নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুবই অলস

লিখে খাই, সবার ভাল চাই

তিতাসপুত্র

খুবই অলস

তিতাসপুত্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিরল দৃশ্য দেখার অপেক্ষায়

১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৩



বাসা থেকে বেরুতেই মহল্লার এক মুদি দোকানি ডাকলেন। বললেন, ভাই আমরা আর পারছি না। ব্যবসায় মন্দা। দিনের পর দিন হরতালে কাবু হয়ে পড়েছি। মাস গেলে কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়। বিদ্যুৎ বিল দুই মাস না দিলে লাইন কেটে দেয়। গ্যাসের চুলায় ভাত চড়িয়েছি, বিল বকেয়া তাই লাইন কেটে দিতে এসেছে। বলেছি ভাতটা হয়ে গেছে প্রায়। ৫ মিনিট সময় দিন। না! তাও দিলো না গ্যাস অফিস। লাইন কেটে দিলো। আচ্ছা বলুন, ব্যবসা না হলে আমরা বিল দেবো কোথা থেকে? দেশের এই অবস্থায় আমাদের ব্যবসা লাটে উঠেছে। শুধুমাত্র দুই দলের রেষারেষিতে আমরা বিপর্যস্ত। আর পারছি না। এখন আমরা সব দোকানি একসঙ্গে বসেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর বসে থাকবো না। আন্দোলনে নামবো। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার বাসভবন ঘেরাও করবো। তবুও এ পরিস্থিতি থেকে আমরা মুক্তি চাই। শুধু ওই মুদি দোকানিই নয়, সর্বত্র একই আলোচনা। বিভিন্ন আড্ডায়, গল্পে, হাটে-বাজারে, মাঠে-ঘাটে, ফোনে একই জিজ্ঞাসা, দেশে হচ্ছেটা কি? কারওই কি দেশের জন্য মায়া নেই? অসহ্য এক পরিবেশ। আমরা এমনটি চাই না। একদিকে বিরোধীদলীয় নেতাদের গ্রেপ্তার চলছে সমানে, অন্যদিকে প্রতিবাদে হরতাল। দিনের পর দিন সব কিছু অচল। কেউ ভাবছে না দেশ নিয়ে। সবারই উদ্দেশ্য এক। ক্ষমতা। মসনদ। একদল মসনদে বসে খেলছে। অন্যদল মসনদে বসতে খেলছে। এ খেলায় সর্বনাশ হচ্ছে সাধারণ মানুষের। যাদের ভোটে তারা মসনদে যান। যাদের ভোটে তারা রাজা হনÑ সেই জনতার ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে স্বাধীনতার ৪২ বছর ধরে। একই খেলা। কোন পরিবর্তন নেই। সময় বদলেছে। কিন্তু খেলার ধরন বদলায়নি মোটেও। জনগণ অবশ্য প্রতিবারই ভোট দেয় আর ভাবে এবার হয়তো সুখের দেখা পাবো। কিন্তু না, তারা সুখের দেখা পান না। বরং দিন দিন আশাহত হন। রাগে, ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। কিন্তু কিছুই করার থাকে না তাদের। বাজারের পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী। একদিকে চালের দাম বাড়ছে, অপরদিকে কৃষক তার ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। পাশাপাশি বাড়ছে সকল নিত্য পণ্যের দাম। এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। ক্ষমতায় থাকলে সবাই হরতালের বিরুদ্ধে বলেন। কিন্তু ক্ষমতার বাইরে থাকলে হরতালই হয়ে ওঠে তাদের মোক্ষম অস্ত্র। হরতাল এমন এক অস্ত্র যা দিয়ে কাবু করা যায় গোটা দেশ। কাবু হয়ে পড়ে ব্যবসা। কাবু হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। তবে কাবু হয় না সরকার। বরং তাদের পক্ষ থেকে একদিকে বলা হয়, হরতাল জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে বলা হয়, হরতাল করে বিরোধী দল দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কোনটা ঠিক? হরতালে স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে। নির্ধারিত পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়ে ছুটির দিনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুক্রবার বন্ধের দিনে কোন কোন প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ হাঁটছে উল্টো পথে। এর জন্য দায়ী কে? সরকার, বিরোধী দল না জনগণ? কারা সঠিক তা ভবিষ্যৎ বলে দেবে। কিন্তু এ মুহূর্তে যা ঘটছে তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বিষয়টি রাজনীতিবিদরা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততই মঙ্গল। দেশে মহাসঙ্কটকাল চলছে। দুই নেত্রীর দিকে তাকিয়ে দেশ। বিশ্ব। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ, এফবিসিসিআই নড়েচড়ে বসেছে। তারা দুই নেত্রীকে একসঙ্গে বসাতে চান। সংলাপ চান। ক্ষমতায় থাকতে যে এরশাদ দুই নেত্রীকে এক করার বিরোধী ছিলেনÑ সেই এরশাদও বুধবার চিঠি দিয়ে দুই নেত্রীকে এক সঙ্গে বসে সংলাপের অনুরোধ জানিয়েছেন। আসলে একটি সংলাপই পারে দেশটাকে অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরিয়ে নিতে। দেশের মানুষ তাই সংলাপের দিকে তাকিয়ে আছেন। সর্বত্র এক কথা, দুই নেত্রী একসঙ্গে বসলেই সমস্যার সমাধান হবে। বহু কাক্সিক্ষত সেই সংলাপ কি আদৌ হবে? নাকি দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে? এ প্রশ্ন মুখে মুখে। দুই নেত্রী কি এ প্রশ্নের সমাধান দেবেন? নাকি তারা যে পথে হাঁটছেন সেই পথেই হাঁটবেন? এ হাঁটা যে কত দুষ্কর এটা যদি তারা বুঝতেন তাহলে আরও বহু আগেই তারা একসঙ্গে বসতেন। কি নির্মম পরিহাস দেশবাসীর। একই অনুষ্ঠানে যান দুই নেত্রী। অথচ একজন আরেকজনের সঙ্গে কথা বলেন না। মুখোমুখিও হন না। একাধিক অনুষ্ঠানে এমন দৃশ্য দেখে দেশবাসী হতাশ হয়েছেন। এমন দৃশ্য আর দেখতে চান না দেশের মানুষ। তারা বিরল সেই দৃশ্য দেখতে চান। যেখানে দুই নেত্রী হাতে হাত রেখে বলবেন, আসুন আমরা এক হয়ে এক সঙ্গে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই। অনেক হয়েছে। আর হানাহানি নয়। এবার সব তিক্ততা ভুলে আসুন বলি, দেশটা আমাদের। একে নিয়ে আর খেলা নয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৪

রাকি২০১১ বলেছেন: হা হা হা ।
















দু:খের হাসি এইডা, ভাই। কিছু ভেবে পাই না।

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫

তিতাসপুত্র বলেছেন: আপনার দু:খের সঙ্গে আমি দুঃখিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.