![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটবেলা থেকে ভ্রমের মধ্যে বড় হওয়া, প্রশ্ন করায় শাস্তি পাওয়া। মেয়ে হয়ে তো ষোলকলাই পূর্ণ করলাম। জ্ঞান আমাকে মুক্তি দিয়েছে। এখন নিজের আর অন্যের ভ্রম হত্যার সংগ্রাম করি যাব।
আমরা বেশির ভাগ মানুষই গভীরে চিন্তা করতে পারি না। এটা একটা সমস্যা। সে জন্য আমরা সমস্যার গোরায় কখনো জেতেই পারি না। কোন ভ্রম যদি আমাদের মগজে বাসা বেঁধে থাকে আমরা সেটাকে টিকিয়ে রাখি। সেটাকে টিকে রাখার জন্য এক গুচ্ছ কারন দিয়ে আমরা দেয়াল হিসেবে বানিয়ে রাখি । সেই ভ্রম দেয়াল যখন ভেদ করা সম্ভব হয়ে উঠে তখনই ভ্রম হত্যা সম্ভব হয়। সেটা একদিনে সম্ভব না। একটা একটা ইট দিয়ে যেমন দেয়াল বানাতে হয়। ভ্রমের দেয়াল একটা একটা করেই ভাঙ্গতে হয়।
গত কয়েক বছর ধরে "নাস্তিক" "মুক্তমনা" "মদারেট মুসলিম" "কাদিয়ানী" "জঙ্গি" "শিয়া" "ইহুরি" "ছাগু" এমন শব্দগুলো ব্লগে দেখতে দেখতে বারবারই মনে হয় আমরা কতটা রেসিস্ট জাতি হতে পারি এই ব্লগই তার প্রমান। অথচ ব্লগ একসময় ছিল মুক্তচিন্তার প্রতীক। হাজারটা মতামত, দর্শন, সাহিত্য,সমালোচনা নিয়ে যুক্তিনির্ভর কথাবার্তা হত এইখানে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা পাথর নিক্ষেপের জায়গা। নাস্তিক মারে আস্তিকের উপর, আস্তিক মারে নাস্তিকের উপর। একসময় নাস্তিক গালি দেয়া শুরু করে আস্তিকের আবেগের জায়গা নিয়ে। একটা সময় কিছু আস্তিক কিছু আয়াতের নামে চাপাতি ধরছে।
আমি প্রথমে ভাবতাম (যখন ব্লগ পড়তাম না) যে নাস্তিকরা না জেনে ইচ্ছা মত বলে যায়। কেউ যুক্তি দিলেও তারা উলটা গালি দেয়। মোট কথা তারা উম্মাদ। এমনটাই শুনে এসেছিলাম।
একসময় ব্লগের সাক্ষাত পেলাম। খুজে বের করলাম নাস্তিকদের। কৌতূহল থেকে দেখলাম তাদের পোস্ট। সত্যি কথা বলতে অনেক পোস্ট পড়ে আমার অনেক কষ্ট লেগেছে । মানুষ কিভাবে এত বিছ্রি করে লিখতে পারে। যেখানে অন্য অনেক নাস্তিক ব্লগারটা ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক উদ্রিতি দিয়ে যুক্তি দিয়ে প্রশ্ন করে লিখছে। তবে একটা জিনিস অবাক লাগতো কমেন্টএ গিয়ে। দেখি যে যুক্তি দিয়ে লিখছে আর যে ব্লেসফেমি করছে উভয়ের মন্তব্যে সমান্তরাল গালির ছড়াছড়ি। কিছু জ্ঞানি আস্তিক দেখলাম যুক্তি দিচ্ছি। নাস্তিকরাও কাউন্টার যুক্তি দিচ্ছে। তবে সুস্থ মতামতের চর্চা দুর্লভ।
একজন ফিলোসফার বলেছিল অন্যায় একটা ব্যাধি। সেটা দূর করা যায় প্রজ্ঞার মাধ্যমে। চোর তার চুরির পিছনে অনেক হাল্কাযুক্তি দার করায়। সেই যুক্তিকে হত্যা কর তাহলে "চোর" পেশাই হত্যা হয়ে যাবে। ব্লেসফেমি (নাস্তিকতা না) আমার দৃষ্টিতে একটা অন্যায় (ঠিক যেমন আপনার মাকে কেউ গালি দিলে অন্যায় হবে) এর সেটার পিছনে আছে কিছু হাল্কাযুক্তি । সেটাকে হত্যা করলে " ব্লেসফেমিক" নামের adjective ও বিলুপ্ত হবে।
আর যদি মনে হয় যে ব্লেসফেমি আমাদের হৃদপিণ্ড বা মগজের মত একটা ওবিবেচ্ছেদ্য অর্গান। তাহলে তো শরীরকেই হত্যা করতে হয় । কিন্তু আমরা সবাই এই টুকু সুস্থ মস্তিস্ক নিয়ে জন্ম নিয়েছি যে জানি ব্লেসফেমি প্রদত্ত নয়।
ব্যাধির মৃত্যু হোক, রুগীর নয়।
©somewhere in net ltd.