![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানবতা, সুস্থ উপলোব্ধি ও সঠিক মূল্যবোধ ও সত্যিকারের ভালবাসার চর্চা হোক **
আব্বা মানেই বাধ ভাঙ্গা জোয়ার, স্বাধীনতায় অবাধ উচ্ছ্বলতা। আব্বার কথা মনে পড়লেই মনে পড়ে পানভর্তি মুখে সর্বদা হাসি আর গল্প। আব্বার সাথে রান্নাবাটি, কোটাকুটি। সেলাইমেশিনে সুতা কেটে গেলে সর্বদা সুইয়ে সুতা লাগানো।
আব্বার সাথে বানানো জামাতে হ্যাম দেওয়া। আব্বার সাথে সাথে বসে টিভি দেখা। বিশ্বকাপ ক্রিকেট আর ফুটবল দেখা।
আব্বার সাথে বি,বি,সি আর সি,এন,এন এর যত ভাল ভাল অনুষ্ঠান আর নিউজ শুনা। আব্বা মানে দাবা খেলা, ক্যারাম খেলা। আব্বা মানে বইয়ের রাজ্যে একপলক ঘুরে আসা।
হ্যা বই , প্রতিটি বই উপহারের সময় বলতে, “মাদুলী তুমি রাজেশ্বরী হও।“
হ্যা কোথায় তুমি আমাকে কি দেখতে পাচ্ছ , আছ তো তারার রাজ্যে কি শান্তিতেই না ঘুরে বেড়াচ্ছ।
তোমার রেখে যাওয়া ডায়েরীগুলি হাতড়ে দেখছি , তোমার রেখে যাওয়া বইগুলিতে শুকে তোমার হাতের পরশের সুবাস নিচ্ছি।
তুমি মানেই রাজ্যের বই আর বইমেলা। এ বই সে বই । জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলে। তোমার পান খেতে আর গল্প শুনতে এমন লোক নাই যে তোমার কাছে না আসত। সব খালি রউফ ভাই রউফ ভাই করতে করতে অস্থির থাকত।
মনে পড়ে এক্কেবারে ছোট্ট থেকে তুমি খালি বিদেশ ঘুরতে আমাদের বাসায় রাজ্যের খেলনা ছিল । ব্লকসেট। ট্রেন, ওয়াকি টোয়াকি, বার্বি ডল , এ ডল অই ডল, এই খেলা সেই খেলা , কত যে গাড়ি আর কত যে ফায়ারম্যান, মনোপলি ।
দুনিয়ার রাজ্যের খেলনা। ২৪/২৫ টা দেশ যে ঘুরতে। তোমাকেই সরকার থেকে পাঠাত বইয়ের প্রছদ ও প্রকাশনা উপলক্ষ্যে ওয়ার্কশপ আর বইমেলায় অংশ নিতে।
তোমার সেই নীল ভেসপাটি ছিল অসাধারন এক বাহন। তা দিয়ে যে কোন জায়গায় যে কোন স্পীডে তুমি নিয়ে যেতে।
লিমুজিনও বুঝি এর কাছে কিছুই না। আমাদের প্রতিদিন পার্কে যাওয়া। আর খেলনা পাখিটি ডালে বসে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষন করা। চায়না থেকে আনা তোমার বিশাল ঘুড়িটি নিয়েও কাড়াকাড়ি পড়ে যেত ।
তোমার বিশাল বিশাল মাছ ধরা আর তা দিয়ে আমাদের পিকনিক করা। কত যে পিকনিক হত। খালি আনন্দ খালি হাসি - ঠাট্টা আর চারিদিকে তোমার কত যে ভক্ত, ছোট্ট বড় সবাই খালি তোমার জন্যে দিওয়ানা।
বেছে বেশ ছোট্ট বেলায় এমন কিছু মানুষের সাথে মিশিয়েছিলে কেন জানি মনের বিকাশটা বেশ পাকাপোক্ত হয়েছে।
তাই আজ নিজের রুচি আর বিচার নিয়ে সবার মুখে ভাল চিত্র দেখি।
জীবনে যত রকম সাধ আহ্লাদ সব তুমি মন ভরিয়ে করে দিয়ে গিয়েছ। সব কিছু শিখিয়েছ । আর দশটা মেয়ের মত তাই আমি বাহ্যিক চাকচিক্যে নিজেকে জাহির না করে নিজের ভিতরের সৌন্দর্যে বিশ্বাস করি।
কোনদিন তোমার রাজেশ্বরীকে কেউ বাজে কাজে ঘুরতে দেখেনি, ওড়না পেচিয়ে ভদ্রভাবে চলতাম দেখে তুমি রাগ করতে , বলতে একটু স্মার্ট চল। দেখ না ওই মেয়েগুলি কত স্মার্ট। যখন বলতাম আব্বা আধুনিকতা কি ওড়না ছাড়া চলাতেই , আমার মনের রুচি , আমার ভেতরের আধুনিকতা এইগুলির মূল্য কি বেশি না।
তুমি নিশ্চুপ থাকতে, আর আমাকে নিয়ে গর্ব করতে, বাদ- বাকিরা যখন তাদের ছেলেমেয়েদের চঞ্চলতা আর বাড়ি ভাঞ্চুর করে কাপড় চোপড়ের আর কুসঙ্গে ঘুরে বেড়াত। তুমি বুঝি একটু বুক ফুলিয়ে চলতে আর আমার জন্য রাশি রাশি বই নিয়ে আসতে।
তুমি যে কত আন্তরিক আর প্রানখোলা এক ঝর্না ছিলে। তাই আজ এই তোমার দ্বিতীয় (জান্নাত গমনে)বছর তারার রাজ্যে যাওয়া নিয়ে আমার কান্না নেই চোখে । আমি অনেক বেশি খুশি মনে তোমাকে মনে করতে পারছি ।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪১
তিথির অনুভূতি বলেছেন: আব্বাকে নিয়ে আমার আরো কিছু লেখা
আব্বার দেয়া শেষ ডায়েরীর চিরকুটটিআব্বার দেয়া শেষ ডায়েরীর চিরকুটটি
[link|http://www.somewhereinblog.net/blog/tithirocks/29584130|মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকা এক শিল্পীর গল্প (আবদূর রোউফ সরকার [১৩ই ফেব্রুয়ারী ১৯৪৮-২৪শে এপ্রিল ২০১১)]
মাদুলি তোমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, তুমি রাজ্যেশ্বরী হও***
বাবা তুমি অন্যরকম, তাই........
৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৪০
সোহাগ সকাল বলেছেন: আপনার বাবাকে নিয়ে লিখাটা চরম লাগলো। ছবি দেখে মনে হচ্ছে, আঙ্কেল খুব রশিক আর জ্ঞান পিপাসু!
৪| ০২ রা মে, ২০১৩ রাত ১২:০৪
Kawsar Siddiqui বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো আপনার লেখা ।
৫| ১৬ ই মে, ২০১৩ সকাল ১০:১৭
অদৃশ্য বলেছেন:
এরকম একজন চমৎকার বাবা যার আছে বা ছিলো সে সত্যই ভাগ্যবান বা বতী... আপনার বাবা জান্নাতবাসী হোন, প্রার্থনা রইলো...
অনেক ঘটনাই জানা হলো...
শুভকামনা...
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৩৬
পড়শী বলেছেন: বাবা কে কিছু লেখা দেখলেই চোখে পানি চলে আসে। আপনার লেখাটাও অনেক ভালো হয়েছে।