নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব... নচেত চুপ থাকিব...

সত্য তখনই দাম পায়, যখন তার পাশে মিথ্যা নামক অদৃশ্য বস্তুটি স্থান পায়......

নহে মিথ্যা

নহে মিথ্যা › বিস্তারিত পোস্টঃ

উদ্ভট দর্শনের ১০টি হাঙ্গর (১ম পর্ব)

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

"হাঙ্গর" নামটা শুনলেই কেমন জানি গা শিউরে ওঠে। সমুদ্রে যত প্রানী আছে তার মধ্যে মনে হয় আমরা এই হাঙ্গরকেই সব থেকে বেশি ভয় পাই। ভয় পাবারই কথা, কিন্তু জানেন কি এ পর্যন্ত আবিস্কৃত ৩৭০ প্রজাতির মধ্যে মাত্র কয়েক প্রজাতির হাঙ্গর আছে যেগুলি বাদে বাদবাকি হাঙ্গর গুলি কিন্তু বেশ লাজুক প্রকৃতির হয়ে থাকে। ভয়ংকর এই হাঙ্গর নিয়ে এর আগে "ভয়ংকর যতো হাঙ্গর" লেখায় আলোচনা করা হয়েছিল, তবে আমাদের আজকের বিষয় ভয়ংকর হাঙ্গর নয় বরং উদ্ভট দর্শনের হাঙ্গর নিয়ে। অবশ্য পূর্বে আলোচিত "এক চোখা হাঙ্গর" আর "হেঁটে বেড়ানো হাঙ্গর" দু'টিও বেশ উদ্ভট ছিল; তবে আজ এর থেকেও বেশি উদ্ভট আকৃতির ১০টি হাঙ্গর নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

০১) Megamouth shark:



এর নামটাই অনেকটা বর্ননা করে দেয় এই হাঙ্গর মাছের বৈশিষ্ট্যকে। 'Mega' মানে 'বিশাল' আর 'Mouth' মানে 'মুখ' অর্থাৎ "বিশাল মুখ বিশিষ্ট্য হাঙ্গর"। বিশাল মুখ বিশিষ্ট্য এই হাঙ্গর মাছের আছে মোটা রাবারের মত ঠোট। এই শারীরিক বৈশিষ্ট্য অন্য কোন হাঙ্গর মাছে পাওয়া যায় না। এমনকি এটি হাঙ্গরের যে প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত সেই প্রজাতির অন্য হাঙ্গর গুলিতেও এই বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত। এটি "Planktivorous" প্রজাতির হাঙ্গর, এই প্রজাতির হাঙ্গর গুলি মূলত সামুদ্রিক অনুজীব 'প্লাংটন' খেয়ে জীবন ধারন করে। এই প্রজাতির অন্যান্য হাঙ্গর গুলি হল 'Whale Shark' এবং 'Basking Shark'।

যদিও এই হাঙ্গরকে বিশাল মুখ বিশিষ্ট্য হাঙ্গর নামে ডাকা হয়, কিন্তু এর অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় এর মুখ কিন্তু অনেকটাই ছোট আকৃতির। এই হাঙ্গর গুলি লম্বায় ১৩ থেকে ১৬ ফুট পর্যন্ত হয় আর ওজন হয় ১২০০ কেজির ধারে কাছে। এই হাঙ্গর সম্পর্কে বিস্তারিত কিন্তু বলা সম্ভব না, কেননা এদের সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব বেশি কিছু জানা সম্ভব হয়নি। মাত্র ৪০ বছর আগে প্রথম এই হাঙ্গর আবিস্কৃত হয়, আর এ পর্যন্ত মাত্র ৬০টির দেখা মিলেছে।

০২) Hammerhead shark:



হাতুড়ে আকৃতির মাথা বিশিষ্ট্য এই হাঙ্গর অনেকটাই পরিচিত সকলের কাছে, তাই বলে এটা কিন্তু কোন ভাবেই অস্বীকার করা যাবে না যে এই প্রজাতির হাঙ্গর গুলি দেখতে কিন্তু অদ্ভুত। এই প্রজাতির বললাম কেননা এ পর্যন্ত ১১টি প্রজাতির হাতুড়ে আকৃতির মাথা বিশিষ্ট্য হাঙ্গর আবিস্কৃত হয়েছে। এই হাঙ্গরের নাম করনের পিছে যে হাতুড়ে আকৃতির মাথাই দ্বায়ি তা না বললেও যে কেউ বুঝে যাবে। অনেকেই ভাবতে পারেন যে একটি চোখ আরেকটি থেকে এত দূরে থাকার কারনে হয়ত এদের কোন কিছু দেখতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়, আসলে ব্যাপারটা কিন্তু উল্টা। হাতুড়ে আকৃতির মাথার দু'পাশে চোখ থাকার ফলে এরা যেমন একই সাথে এদের দেহ থেকে নিচের জিনিষ গুলি দেখতে পারে তেমনি এদের দেহ থেকে উপরের জিনিষ গুলি স্পষ্ট ভাবে দেখতে পারে, এক কথায় বলতে গেলে এরা ৩৬০ ডিগ্রি কোন বরাবর দেখতে পারে। এই প্রজাতির পূর্ন বয়স্ক হাঙ্গর গুলি সাধারনত ১৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় আর এদের ওজন সাধারনত ৬০০ কেজি হয়ে থাকে।

