নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেরামত চলছিলো !! চলছে !! চলবে !!

তেরোর ব্লগ মানেই হাবিজাবি !!

তেরো

জন্মের সময় আমি খুব কেঁদেছিলাম কিন্তু এখন আমার সব কিছুতেই হাসি পায়। আমি জন্মের প্রয়োজনে ছোট হয়েছিলাম এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি। - নির্মলেন্দু গুন

তেরো › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রমণ

১৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৮

পৃথিবীর এক প্রান্তে অবস্থিত রাজ্যের এক ছোট মেয়ের ইচ্ছে জাগলো পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে কি আছে দেখার। একদিন সে পোষা কচ্ছপের পিঠে চড়ে রওনা দিলো। পকেটে ভরে নিলো ইচ্ছেমতো বাদাম আর রুটি। কচ্ছপ চলতে শুরু করলো ধীরে এবং ধীরে। ছোট মেয়ের এতে কোনো ভাবনা নেই। চারপাশের পৃথিবী তার বড় ভালো লাগে। কি সুন্দর চারপাশ। খুব মুগ্ধ হয় সে। কচ্ছপ বিরামহীন ভাবে চলতেই থাকে তো চলতেই থাকে। খিদে পেলে হাত বাড়িয়ে ফল খেয়ে নেয়, কচ্ছপ খেয়ে নেয় ঘাস। দিন থেকে রাত হয় রাত থেকে দিন। দিন পার হয়ে দাঁড়ায় সপ্তা, সপ্তা থেকে হয় মাস, মাস থেকে বছর। বছর থেকে আরো বছর। বহু রাজ্য পার হয় সে। এক জায়গায় এসে থামে কচ্ছপ, পিছন ফিরে দেখে তার পিঠে কোনো ছোট মেয়ে বসে নেই। বসে আছে এক কিশোরী। একটূ বোকা বনে যায় সে। যাত্রী কখন বদলালো কিছুই সে বুঝতে পারে না। তা ভাবতে ভাবতে জিরিয়ে নেয় সে। ঘুম শেষ করে আবার হাঁটতে থাকে।

রোদ হয়, বৃষ্টি হয় তারা বিশ্রাম নেয় গাছের নীচে, ঘুমোয় নীল আকাশের নীচে। হাজার হাজার তারা দেখে আরো বহু বছর যেনো কেটে যায়। আবার কচ্ছপ পিছন ফিরে তাঁকায়। দেখে আবার কবে জানি যাত্রী বদল হয়েছে। কিশোরীর জায়গায় বসে আছে এক তরুনী। তরুনীর লম্বা কালো চুল বাতাসে উড়ছে। কচ্ছপ আবার বোকা হয়। পৃথিবী বড় অদ্ভুত এই ভেবে বেশ মজা পায় সে।

গুন গুন করে আবার এগোতে থাকে সে। একটু একটু ক্লান্ত লাগে আজকাল তবে পৃথিবী এত সুন্দর। ক্লান্তিতে তার যেনো কিচ্ছু হয় না। পিঠের তরুনী গলা ছেড়ে গান গায়। কচ্ছপের ক্লান্তি নেই হয়ে যায় তখন। মৃদু বাতাসে পাড়ি দিয়ে সে আরো কত রাজ্য পার হয়ে যায়। পার হয় বন জঙ্গল পাহাড়। কত মানুষ ই দেখে সে চারপাশে। আবার কখনো পার হয়ে যায় বহু জনহীন নগরী এবং ধ্বংসস্তুপ। বহ বছর পর আবার সে ঘাড় ফেরায়। দেখে এখন পিঠে বসে আছে এক মধ্যবয়সী মহিলা। লম্বা কালো চুলের মাঝে মাঝে সাদা চুল উঁকি মারছে। কচ্ছপ এমন চমকে যেনো অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে। সে বিশ্রাম নিতে বসে।

বিশ্রামের পর আবার যাত্রা শুরু করে সে, পৃথিবীর অপর প্রান্ত কবে দেখতে পাবে সে কে জানে। আদৌ যেতে পারবে কি না সে তাও জানে না। তবে যা দেখলো এতোদিন তাও কি মন্দ নাকি। ক'টা কচ্ছপের ভাগ্যে তা আছে শুনি। বহু কচ্ছপ তো বাড়ির পেছনে বাগানেই কাটিয়ে দিবে শত শত বছর। এ ভেবে কচ্ছপ মুচকি হাসে। ভাবতে ভাবতেই পার করে ফেলে আরো কত বছর। এবার কচ্ছপ আবার পেছন ফেরে। দেখে এখন পিঠে বসে আছে এক ফোঁকলা বুড়ি। সাদা শনের মত চুলগুলো মাটি ঘসে যাচ্ছে। বুড়ী আপন মনে আকাশ দেখছে। খুব আস্তে আস্তে কচ্ছপটাকে বললো, "আর কতদূর। এ যাত্রায় কি ও প্রান্ত দেখে যেতে পারবো রে বোকা? আমি না পারলেও তুই দেখে নিস!! বড় মজা হবে কি বলিস!" কচ্ছপ মাথা নাড়ে।

কচ্ছপ এবার ছুটতে থাকে। হয়তো চলেই আসছে সে। এভাবে চলে যায় হয়ত বহুকাল। তাদের নেই কোনো ঘড়ি নেই কোনো ক্যালেন্ডার, কি করে জানবে যে কতকাল পার হলো। তারা ধরে নেয়ে অনন্তকাল পাড় করেছে তারা ভ্রমনে। অবশেষে একদিন পৃথিবীর অপর প্রান্তে এসে পৌছায় কচ্ছপ। আনন্দে পেছন ফেরে সে। কি আশ্চর্য্য পিঠে যে কেউ নেই। কবে তার যাত্রী চলে গেলো সে কি টের ও পেলো না। এ সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে সে নদীর ধারে যায়। পানিতে তার ছায়া দেখে সে বলে উঠে, "বাহ!! কবে আমি এতো বদলে গেলাম!"

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০৭

মামুন আকন বলেছেন: ভাল লাগলো

১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৫০

তেরো বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৪৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: সত্যিই ভাল লাগার।। আমাদের বদলের ধারনাটি সুন্দররূপ পেয়েছে।।
ঈদ-শুভেচ্ছা রইলো।।

৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: জীবন থেকে মরণ বড় শ্লথ এক প্রক্রিয়া :-< ভালো লাগলো লেখা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.