![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুদিন আগে একটা প্রাইমারি স্কুলে গিয়েছিলাম একটা কাজে। হেডমিস্ট্রেসের রুমের পাশে সিঁড়ি দোতলায় যাওয়ার জন্য আর তার পাশেই ক্লাসরুম। শিক্ষক না থাকায় ছেলে মেয়েরা চেঁচামেচি, হৈ-হুল্লোড় করছিল। ভুরু কুঁচকে তাকানোর কেউ নেই।
আমি দাঁড়িয়েই ছিলাম, আর দেখছিলাম
কিছুক্ষন পরেই অল্পবয়েসী একজন শিক্ষিকা রুমে ঢুকলেন। তাকে দেখেই লম্বামত শুকনো একটা মেয়ে জড়িয়ে ধরে হাসিতে ফেটে পড়ল কোন কারন ছাড়াই। হয়ত ছিল কোন কারন, যা আমি জানি না। দৃশ্যটা দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল।
কতদিন আগে এভাবে প্রচন্ড আনন্দ নিয়ে কাউকে জড়িয়ে ধরেছিলাম মনে নেই। আনন্দ না খুঁজে এখন আনন্দের কারন খুঁজতে হয়। দোষটা হয়ত আমাদের নিজেদেরই।
শিশুকালে আমরা থাকি বাঁধাহীন। আক্ষরিক অর্থেই। আনন্দের চোটে চিৎকার করব? কোন সমস্যা নেই। উলটো শিশু যখন গম্ভীর হয়ে থাকে তখনই বাবা-মা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে পেট ব্যাথা করছে কিনা ভেবে। নতুন কাউকে দেখলে আড়ালে দাঁড়িয়ে খেয়াল করা শিশুদের স্বভাব। মুচকি হেসে কাছে টেনে নেয় সেই নতুন মানুষটাই। আর কিছুক্ষন পরেই সে হয়ে যেত নতুন বন্ধু।
বাল্যকাল পেরিয়ে কৈশোরে পা দেয়ার পর থেকে আস্তে আস্তে নিজের জগতটা ছোট হতে থাকে। নিজেকে মনে হতে থাকে ‘নট গুড এনাফ ফর দ্যা সোসাইটি’ এমন হীনমন্যতায় ভুগতে থাকা ছেলেমেয়ে গুলোর দিকে নজর দেয়ার খুব কম মানুষই থাকে। ধীরে ধীরে বিষক্রিয়ার মত ধীরে ধীরে তাদের চারপাশে দেয়াল তুলে ফেলে নিজের অজান্তেই। আর সে দেয়াল টপকে আসল মানুষটাকে কেউ দেখবে, এমন আশাতেই বসে থাকে বোকা গুলো। কিন্তু এটা বোঝে না যে কেউ নিজের প্রয়োজন ছাড়া দেয়াল টপকানোর কষ্টটা করতে যাবে না। আর তখনই হয় স্বপ্ন ভঙ্গ।
বাবা-মার সাথে দূরত্বের দেয়ালটা উঁচু হওয়ার সাথে সাথে উঁচু হয় সমাজের সাথের দেয়ালটাও।
যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, স্কুল-কলেজ পাশ করার পর ভার্সিটি লাইফ। যেখানে সবাই সিজিপিএ নামক ইউনিকর্নের পেছনে ছোটে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে একটু উষ্ণ সম্পর্ক গড়ে ঊঠানোর গরজ খুব কম ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থাকে।
বাসায় ফেরার পর বাবা-মাকে একটু না দেখে নিজের রুমে গিয়ে টাচস্ক্রীন ফোনে চোখ রাখাটাই জরুরী হয়ে পড়ে। মার কথার উত্তর দেয়ার চাইতে অপর প্রান্তের টেক্সটের রিপ্লাইটাই বেশি জরুরী তখন।
নিজেদের জগতটা ফেলে আরেকজনের জগতটা দেখার চাইতে গুটিসুটি হয়ে পড়ে থাকাটাই তখন অনেক আরামের মনে হয়। 'মানুষ সামাজিক জীব' তখন এই উপদেশ বাক্যটা মনে থাকে না। মনে থাকলে সে হয়ে যায় 'খ্যাত' আর দেখতে গেলে হয় 'গায়ে পড়া স্বভাবের'
এই ভয়েই নিজের চেনা জায়গাতেই ঘোরাফেরা করাটা নিরাপদ।
দেয়ালটা উঁচু হতে হতে এত বেশি হয়ে যায় যে নিজের আকাশটাই ঢাকা পড়ে যায় অনেকের। আর হতাশাটা তখনই ঘিরে ধরে অক্টোপাসের মত। সাকশন কাপ দিয়ে শুষে নেয় ভেতরের সেই ছোট্টবেলার আনন্দগুলো।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪০
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আমি বলতে দ্বিধা করব না যে আমিও এই ভুল করেছিলাম। কিন্তু নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছি। অন্যরাও করবে আশা করি।
২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪০
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হুম| আত্মমুখী হয়ে যাই মাঝে মাঝে| এটা হতেই হয়| হয়ত সময়ের প্রভাব কিংবা এতেই মঙ্গল
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪২
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আত্নমুখী হওয়াটা দরকারি। কিন্তু সবাইকে পাশে ঠেলে হতে গেলেই সমস্যা।
৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: মার কথার উত্তর দেয়ার চাইতে অপর প্রান্তের টেক্সটের রিপ্লাইটাই বেশি জরুরী তখন।
সব কিছুই এখন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছে।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আমরা নিজেরাই নিজেদের আটকে ফেলছি না জেনে।
৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৬
সুলতানা রহমান বলেছেন: হু, এই যেমন বাবার মৃত্যুর পর ও নতুন স্ট্যাটাস, স্ট্যাটাস থেকে গৃহীত মৃত বাবার জন্য দোয়া নেওয়া ……
আমরা এখন এই জীবনে আটকে আছি।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আর কিছু পাবলিকের সেই স্ট্যাটাসে লাইক দেয়া! লাইক কোথায় দিতে হবে সেটাও জানে না। আমাদের জীবন মোবাইলের ৫'' আর মনিটরের ১৯'' ডিসপ্লেতে আটকা পড়ে আছে।
৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দেয়ালটা উঁচু হতে হতে এত বেশি হয়ে যায় যে নিজের আকাশটাই ঢাকা পড়ে যায় অনেকের। আর হতাশাটা তখনই ঘিরে ধরে অক্টোপাসের মত। সাকশন কাপ দিয়ে শুষে নেয় ভেতরের সেই ছোট্টবেলার আনন্দগুলো।
নিরেট দু:খজনক সত্য!
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৬
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: সেটাই। আর আমরা ঢেকে পড়া জায়গাতেই থাকি। বেরুই না।
৬| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২০
প্রামানিক বলেছেন: দেয়াল নিয়ে অনেক সুন্দর লেখা। ধন্যবাদ
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৫
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ প্রামানিক দা। আপনি আরো বেশি করে লিখুন ব্লগে প্লীজ
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭
কলাবাগান১ বলেছেন: "মার কথার উত্তর দেয়ার চাইতে অপর প্রান্তের টেক্সটের রিপ্লাইটাই বেশি জরুরী তখন। "