানুষের কাছে এক বিভীষিকার রাত। ১৯৭০ এর ১২ নভেম্বর রাতে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাস নিয়ে ২০০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম উপকূলের ১০টি জেলার বিশাল জনপদকে ভাসিয়ে নিয়েছিলো।

ভয়াল ঐ রাতে উপকূলীয় জেলাগুলোর প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিলো। প্রায় আড়াই লাখ মানুষ নিখোজ হলেও তাদের বেশীর ভাগেরই ঠিকানা হয়েছিলো না ফেরার দেশে। ফুসে ওঠা বঙ্গোপসাগরের জলোচ্ছাস সে রাতে লক্ষাধীক মানুষকে ভাসিয়ে নেয়ায় তাদের সলিল সমাধী ঘটে। ফলে নিকটজনেরা তাদের লাশেরও কোন সন্ধান পাননি। এমনকি ’৭০-এর ১২ নভেম্বর জলোচ্ছাসের তান্ডবে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর উপকূলের এমন কোন পরিবার ছিলো না যাদের কেউ না কেউ নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন।

মার্কিন উপগ্রহ থেকে প্রথম ঐ ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগকে দেয়া হলেও সময়মত উপকূলবাশীকে সতর্ক করা সহ তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।

আপনার অত্যন্ত মূল্যবান মন্তব্য মূল পোস্টের সাথে সংযোজন করে পোস্টটিকে সম্পূর্ণ মনে করছি।

৮| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ ,




লজ্জা দেবেন না। ব্লগের লেখা ব্লগারদেরই সম্পত্তি। এতে মনে হয় অনুমতির প্রয়োজন পড়েনা কেবল "সূত্র" উল্লেখ করলেই শোভনীয় হয়।

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩২

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আহমেদ জী এস ভাই,
আপনার পুরো মন্তব্যটি সে সময়ের এক কঠিন হৃদয় বিদারক চিত্র। এসব কথা সরকার ও প্রশাসনের জানা, জেনেশোনে সুন্দরবন উজাড় করা আত্মঘাতি কাজ বলে মনে করি। আমি জানি না এই দেশে জনপদের মানুষের সাথে কেনো এমনটি হয়, কেনো এই অন্যায়, কেনো এই বৈরি আচরণ!

১৯৭০ এর জলোচ্ছাসে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও দোয়া রইলো।

৯| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৯

করুণাধারা বলেছেন: ভয়ংকর দিনটিকে মনে করিয়ে দেয়ায় ধন্যবাদ। ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরার সাথে সাথে সেই দিনে কয়েকজন মানুষের ছবি এঁকেছেন- জোসনা বানুর কষ্ট আর মোমেনার বুক চাপা দুঃখ মনে করিয়ে দিল সেদিন প্রাণ হারান লাখো অসহায় মানুষের কথা।

৭০ এর এই জলোচ্ছাসে বাঙালীদের প্রতি পাকিস্তানী শাসকদের উদাসীন্য এবং বিমাতা সুলভ আচরনও কিন্তু বাঙালীদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে । এবং এর একমাসের মাথায় অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারন নির্বাচনে তাই সারা বাঙালী এক হয়ে মুজিবকে ভোট দিয়েছিলো । এই কথাটা মনে করিয়ে দেয়ায় আহমেদ জী এস কে ধন্যবাদ।
চমৎকার পোস্টে লাইক।

১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




ব্লগার আহমেদ জী এস ভাই এর একটি মন্তব্য এখানে প্রকাশ করছি: - সাম্প্রতিক "আইলা" পর্যন্তই হয়তো সকলের জানা। কিন্তু ১৯৭০ এর সেই ঘূর্ণিঝড়ের হিংস্র তান্ডবের কাছে ১০টা আইলাও মনে হয় নস্যি।

আপা আমরা বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতির আঘাতে, সরকার ও রাজনীতির আঘাতে ছিন্নমুল হয়ে আছি। ১৯৭০ থেকে ২০২০ খুব একটা পার্থক্য হয়নি।

আপনাকেও ধন্যবাদ ও শুভ কামনা।

১০| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২১

রামিসা রোজা বলেছেন:
ভয়াল জলোচ্ছ্বাস এর ঘটনা গুরুজনদের মুখে শুনেছি।
তাই আপনার লেখাটা পড়ার পর মনে হচ্ছে সেই ভয়াবহ
ঘটনা যেন আবার নিজ চোখে ভাসছে ।
বাংলার মানুষ আজন্ম মোমেনার মতো নিরব থাকার মানুষ,
নিরব থেকেই এরা মারা যান, বাংলার মানুষের ভাগ্যে ঝড় জলোচ্ছাস দুঃখ কষ্ট নিয়েই জন্ম নিয়েছেন। ভাগ্য আর
নিয়তির কাছেই বন্দি আজীবন।


ধন্যবাদ আপনাকে ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




মানুষের কান্নার জন্যও চোখে পানি থাকতে হয় - খাবারের অভাব, পানীয় পানির অভাব, ঔষধের অভাব। মোমেনার মতো লক্ষ মোমেনা ডুবে গেছে। বাংলাদেশের উপর দিয়ে অনেক অনেক দুঃক কষ্ট বয়ে গেছে। হয়তোবা আরোও বইবে।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

