নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর

লেখকের অনুমতিক্রমে লেখাগুলো ব্লগে প্রকাশ করা হচ্ছে।লেখকের এফবি আইডি http://www.facebook.com/muhammad.toimoor

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর

লেখকের অনুমতিক্রমে লেখাগুলো ব্লগে প্রকাশ করা হচ্ছে।লেখকের এফবি আইডি http://www.facebook.com/muhammad.toimoor

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাকিনী part1

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:২৭



পয়সাঅলা বাঙালি পরিবারগুলোর ব্যাপারে একটি প্রবাদ আছে। সেটি হলো এদের প্রথম পুরুষ কেনারাম, দ্বিতীয় পুরু ষ ভোগারাম, আর তৃতীয় পুরুষ বেচারাম। সোজা কথায় প্রথম পুরুষ টাকা বানাতে, জমিজমা কিনতেই জীবন হারাম করে ফেলে। দ্বিতীয় পুরুষ শুধু বসে বসে খায় আর ঘোরে। তৃতীয় পুরুষ সব বেচেকিনে শেষ করে। চতুর্থ পুরুষের বেলায় কী হয় তা অবশ্য বলা নেই। তবে সে যে বস্তিরাম হবে তা নিশ্চিত। আমাদের পরিবারে অবশ্য কেনারাম যে বেচারাম সেই-ই। এক পুরু ষেই সব উড়েপুড়ে শেষ। আমার বাবার ছিল তেজারতির ব্যবসা, যাকে বলে সুদের কারবার। জমিজমা-গয়না বন্ধক রেখে চড়া সুদে টাকা ধার দেওয়াই ছিল তার কাজ। প্রথম দিকে বাবা ছিলেন খুলনা শহরের এক মাড়োয়ারির দোকানের হিসাব লেখক। ৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর সেই মাড়োয়ারি ব্যবসাপাতি গুটিয়ে ইন্ডিয়ায় চলে গেল। সেই সাথে গেল বাবার চাকরিও। বেকার হয়ে পথে পথে ঘুরতে লাগলেন। একদিন দুপুরে চার আনার বাদাম কিনে হাদিস পার্কের এক বেঞ্চের ওপর বসে কীভাবে আগামী মাসের ঘরভাড়া দেবেন ভাবতে লাগলেন সেই কথা। বাবা ভাড়ার কথা যখন ভাবছেন এবং মাঝেমধ্যেই উদাস হয়ে পার্কের গেটের সামনে রাস্তার দিকে তাকাচ্ছেন তখন হঠাৎ তার চোখ পড়ল গেটের পাশে বটগাছের নিচে বসা এক জ্যোতিষীর ওপর। জ্যোতিষীর পাশে পার্কের রেলিংয়ে লাল সালুতে রুপালি রঙে লেখা :



জ্যোতিষ সাগর নেতাই নাথ

হাত দেখিয়া ভাগ্য গণনা করা হয়

দর্শনী ১২ আনা মাত্র।



মাঝবয়সী ঘোর সংসারী মানুষ অর্থকষ্টে পড়লে তার মাথার ঠিক থাকে না। চার আনার বাদাম কেনার পর বাবার সম্বল তখন একুনে বারো আনা। তিনি জ্যোতিষ সাগরকে দিয়ে ভাগ্য গণনা করালেন। নেতাই নাথ বাবাকে বললেন, ব্যবসার লাইনে বৃহস্পতি তুঙ্গে। চাকরির ক্ষেত্রে শনির বলয়ে কেতুর আনাগোনা। আগামী পঁচিশ বছরে শনির বলয় ছেড়ে কেতুর অন্য কোথাও যাওয়ার সম্ভাবনা জিরো পার্সেন্ট। জ্যোতিষ সাগরকে হাত দেখানোর আগে বারো আনাই অ্যাডভান্স করতে হয়েছে। বাবার দুবছরের পুরোনো রংজ্বলা ক্রিজভাঙা প্যান্টের পকেট তখন গ্যাস বেলুনের মতো হালকা। বাসায় শ'খানেক টাকা মা'র কাছে আছে। শেষ সম্বল। ব্যবসা কীভাবে হবে বুঝতে পারছেন না। তিনি জ্যোতিষ সাগরকে জিজ্ঞেস করলেন, কিসের ব্যবসায় উন্নতির সম্ভাবনা। জ্যোতিষ তাঁকে তেজারতির ব্যবসা ধরতে বলল। সাফল্যের পরিমাণ শতভাগ। আগেই বলেছি, ছাপোষা মানুষ বিপদে পড়লে মাথার ঠিক থাকে না। বাবা চলে গেলেন ঘোরের ভেতর। বাস করতে লাগলেন এক মানসিক কোমায়। বাসায় ফিরে মাকে বললেন,

