নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
......আজ পাশ্চাত্যের মুখোশ দেখে আমরা তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি। আমরা যখন ওদিকে তাকায় তখন আমরা তাদের ‘লাসভেগাস’ দেখি, তাদের ‘কেসিনো’ আমাদের সামনে উঠে আসে। কিন্তু ওখানে যারা থাকে তাদের জীবনের অপর পিঠ আমাদেরকে দেখায় না বা আমরা দেখতে চাইনা। যদি দেখতে চাইতাম তবে কেসিনোর সুন্দরী নারীর ভেতর দিয়ে গণ ধর্ষিতা অসংখ্য নারীর প্রতিকৃতি ভেসে উঠতে দেখতাম। সেই মেয়েটির মুখেই দামী মেকআপ মাখিয়ে তাদেরকে আমাদের সামনে উপস্থাপিত করছে। আমরা শুধু তাদেরকে নিয়ে রোমাঞ্চকর অনুভূতির জগতে ভ্রমন করি কিন্তু সেই মেয়েটির জীবনের কালো অধ্যায়ের দায় এড়ানো মানুষদেরকে পাশ কাটিয়ে যায়,তাদের কু-কর্ম আমাদের চোখে মহৎ হিসেবে ধরা দেয়। আমরা তাদের তৈরী করা জীবন ব্যবস্থায় জীবন পরিচালনার স্বপ্নে বিভোর হই। যে জীবন ব্যবস্থা তাদের সমাজের প্রতি মিনিটে ৩ জন নারীকে ধর্ষণ করতে শেখায়। যে জীবন ব্যবস্থা তাদেরকে সব থেকে বেশী অপরাধ প্রবন করেছে,তাদের জীবন ব্যবস্থা বক্ষে ধারণ করে আমরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলি। অথচ তাদের জীবন ব্যবস্থার বেশ খানিকটা নেওয়ার ফলে আমাদের সমাজের উঁচু শ্রেণীর আভ্যন্তরীণ অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি।
ইসলামে নারী অধীকার
২০০৬ সালের বিশ্ব নারী দিবসের শ্লোগান ছিল “নারী পুরুষ নয় আমরা মানুষ হিসেবে বিবেচিত হতে চাই।”
এবার আমরা দেখবো, ইসলাম নারীর ব্যাপারে কি বলছে ? বা সম-অধিকারের ব্যাপারে ইসলামের বক্তব্য কি ? আল কুরআন সম্পর্কে যাদের মোটামুটি ধারনা আছে বা যারা অন্তত এর বাংলা তরজমা পড়তে পারেন তারা এটি পড়লে বুঝতে কষ্ট হবার কথা নয়, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পবীত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াতে বলেছেন ১) হে ঈমানদাররা .........২) হে মুমিনগণ .......৩) হে মানুষেরা............৪) হে আমার বান্দারা................. এভাবে আল্লাহ তায়ালা কথা বলা শুরু করেছেন।
রসূল সাঃ বলেন, “মাতার পায়ের নীচে সন্তানের বেহেস্ত” রসূল সাঃ কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আমার কাছ থেকে সর্বাধিক উত্তম ব্যবহারের অধিক হকদার কে ? রসূল সাঃ বলেছিলেন “তোমার মা” উক্ত সাহাবা ৩বার জিজ্ঞেস করলেন, ৩বারই রসূল সাঃ বল্লেন “তোমার মা” ৪র্থ বার যখন জিজ্ঞেস করা হলো তখন তিনি বললেন, “তোমার পিতা।”(বুখারী) তাহলে এখানে মা বা নারীকে ইসলাম কি সম্মানিত করেনি ? বরং পুরুষকে বলা হয়েছে, সে যেন তার নিরাপত্তা বিধান করে, তার রক্ষনাবেক্ষণের দায়ীত্ব নেয়।
আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা হে পুরুষেরা, হে নারীরা বলে বাণী প্রেরণ করেননি। অর্থাৎ কি বোঝা যায় ? মানুষ মানে নারী ও পুরুষ। মুমিন মানে- যারা আল্লাহর পথে থেকে তার প্রিয় বান্দা হয়েছেন এবং যারা আল্লাহকে ভয় করে, এরা পুরুষ ও নারী। ঈমানদারেরা মানে যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহ ও রসুলের কথামত চলেছে এরাও নারী,পুরুষ। আল্লাহর বান্দাও নারী,পুরুষ। তো ইসলামের বক্তব্য হলো নারী পুরুষ উভয়কে নিয়ে। আর আল্লাহর কাছে সেই বেশী মর্যাদাবান,যে আল্লাহর নির্দেশমত কাজ করে। সে যদি নারী হয় আর আল্লাহর পথে থাকে, তাহলে আল্লাহর কথা মেনে না চলা পুরুষের থেকে এই নারীর মর্যাদা আল্লাহর কাছে অনেক বেশী। বাহ্যিকভাবে কে শ্রেষ্ঠ এটা ইসলামে বিবেচ্য নয় বরং কুরআন ও সুন্নাহ পালনে এখানে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হয়। কাজেই ইসলামের দৃষ্টিতে নারী পুরুষ সমান। তবে উভয়ের আকৃতি, মানুষিকতা, প্রকৃতি ভিন্ন করে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সে কারনে তাদের দায়ীত্ব ,কর্তব্যও কিছুটা আলাদা। আর যেহেতু মূল মাপকাঠি হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত তাই আল্লাহ যাকে যে দায়ীত্ব দিয়েছেন, তার সে দায়ীত্ব পালনের মধ্যেই সফলতা, সম্মান, মর্যাদা নির্ণিত হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন- “...তোমাদের মধ্যে সেই সবথেকে সম্মানিত ব্যক্তি, যে আল্লাহকে বেশী ভয় করে।”
