নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“হে মুসলমানগণ ! তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা তাক্ওয়া অর্জন করতে পার” [আল-কুরআন,২ঃ১৮৩]।
প্রতি বছর সিয়াম সাধনার প্রারম্ভে,প্রান্তে এবং কুরবানীর ঈদের সময়ে আমরা একটি জাতীয় বিতর্কে লিপ্ত হই। আর এই বিতর্কের মধ্যমনি হলেন, নি:স্বার্থ পরোপকারী হিসেবে সু-প্রতিষ্ঠিত,অকৃপন জড় বস্তু ,পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। যথাসময়ে না ওঠার দায়ে বরাবরই যিনি অভিযুক্ত।
আরবী তারিখ গণনা করা হয় চাঁদ দেখে। আরবী মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। চাঁদ দেখে বিভিন্ন সময়ের ইবাদত পালন করতে হবে,এ ব্যাপারে কারো কোনা দ্বিমত নেই। দ্বিমত হলো, একের চাঁদ দেখা অন্যের জন্য গ্রহনযোগ্য কিনা বা অন্যের উপর এটি কিভাবে বর্তাবে; তা নিয়ে। এ বছর এ বিতর্ক যখন বরাবরের মত চরমে, তখন একজন সাধারণ বান্দা হিসেবে আমি আগ্রহী হলাম বিভিন্ন হাদীসগ্রন্থ অধ্যায়নে এবং আলিম সমাজের মতামত গ্রহন করতে। চাঁদ দেখা সংক্রান্ত বিষয়ে আজ আমি আমার চিন্তা আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করতে চাচ্ছি। শুরুতে সংক্ষেপে দুটি হাদীস শুনে নেই:
*** রসূল(সা বলেন, তোমরা রোজা রাখবে না, যে পর্যন্ত না চাঁদ দেখতে পাও। একইভাবে তোমরা রোজা ভঙ্গ(ঈদ) করবে না,যে পর্যন্ত না শাওয়ালের চাঁদ দেখতে পাও। তবে যদি মেঘের কারনে তা তোমাদের কাছে গোপন থাকে,তবে শাবান মাস পূর্ণ করবে ত্রিশ দিনে। অপর বর্ণনায় আছে,তিঁনি(সা বলেন- মাস কখনও উনত্রিশ দিনেও হয়। (সূত্র: বুখারী,মুসলিম)
*** রোজা রাখ চাঁদ দেখে এবং রোজা ভঙ্গ করবে চাঁদ দেখে। যদি মেঘের কারনে চাঁদ গোপন থাকে, তবে সাবান মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করবে। (সূত্র: বুখারী,মুসলিম)
এ হাদীসের অর্থ হল-তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখবে এবং চাঁদ দেখেই রোজা ভঙ্গ করবে বা ঈদ পালন করবে। উল্লেখ্য: এখানে রসূল(সা ‘তোমরা’ বলতে, আমাদেরকেই বুঝিয়েছেন। সামনের আলোচনায় ব্যাপারটি আরও স্পষ্ট হবে। সর্ব প্রথম প্রশ্ন করব, এখানে তোমরা(বা আমরা) কারা ? এরা কি তৎকালীন মক্কা,মদীনার মানুষেরা/ সকল সাহাবা(রা/আজকের মক্কা/মদীনা বা আরবের লোকেরা, নাকি রসূলের(সা সকল উম্মত ?
আমার ধারণা সকলেই এক মত পোষণ করবেন যে, তোমরা বলতে এখানে উম্মতে মুহাম্মদীকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ বক্তব্য এই যে, রসূল(সাঃ) তাঁর উম্মতের পুরো অংশকে নির্দেশ দিচ্ছেন-“তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখবে এবং ঈদ পালন করবে। এখানে মেঘের কারনে চাঁদ দেখা যাওয়া/ না যাওয়ার ব্যাপারটিও সকল উম্মতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
“তোমরা চাঁদ দেখে রোজা,ঈদ পালন করবে” এ আদেশ কি উম্মতের প্রত্যেকটি ব্যক্তির উপর প্রযোজ্য ?
যদি এটি প্রত্যেকটি ব্যক্তির উপর সমভাবে প্রযোজ্য হয়, তবে প্রত্যেকটি মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে চাঁদ দেখতে হবে। একের চাঁদ দেখা অন্যের উপর বর্তাবে না। যারা চাঁদ দেখবে তারাই রোজা রাখবে বা ঈদ পালন করবে এবং যারা তা দেখতে পাবে না তারা পালন করবে না অথবা যেদিন দেখবে সেদিনই শুধু রোজা বা ঈদ পালন করবে। আমার ধারণা কোনো আলিমই এ মতের সাথে এক মত পোষণ করবেন না। পূর্ববর্তী কোনো সময়েই এটি পরিলক্ষিত হয়নি। কারণ-রসূল (সাঃ) এমন নির্দেশ প্রদান করেননি। একের চাঁদ দেখা অন্যের জন্য যথেষ্ট হবে কিনা সে বিষয়টি আমরা একটি হাদীসের মাধ্যমে জেনে নেই:
*** রসূল(সা আমাদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন যে,আমরা যেন শাওয়ালের চাঁদ দেখাকে ইবাদত হিসেবে গুরুত্ব দেই। আর আমরা স্বচক্ষে যদি তা না দেখি তবে দুজন ন্যায় পরায়ন লোক এ ব্যাপারে স্বাক্ষ্য প্রদান করলে তখন আমরা যেন তাদের সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করি।
(সূত্র:আবু দাউদ)
এবারে বিষয়টাকে আরও একটু বর্ধিত করে নেই। আমরা জানতে পারলাম,রোজা এবং ঈদ অবশ্যই চাঁদ দেখে পালন করতে হবে এবং এও জানতে পারলাম যে, একের চাঁদ দেখা অন্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো, অন্য যে ব্যক্তি আমার অবর্তমানে বা আমার পরিবর্তে চাঁদ দেখছেন তার সাথে আমার কেমন সম্পর্ক হতে হবে ? (১)তাকে কি আমার পরিবারের সদস্য হতে হবে ? (২) তাকে কি আমার গোত্র/বংশের কেউ হতে হবে ? (৩)তাকে কি আমার পাড়া বা মহল্লা/এলাকার লোক হতে হবে ? (৪) তাকে কি আমার ভাষার লোক লোক হতে হবে ? (৫) তাকে কি আমার দেশের লোক হতে হবে ? অথবা (৬) তাকে শুধুমাত্র রসূলের(সাঃ) উম্মত হলে চলবে কি না ?