০৩) Greenland shark:



হাঙ্গর মাছ বলতে আমরা যা বুঝি তা হল, চোখের পলকে ক্ষিপ্র গতিতে এসে শিকারকে কামড় দিয়ে খেয়ে ফেলবে, কিন্তু Greenland হাঙ্গরের ক্ষেত্রে বিষয়টা সম্পূর্ন উল্টা। এরা সাধারনত ১ মাইল/ঘন্টায় সাঁতার কেটে বেড়ায় আর খুব বেশি হলে এরা ১.৬ মাইল/ঘন্টায় সাঁতার কাটতে পারে। এই হাঙ্গর 'Somniosidae' প্রজাতির অন্তরভূক্ত, ধীর গতির কারনে এরা 'Sleeper Sharks' অর্থাৎ 'ঘুমন্ত হাঙ্গর' নামেও পরিচিত। যদিও এই প্রজাতির সব হাঙ্গর গুলিই ধীর গতি সম্পন্ন; তবে এই Greenland সব থেকে কম দ্রুত সম্পন্ন হাঙ্গর, একে বলা হয় বিশ্বের সব থেকে ধীর গতি সম্পন্ন হাঙ্গর।

Greenland হাঙ্গর গুলি গভীর এবং ঠান্ডা পানিতে থাকতে খুব পছন্দ করে। আর এদের সন্ধান মিলে ক্যানাডা, আইসল্যান্ড এবং গ্রীনল্যান্ডে। এই হাঙ্গর সম্পর্কেও কিন্তু খুব বেশি কিছু আবিস্কার করা সম্ভব হয় নাই এখন পর্যন্ত। তবে এখন পর্যন্ত যত গুলি ধরা হয়েছে তা থেকে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। এই হাঙ্গর গুলি আকার আর আকৃতিতে অনেকটাই সব থেকে হিংস্র প্রজাতির হাঙ্গর 'গ্রেট হোয়াইট হাঙ্গর' এর মত হয়। কিন্তু এদের নিয়ে বিশাল বড় একটা রহস্যের সমাধান এখন পর্যন্ত করা সম্ভব হয় নাই। আর তা হল এরা শিকার করে কিভাবে? এদের পেট কেটে শিল মাছের দেহ, ঈল সহ আরো অনেক প্রানীর দেহবশেষ পাওয়া গেছে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই হাঙ্গরের তুলনায় এ গুলি অনেক বেশি দ্রুত গতি সম্পন্ন, তাহলে এরা এ গুলি শিকার করে কিভাবে?

০৪) Sawshark:



হাতুড়ে মাথায়ালা হাঙ্গরের মত এই হাঙ্গর গুলিও তাদের নাম অর্জন করেছে অদ্ভুত দর্শনের দেহের কারনে। এদের দেহের সব থেকে অদ্ভুত দিক হল এদের বর্ধিত নাক বা বলা যায় মুখের উপরের মাড়ি, আর এই বর্ধিত অংশের চারিপাশে আবার লাগানো রয়েছে সূচালো দাঁত। দেহের বর্ধিত এই অংশ দেখতে অনেকটা 'কড়াত' এর মত হবার কারনেই এদের নাম করন করা হয়েছে 'কড়াত হাঙ্গর'।

সকলের ক্ষেত্রেই যে সমস্যা হয় তা হল, এই হাঙ্গরকে চিহ্নিত করতে, কেননা একে অনেকেই 'কড়াত মাছ' (Saw Fish) এর সাথে মিলিয়ে ফেলে। আর এই ভুল হবে না কেন বলুন? দু'টি দেখতে এতটাই এক যে আপনিও ধাঁধার মধ্যে পরে যাবেন যে এটি আসলে মাছ না হাঙ্গর। এই কড়াত হাঙ্গর গুলি যদিও হাঙ্গর মাছের মত; কিন্তু এরা মূলত রে মাছের প্রজাতির অন্তর্গত। এরা এই রে মাছের তুলনায় বেশ ছোট হয়। এই কড়াত হাঙ্গর গুলি লম্বায় ৫.৫ ফুট পর্যন্ত হয় আর করাত মাছ গুলি লম্বায় ২৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই কড়াত হাঙ্গর আর মাছের মধ্যে আরেকটি মূল পার্থক্য হল; কড়াত মাছের বর্ধিত নাক অনেকটা সিলিন্ডারের মত হয়, আর কড়াত হাঙ্গরের বর্ধিত এই নাক হয় এন্টিনার মত। এছাড়াও কড়াত হাঙ্গরের মাধার ঠিক দু'পাশে ফুলকা থাকে আর কড়াত মাছের মাথার দু'পাশে কিন্তু নিজের দিকে ফুলকা থাকে।