১১| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ঠাকুরমাহমুদ ভাই,

অনেকদিন পর প্রথম পাতায় আপনার পোস্ট পেয়ে আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু পোস্টের ভিতরে ঢুকে ততটাই বিষণ্ণ হলাম।
ভয়ঙ্কর মর্মন্তুদ কাহিনী। ছোট থেকেই অনেক প্রাকৃতিক বিপর্যয় সম্পর্কে জেনেছি বা দেখেছি কিম্বা পড়েছিলও। কিন্তু সাম্প্রতিককালের আম্ফানের মত ঝড় যা যেকোনো মানুষের কল্পনারও অনেক অনেক বাইরে।সেদিন সাড়ে চার ঘন্টায় যে কিভাবে আতঙ্ক নয় পরিবেশের মধ্যে কাটিয়েছিলাম তা কাউকে বলে বোঝাতে পারবো না।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে কিছুটা আঁচ করেছি সত্তরের মর্মান্তিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা। বিষয়টি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।যে ক্ষত কখনও মুছিবার নয়, তা তো স্মৃতিতে অমলিন থাকবেই। তবে পাকুদের বিমাতাসুলভ আচরণ ছিল বলেই তো বাঙালি জাতির ওদেরকে চিনতে পেরেছিল। শ্রদ্ধেয় আহমেদ জী এস ভাইয়ের মন্তব্যটি খুব ভালো লেগেছে।

অফটপিক-গত কয়েকদিন নেট স্লো থাকায় ব্লগে ঢুকে সম্ভব হচ্ছিল না। ভাগ্যের চাকা ঘুরছে তো ঘুরছেই। কিছুতেই যেন পেজ ওপেন হচ্ছিল না। আজও যে অবস্থার উন্নতি হয়েছে তা নয়। আমার সর্বশেষ পোস্টে আপনার কমেন্ট আছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। কিন্তু প্রতিমন্তব্য দেওয়ার সবুজ বাটন আসছে না।গরম গরম জিলাপি পরিবেশন করার জন্য আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ। দেখে তো মনে হচ্ছিল এক্ষুনি একটি খেয়ে ফেলে। হেহেহে)

নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় ঠাকুরমাহমুদ ভাইকে।


১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




পদাতিক চৌধুরি ভাই,
মানুষের জীবন বয়ঙ্কর থেকেও ভয়ঙ্কর! আমার ব্যক্তিগত ধারণা এই ভয়াবহতার অন্যতম কারণ ভাষা ও ভাব প্রকাশ। কথাতেই হয় বন্ধুত্ব কথাতেই হয় শত্রুতা।

১৯৪৭ দেভাগের রায়ট থেকে শুরু করে হিন্দু মুসলিম হত্যা ১৯৭১ যুদ্ধ তথা মানব সৃষ্ট দুর্যোগ তারপরে আছে পাকৃতিক দুর্যোগ - মানুষ টিকে থাকার শক্তিযে কি পারিমান তার প্রমাণ হয়তো এই করোনা ভাইরাসের প্রকোপে দেখতে পাচ্ছেন - মানুষে মানুষে, পশুতে মানুষে ও প্রকৃতি ও মানুষে লড়াই করে টিকে থাকার অন্যতম প্রাণী মানুষ।

আমার লেখাটি পূর্ণাঙ্গতা পেয়েছে আহমেদ জী এস ভাইয়ের মন্তব্যতে আর তাই সম্পূর্ণ মন্তব্য আমি আমার লেখা পোস্টের সাথে সংযোজন করেছি। আপনারা আমার লেখা পড়েন - এটিই আমার ভালোলাগা।

আপনার জন্যও শুভেচ্ছা রইলো।

১২| ১২ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: পূর্ব পুরুষদের কাছে শুনেছি সত্তরের ঘূর্ণিঝড় এর কথা। তথ্যবহুল লেখাটি। এখনো উপকূলের মানুষের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয় কাটেনি। কারণ তাদের জীবনমান সত্তরের কাছাকাছি এখনো ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




উপকূলে ভবিষ্যতে আরোও বিরূপ অবস্থা হবে, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সুন্দরবন যদি কোনো না কোনো ভাবে আক্রান্ত হয় একবার - তাহলে আর দেখতে হবে না, অপেক্ষাও করতেও হবে না! ভবিষ্যত প্রাকৃতিক দুর্যোাগ মোকাবেরা করে করে শেষ হয়ে যাবে বাংলাদেশ নামক দেশটি।


১৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট এবং সবার মন্তব্য গুলো পড়লাম।
আমি হুট করে ঢাকার বাইরে গিয়েছিলাম। তাই পড়তে দেরী হলো।

লেখাটি পরে কিছু জিনিস জানতে পারলাম।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আমিও কোনো পোস্টে মন্তব্য করতে, আমার পূর্বে যারা মন্তব্য করেছেন মন্তব্যগুলো পড়ে নেই। আমি একটি পোস্ট দিয়ে ব্লগ ছেড়ে চলে যাই না, যতোগুলো মন্তব্য তার উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত লগইন থাকি। ব্যবাসায়িক নানা সমস্যার কারণে ব্লগে নিয়মিত লেখালেখি হয়তো সম্ভব হচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য উত্তর দিতে দেড়ি হয়েছে বলে আন্তরিক দুঃখিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.