আমাদের আজকের আলোচনার জন্যে উপরের প্রত্যেকটি প্রশ্নই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন ব্যপারটি বুঝতে আমরা দুটি হাদীস দেখে নেই:
*** একবার সাহাবীগণ রমজানের চাঁদ দেখা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। তারা তারাবিহ নামাজ না পড়ার এবং পরদিন রোজা না রাখার ইচ্ছা পোষণ করেন। এমতাবস্থায় ‘হাররা’ নামক এক স্থান থেকে জনৈক বেদুইন এসে সাক্ষ্য দেয় যে, সে চাঁদ দেখেছে। তখন তাকে রসূল(সা এর দরবারে নিয়ে আসা হয়। রসূল(সা তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল’ ? সে বলে, হ্যা আমি সাক্ষ্য দেই এবং আরও সাক্ষ্য দেই যে, আমি নতুন চাঁদ দেখেছি। অত:পর রসূল(সা হযরত বেলাল(রা কে নির্দেশ দিলেন,লোকদেরকে জানিয়ে দেওয়ার জন্যে যাতে তারা তারাবিহ নামাজ পড়ে এবং পরদিন রোজা রাখে।
(সূত্র: আবু দাউদ,তিরমিযী,নাসাঈ,ইবনে মাজাহ,দারেমী)
বি:দ্র: এই হাদীসটি আবু দাউদ শরীফে তিন জন রাবীর বর্ণনায় আলাদা আলাদা ভাবে বর্ণিত হয়েছে অথাৎ একই রকম তিনটি হাদীস রয়েছে।
*** একবার লোকেরা রমজানের শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখা নিয়ে মতভেদ করেন। তখন দুজন বেদুইন রসূল(সা এর কাছে হাজির হয়ে আল্লাহর কসম করে সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, গত সন্ধ্যায় তারা শাওয়ালের চাঁদ দেখেছে। তখন রসূল(সা লোকদেরকে রোজা ভাঙ্গার নির্দেশ দেন। রাবী খালফ তার হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, রসূল(সা আরও বলেন যে, লোকেরা যেন আগামীকাল ঈদগাহে আসে”।
(সূত্র:আবু দাউদ)
আমরা হাদীস দুটি শুনলাম এবং বুঝলাম যে, যিনি/যারা চাঁদ দেখে সাক্ষ্য প্রদান করছেন, তাদেরকে অন্যদের পরিবারের সদস্য হবার প্রয়োজন নেই,তাদের বংশের/গোত্রের লোক হবারও প্রয়োজন নেই। তাদের এলাকা/দেশের লোক হবারও প্রয়োজন নেই। এ হাদীস অনুযায়ী রসূল(সাঃ) ভিন্ন একটি স্থানের লোকদের সাক্ষ্য গ্রহন করেছেন। এখানে আরও উল্লেখ্য যে, এ ব্যাপারে বিশ্বস্ত এক জনের সাক্ষ্যও গ্রহনযোগ্য। এ মর্মে আমরা দুটি হাদীস জেনে নেই :
*** হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর(রাঃ) বলেন,একবার বহু লোক মিলে চাঁদ দেখতে ও দেখাতে লাগল। আমি গিয়ে রসূল(সাকে সংবাদ দিলাম যে, আমি চাঁদ দেখেছি। এ সংবাদ শুনে রসূল(সা নিজে রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং লোকদেরকেও রোজা রাখতে নির্দেশ দিলেন।
(সূত্র: আবু দাউদ,দারেমী)
*** হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,জনৈক বেদুঈন রসূল(সাঃ)এর নিকট এসে বলল-আমি রমজানের নতুন চাঁদ দেখেছি। তিঁনি(সঃ) জিজ্ঞেস করলেন-‘তুমি কি এ সাক্ষ্য দাও যে,আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই ? তুমি কি আরও সাক্ষ্য দাও যে, মুহাম্মদ(সাঃ) আল্লাহর রসূল ?’ সে বলল-হ্যা। অত:পর রসূল(সাঃ) বললেন-হে বেলাল ! লোকদের মধ্যে ঘোষণা করে দাও,তারা যেন আগামী কাল থেকে রোজা রাখে।( সূত্র: তিরমিযী)
আমার বিশ্বাস যে পর্যন্ত আলোচনা করা হয়েছে,সে পর্যন্ত সকল আলেমই একমত পোষণ করবেন। বিপত্তি আসলে এর পরের অংশ নিয়ে। চলুন সে সংক্রান্ত আলোচনায় প্রবেশ করি।
আমরা দেখলাম চাঁদ দেখার ব্যাপারে ভিন্ন এলাকার লোকের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে। কিন্তু সে লোকটি কতদূর থেকে এসে সাক্ষ্য দিলে তা গ্রহনযোগ্য হবে,এ মর্মে আমরা কোনো হাদীস দেখতে পাইনা এবং পূর্ববর্তী সময়ের কোনো ঘটনাও এটিকে সমর্থন করেনা যে,কেউ বেশী দূরবর্তী স্থান থেকে এসে সাক্ষ্য দেওয়ার কারনে তার সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়নি। অর্থাৎ যে লোকটি ভিন্ন এলাকা থেকে আগত হয়েছেন,তিনি কত দূরবর্তী স্থানের মানুষ তা বিষয় নয়। বরং তিনি একজন মুসলিম এবং বিশ্বস্ত কিনা সেটি আলোচনার বিষয়। কেউ যদি বলে উক্ত ব্যক্তি ভিন্ন দেশের মানুষ হলে তার সাক্ষ্য গ্রহন করা হবে না , তবে একই দেশের ভেতর অবস্থিত ভিন্ন এলাকার মানুষ হলে তার সাক্ষ্য গ্রহন করা হবে । এমনটি বললে, আমরা তার কাছে হাদীসের দলিল চাইতে পারি দেশ সংক্রান্ত বিষয়ে ,অবশ্য তিনি তার স্বপক্ষে দলিল পেশ করতে সক্ষম হবেন না।
দেশ ব্যাপারটি কি ?
দেশ ব্যাপারটি হলো একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সীমারেখা,যার উপর ভিত্তি করে একটি এলাকাকে নিজেদের বলে আখ্যায়িত করা হয়। মূলতঃ পৃথিবী আল্লাহর এবং তা সকল মানুষের জন্যে উম্মুক্ত। হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) সারা পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে রসূল। তিনি নির্দিষ্ট কোনো গোত্র,সম্প্রদায়ের জন্যে নির্ধারিত নন। আর তাই তাঁর(সাঃ) সকল বক্তব্য পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে সমভাবে প্রযোজ্য।
অতএব, চাঁদ দেখা সংক্রান্ত বিষয়টি সারা পৃথিবীর সকল মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কোনো এলাকার লোক চাঁদ দেখতে ব্যর্থ হলে,ভিন্ন এলাকার মানুষের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে এবং এখানে সেই লোকটি কত দূরবর্তী স্থানের লোক তা বিবেচনায় আনা হয়নি। এখানে আরেকটি বাস্তবতা হলো যোগাযোগের মাধ্যম। তৎকালীন সময়ে মানুষের বাহন ছিল ঘোড়া,গাধা,উট,পদযুগল ইত্যাদী। এগুলোর উপর ভিত্তি করে একজন মানুষের পক্ষে এক দিনে খুব বেশীদূর অগ্রসর হওয়া সম্ভবপর ছিলনা। ফলে যিনি চাঁদ দেখছেন তার পক্ষে দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষকে জানানো সম্ববপর ছিলনা। আজকের দিনের মত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেডিও,টেলিভিশন,ইন্টারনেট,টেলিফোন না থাকাতে তাদের পক্ষে দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষের সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব ছিল না। ফলে, সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে প্রথমে তা নিজ এলাকার লোকদেরকে জানিয়ে দেওয়া হত,তারপর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষদেরকে জানানোর জন্যে ঘোড় সওয়ার পাঠানো হত। প্রথম থেকেই এই নিয়ম চালু ছিল। কিন্তু ঘোড় সওয়ারের পক্ষেও বহুদূর গমন করা সম্ভবপর ছিলনা। কিন্তু আমরা এখান থেকে একটি বিষয় বুঝতে পারি,তা হলো-কোনো এলাকায় চাঁদ দেখা গেলে যথাযথ গুরুত্বের সাথে অন্য এলাকার মানুষকে জানানো জরুরী, যাতে করে সকলে একসাথে রোজা ,ঈদ পালন করতে পারে।
ঘোড়ার মাধ্যমে যোগাযোগের এ মাধ্যমটির চেয়েও আরও উন্নত যোগাযোগ মাধ্যম পরবর্তী সময়ের খিলাফতের যুগে আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সে সময়ে সমুদ্রবক্ষে জাহাজের নিরাপদে দিক চিনে চলাচলের সুবিধার্তে যে সকল লাইট হাউস বা বাতিঘর ছিল,আকাশে চাঁদ দেখা গেলে সেগুলিতে আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হত। একটি লাইট হাউসে আলো জ্বললে সে খবর যখন অন্যটিতে পৌঁছাত ,তখন অন্যটিতেও আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হত। এভাবে জনতা আলো জ্বলতে দেখে চাঁদ দেখার ব্যাপারটি বুঝতে পারত। এ প্রক্রিয়ায় যে সকল এলাকার মানুষ চাঁদ দেখার ব্যাপারটি বুঝতে পারত,সে সকল এলাকার মানুষেরা রোজা,ঈদ একসাথে পালন করত।