'বিমলা, চাকরি তো অনেক দিন করলাম। এবার ভাবছি ব্যবসা-বাণিজ্য করব।'

মা বললেন, 'আচ্ছা, তা না হয় করবেন। কিন্তু আপনার পুঁজি কোথায়?'

'তোমার বড় ভাইয়ের তো বিরাট অবস্থা। তার কাছ থেকে হাজার দশেক এনে দাও। এক বছরের ভেতর শোধ হয়ে যাবে।'

'আর যদি শোধ দিতে না পারেন, তখন?'

'না পারলে তোমার বাবার সম্পত্তির যে অংশ তুমি পাবে ওটা তার হবে।'

'ওইটুকুই তো সম্পত্তি। হাতের পাঁচ। ওটা গেলে আর থাকল কী? পথে পথে ভিক্ষে করে খেতে হবে।'

'অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে পথে পথে ভিক্ষে তো মনে হয় কাল থেকেই করতে হবে। যা বলি মন দিয়ে শোনো। তোমার ভাইয়ের কাছ থেকে টাকাটা এনে দাও। মাড়োয়ারির দোকানটা এখনো খালিই আছে। আপাতত ওখানেই বসা যাবে। নতুন মালিককে মাঝে মাঝে কিছু ভাড়া দিলেই হলো।'



প্রথম প্রকাশ-নভেম্বর২০১০,রহস্যপত্রিকা



send the feedbacks direct to facebook.it is unfortunately not possible for the writer to view or reply in blog because of being very busy.

feel free to send any kind of feedback in fb http://www.facebook.com/muhammad.toimoor

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:২৮

কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: গল্প না আধুনিক কবিতা ??

২| ০২ রা মে, ২০১৩ রাত ২:১৬

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর বলেছেন: মোবাইল থেকে প্রব্লেম হয়েছিল

৩| ২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫০

আরজু পনি বলেছেন:

বেশ লিখেছেনতো!


চতুর্থ পুরুষের বেলায় কী হয় তা অবশ্য বলা নেই। তবে সে যে বস্তিরাম হবে তা নিশ্চিত...হাহাহাহা মজার বলেছেন ।

শুভ ব্লগিঙ !:#P

২৫ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৮:৫২

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর বলেছেন: ধন্যবাদ।আপনি অলওয়েজ হেল্পফুল!

৪| ২৫ শে জুন, ২০১৩ রাত ৩:৪৬

টিনটিন` বলেছেন: আপনি কি বংশালের বনলতা বইয়ের লেখক মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর? এই গল্পটা আমি খুব সম্ভবত বংশালের বনলতা বইতে পড়েছি।

২৫ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৯:১১

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর বলেছেন: হুম।উনি ই।যাক! বইটা কেউ কিনসে তাহলে! স্যার বলছিলো খুবই পুওর রেস্পন্স পাইসেন।তাই ব্লগে পোস্ট করা আরকি!

আমি উনার অনুমতি নিয়ে ব্লগে পোস্ট করছি

http://www.facebook.com/sourav.ctg

৫| ২৬ শে জুন, ২০১৩ রাত ৩:২০

টিনটিন` বলেছেন: আপনার স্যারকে বলবেন, আমি আমার জীবনে যত হরর সংকলন পড়েছি তার মধ্যে সেরা বই বংশালের বনলতা।

রহস্যপত্রিকায় উনার একটা গল্প পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। পরে যখন দেখলাম উনার বই বের হয়েছে, তখন খুলনা থেকে রকমারীতে অর্ডার দিয়ে বংশালের বনলতা কিনি।

২৬ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২১

মুহম্মদ আলমগীর তৈমূর বলেছেন: http://www.facebook.com/muhammad.toimoor উনার ফেসবুক আইডি এটা।আপনি নিজেই বলতে পারেন :|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.