নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একক সত্ত্বা !
আমরা অল্লাহর অস্তিত্বের যৌক্তিক প্রমান পেলাম এবং তিঁনি যে মানুষের সাথে যোগাযোগ করেছেন এমন প্রমান পাই ইতিহাস থেকে। রসুল (সাঃ)এর উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হওয়া আল-কুরআন সম্পর্কে একটু পরে আলোচনা করছি, আগে এক আল্লাহ সম্পর্কে কথা বলতে চাই। মূলতঃ আল্লাহ,আল-কুরআন এবং রসুল (সাঃ) এমন ভাবে জড়িয়ে আছে যে, আমরা একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে কল্পনা করতে পারিনা,কারণ তাতে বিভ্রান্ত হতে হবে। যেমন- স্রষ্টাকে বাদ দিলে তাঁর বাণী ও বার্তা বাহকের অস্তিত্ব বিপন্ন। আল কুরআনকে বাদ দিলে অর্থাৎ স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টির পরিচালনার ব্যাপারে দিক নির্দেশনা না দিলে রসুল এবং স্রষ্টার অস্তিত্বের উপস্থিতিতে আমাদের কিছু এসে যায় না। আবার রসুলকে বাদ দিলে, আমার কাছে কোন দিক নির্দেশনা আসার সম্ভাবনা থাকেনা। মূলতঃ আল্লাহ,রসুল(সাঃ) এবং কিতাবের সত্যতা জানার পর নিঃশঙ্কচিত্তে আমাদেরকে সকল মৌলিক প্রশ্নের উত্তর আল্লাহর অবতীর্ণ করা কিতাবের মাধ্যমে ও তাঁর প্রেরিত রসুলের মাধ্যমে জেনে নিতে হবে। কারণ- সৃষ্ট জীব কিভাবে তার জীবন কে পরিচালিত করবে তা তার স্রষ্টার কাছ থেকে জেনে নেওয়াই স্বাভাবিক, যিনি তৈরী করেছেন তিনিই এ ব্যাপারে সঠিক জানবেন।
যাইহোক আমরা আল-কুরআনে আল্লাহ নামক স্রষ্টার কথা জেনেছি। তিঁনি নিজের সম্পর্কে বলছেন:
“অবশ্যই তোমাদের মালিক হচ্ছেন একক সত্ত্বা” (আল-কুরআন, ৩৭ঃ ৪)
“আল্লাহর সাথে কোন মাবুদ নেই,যদি থাকতো তাহলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে আলাদা হয়ে যেত এবং একে অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইত।”
(আল-কুরআন,২৩ঃ৯১)
“যদি আসমান ও যমিনে আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আরও মাবুদ থাকতো তাহলে উভয়টাই ধ্বংস হয়ে যেত।”(আল-কুরআন,২১ঃ২২)
(বিঃদ্রঃ এখানে (২১ঃ২২) ২১ হলো আল কুরআনের সূরার অবস্থান এবং ২২ হলো উক্ত সূরার আয়াত নাম্বার। প্রত্যেকটি আয়াতের পর এভাবে সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে আপনারা আল-কুরআন থেকে সহজে আয়াতটি খুঁজে পান।)
আমরা আল্লাহ তায়ালার বৈশিষ্ট্যের কথা জেনেছি আল-কুরআনের আয়াত থেকে, যে বৈশিষ্ট্যগুলো স্রষ্টার হওয়া উচিৎ। যেমন তিনি বলেছেন ,যখন তিনি কোন কিছু তৈরী করার ইচ্ছা করেন তখন শুধু বলেন ‘হও’ আর তা হয়ে যায়। স্রষ্টার ক্ষমতা এমন হওয়াই উচিৎ। আরও জেনেছি তাঁর কোন সীমাবদ্ধতা নেই। তিনি অনাদী, অনন্ত, অক্ষয়। তাঁকে কেউ জন্ম দেয়নি। তিনিও কাউকে (মানুষ বা অন্য প্রাণীর মত) জন্ম দেননি। তিনি সকল কিছুর জ্ঞান ও হিসাব রাখেন। তাঁর হিসাবে কোন গরমিল হয়না। তিনি ক্লান্তও হননা। আমরা যে জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছি, তা দিয়ে আমরা স্রষ্টার অস্তিত্বের উপস্থিতি বুঝতে পারব, কিন্তু মানুষের পক্ষে এর থেকে বেশী কিছু তাঁর সম্পর্কে জানা সম্ভব নয় এবং এ বিষয়ে ধারণা করলে ভুল হবে। সীমাবদ্ধ জীব হিসেবে স্রষ্টা সম্পর্কে এর থেকে বেশী কিছু জানতে হলে আমাদের স্রষ্টার দেওয়া তথ্য ছাড়া কোন উপায় নেই।
আমরা যদি গোটা মহাবিশ্বের দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে এর কোথাও কোন গরমিল দেখতে পাব না। সবকিছুই একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম পদ্ধতি অনুযায়ী চলছে। যার কারনে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ের হিসাব নিকাশ করে একটি নির্দিষ্ট সূত্র বের করতে পারেন। বিজ্ঞানীদেরকে অবশ্যই মহাবিশ্বের নির্দিষ্ট নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করেই সূত্র আবিষ্কার করতে হয়। যদি সৃষ্টিকর্তা একাধিক হতো, তবে এই মহাবিশ্বের পরিচালনায় গরমিল দেখা দিত এবং সেখান থেকে প্রদত্ত সিদ্ধান্তে বা বিজ্ঞানের সূত্রে গরমিল দেখা যেত। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সূত্র সদা এক স্থানে থাকতো না। একজন কিছু একটা আবিষ্কার করার পরক্ষণেই দেখতো তার পরিশ্রম বৃথা গেছে অর্থাৎ সূত্র পাল্টে গেছে, কারণ এক স্রষ্টা একটু আগে যেভাবে সিস্টেম ডিজাইন করেছিলেন, অন্য স্রষ্টা বা অন্য স্রষ্টাগুলো তার বা তাদের ক্ষমতা প্রদর্শণ করার স্বার্থে পূর্বের সিদ্ধান্ত বাতিল করে নিজেদের মত করে সিস্টেম ডিজাইন করেছে। ব্যাপারটা এভাবে ঘটাই স্বাভাবিক, কারণ প্রত্যেক স্রষ্টাই বিশাল ক্ষমতাবান। আর, যদি ক্ষমতাবান স্রষ্টাদের মধ্যে একটি স্রষ্টাই সবসময় ক্ষমতা দেখাতে থাকে তাহলে বাকী স্রষ্টার ক্ষমতা আছে, এমন প্রমাণ কোথায় ? স্রষ্টা যদি মাত্র দুটি হতো তবুও আমরা প্রতিদিনই তা বুঝতে পারতাম। ক্ষমতা এবং পাল্টা ক্ষমতার প্রদর্শণী চলতো। স্রষ্টা একাধিক হলে বা অসংখ্য হলে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হতো শুধু তাই নয়, এক স্রষ্টা বলতো, এই ধ্বংস যজ্ঞ দেখার জন্য মানুষ বেঁচে থাকুক অন্য স্রষ্টা বলতো, মানুষ মারা যাক।
গোটা মহাবিশ্ব কত বিশাল তা বলে বুঝানো সম্ভব নয়। তবে, আমরা একটা ধারণা পেতে পারি এভাবে, সৌরজগতে পৃথিবী থেকে হাজার হাজার গুণ বড় হলো বৃহস্পতি গ্রহ। বৃহস্পতি থেকে লক্ষ লক্ষ গুণ বড় সূর্য। সূর্য নামক এই নক্ষত্র থেকে লক্ষ-কোটি গুন বড় তারকা রয়েছে। এরকম তারকা গুলো জ্বলতে জ্বলতে নিঃশ্বেষিত হবার প্রাক্কালে মহাবিশ্বে পরিভ্রমনকারী ব্লাক হোল নামক একটি বৃহৎ অন্ধকার বস্তুর মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং নিঃশ্বেষ হয়ে যায়। এমন হাজার হাজার কোটি তারকা, ব্লাকহোল নিয়ে একটি ছায়াপথ গঠিত হয়। এমন হাজার হাজার কোটি ছায়াথের সন্ধান বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বে পেয়েছে। শুধু তাই নয়, এই মহাবিশ্ব প্রতি মুহুর্তে প্রবল বেগে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এই সম্প্রসারণশীল মহা বিশ্বের আকার এবং এর বাইরে কিছু আছে কিনা সে সম্পর্কে আজকের দিনের বিজ্ঞানীদের কোনো ধারণা,কল্পনাও যুৎসইভাবে তৈরী হয়নি। যাই হোক মূল প্রসঙ্গে আসি-
এ মহাবিশ্বের তুলনায় পৃথিবী কত নগণ্য তা বুঝনোর জন্য এগুলো উল্লেখ করলাম। এ পৃথিবীর আবার ৭০% পানি। বাকী ৩০% স্থল ভাগের সবটুকু মানুষের দখলে নেই। এর মধ্যে বনভূমি আছে,পাহাড়-পর্বত,অনুন্নত ভূমি আছে। বাকী অংশটুকু জুড়ে আছে অনেক গুলো দেশ,যাদের আয়তন কয়েক বর্গ কিঃমিঃ থেকে এক কোটি বর্গ কিঃমিঃ পর্যন্ত। এর মধ্যে ছোট খাট একটি দেশ আছে যার নাম বাংলাদেশ। এখন আপনি যদি এই ক্ষুদ্র দেশটিতে একসাথে দু’জন ব্যক্তিকে সরকার প্রধান হিসেবে মনোনিত করে একটু চিন্তা করেন,তাহলে- আল্লাহ যে এক এবং কেন এক ? এটা বুঝতে খুব বেশী অসুবিধা হবেনা। আমরা এমনিতেই বুঝে যাব যে, গোটা মহাবিশ্বে একাধিক স্রষ্টা থাকলে কি ঘটতে পারত। স্রষ্টা এক এবং এক হওয়াই যুক্তিসঙ্গত। এজন্য আল্লাহ তায়ালা বলছেনঃ
“(হে নবী) তুমি বল,আমার উপর এ মর্মে ওহী পাঠানো হয়েছে যে,তোমাদের মাবুদ একক সত্ত্বা, তবুও কি তোমরা তাঁর অনুগত বান্দা হবে না ? ”(আল-কুরআন)
“তোমরা তো অবগত হয়েছ তোমাদের প্রথম সৃষ্টি সম্বন্ধে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন ? ”(আল-কুরআন, ৫৬ঃ৬২)
চলবে....
১৪ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৫
দ্য েস্লভ বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খায়রান। ঠিক বলেছেন কিন্তু আমার জ্ঞানের দৌড় বেশী দূর নয়
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
চলুক সাথেই আছি। ভাল লাগছে আরও কিছু সূরা থেকে আয়াত ও হাদিস দিয়ে ব্যাখ্যা করলে পোস্টের মাহাত্ম বেড়ে যাবে।
ভাল থাকুন। আল্লাহ আমাদের সকলকে ভাল থাকার তৌফিক দান করুক আমিন