এখান আমরা একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারব যে, আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, এ সংবাদটি পায়ে হেটে অন্যদেরকে জানানো,ঘোড়ায় চড়ে জানানো,লাইট হাউসের মাধ্যমে জানানোর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক কোনো পার্থক্য নেই বরং প্রযুক্তিগত পার্থক্য রয়েছে,যা প্রথম যুগ থেকেই গ্রহন করা হয়েছে। বেশী সংখ্যক মানুষকে দ্রুততার সাথে জানানোর জন্যে এ মাধ্যমগুলি প্রযুক্তি বিশেষ,যা সময়ের প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত হয়েছে। এখানে উক্ত প্রযুক্তির একটিই উদ্দেশ্য ছিল,তা হলো-দ্রুততার সাথে অন্যদেরকে চাঁদ দেখার সংবাদটি জানানো।
আজকের এই প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সময়ে যদি কেউ এক এলাকাতে চাঁদ দেখতে পায় এবং তা অন্য এলাকার লোকদেরকে টেলিফোনে,ইন্টারনেটে,টেলিভিশনে,রেডিওর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়, তাহলে তা পূর্ববর্তী সময়ের পায়ে হাটা,ঘোড়ায় চড়া,লাইট হাউসের মাধ্যমে ঘটিত প্রচারণার সমপর্যায়েরই হবে। কারণ, এখানে উদ্দেশ্য একই। এ লক্ষ্যে কোনো ভৌগলিক সীমারেখা ইসলামে বিবেচ্য বিষয় নয়। বরং জাতীয়তাবাদী নীতিতে আবদ্ধ হয়ে মুসলিমদের ভূখন্ডকে ভৌগলিক বিভাজন করা সুস্পষ্ট হারাম। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জাতীয়তাবাদের (আসাবিয়্যার) প্রতি আহ্বান করে সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়।”
অতএব, যদি আরবের কোথাও চাঁদ দেখা যায়,তাহলে সে সংবাদ ভিন্ন এলাকায় পৌঁছে গেলে “চাঁদ দেখা গেছে” ব্যাপারটি উক্ত এলাকার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। আবার ভিন্ন এলাকাতে চাঁদ দেখা গেলে সে সংবাদ আরবে পৌঁছলে, আরবের জন্যও এটি গ্রহনযোগ্য হবে। এভাবে সকল স্থানের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি একই। চাঁদকে জাতীয়তাবাদের সংকীর্ণ ধারনার জালে জড়ানো যাবে না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়:- ধরে নিলাম,ইরাকের সময়ের চেয়ে বাংলাদেশের সময় ৩ ঘন্টা কম,অর্থাৎ ইরাকে যখন মাগরিবের সময় হবে তার তিন ঘন্টা পর বাংলাদেশে মাগরিবের সময় হবে। সে অনুযায়ী ইরাকে চাঁদ দেখা গেলে বাংলাদেশের লোক সে সংবাদ বিকেলের দিকে জানতে পারবে এবং সন্ধ্যায় এখানে চাঁদ দেখা যাক বা না যাক ধরে নেওয়া হবে চাঁদ দেখা গেছে বা উদীত হয়েছে। এখানে আমরা ভিন্ন এলাকার মানুষের সাক্ষ্য গ্রহন করলাম সুন্নাহ অনুযায়ী। আবার এমনও হতে পারে, ইরাকের লোকেরা চাঁদ দেখতে পেলনা এবং এ সংবাদটিও আমরা বিকেলের দিকে জানতে পারব,তখন আমরা সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার চেষ্টা করব। যদি এখানে চাঁদ দেখা যায়,তাহলে আমরা তাদেরকে এবং অন্যদেরকে জনাবো এবং তা গ্রহনীয় হবে। যদি এখানেও না দেখা যায় তবে আমাদের চাইতে যে সকল এলাকার সময় কম অর্থাৎ আরো পরে সন্ধ্যা হয়,তারা আকাশে চাঁদ খোঁজার চেষ্টা করবে এবং পেলে তা ঘোষিত হবে সকলের জন্যে। এখানে আরেকটি ব্যাপার উল্লেখ করার আছে :
পৃথিবীর এক প্রান্তের সাথে অপর প্রান্তের সময়ের সর্বোচ্চ পার্থক্য ১২ ঘন্টা। যদি আমরা বা অন্য কোনো অঞ্চলের মানুষেরা সেহরী করার নির্ধারিত সময় পার হবার পর ,চাঁদ উদীত হবার ব্যাপারে জানতে পারে,তাহলে তাদের উপর উক্ত দিনের রোজা রাখার বাধ্যবাদকতা অর্পিত হয়না। আবার চাঁদ উদিত হয়েছে, এ সত্য সংবাদটি কারো কাছে অথবা কোনো এলাকার নিকট না পৌঁছালে তাদের উপরও রোজা রাখা বা অন্যদের সাথে ঈদ(যদি ঈদের চাঁদ দেখার সংবাদ তাদের কাছে না পৌঁছায়) পালন করার বাধ্যবাদকতা অর্পিত হয়না। সে পরিস্থিতিতে তাদেরকে নিজেদের প্রচেষ্টায় চাঁদ দেখতে হবে(অথবা ত্রিশ রোজা পূর্ণ করতে হবে),যেহেতু অন্য স্থান থেকে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারনে তথ্য আসার সম্ভাবনা নেই। এ প্রসঙ্গে আমরা হাদীস থেকে জানব:
*** হযরত মূসা ইবনে ইসমাইল কুরায়ব থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন,উম্মে ফাযল বিনতে হারিস তাকে মুয়াবিয়ার কাছে শাম দেশে(সিরিয়া) পাঠান। তিনি বলেন, আমি সিরিয়া থাকা অবস্থায় রমজানের চাঁদ ওঠে এবং আমরা তা দেখি জুম্মার রাতে। অত:পর আমি রমজানের শেষের দিকে মদীনায় ফিরে আসি। ইবনে আব্বাস আমাকে সফর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন এবং বিশেষ করে চাঁদের সম্পর্কে বলেন-“তোমরা রমজানের চাঁদ কখন দেখেছিলে ?” আমি বলি-জুম্মার রাতে দেখেছি। অত:পর তিরি জিজ্ঞেস করেন-“তুমি নিজেও কি তা দেখেছিলে ?” আমি বলি, হ্যাঁ এবং অন্যান্য লোকেরাও দেখেছে ও রোজা রেখেছে,এমনকি মুয়াবিয়াও রোজা রাখেন। ইবনে আব্বাস বলেন, আমরা চাঁদ দেখেছি শনিবার রাতে। সুতরাং আমরা ত্রিশদিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখব অথবা শাওয়ালের চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোজা রেখে যাব। আমি বললাম, মুয়াবিয়ার দর্শন ও রোজা রাখা কি এ ব্যাপারে যথেষ্ট নয় ? তিনি বলেন না, আমাদেরকে রসূল(সা এরকম করতে নিষেধ করেছেন।
(সূত্র:আবু দাউদ)
*** তাবেঈ ইবনে বাখতারী বলেন,একবার আমরা ওমরা করার জন্যে বের হলাম। যখন আমরা বাতনে নাখলা নামক স্থানে পৌঁছলাম,তখন সকলে মিলে চাঁদ দেখতে পেলাম। আমাদের মধ্যে কেউ বলল, এটি তিন দিনের চাঁদ, কেউ বলতে লাগল এটি দুই দিনের চাঁদ। পরে আমরা যখন ইবনে আব্বাসের সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম,আমরা রমজানের চাঁদ দেখেছি,কিন্তু আমাদের কেউ বলেছে এটি তিন দিনের ,কেউ বলেছে এটি দুই দিনের চাঁদ। ইবনে আব্বাস বললেন, তোমরা কোন রাতে দেখেছো ? আমরা বললাম,অমুক রাতে। তখন তিনি বললেন, রসূল(সা সেখান থেকে তারিখ গণনা করতেন, যে রাতে চাঁদ দেখতেন।
( সূত্র: মুসলিম,তিরমিযী)
এখানে উল্লেখ্য যে, মদীনা থেকে তৎকালীন সিরিয়ার দূরত্ব এত বেশী ছিল যে, একই দিনের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করা সম্ভবপর ছিলনা। ফলে, উভয় এলাকার মানুষ ভিন্ন তারিখে চাঁদ দেখে রোজা রেখেছে। পরের হাদীসটিতেও একই ব্যাপার ঘটেছে অর্থাৎ তাদের কাছে অন্য এলাকার কোনো তথ্য পৌঁছেনি,ফলে তাদেরকে নিজেদের মত করে চাঁদ দেখতে হয়েছে। যদি তাদেরকে ভিন্ন এলাকার কোনো লোক এসে “চাদ দেখা গেছে” এ সংবাদ দিত ,তাহলে তারা অবশ্যই তা গ্রহন করতেন;পূর্বোক্ত হাদীস অনুযায়ী। এক্ষেত্রে শর্ত হল, যিনি/যারা চাঁদ দেখার বিষয়টি জানাচ্ছেন,তিনি/তারা বিশ্বাসযোগ্য কি না। যদি তিনি বা তারা বিশ্বাসযোগ্য হন তাহলে তার সাক্ষ্য গ্রহন করা হবে। বর্তমান কালে স্যাটেলাইট টেলিভিশন,ইন্টারনেটের কল্যানে চাঁদকে পৃথিবীর সকল এলাকাবাসীর সামনে সরাসরি উপস্থাপন করা যায়। সুন্নাহ অনুযায়ী এই চরম সত্য বিষয়টি গ্রহনযোগ্য হবার কথা। কিন্তু এটি গ্রহনযোগ্য না হলে একমাত্র আন্তর্জাতিক ভৌগলিক সীমারেখা বা রাজনৈতিক বিষয়টিই চাঁদ দেখা সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে প্রধান বাঁধা হয়ে দাড়ায়, যা সরাসরি সুন্নাহ বিরোধী।
এছাড়া কিছু কিছু এলাকাতে(মেরু এলাকাতে) ৬ মাস দিন এবং ৬ মাস রাত হয়। নরওয়েতে কখনই রাত বা সন্ধ্যা হয়না এবং ইউরোপের কয়েয়কটি দেশে কখনও কখনও দিন ২৩ ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়ে থাকে। এ সমস্ত ক্ষেত্রে তাদেরকে ভিন্ন এলাকার তথ্যের সাহায্যে রোজা এবং ঈদ পালন করতে হবে/হয়। কেউ যদি বলে, প্রত্যেক দেশের মানুষকে চাঁদ দেখতে হবে,তাহলে তার কাছে জানতে চাইব, নরওয়ে,গ্রিনল্যান্ড ইত্যাদী দেশে এবং উত্তর মেরু,দক্ষিন মেরুতে থাকা মুসলিমদের কি হবে ? জাতীয়তাবাদী চাঁদ তো তাদের জাতিকে স্বীকৃতি দিলনা রোজা বা ঈদ পালনের ! নাকি রোজার পূর্বে তাদেরকে দেশ ত্যাগ করে ‘সময়মত চাঁদ ওঠে’ এমন দেশে পাড়ি জমাতে হবে ?
