![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাবা আমারে বাঁচান। বাঁচান... বাবা বাঁচান...। সাভারের রানা প্লাজায় কংক্রিটের নিচে চাপা পড়া এক মহিলার আর্তি। তার এ আকুল আর্তনাদ হৃদয় ভেদ করেছে উপস্থিত সবার। তার এ আকুতি গোটা বিশ্ব শুনেছে। টিভির পর্দায় দেখে কেঁদেছে গোটা দেশ। এখনও কাঁদছে। কি নির্মম! আমরা কেউ তাকে বাঁচাতে পারছি না। হায় রে নিয়তি। হয়তো তিনি বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে এখনও অপেক্ষায়। তিনি কি জানতেন জীবন জীবিকার তাগিদে যাওয়া কর্মস্থলই তার সামনে মৃত্যু হয়ে দাঁড়াবে। তার চেনা সহকর্মীদের প্রাণ কেড়ে নেবে? না, নিশ্চয় জানতেন না। কিন্তু রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা যে জেনে শুনেই তিন সহস্রাধিক মানুষকে মৃত্যুর হাতে তুলে দিলেন। কি মর্মান্তিক সব দৃশ্য দেখা যাচ্ছে টিভির পর্দায়। একের পর এক লাশ বের করা হচ্ছে। জীবিত কাউকে উদ্ধার করলে সবাই যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। না! এ স্বস্তি ক্ষণিকের। ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে ভেসে আসা কান্না সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশজুড়ে একটাই আলোচনা, সোহেল রানা ৪ তলা ভবনের অনুমোদন নিয়ে ৯তলা করলো কিভাবে? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কি করছিলেন? আগের দিন ভবনে ফাটল দেখা দেয়ার পরও পরদিন কেন গার্মেন্ট মালিকরা তাদের শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে চাপ দিয়েছিলেন? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সরকারি দলের প্রভাবশালী যুব নেতা রানা সব জেনে শুনেও কেন বলেছিলেন, সামান্য ফাটলে কিছু হয় না। যে রানা মৃত্যুকূপ তৈরি করে মার্কেট, ব্যাংক ও একাধিক গার্মেন্ট ভাড়া দিয়েছেÑ তার কি একবারও মনে হয়নি এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে? এ বিপর্যয় বিশ্ববাসী দেখছে। ধিক্কার দিচ্ছে তারা। এভাবে আর কত প্রাণ গেলে সরকার সজাগ হবে? নাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো বিরোধী দল ও মৌলবাদীদের কাজ বলে দায় এড়িয়ে যাবে? এত মৃত্যু রানা কিংবা গার্মেন্ট মালিকদের মানবিকতায় নাড়া না দিলেও গত দু’দিন ধরে হাজার হাজার মানুষ তাদের মানবিক হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকারী বাহিনী পৌঁছার আগেই তারা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে। তাদের দ্রুত এ মানবিক আচরণে মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। শ’ শ’ মানুষ লাইন ধরেছে রক্ত দিতে। রাতব্যাপী তারা দৌড়ে গেছে এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতালে। আহতদের যে বাঁচাতে হবে। যার যা কিছু আছে তা নিয়েই ছুটে এসেছে কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে। ৭/৮ বছরের শিশু থেকে শুরু করে কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ কেউ বাদ যায়নি। সবাই লাইন ধরে ধরে ইঁট সরাচ্ছে। এখানে বিএনপি-আওয়ামী লীগ নেই। নেই জাগরণ মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম। সবাই এক কাতারে উদ্ধার তৎপরতায় নেমেছে। মানুষ মানুষের জন্য। এটাই প্রমাণ করেছে ওরা। এ কাজে যোগ দিতে ছুটে এসেছে ঢাকার বাইরেরও অনেকে। একটু সহযোগিতা করলে যদি একটি প্রাণকে বাঁচাতে পারি। একদিকে যখন এমন মানবিক আচরণ অন্যদিকে চলছে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর সেই পুরনো খেলা। কিভাবে এ কারবালা থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব তা চিন্তা না করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চিন্তা শুরু হয়েছে। ধিক্কার তাদের মানসিকতাকে। পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, ভবন মালিক রানা পালিয়েছে। এত মৃত্যুর পর রানা যদি আজ নিজে পুলিশের হাতে ধরা দিতো, তাহলে বলা যেতো তার বিবেক নাড়া দিয়েছে। তার মানবিকতা নাড়া দিয়েছে। তার পলায়ন যদি সত্যি হয়, তাহলে ভাবতে হবে এ ঘটনায় রানার মনে কোন দুঃখবোধ নেই। বরং পালিয়ে গিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসছে সে। এ ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি হয়েছে। অন্যসব ঘটনার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যেমন আলোর মুখ দেখেনি। এখানেও একই ঘটনা ঘটবে- এমনটা আর চাই না। এ ঘটনার তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে হয়তো ভবিষ্যতে এমন বেআইনি ভবন কেউ বানাতে সাহস পাবে না। আর যদি তা না হয়, তাহলে ফের অন্য কোন ভবন ধসের ঘটনায় লাশ দেখার অপেক্ষা করতে হবে। ফের স্বজনহারানোর কান্নায় বাতাস ভারি করে তুলবে। আবারও কোন মা কিংবা বোন ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে বাঁচার আকুতি জানাবে- বাবা আমারে বাঁচান। বাঁচান... বাবা বাঁচান...। আর অসহায়ের মতো লাখো মানুষ চেয়ে থাকবে। তাদের চোখে থাকবে কান্না। এ কান্না ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশে। আর রানারা প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে পালিয়ে যাবে।
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩
সাইফ সোহেল বলেছেন: রানারা সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫২
মোঃ_হাসান_আরিফ বলেছেন: সাভারে রানা প্লাজা বিপর্যয় ঘটার পর এপর্যন্ত আলোচিত উক্তি
লিংক
Click This Link