(আল-কুরআন,৪৯ঃ১৩)
পাশ্চাত্যের সমঅধিকার এবং ইসলামের সমঅধিকারের মধ্যে তাই কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। পাশ্চাত্য নারী, পুরুষ উভয়কে এভাবে দেখে যেমন ঃ এ কাজটি পুরুষ করতে পারলে, নারী তা পারবে না কেন ? অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছেঁ গেছে যে, পুরুষরা কিছুদিন পর নিজেদের পেটে সন্তান ধারনের অধিকার চাইবে আর নারীরা গোঁফ,দাড়ির অধিকার চাইবে। অথচ আল্লাহ তায়ালা নারীকে অত্যন্ত কোমলভাবে সৃষ্টি করেছেন। তাই পুরুষের কর্মক্ষেত্র আর নারীর কর্মক্ষেত্র এক নয় কিন্তু উভয়ই তার কর্মক্ষেত্রে সফল হলে আল্লাহ সমান পুরুস্কার দিবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
“তোমরা(নারী,পুরুষ) যদি বড় বড় গোনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পার , যা থেকে বেঁেচ থাকার জন্য তোমাদের (রসূলের মাধ্যমে)নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ,তবে ছোট ছোট গোনাহ আমি ক্ষমা করে দেব এবং অত্যন্ত সম্মানজনক স্থানে আমি তোমাদেরকে পৌঁছে দেব।... ... যা কিছু পুরুষরা অর্জন করলো তার প্রতিদান সে পাবে, আবার যা কিছু নারীরা অর্জন করলো তার প্রতিদানও সে পাবে, তোমরা আল্লাহর কাছ থেকেই অনুগ্রহ প্রত্যাশা কর... ...।”(সূরা আন্ নিসা : ৩১-৩২)
বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে শুধু বসে থাকার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন আর পুরুষকে পরিশ্রম করতে বলেছেন। আল কুরআনে নারীর অধিকার সংক্রান্ত একটি বড় সুরা নাযীল করা হয়েছে(সূরা আন্ নিসা) অথচ পুরুষের জন্য কোন বিশেষ সুরা নেই। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পাশ্চাত্যের নারীরা সমান পারিশ্রমিকের জন্য আন্দোলন করে ইউরোপ আমেরিকাতে তা প্রতিষ্ঠিত করেছে(তবে কাজে নিয়োগ দানের ক্ষেত্রে এখনও ইউরোপ,আমেরিকার দেশগুলোতে নারীর চাইতে পুরুষকে অগ্রাধীকার দেওয়া হয় এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি লক্ষ্যনীয়)। বহু দেশে তা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অথচ ১৪ শত বছর আগে ইসলাম নারী পুরুষের সমান মুজুরী নির্ধারণ করেছে এবং ইসলামী ভুখন্ডে তা ১৩ শত বছর ধরে বাস্তবায়িতও হয়েছিল। ১৯২৪ সালে খিলাফত ধ্বংসের পর পাশ্চাত্যের অপ-প্রচারের কারনে নতুন প্রজন্ম তাই এই বিষয়ে অজ্ঞ থেকে গেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“অতঃপর ঈমানদারদের রব, তাদের দোয়া কবুল করেছেন। নারী হোক পুরুষ হোক তিঁনি কারো আমল বিনষ্ট করেন না। তোমরা পরষ্পর একে অন্যের অবিচ্ছেদ্যে অংশ।” (সূরা আল ইমরানঃ ১৯৫) সম্পত্তির অধিকারের ব্যাপারে ইসলাম বলেছে নারী পুরুষ উভয়ই সম্পদ ক্রয়, বিক্রয় করতে পারে, বন্দক রাখতে পারে, লিজ দিতে,নিতে পারে, উইল করতে পারে। সম্পদ জমা করে তা বৃদ্ধি করতে পারে এবং তার প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “পিতামাতা ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা যা রেখে যায় তাতে পুরুষের অংশ রয়েছে এবং পিতামাতা ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা যা রেখে যায় তাতে নারীদেরও অংশ রয়েছে” (সূরা আন নিসা: ৭)
চলবে.....
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:২৫
দ্য েস্লভ বলেছেন: কিন্তু সবসময় আপনাকে সাথে পাওয়া যাচ্ছেনা। এটা দু:খজনক
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৩৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
নতুন একটি সিরিজ চলুক সাথেই আছি