আবারও পূর্বোক্ত হাদীস পেশ করছিঃ-
*** রসূল(সা বলেন, তোমরা রোজা রাখবে না, যে পর্যন্ত না চাঁদ দেখতে পাও। একইভাবে তেমরা রোজা ভঙ্গ(ঈদ) করবে না,যে পর্যন্ত না শাওয়ালের চাঁদ দেখতে পাও। তবে যদি মেঘের কারনে তা তোমাদের কাছে গোপন থাকে,তবে শাবান মাস পূর্ণ করবে ত্রিশ দিনে। অপর বর্ণনায় আছে,তিনি(সা বলেন- মাস কখনও উনত্রিশ রাতেও হয়। (বুখারী,মুসলিম)
*** রোজা রাখ চাঁদ দেখে এবং রোজা ভঙ্গ করবে চাঁদ দেখে। যদি মেঘের কারনে চাঁদ গোপন থাকে তবে সাবান মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করবে। (বুখারী,মুসলিম)
এখানে রসূল(সাঃ) সারা বিশ্বের সমস্ত মানুষকে উদেশ্যে করে এ বিধানটি শুনিয়ে দিচ্ছেন। ফলে তা সেভাবেই পালিত হবে। সারা বিশ্ব যদি মেঘে ঢেকে থাকে তবে চাঁদ দেখা যাবে না এবং সাবান মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ হবে। এছাড়া যদি কোনো দিন সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হয় তাহলে রসূল(সাঃ) বলেন:-
যে ব্যক্তি সন্দেহের দিনে রোজা রেখেছে,সে আবুল কাশেমের(রসূল সাএর নাফরমানী করেছে।
( সূত্র: আবু দাউদ,তিরমিযী,নাসাঈ,ইবনে মাজাহ)
অনুরূপভাবে ‘ঈদের চাঁদ দেখা গেছে’ এই সংবাদ প্রকাশিত হলে,সকলকে একসাথে ঈদ পালন করতে হবে। কোনোভাবেই ঈদের দিনে রোজা রাখা যাবে না।
*** আবু সাঈদ খুদরী (রা থেকে বর্নীত, রাসুল (সাঃ) রোযার ঈদের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন।
(সূত্র: বুখারী ও মুসলিম)।
প্রখ্যাত আলেম ওলামাগণ এ সিন্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে,- এক শহরের মানুষ রমযানের চাঁদ দেখলে অন্য শহরের লোকদের জন্যও চাঁদ দেখা প্রমাণিত হবে। এমনকি পৃথিবীর একেবারে পশ্চিম প্রান্তে চাঁদ দেখা গেছে, এই সংবাদ যদি নির্ভরযোগ্য সূত্রে পূর্ব প্রান্তের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে, তবে তাদের উপর এই দিনে রমযানের রোযা ফরয হবে।
(সূত্র: দুররুল মুখতার, ২য় জিলদ, পৃষ্ঠ-১০৮; আলগিরী, ১ম জিলদ, পৃঃ-১৯৮; বাহরুর রায়েক, ২য় জিলদ, পৃঃ-২০৭; মাজমাউল আনহুর, ১ম জিলদ, পৃঃ- ২৩৯)
হযরত ইমাম আবু হানিফা (রহ এর যাহিরুর রেওয়ায়াহ এবং ফেকাহায়ে হানাফিয়ার অধিকাংশের অভিমত হল চন্দ্রের উদয় ও অস্তের ব্যবধান গ্রহণযোগ্য নয়। তারা পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে বিরাট ব্যবধান হওয়া সত্যেও উদয় অস্তের পরিবর্তনের দিকে দৃষ্টি না দিয়ে এক রাস্ট্রের চাঁদ দেখাকে অন্য রাস্ট্রের জন্য যথেষ্ট মনে করে রায় প্রদান করেছেন।
একটি যুক্তি ঃ
হযরত শিব্বির আহমাদ উসমানী (রহ) ফতহুল মুলহিম নামক হাদীসের কিতাবে নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন যে, আরবী মাস ২৯ দিন বা ৩০ দিন হয়ে থাকে। কোন দেশে ২৮ রমজানের দিন যদি খবর আসে যে অন্য দেশে চাঁদ দেখা গিয়েছে, সে অনুযায়ী রোযা ভাংগ করলে তো তাদের রমজান মাস ২৮ দিন হয়ে যাবে। আবার ৩০ দিন রোযা রাখার পরেও যদি কোথাও চাঁদ দেখার খবর না আসে, তাহলে তো তাদের ৩১ টি রোযা রাখতে হবে। অথচ চন্দ্র মাস তো ২৮ দিন কিংবা ৩১ দিন হয় না। তাই যার যার দেশের চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে রোযা পালন বা মাস গণনা করাই শ্রেয়।
প্রথমতঃ এ অভিমতের স্বপক্ষে সুন্নাহ ভিত্তিক কোন দলিল নেই। দ্বিতীয়তঃ তিনি বলেছেন আরবী মাস ২৮ দিন কিংবা ৩১ দিন হবে না, একথা সঠিক। কিন্তু কখন মাস গণনা শুরু হবে তার প্রতি গুরুত্ব¡ না দিয়ে দুরবর্তী কোন দেশে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে মাস শেষ করলেই একম হতে পারে। তাই মাসের শুরুটাও একই নিয়ম হতে হবে। অর্থাৎ চাঁদ দেখার খবর পাওয়ার সাথে সাথেই মাস শুরু করতে হবে। মাস শুরু করা এবং শেষ করার ক্ষেত্রে একই নিয়ম পালন করলে আর এরকম সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। তাহলে কোন মাস ২৮ দিন বা ৩১ দিন হবে না। আর যথাযথ ভাবে মাস শুরু করার ৩০ দিন পরেও, চাঁদ দেখা না গেলে রোযা ভংগ করতে হবে,এটিই সুন্নাহ। এখানে পূর্বোক্ত একটি হাদীস আবারও পেশ করতে হচ্ছে:-
*** তাবেঈ ইবনে বাখতারী বলেন,একবার আমরা ওমরা করার জন্যে বের হলাম। যখন আমরা বাতনে নাখলা নামক স্থানে পৌঁছলাম,তখন সকলে মিলে চাঁদ দেখতে পেলাম। আমাদের মধ্যে কেউ বলল, এটি তিন দিনের চাঁদ, কেউ বলতে লাগল এটি দুই দিনের চাঁদ। পরে আমরা যখন ইবনে আব্বাসের সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম,আমরা রমজানের চাঁদ দেখেছি,কিন্তু আমাদের কেউ বলেছে এটি তিন দিনের ,কেউ বলেছে এটি দুই দিনের চাঁদ। ইবনে আব্বাস বললেন, তোমরা কোন রাতে দেখেছো ? আমরা বললাম,অমুক রাতে। তখন তিনি বললেন, রসূল(সা সেখান থেকে তারিখ গণনা করতেন,যে রাতে চাঁদ দেখতেন।
( সূত্র: মুসলিম,তিরমিযী)
এ হাদীসটিতে নাখলা নামক স্থানে যারা ছিলেন,তাদের কেউ কেউ রোজার চাঁদকে দেখে বলছিলেন এটি দুই দিনের এবং কেউ কেউ বলছিলেন, এটি তিন দিনের। যদি চাঁদটি দুই দিনের পুরোনো হয়ে থাকে তাহলে তাদের পক্ষ্যে কি কোনোভাবেই ২৯টি বা ৩০টি রোজা পাওয়া সম্ভব(যেহেতু আরবী মাস ২৮ বা ৩১ দিনে হয়না) ? উক্ত তবেঈ ২৮টি রোজার পালন করার পর যদি ঈদের চাঁদ দেখতে পান,তাহলে কি তার বা তাদের সকলের রোজা বরবাদ হয়ে যাবে বা আল্লাহ কতৃক প্রত্যাখ্যাত হবে ? অথবা তারা কি রোজার চাঁদ ২/৩ তিন দিন পরে দেখতে পেয়ে ভুল করেছিলেন ? দুই দিনের পুরোনো চাঁদ দেখে ২৮টি রোজা পালনের পর তারা যদি ঈদের চাঁদ দেখতে পেতেন,তাহলে কি সেদিনটিতে(অর্থাৎ ঈদের দিনে) রোজা রেখে ২৯টি রোজা পূর্ণ করতেন ?
