![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দু’টি অক্ষরের একটি শব্দ। তার নাম সুখ। এ সুখই বড় অধরা। জীবনে ক’জন বলতে পেরেছেন যে আমি সুখী। এমন সুখী মানুষ মেলা ভার। কি ব্যক্তি জীবনে, কি সংসারে, কি সমাজে, কি রাষ্ট্রে সর্বত্র সুখ যেন অধরাই রয়ে যায়। আর এমন অধরার পেছনে দায়ী কে? সমাজ, রাষ্ট্র না মানুষ? উত্তর খুঁজে পাওয়াও মুশকিল। তবে আপাত দৃষ্টিতে দায়ী যেন মানুষ। আমরা কেউ সুখী হোক তা চাই না। আর চাই না বলেই কেউ সুখী নন। ব্যক্তি জীবনে কারা সুখী? কেউ কি নিজেকে সুখী বলতে পারছেন। কারও অর্থ নেই তাই তিনি অসুখী। আবার কারও এত অর্থ যে তা নিয়ে তিনি অসুখী। সংসারের কথাই ধরা যাক। এখানে স্বামী, স্ত্রী, সন্তান, পিতা-মাতা। এ ক’জনই একসঙ্গে বসবাস করতে পারে না। সংসারে লেগে থাকে অশান্তি, ঝগড়া আর কলহ। বউ-শাশুড়ি যেন একে অন্যের বিরোধিতা করতেই জন্ম। আর তাই শাশুড়ি কোন কথা বললে, বউ মনে করে তাকে বলেছে। বউও শুনিয়ে দেয় দু’-চার কথা। দিন-রাত এ নিয়ে ব্যস্ত বউ-শাশুড়ি। তা দেখে সংসার থেকে পালিয়ে যায় সুখ। ভর করে অসুখ আর অশান্তি। তা দেখে সংসারের কর্তা পুত্র কিংবা স্বামীরও মন থাকে খারাপ। ফলে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। হাজার চেষ্টা করেও সুখের দেখা তিনি পান না। ঘরে ঘরে চলছে এমন পরিস্থিতি। আর সমাজের কথাই ধরা যাক। কি দেখছি, কি শুনছি? সমাজে কেউ যদি অর্থের দিক দিয়ে কিংবা অন্য কোন দিক দিয়ে তর-তর করে এগিয়ে যেতে থাকেন তাহলেই বিপদ। সমাজের অন্য অনেকের জন্য হবে এটা ঈর্ষার কারণ। তারা লেগে পড়বেন পেছনে। তাকে ছাড়া যাবে না। অপরাধ তিনি কেন সমাজে এগিয়ে যাচ্ছেন? কোন খুঁত বের করে তাকে ধরতেই হবে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বেটা আমাকে জিজ্ঞেস করেনি। সালাম দেয়নি? ব্যাটার সাহস কত? বেটাকে ছাড়া যাবে না। কি করা যায়। কাউকে না কাউকে দিয়ে প্রথমে লাগাতে হবে ঝগড়া। এরপর মামলা মোকদ্দমা। শুরু হলো তার অশান্তি। যা-ই সুখের দেখা পেতে যাচ্ছিলেন তিনি। তা আর তার নাগালে রইলো না। ছিটকে গেল হাজার মাইল দূরে। এভাবে বিতাড়িত হলো সুখ। তার সঙ্গে স্বজনদেরও সুখ উবে গেল। আর রাষ্ট্রে সে তো বড় এক ঝামেলা। সরকারকে কখনও স্বস্তিতে থাকতে দেয়া যাবে নাÑ এ হলো বিরোধী দলের পণ। আর বিরোধী দলকে কখনওই সামনে বাড়তে দেয়া যাবে নাÑ এ পণ সরকারের। ফলে শুরু থেকেই সৃষ্টি হয় অশান্তির। যে অশান্তিতে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয় জনগণ। তাতে তাদের কি? যে যেভাবে পারে কায়দা করছে। নিজেকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। পিছু টেনে ধরছে অন্যরা। ফলে সেখানেও অশান্তি। সুখ নেই কোথাও। এ থেকেই দেশে শুরু হয় অস্থিরতা। রানা প্লাজা ধসের রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে নিহত ৯০০ ছুঁই ছুঁই। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এখন কারাগারে। তাদের কি বিচার হবে কেউ জানে না। এর রেশ কাটতে না কাটতেই হেফাজতে ইসলামের ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি। পরে সমাবেশ। আরও পরে অবস্থানের ঘোষণা। সরকার তার কৌশল নিয়ে এগোবে এটাই স্বাভাবিক। সরকার তা-ই করেছে। কৌশলে তাদের অবস্থান কর্মসূচি ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু শাপলা চত্বরের এ অবস্থানে সরকারি কৌশল নিয়ে নানা গুজব দেশজুড়ে। আবার বিরোধী দলের কৌশল নিয়েও আলোচনা-সমালোচনা সর্বত্র। এখানে জয়ী হয়েছে কে? সরকার, বিরোধী দল নাকি হেফাজত ইসলাম? তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে। তবে সুখ যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই রয়ে গেছে। সুখ আর ধরা দিলো না জীবনে, সংসারে, সমাজে এবং রাষ্ট্রে।
©somewhere in net ltd.