০৫) Cookiecutter shark:



এই হাঙ্গরের নামের বাংলা অর্থ কিন্তু বেশ অদ্ভুত। 'Cookie' মানে 'বিস্কুট জাতীয় খাবার' আর 'Cutter' মানে 'কর্তনকারী', অর্থাৎ "বিস্কুট জাতীয় খাবার কর্তনকারী"। অদ্ভুত নামের এই হাঙ্গর কিন্তু আকার আকৃতিতেও খুব একটা বড় হয় না, এরা লম্বায় সর্বোচ্চ ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। যদিও এদের নাম অদ্ভুত আর আকার আকৃতিতেও ছোট কিন্তু এরা কিন্তু খুব বদমেজাজী শিকারি, আর আপনি কোন ভাবেই চাবেন না যে আপনি এদের সম্মুখীন হোন। এরা এততাই বদমেজাজী যে এরা সমুদ্রের সব থেকে বড় প্রানী থেকে শুরু করে মাঝারি আকৃতির প্রানীর উপরেও আক্রমন চালাতে বিন্দু মাত্র দ্বিধা করে না। এদের শিকারের তালিকায় রয়েছে তিমি, হাঙ্গর, ডলফিন, সিল, রে মাছ, সমুদ্রের গরু ইত্যাদি। এবার নিশ্চই বুঝতেই পারছেন কেন এদের বদমেজাজী শিকারি বলেছি।

শিকার করার প্রথম পর্যায়ে এরা শিকারের দেহের সংগে সাকারের মাধ্যমে লেগে যায়, এর পরে মুখের উপরের পাটির দাঁত গুলি বসিয়ে দেয় শিকারের গায়ে, তখন এই দাঁত গুলি নঙ্গরের কাজ করে আর নিচের পাটির দাঁত গুলি দিয়ে মজা মেরে শিকারের গা থেকে মাংস তুলে ফেলতে থাকে আর খেতে থাকে। পরবর্তিতে বেশ বড় এক কামর দিয়ে নিজের শরীরকে এমন ভাবে নাড়াতে থাকে যে শিকারের শরীর থেকে বেশ বড় মাংসের টুকরা আলাদা করে ফেলে। শিকার করার এই অভ্যাসের কারনেই এর নাম করন করা হয়েছে 'Cookiecutter'।

পরজীবির মত শিকারের গায়ের সঙ্গে লেগে থাকার যে বৈশিষ্ট্য এই হাঙ্গরের রয়েছে এই বৈশিষ্ট্য অন্য কোন হাঙ্গরের মাঝে পাওয়া যায় না। এছাড়াও এদের দেহ আকৃতি অনেকটা 'সিগারেট' এর মত যা অন্য কোন হাঙ্গরের নেই। এদের সব থেকে বড় অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য হল, এরা নিজেদের এমন ভাবে উপস্থাপন করে বড় প্রানী গুলির সামনে যেন দেখলেই মনে হয় সামনে আছে সুস্বাদু মাংসের টুকরা আর সেই লোভেই বড় বড় মাছ বা প্রানী গুলি এগিয়ে আসে এদের দিকে আর উল্টা নিজেরাই শিকারে পরিনত হয়।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক AKA নহে মিথ্যা।

মূল লেখাঃ Click This Link

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৪

রাঘব বোয়াল বলেছেন: পোস্টে +

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪২

নহে মিথ্যা বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৪

নিলু বলেছেন: ভালো লাগলো , লিখতে থাকুন

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪

নহে মিথ্যা বলেছেন: ইনশা-আল্লাহ :)

৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো। আপনি কি প্রাণীবিজ্ঞানী?

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৩

নহে মিথ্যা বলেছেন: না ভাই আমি কোন বিজ্ঞানী না :D
আর আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম :)

৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

সুমন কর বলেছেন: অাপনাকে অনেক দিন পর ব্লগে এবং নতুন পোস্ট পেলাম।

কেমন অাছেন?

২+।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

নহে মিথ্যা বলেছেন: ভাল আছি, মাঝে ব্লক খেয়েছিলাম তাই ছিলাম না ব্লগে :D

৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

কলমের কালি শেষ বলেছেন: সুন্দর শেয়ার । +++++ চলুক ।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫১

নহে মিথ্যা বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.