মূলত: তারা তাদের সাধ্য অনুযায়ী প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তাদের কাছে চাঁদ দেখা সংক্রান্ত বিষয়ে অন্য একালার তথ্য ছিলনা,ফলে তাদেরকে নিজেদের প্রচেষ্টায় চাঁদ দেখতে হয়েছে কিন্তু তারা যথা সময়ে চাঁদ দেখতে সক্ষম হননি। অথবা তাদের কাছে সাবান মাসের যথাযথ হিসাব ছিলনা,যদিও রসূল(সাঃ) সাবান মাস গণনায় অতিরিক্ত সাবধানী ছিলেন। তবে যদি কোনো এলাকার লোক ২৮টি রোজা রাখার পর আকাশে ঈদের চাঁদ দেখতে পায় ,তবে অবশ্যই তাদেরকে ঈদ পালন করতে হবে,কারণ-ঈদের দিন রোজা পালন হারাম। আর সঠিকভাবে সাবান মাস গণনা করা হলেও রমজান মাস ৩১দিনে উত্তীর্ণ হবার সম্ভাবনা নেই। একইসাথে সাবান মাসের ২৯ তারিখে যদি কোথাও চাঁদ দেখতে না পাওয়া যায়,তবে অনুমানের উপর নির্ভর করে পরের দিন রোজা পালন করা যাবে না। উক্ত দিনকে সন্দেহযুক্ত দিন বলা হয় এবং সন্দেহযুক্ত দিনে রোজা পালন করা যাবে না। ঠিক এমনই একটি সন্দেহযুক্ত দিনে একবার প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসীর(রাঃ)এর সামনে একটি ভূনা বকরী উপস্থিত হয় এবং তখন তিঁনি(সাঃ) সকলকে বললেন-খাও। কিন্তু জনৈক ব্যক্তি দূরে সরে গিয়ে বলল-আমি রোজাদার। আম্মার ইবনে ইয়াসীর(রাঃ) বললেন-যে ব্যক্তি সন্দেহযুক্ত দিনে রোজা রাখে সে আবুল কাসিমের(রসূল সাঃ) সাথে অবাধ্য আচরণ করেছে।(সূত্র: তিরমিযী)
আর একটি যুক্তি ও তার জবাবঃ
যারা একই দিনে রোযা রাখার কথা বলেন, তাদের যুক্তি খন্ডন করার জন্য এক শ্রেণীর মানুষ বলেন যে, “একই দিনে রোযার কথা বলেন, তাহলে সকল এলাকায় একই সময় নামাযের কথা বলেন না কেন ?” মূলত: এখানে একই দিনে রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে,এই সময়ে নয়। রোজা রাখার বিষয়টি যেকোনো এলাকার আকাশে চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল এবং এক স্থানের সাথে অন্য স্থানের সর্বোচ্চ সময়ের পার্থক্য ১২ ঘন্টা হতে পারে,এর বেশী নয়(মেরু অঞ্চল সম্পর্কে পূর্বে আলোচিত হয়েছে)। দীবা-রাত্রীর আবর্তনের ফলেই এটি হয়ে থাকে। কিন্তু নামাজের সময়টি চাঁদ দেখার সাথে সম্পৃক্ত নয়,ফলে উদাহরন হিসেবে এটি মোটেও গ্রহনযোগ্য হবে না। নামাজের সময় পৃথিবী-সূর্য্যরে আবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের পার্থক্যের সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ আমি যেখানেই থাকিনা কেন, সূর্য্য উদীত হবার পূর্বেই ফজরের নামাজ আদায় করতে হবে,বেলা দ্বিপ্রহরের সময় যোহর,সূর্য্য টলে গেলে আসর,অস্ত গেলে মাগরিব এবং তার পর এশার নামাজ আদায় করতে হবে। যেসকল এলাকায় ৬মাস দিন,৬মাস রাত হয় অথবা যেখানে কখনই রাত হয়না অথবা যেখানে ২৩ ঘন্টা পর্যন্তও দিন দীর্ঘায়িত হতে পারে, সেখানে সময়ের একটি হিসাব করে,ভিন্ন এলাকা থেকে তথ্য গ্রহন করে নামাজ,রোজা পালন করতে হবে।
এবারে আমরা একটু বাস্তবতার ভেতর প্রবেশ করব:
প্রায় প্রত্যেক রমজান এবং ঈদের সময় আমাদের সাথে আরব/আফ্রিকা/মধ্য এশিয়া/এশিয়ার অনেক দেশ এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশের সাথেও এক/দুই দিনের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। আমাদের দেশে চাঁদ দেখার জন্যে একটি জাতীয় কমিটি রয়েছে এবং তারা শুধু বাংলাদেশের জন্যে চাঁদ তল্লাসী করেন। যখন তারা রোজা বা ঈদের ঘোষণা করেন, তখন বলেন-‘দেশের অমুক স্থানে চাঁদ দেখা গেছে এবং তার ভিত্তিতে ঘোষনা করা হল,আগামীকাল থেকে রোজা শুরু।’ আবার তারা বলেন-‘দেশের কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি।’ এর অর্থ হলো,দেশের কোথাও চাঁদ দেখা গেলে তা গ্রহন করা হত।
আচ্ছা ধরুন দেশের সেই “কোথাও” নামক স্থানটি পঞ্চগড় অথবা ধরুন বেনাপোল। যদি পঞ্চগড় বা বেনাপোলে কেউ চাঁদ দেখতে পেত,তাহলেও কিন্তু চাঁদ দেখা কমিটি উক্ত অঞ্চলের মানুষের সাক্ষ্য গ্রহন করতেন এবং তারা তা করে থাকেন। তাহলে উক্ত অঞ্চল থেকে আরেকটু দূরে যিনি/যারা দাড়িয়ে চাঁদ দেখছেন অথাৎ পঞ্চগড়ের একটু ওপাশে চেংড়াবান্দা অথবা বেনাপোলের একটু ওপাশে পেট্রোপোলে দাড়িয়ে যারা চাঁদ দেখছেন,তাদের সাক্ষ্য চাঁদ দেখা কমিটি কেন গ্রহন করছেন না বা করেন না ? নাকি ওপাশের লোকের ঈমানে কোনো সমস্যা আছে ! তারা তো আমাদের সীমান্তের চেয়ে কয়েক হাত ওপাশে অবস্থান করছে,তাহলে এতকাছে থাকা সত্ত্বেও কেন তাদের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয় না ??? বেনাপোল অথবা পঞ্চগড়ের সাথে ঢাকার দূরত্ব ৩০০-৩৫০কি:মি:। এতদূরের মানুষদের থেকে ঢাকার কমিটি চাঁদ দেখা সংক্রান্ত বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহন করছেন অথচ উক্ত এলাকা সমূহের থেকে কয়েক মিটার বাইরে দাড়ানো মানুষের সাক্ষ্য গ্রহন করছেন না। সমস্যা কোথায় !! মগজে,হাদীসে নাকি সীমান্তে ???
