নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

৩২ পৃষ্ঠায় খড়, ৩৩ পৃষ্ঠায় অাগুন

টোকন ঠাকুর

কবিতা গল্প লিখি, ছবি আঁকি-বানাই, একাএকা গান গাই...

টোকন ঠাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্টোরি বেইজমেন্ট 'রাজপুত্তুর' বেইজমেস্ট ব্যাপারটা কি?

০৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৫২

স্টোরি বেইজমেন্ট 'রাজপুত্তুর'! 'বেইজমেন্ট' ব্যাপারটা কি?



স্টোরি বেইজমেন্ট'টা ব্যাপারটা কি? 'মূল কাহিনি' বা 'অাখ্যান' বা গল্প বললে হয় না? এ নিয়ে অামি অারো দুএকজন সুহৃদের প্রশ্নের মধ্যে পড়েছি। রীতি অনুযায়ী অামিও কিছুটা জটিলতার মধ্যে অাছি। জটিলতা একটু খুলে বলি। শিল্প-সাহিত্য-সংষ্কৃতির সাময়িকী 'সামান্য কিছু'র নির্বাহী সম্পাদক সাদ্দাম সিকদারের উৎসাহেই অামি উৎসাহিত হয়েছি 'রাজপুত্তুর'এর স্ক্রিপ্ট করে জমা দিতে। যখন সংষ্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, রবীন্দ্র-শিশু সাহিত্যের চলচ্চিত্রায়নে অামি স্ক্রিপ্ট প্রতিযোগিতা করতে উৎসাহিত হই, ভাবলাম, 'ডাকঘর' দি। কিন্তু 'ডাকঘর' তো নাট্যরুপেই লেখা। চিত্রনাট্য করে মজা কম পাব হয়তো। তাছাড়া 'ডাকঘর' প্রতিযোগিতায় হটলিস্ট হতে পারে। অাবার অমলের স্বপ্নালু জ্বরগ্রস্থ প্রজ্ঞাপূর্ণ ক্ষণস্থায়ী বালকবেলাটা অামার পছন্দের। এরপর, লীলা মজুমদার সম্পাদিত রবীন্দ্র-শিশুতোষ ভাণ্ডার 'কৈশোরক' পড়তে পড়তে দেখি, একটা গল্প অামার পছন্দ হচ্ছে চিত্রনাট্য করতে। গল্পের নাম, 'সুকুমার'। চিত্রনাট্য করতে ধ্যানস্থ হলাম। অারেকটু তল্লাসী চালাতেই বুঝলাম, 'সুকুমার' নামে রবীন্দ্রনাথ অালাদা কোনো গল্প লেখেননি। লীলা মজুমদার সম্পাদিত রবীন্দ্রশিশুতোষ-কোষ 'কৈশোরক' ১৯৪১ এ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরবর্তীতে 'বিশ্বভারতী'র প্রকাশনা। অারেকটু তল্লাসী চালিয়ে দেখলাম, রবীন্দ্রনাথের শেষবয়সের দিকে উত্তমপুরুষে লেখা অাধা-বাস্তব, অাধা স্বপ্ন-কল্পচিত্রের একটি গ্রন্থ 'সে'। 'সে' অাসবে, এই সে যে কে? 'সে' অাসলে পুপেদির গল্প, দাদুর সঙ্গে পুপেদির গল্প। পুপেদি হচ্ছে রবীন্দ্র-তনয় রথীন্দ্রনাথের পালিত কন্যা। কবির নাতনী। 'সে' এক অদ্ভুত সুন্দর লেখা। খানিকটা পরাবাস্তব রিয়েলিটি। সে অাবার কি? সুর-রিয়েলিস্টিক রিয়েলিটি! চিত্রনাট্য করার সময় কথা প্রসঙ্গে অামি কথা বলেছি, 'সে'র পাঠক খুব কম। চারজন মানুষ পেয়েছি, যারা বলামাত্রই 'সে'কে কন্টাক্ট করেছেন, বলেছেন, 'ও সেই পুপের গল্প!' 'সে'র সেই পাঠকেরা হচ্ছেন, অধ্যাপক অানিসুজ্জামান, কবি অাসাদ চৌধুরী, শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার এবং প্রথম অামাকে যিনি 'সুকুমার'কে 'সে'র মধ্যে খুঁজতে একদিন তাঁর বাসায় নিয়ে গেলেন, তিনি লেখক অধ্যাপক বদিউর রহমান। বদি স্যার অামাকে তাঁর ভূতের গলির বাসায় নিয়ে গিয়ে রবীন্দ্র রচনা থেকে 'সে'কে বের করে দিলেন। সেইদিনই, তখনই অাজিজ মার্কেটে গিয়ে ফটোষ্টাট করে নিলাম পুরো 'সে'কে। পরে, বিশ্বভারতী'র প্রকাশনা 'সে' গ্রন্থটা অামাকে কনকর্ড মার্কেটের 'মধ্যমা' প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী বন্ধুজন সুমন গিফট করেছেন এক কপি। চিত্রনাট্য প্রতিযোগিতায় অামি অফিসিয়ালি ২৩ জনের মধ্যে প্রথম হয়েছি। (অামার জীবনে এই কোথাও প্রথম হয়তো প্রথম হওয়া। হা হা হা)।