আমার আজকের এই লেখার শিরোনাম জাতীয়তাবাদী চাঁদ রাখা কি অন্যায় হয়েছে ? এক্ষেত্রে কোন হাদীসটি ফিট করা হবে,যখন একটি অবস্থানে আমার বামপাশে দাড়ানো কিছু লোকের সাক্ষ্য আমি গ্রহন করছি এবং একই দূরত্বে ডান পাশে দাড়ানো লোকের সাক্ষ্য আমি গ্রহন করছি না ? ডান পাশের লোকগুলো যদি ভারত অথবা মায়ানমার হয় এবং তারা যদি মুসলিম হয় তাহলে তাদের সাক্ষ্য কেন গ্রহন করা হবে না ? চাঁদ বাবাজীকে দেখার জন্যে জাতীয়তাবাদী ওই সীমানা অনুসরনে আকাশকে আলাদা করার অনুমতি কে দিয়েছে ? রসূল(সাঃ)??? আমি কি অবারও পূর্বের হাদীসগুলি এখানে পেশ করব না ?
*** একবার সাহাবীগণ রমজানের চাঁদ দেখা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। তারা তারাবিহ নামাজ না পড়ার এবং পরদিন রোজা না রাখার ইচ্ছা পোষণ করেন। এমতাবস্থায় ‘হাররা’ নামক এক স্থান থেকে জনৈক বেদুইন এসে সাক্ষ্য দেয় যে, সে চাঁদ দেখেছে। তখন তাকে রসূল(সা এর দরবারে নিয়ে আসা হয়। রসূল(সা তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল’ ? সে বলে, হ্যা আমি সাক্ষ্য দেই এবং আরও সাক্ষ্য দেই যে, আমি নতুন চাঁদ দেখেছি। অত:পর রসূল(সা হযরত বেলাল(রা কে নির্দেশ দিলেন,লোকদেরকে জানিয়ে দেওয়ার জন্যে যাতে তারা তারাবিহ নামাজ পড়ে এবং পরদিন রোজা রাখে।
(সূত্র:আবু দাউদ,তিরমিযী,নাসাঈ,ইবনে মাজাহ,দারেমী)
*** একবার লোকেরা রমজানের শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখা নিয়ে মতভেদ করেন। তখন দুজন বেদুইন রসূল(সা এর কাছে হাজির হয়ে আল্লাহর কসম করে সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, গত সন্ধ্যায় তারা শাওয়ালের চাঁদ দেখেছে। তখন রসূল(সা লোকদেরকে রোজা ভাঙ্গার নির্দেশ দেন। রাবী খালফ তার হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে,রসূল(সা আরও বলেন যে, লোকেরা যেন আগামীকাল ঈদগাহে আসে”।
(সূত্র: আবু দাউদ)
*** হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,জনৈক বেদুঈন রসূল(সাঃ)এর নিকট এসে বলল-আমি রমজানের নতুন চাঁদ দেখেছি। তিঁনি(সঃ) জিজ্ঞেস করলেন-‘তুমি কি এ সাক্ষ্য দাও যে,আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই ? তুমি কি আরও সাক্ষ্য দাও যে, মুহাম্দ(সাঃ) আল্লাহর রসূল ?’ সে বলল-হ্যা। অত:পর রসূল(সাঃ) বললেন-হে বেলাল ! লোকদের মধ্যে ঘোষণা কওে দাও,তারা যেন আগামী কাল থেকে রোজা রাখে।( সূত্র: তিরমিযী)
এবার আমরা নিকট ইতিহাসে প্রবেশ করবঃ- ১৯৭১ এর পূর্বে পশ্চিম পাকিস্থানে চাঁদ দেখা গেলে আমাদের দেশেও রোযা রাখা হতো কিংবা ঈদ উজ্জাপন করা হতো। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দুটি দেশ আলাদা হয়ে যাওয়ার কারণে রোযা রাখার তারিখ, ঈদ উজ্জাপন করার তারিখও আলাদা হয়ে গেল। তাহলে তখনকার দিনে একসাথে রোজা বা ঈদ পালন করার সিদ্ধান্ত কি সঠিক ছিল ? যদি সঠিক হয় ,তবে এখনকারটা সঠিক নয় আর যদি সেটি ভুল হয়ে থাকে তবে ,এখনকারটা সঠিক। পূর্বে পাকিস্থান,ভারতের আকাশে চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখা যেত,তাহলে আজ সে আকাশে চাঁদ দেখা গেলে এখানে রোজা/ঈদ পালন করা যায়না কেন ? এখানে চাঁদ কি রাজনৈতিক পরিচয়ে পরিচিত নয় ?
যদি ভারতের আকাশে চাঁদ দেখার ব্যাপারটি আমাদের কাছে স্বীকৃত হয় তাহলে আমরা একসাথে রোজা পালন করতে পারি,তাহলে ভারতও তার পার্শ্ববতী দেশের আকাশের চাঁদকে স্বীকৃতি দিতে পারে। এভাবে একটি এলাকা যেহেতু আরেকটি এলাকার সাথে সম্পর্কযুক্ত ,তাহলে প্রত্যেকের একসাথে রোজা এবং ঈদ পালন করতে সমস্যা কোথায়(উল্লেখ্য: আরব বিশ্ব,মধ্য এশিয়া,এশিয়ার অনেকগুলি দেশ,ইউরোপ এবং আফ্রিকাও একসাথে রোজা,ঈদ পালন করে থাকে) ? এ বিষয়ে সময়ের পার্থক্য সর্বোচ্চ ১২ ঘন্টার পরিবর্তে আমাদের ক্ষেত্রে কেন ১/২ দিন দীর্ঘ হয়ে যায় ?
হাদীস অনুযায়ী কিয়ামত হবে ১০ই মুহাররমে। প্রশ্ন হল-১০ই মুহাররম কোনটি অথবা কয়টি ? আমাদেরটি নাকি ওদেরটি ? আরব,আফ্রিকাতে যদি ১০ মুহাররম আগে হয় তাহলে ওদিকে আগে কিয়ামত হবে। আর যদি সেদিন অথবা তার পরের দিন আমরা আকাশে চাঁদ না দেখতে পাই তবে তার পরেরদিনকে অবশ্যই নিয়মানুযায়ী ১০ই মুহাররম হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সেক্ষেত্রে চাঁদবদন হায়াৎ আরো দুদিন বর্ধিত হবার সম্ভবনা ঠেকানো যাচ্ছেনা। আমরা তওবা পড়ে নি:শঙ্কচিত্তে অবশিষ্ট খাবারটুকু চিবোতে চিবোতে টেলিভিশন,ইন্টারনেটের কল্যানে লাইভ কিয়ামত প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাব,তা জাতীয়তাবাদী চাঁদের কল্যানে দম্ভের সাথে বলা যাচ্ছে।
রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক কারনে সীমানা নির্ধারন করে উম্মাহকে ভাগাভাগি কারা বা দেশ প্রতিষ্ঠা করা আল্লাহর নির্দেশ নয় এবং সুন্নাহও নয়। এভাবে সীমানার উপর নির্ভর করে শরিয়াহর হুকুম জারি করাও সুন্নাহ নয়। উম্মাহ একটি দেহের মত। সারা বিশ্বের মুসলিম একটি দেহ,একই তাদের ঈদ। আল্লাহ তায়ালা বলেন- “আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। (আল-কুরআন,৩:১০৩) মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে জাতীয়তাবাদী চাঁদের হাত থেকে রক্ষা করুন !
২| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৫
প্রতিবাদীকন্ঠ০০৭ বলেছেন: খুব ই তথ্যবহুল পোস্ট। প্রিয় তে নিলাম। আস্তে আস্তে পুরা টা পড়ব। আপনাকে ধন্যবাদ অনেক।
রমযান মাসের প্রকৃত শিক্ষা যেন আমরা আমাদের জাতীয় এবং ব্যক্তিগত তথা পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি।
ভাল থাকবেন।
১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৫৯
দ্য েস্লভ বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খায়রান,ভাই আপনার প্রতি দোয়া রইল
৩| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১০
নাম বলবো না বলেছেন: খুবই যৌক্তিক কথা।
আমারও ধারনা দুনিয়ার সব মানুষের একই দিনে ঈদ পালন করা উচিত, তাতে আনন্দ কয়েকগুন বেড়ে যাবে। আমাদের ইসলামী চিন্তাবিদরা কবে যে জাতীয়তাবাদি চিন্তা থেকে বাহির হয়ে আসতে পারবেন তা কেবল আল্লাহই জানেন।
৪| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১৪
টুম্পা মনি বলেছেন:
১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:০৫
দ্য েস্লভ বলেছেন: আল্লাহ আপনাকে হাসিখুশী রাখুক এবং জান্নাত দান করুন !
৫| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৩৮
অতিক্ষুদ্র বলেছেন:
লেখাটি তথ্যবহুল ও সুন্দর। সামু ও টুডে দুজায়গাতেই প্রিয়তে নিলাম।
বান্দা
আমার মনে হয়, আপনি সবার কমেন্টের উত্তর দেন না, তারপরও একটি প্রশ্নঃ দ্য স্লেভ (সামু), বান্দা ও দা স্লেভ (টুডে ব্লগ) ?
১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:০৭
দ্য েস্লভ বলেছেন: টুডেতে সবার কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি কিন্তু এখানকার নিয়ম কানুন না জানার কারনে আমি উত্তর দিতে পারিনা। আর অন্যকে কিভাবে প্রিয়তে নিতে হয় তাও জানিনা। আপনার জন্যে দোয়া রইল। আর প্রশ্নটি সঠিক।
৬| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:০৫
সেলিম জাহাঙ্গীর বলেছেন: আপনার লিখার সাথে সহমত তবে সব খানে নয়। যেমন আপনি বলেছেন:
হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) সারা পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে রসূল। তিনি নির্দিষ্ট কোনো গোত্র,সম্প্রদায়ের জন্যে নির্ধারিত নন। আর তাই তাঁর(সাঃ) সকল বক্তব্য পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে সমভাবে প্রযোজ্য।
হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) সারা পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে রসূল এটা হাদীসের কথা। তিনার বানী সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য এটা সত্যি কিন্তু তিনার এরিয়া কেবল তার নিজ গ্রস্ত্র, কোরআন তো তায় বলে।
১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১১
দ্য েস্লভ বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা তাকে মানব জাতির জন্যে প্রেরন করেছেন একটি কিতাব দিয়ে। তিনি আরবের লোক ছিলেন কিন্তু শিক্ষক ছিলেন মানব জাতির। আল কুরআনে আল্লাহ তাকে অনুসরণ করতে বলেছেন এবং সকল ক্ষেত্রে তার রায় মেনে নিতে বলেছেন। পূর্বের অবতীর্ণ হওয়া কিতাব মানুষ বিকৃত করেছিল তাই সকলকে এই অবিকৃত আল কুরআন গ্রহন করা উচিৎ,এটাই আল্লাহর নির্দেশ
৭| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২০
মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: সেলিম জাহাঙ্গীরকে ইগনোর করুন ।
অনেক বড় লিখা । সময় নিয়ে পড়ব । প্রিয়তে নিলাম । ধন্যবাদ ।
১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১২
দ্য েস্লভ বলেছেন: কারো কমেন্টে ভয় পাইনা। পড়ার জন্যে আবেদন রইল।
৮| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২০
মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: সেলিম জাহাঙ্গীরকে ইগনোর করুন ।
অনেক বড় লিখা । সময় নিয়ে পড়ব । প্রিয়তে নিলাম । ধন্যবাদ ।
৯| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৪০
সেলিম জাহাঙ্গীর বলেছেন: মাজহারুল হুসাইন একটু কোরআনটা ভালো করে পড়ুন, দেখুন নবী সম্পর্কে কোরআন কি বলেছে।
সারা পৃথিবীতে একদিনে পবিত্র ঈদ যেমন পালন করা যায় না অনেকে'ই শিকার করবেন, ঠিক শবেকদর এর একটি রাত্রী সারা পৃথিবীর মানুষ একই সাথে পাবে না। সৌদিতে যখন শবেকদর ঠিক তখন আমেরিকায় দিন। যখন আমেরিকানরা রাত্রী পাবে তখন সৌদির শবেকদর শেষ। তবেকি মক্কার পরে আবারো অন্য দেশে নতুন করে শবেকদর হবে? যতি তায় হয় তবে কোরআন নাজিলে রাত্রি পার হবার পরেও আবারো অন্য দেশে রাত্রিবেলা নতুন করে কোরআন নাজিলের রাত আসবে কি করে?
সিয়াম অর্থ রোজা। কোরআন বলছে রাত্রের কৃষ্ণরেখা না দেখা পর্যন্ত পনাহার কর ও সূর্যাস্তের সাথে সাথে রোজা ভঙ্গ কর। এবার যদি আমরা এই নিয়োমে রোজা শুরু করি তাহলে উত্তর মেরু ও দক্ষীণ মেরুবাসীরা কিভাবে রোজা করবে?
আসলে এই কোরআন এরনির্দেশ কেবল কার জন্য একটু ভাবনার বিষয়। কবি নজরু কিংবা রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার কবি তার অর্থ এই নয় যে তাদের বাণী পৃথিবীর অ্ন্য দেশের কেউ নিতে পারবে না, মানতে পারবে না। জ্ঞানিদের জ্ঞান বাক্য সবায় নিতে পারবে; তারপরেও কথা থাকে সেই গুণির স্থান কাল পাত্র কোথায়? কবিদের সকল বাণী সারা পৃথিবীর মানুষ নিতে পারে অবলিলায়। ঠিক আসমানী কিতাবগুলোর সকল বাণী মানুষের কল্যাণের জন্য, কল্যাণ সাধনের জন্য। এই বাণী যে কেউ নিতে পারে, মানতে পারে; তার অর্থ এই নয় যে বাধ্যতামূলক এই কিতাবের বাণী সারা পৃথিবীর মানুষকে মানতে হবে। আসলে কোরআন কার জন্য? কাকে মানতে হবে এই কিতাব? চলুন দেখি কোরআন কি বলেঃ
সূরা আশ-শুরা ৪২:৭ আয়াতঃ
وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِّتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنذِرَ يَوْمَ الْجَمْعِ لَا رَيْبَ فِيهِ فَرِيقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِي السَّعِيرِ
অর্থঃ এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
সূরা আন আম ৬:৯২ আয়অতঃ
وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ مُّصَدِّقُ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَهُمْ عَلَى صَلاَتِهِمْ يُحَافِظُونَ
অর্থঃ এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার স্বীয় নামায সংরক্ষণ করে।
উপরের দুইটি আয়াতে স্পষ্ট যে এই কোরআন দিয়ে মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করাতে বলেছে। এবার নিচের আয়াতগুলো দেখি চলুন।
সূরা ইউসূফ ১২:২ আয়াতঃ
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
অর্থঃ আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।
আল্লাহ্ বলছে একে (কোরআন) আরবী ভাষায় নাজিল করেছে কেবল আরবী ভাষাভাসি মানুষের জন্য। এটা ইংরেজী হলে সারা পৃথিবীর জন্য হতো এতে কোন সেন্দহ নাই; যেহেতু পৃথিবীর ইন্টারন্যাশনাল ভাষা'ই হলো ইংরেজী।
সূলা হামিম ৪১:৪৪ আয়াতঃ
وَلَوْ جَعَلْنَاهُ قُرْآنًا أَعْجَمِيًّا لَّقَالُوا لَوْلَا فُصِّلَتْ آيَاتُهُ أَأَعْجَمِيٌّ وَعَرَبِيٌّ قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاء وَالَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ فِي آذَانِهِمْ وَقْرٌ وَهُوَ عَلَيْهِمْ عَمًى أُوْلَئِكَ يُنَادَوْنَ مِن مَّكَانٍ بَعِيدٍ
অর্থঃ আমি যদি একে অনারব ভাষায় কোরআন করতাম, তবে অবশ্যই তারা বলত, এর আয়াতসমূহ পরিস্কার ভাষায় বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, কিতাব অনারব ভাষায় আর রসূল আরবী ভাষী! বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার। যারা মুমিন নয়, তাদের কানে আছে ছিপি, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব। তাদেরকে যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহবান করা হয়।
উপরের এই আয়াত আল্লাহ বলছে যারা মুমিন নয় তাদের কানে আছে ছিপি আছে ও কোরআন তাদের জন্য অন্ধত্ব। অনারব ভাষায় কোরআন নাজিল করলে লোকে বলতো কিতাবের আয়াত সমূহ পরিস্কার ভাষায় কেন হয়নি। আরও বলতো কিতাব অনারব ভাষায় আর রসূল আরবী। এই খানেও চমৎকার সত্য লুকিয়ে আছে না শুনলে কানে ছিপি আর না বুঝলে কোরআনের ভাষায় অন্ধ।
এই কথাতেও বোঝা যায় কোরআন আরবের জন্য আরবী ভাষায়। কেবল রাসুলের উম্মতরা যেন সহজে বুঝতে পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোরআন মতে আপনার ভাষা কি আরবী?
সূরা ফাতির ৩৫:২৪ আয়অতঃ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خلَا فِيهَا نَذِيرٌ
অর্থঃ এমন কোন সম্প্রদায় নেই যেখানে সতর্ককারী আসেনি।
একটি নবী বা রাসুল দিয়ে পৃথিবী শাসন আল্লাহ করেন নাই বলে কোরআনে আল্লাহ বলছেনসকল সম্প্রদায়ের উপরে'ই তিনি সতর্ককারী প্রেরণ করেছেন। তাহলে এখানে বোঝা যাচ্ছে নবী রাসুল কেবল গ্রোত্রের জন্য।
সূরা শুরা ৪২:১৫ আয়াতঃ
فَلِذَلِكَ فَادْعُ وَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءهُمْ وَقُلْ آمَنتُ بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِن كِتَابٍ وَأُمِرْتُ لِأَعْدِلَ بَيْنَكُمُ اللَّهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ لَنَا أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ لَا حُجَّةَ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ اللَّهُ يَجْمَعُ بَيْنَنَا وَإِلَيْهِ الْمَصِيرُ
অর্থঃ আল্লাহ আমাদের পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। আল্লাহ আমাদেরকে সমবেত করবেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তণ হবে।
উপরের আল্লাহ শুরা ১৫ আয়াতে বলছে অন্যদের পালন কর্তা সে আমাদেরও পালন কর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। তাহলে আমাদের মাঝে ধর্ম নিয়ে কারা বিবাদ করছে?
সূরা শো’আরা ২৬:১৯৮-৯৯ আয়াতঃ
وَلَوْ نَزَّلْنَاهُ عَلَى بَعْضِ الْأَعْجَمِينَ
যদি আমি একে কোন ভিন্নভাষীর প্রতি অবতীর্ণ করতাম,
فَقَرَأَهُ عَلَيْهِم مَّا كَانُوا بِهِ مُؤْمِنِينَ
অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করত না।
উপরের সূরায় আল্লাহ্ বললেন যে কোরআন যদি তিনি অন্য ভাষাভাসি মানুষের প্রতি দিতেন তাহলে সেটা তারা বিশ্বাস করতো না। এই কারনেই যদি বলি এটা অঞ্চল ভেদের কথা বলে?
সূরা ইয়াসীন ৩৬:৫-৬ আয়াতঃ
تَنزِيلَ الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ
অর্থঃ কোরআন পরাক্রমশালী পরম দয়ালু আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ,
لِتُنذِرَ قَوْمًا مَّا أُنذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُونَ
অর্থঃ যাতে আপনি এমন এক জাতিকে সতর্ক করেন, যাদের পূর্ব পুরুষগণকেও সতর্ক করা হয়নি। ফলে তারা গাফেল।
উপরের এই সূরা ও আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট বলছে এই কোরআন দিয়ে এমন এক জাতীকে সতর্ক করতে যাদের উপর কোনদিন কোন সতর্ককারী আসেনী। আপনার কি ধারনা ইহুদী, খ্রীষ্টিয়ানদের উপর কোন সতর্ককারী আসেনী? হ্যাঁ এসেছে্ তবে কি কোরআনের কথা অনুযায়ী এই কোরআন তাদের জন্য?
এমন অনেক কোরআন থেকে বলা যায়। তবে কোরআনের এই আয়াত গুলো অনেকেই মনে করবেন লেখক ভুল বলছে। কোরআনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন আয়াতগুলো ঠিক আছেকি না। সত্য চির দিন'ই সত্য সূর্যদয়ের মত। আল্লাহ আমাদের সকলকে কোরআন বুঝে পড়ার তৌফিক দান করুন---আমেন
১০| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১৭
দ্য েস্লভ বলেছেন: সময়ের পার্থক্য বেশী হয়ে গেলে তারা পরদিন রোজা রাখবে। সময়ের সর্বোচ্চ পার্থক্য তো ১২/১৩ ঘন্টার বেশী নয়। আর একজন মানুষকে বিশ্বের দরবারে মেসেজ পৌছানোর জন্যে তাকে পৃথিবীর সকল ভাষা জানতে হবে এমন নয়। আল্লাহ তায়ালা আরবী ভাষায় তার ওপর ওহী নাযিল করেছেন যাতে তিনি নিজে বুঝতে পারেন। আর পরবর্তীতে সাহাবাদের মাধ্যমে সে মেসেজ আমাদের কাছেও পৌছেছে। অর্থাৎ তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়েছে। বারাক ওবামা বিশ্বে মাতব্বরী করতে যে বক্তব্য প্রদান করে তা ইংরেজীতেই করে। ইংরেজী চলেনা এমন দেশেও তার শক্তি প্রদর্শিত হয়। ভাষা এখানে বাধা হয়না। ইসলামের ক্ষেত্রে এটি আপনার বোঝায় সহায়ক হবে মনে করি।
১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১৯
দ্য েস্লভ বলেছেন: আমাদের পালনকর্তা,তোমাদের পালনকর্তা বলতে যা বুঝিয়েছেন তা আপনি বোধহয় বুঝতে পারেননি। এটা বিশ্বাস সংক্রান্ত বিষয়। এটা এলাকা সংক্রান্ত বিষয় নয়। আপনি আল্লাহকে বিশ্বাস করলে আপনি আমাদের আর না করলে তাদের। এটা আক্কিদাগত পার্থক্য,অঞ্চলগত নয়। ইসলাম সারাবিশ্বকে এক পাত্রে দেখে। কনসেপ্ট হল এক উম্মাহ
১১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৫
বিবেকিন্দ্রীয়লোচন বলেছেন: "তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ............." এই হাদিসটি যদি এখানে এলাকা ভিত্তিক তা ইঙ্গিত করছে বলে ধরি আর এই হাদিসের উপর যদি আমল করতে হয় অন্য সব হাদিস বাদ দিয়ে তবে ভাল করে মাথায় রাখতে হবে যে........"প্রতিটি মানুষকেই চাঁদ দেখতে হবে; রোজা শুরু করা এবং ঈদ উদযাপনের জন্য"। আমার দেশেরই অন্যকেউ দেখলে আর আমি তার কথার উপর যদি আমল করতে পারি, পৃথিবীর অন্য কোথাও কোন মুসলিম ভাই/বোন দেখলে, তার কথার উপর আমি রোজা শুরু করতে পারবো না কেন????
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৮
দ্য েস্লভ বলেছেন: ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনার কল্যান করুক !