'সে; হচ্ছে ১ থেকে ১৬ পরিচ্ছেদ বিস্তারি গল্প। কিছুটা ঘটে যাওয়া সত্য, কিছু 'ঘটিতে পারিত' সত্য ধরনের বিষয়-অাশয়। পুপেদির সঙ্গে তার দাদু, কবির গল্প। 'সে' গ্রন্থের ১০ পরিচ্ছেদটা সেখান থেকে কাট করে নিয়ে, 'সুকুমার' নাম দিয়ে লীলা মজুমদার রবীন্দ্রপ্রস্থান পরবর্তী সময়ে 'কৈশোরক'এ স্থান দিয়েছেন। অামি সেখান থেকেই চিত্রনাট্য করেছি। এবং একদিন, সন্ধ্যায় দেখা গেল, উঠোনের মন্চে 'রাবণবধ' মন্চস্থ হয়ে গেল। পরদিন সকালে ছোট্ট পুপেদি শালবনের ভেতর দিয়ে দৌড়ে এসে তার দাদুকে হাঁপাতে হাঁপাতে জানাল, 'অামি হরণ হয়ে গেছি।' তখন, দাদু মনে মনে হরণ হওয়া পুপেদিকে উদ্ধারের অাশায় প্রতিবেশী সুকুমারকে 'রাজপুত্তুর' পদে উন্নীত করে দায়িত্ব দেন। 'যাও, সুকুমার, তুমি তো রাজপুত্তুর, এখন পুপেদিকে উদ্ধার করো। ও হরণ হয়েছে 'কিছুই না'র রাস্তা দিয়ে।' ছোট্ট সুকুমার দায়িত্ব পালনে 'অাচ্ছা' বলে মেনে নিয়েছে। কারণ, পুপেদি তার খেলার সাথী। সে হরণ হয়ে গেলে তো তাকে উদ্ধার করা একপ্রকার দায়িত্ব। কারণ, সে এখন 'রাজপুত্তুর।'

তবু অমল এসেছে 'রাজপুত্তুর'এর মধ্যে। উহু, রাজপুত্তুর সুকুমারই দেখতে এসেছে অমলকে। সুধা দেখতে এসেছে অমলকে। দইওয়ালা তো অমলের সঙ্গে কথাই বলল। তারপর, দেখলাম, পাল্কিতে মা, দুজন বেহারা পাল্পকি টেনে নিয়ে যাচ্ছে, মানে, 'তুমি যাচ্ছ পাল্কিতে মা চড়ে, অামি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার পরে', এরপরই সেই ডাকাত দলের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ। মা'কে বাঁচাল বীরপুরুষ। অংশত 'ডাকঘর' যেমন, 'রাজপুত্তুর'এর মধ্যে ঢুকে পড়ল 'বীরপুরষ'ও। ঢুকে পড়ল রহমত, মিনি, অর্থাৎ, অংশত 'কাবুলিওয়ালা।' চিত্রনাট্যের ডেনসিটি বাড়ল, ভাবলাম। ভাবলাম, যা দাঁড়াল, একে অার কীই বা বলি! স্টোরি বেইজমেন্টই বলি। ব্যাপারটা ছবি দেখে তারপর কেউ অামাকে কথা শোনালে বেশি অালাপ জমতে পারে...অাবার অালাপ না হলেও বা কি! তেমন কিছু না। অাবার, রাজপুত্তুর' ছবিতে 'কিছুই না' একটা ফ্যাক্টর। স্ক্রিপ্ট, শ্যুটিং-এডিটিং-ডাবিংয়েও 'কিছুই না' ফাইল মেইনটেন করা হইছে কাজের সময়। কারণ, 'কিছুই না।'

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.