নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করলে আপনার করণীয়

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৩০

প্রতিনিয়ত জমি, বাড়ী, ফ্ল্যাট হতে কেউ না কেউ দখলচ্যূত হচ্ছেন। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রায়ই অন্য লোকজনের স্থাবর সম্পত্তি জোর পূর্বক বা চাতুরী পন্থায় দখল করে বা দখল করার চেষ্টা করে ।
স্থাবর সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করলে যে সমস্ত প্রতিকার আছে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো-

আদালতে মামলা দায়ের :-

কোন ব্যক্তি তার সম্পত্তি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা হলে বা বেদখল হলে ২ মাসের মধ্যে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে বেদখল করার চেষ্টা হতে বিরত করার জন্য বা সম্পত্তিতে ঐ ব্যক্তির প্রবেশ রোধ করার আদেশ প্রদানের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৫ ধারার বিধান অনুসারে মামলা করতে পারবেন।

এ ধরণের মামলা অল্প সময়ের মধ্যেই নিস্পত্তি হয়ে থাকে। তবে মামলা করার পূর্বে থানায় ঘটনার বিষয়ে একটি জিডি করতে পারেন।

ফৌজদারী কায্যবিধির ১৪৫ ধারা নীচে দেওয়া হলো:


স্থাবর সম্পত্তি বিষয়ক বিরোধ:

ধারা ১৪৫ ।জমি, ইত্যাদি সম্পর্কিত বিরোধের ফলে শান্তি ভঙ্গের আশংকা থাকিলে পদ্ধতি (Procedure where dispute concerning and,etc, is likely to cause breach of peace): (১) যখন কোন মেট্রৌপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ রিপোর্ট বা অন্য কোনভাবে সংবাদ পাইয়া এই মর্মে সন্তষ্ট হন যে, তাহার এখতিয়ারের স্স্থানীয় সীমার মধ্যে জমি বা পানি বা উহার সীমানা সম্পর্কে এমন একটি বিরোধ রহিয়াছে, যাহা শান্তিভঙ্গ ঘটাইতে পারে, তখন তিনি তাহার এইরুপ সন্তষ্ট হইবার কারণ উল্লেখ করিয়া তাহার দ্বারা নিধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে সশরীরে বা কৌসুলীর মাধ্যমে তাহার আদালতে হাজির হইবার এবং বিরোধের বিষয়বস্তুতে প্রকৃত দখল সম্পর্কে তাহাদের নিজ নিজ দাবী সম্পর্কে বিবৃতি পেশ করিবার নির্দেশ দিয়া একটি লিখিত আদেশ দিবেন ।

(২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ”জমি বা পানি” বলিতে দালান, বাজার, মত্‍স্য খামার, ফসল ভূমির আন্যান্য উত্‍পাদিত দ্রব্য বা সম্পত্তির খাজনা বা মুনাফা ও বুঝায়।

(৩) ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশক্রমে এইরুপ ব্যক্তি বা ব্যক্তিগনের উপর আদেশের একটি কপি সমন জারীর জন্য এই আইনে বর্ণিত পদ্ধতিতে জারী করিতে হইবে এবং অন্তত:পক্ষে একটি কপি নকল সুবিধাজনক স্থানে বা বিরোধের বিষয়বস্তর নিকটে লটকাইয়া প্রকাশ করিতে হইবে ।

(৪) দখল সম্পর্কে অনুসন্ধান: অত:পর ম্যাজিস্ট্রেট বিরোধের বিষয়বস্তুতে উক্তপক্ষসমূহের কাহার ও দখলের অধিকার গুণাগুণের বা দাবী প্রসঙ্গে না যাইয়া, পেশকৃত বিবৃতিসমূহ পাঠ করিবেন, পক্ষসমূহের বক্তব্য শ্রবণ করিবেন, তাহারা নিজ নিজ তরফে যে সাক্ষ্য হাজির করেন তাহা গ্রহণ করিবেন, এইরুপ সাক্ষ্যে ফলাফল বিবেচনা করিবেন, তিনি প্রয়োজন মনে করিলে অধিকতর সাক্ষ্য (যদি থাকে) গ্রহণ করিবেন এবং সম্ভব হইলে আদেশের তারিখে কোন পক্ষ উক্ত বিষয়বস্তর দখলে ছিলেন কিনা এবং কোন পক্ষ দখলে ছিলেন তাহা স্থির করিবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত আদেশের তারিখের অব্যাহিত পূববর্তী দুই মাসের মধ্যে কোন পক্ষকে বলপূবর্ক ও অন্যায়ভাবে বেদখল করা হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি এইরুপ দখলচ্যুত পক্ষকে উক্ত তারিখে দখলকার ছিলেন বলিয়া বিবেচনা করিতে পারিবেন:

আর ও শর্ত থাকে যে, ম্যাজিস্ট্রেট যদি ঘটনাটিকে জরুরী বলিয়া মনে করেন তাহা হইলে এই ধারার অধীন সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে যে কোন সময় বিরোধের বিষয়বস্ত ক্রোক করিতে পারিবেন । পূবোর্ক্ত

(৫) এই ধারায় যাহাই থাকুক না কেন উক্তরুপে হাজির হইবার নিদের্শপ্রাপ্ত কোন পক্ষ বা অন্য কোন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কারন দেখাইতে পারিবেন যে,পূবোর্ক্ত কোন বিরোধের অস্তিত্ব বর্তমানে নাই বা ছিল না; এবং এইরুপ ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট তাহার উক্ত আদেশ বাতিল করিবেন এবং পরবর্তী সমস্ত প্রক্রিয়া স্থগিত হইয়া যাইবে, তবে এইরুপ বাতিল সাপেক্ষে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক (১) উপধারায় অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে ।

(৬) আইনসংগতভাবে উচ্ছেদ না হওয়া পযর্ন্ত দখলে থাকা পক্ষ দখল বহাল রাখিবে:

ম্যাজিস্ট্রেট যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, পক্ষ সমূহের মধ্যে একপক্ষ বিরোধীয় বিষয়বস্তর দখলে ছিলেন বা (৪) উপ-ধারার প্রথম অনুশর্তের অধীন তাহাকে উক্ত বিসয়বস্তুতে দখলকার বলিয়া গন্য করা উচিত, তাহা হইলে যথাযথ আইনগত পদ্ধতির দ্বারা উচ্ছেদ না হওয়া পযর্ন্ত তিনি এই পক্ষ দখলের অধিকারী মর্মে ঘোষণা করিয়া এবং এইরুপ উচ্ছেদ না হওয়া পযর্ন্ত উক্ত দখলের প্রতি সকল ব্যাঘাত ঘটানো নিষিদ্ধ করিয়া একটি আদেশ দিবেন, এবং তিনি যখন (৪) উপ-ধারায় অনুশত অনুসারে অগ্রসর হন, তখন তিনি বলপূবর্ক বা অন্যায়ভাবে বেদখল হওয়া পক্ষকে দখলে পুনবর্হাল করিতে পারিবেন ।

(৭) এইরুপ কোন প্রসিডিংস এর কোন পক্ষ যখন মারা যায় তখন ম্যাজিস্ট্রেট মৃত পক্ষের বৈধ প্রতিনিধিকে প্রসিডিংস এর পক্ষ করাইতে পারিবেন এবং অত:পর তিনি অনুসস্ধান চালাইয়া যাইবেন এবং এইরুপ প্রসিডিংস এর উদ্দেশ্য কে মৃত পক্ষের বৈধ প্রতিনিধি তত্‍সম্পর্কে যদি এইরুপ প্রশ্ন উথাপিত হয় তাহা হইলে মৃতপক্ষের প্রতিনিধি বলিয়া দাবীকারী সকল ব্যক্তিকে পক্ষ করিতে হইবে ।

(৮) ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন যে, এই ধারার অধীন তাহার বিবেচনাধীন কোন প্রসিডিং- এর বিষয়বস্ত কোন সম্পত্তির ফসল বা অন্য কোন উত্‍পন্ন দ্রব্য দ্রুত প্রাকিতিকভাবে নষ্ট হইতে পারে, তাহা হইলে তিনি উক্ত সম্পত্তি যথাযথ হেফাজত বা বিক্রয়ের আদেশ দিতে পারিবেন, এবং অনুসস্ধান সমাপ্ত হইবার পর উক্ত সম্পত্তি বা উহার বিক্রয়লব্ধ অথ বিলি বন্টনের জন্য তিনি যেরুপ উপযুক্ত বিবেচনা করেন সেইরুপ আদেশ দিবেন ।

(৯) ম্যাজিস্ট্রেট উপযুক্ত মনে করিলে এই ধারার অধীন গৃহীত কোন প্রসিডিংসে এর যে কোন পযায়ে যে কোন পক্ষের আবেদনক্রমে কোন সাক্ষীকে হাজির হইবার বা কোন দলিল বা বস্তু হাজির করিবার নিদের্শ দিয়া সমন প্রদান করিতে পারিবেন ।

(১০) এই ধারার কোন কিছুই তাহা ম্যাজিস্ট্রেটের ১০৭ ধারার অধীন অগ্রসর হইবার ক্ষমতা ব্যাহত করিবে বলিয়া গণ্য করা যাইবে না।


*** এই ধারায় প্রদত্ত এখতিয়ারের ভিত্তির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো হচ্ছে
(১) একটি বিরোধ
(২) বিরোধটি ভূমির দখল সম্পর্কিত
(৩) উহা শান্তি ভঙ্গ করতে পারে এবং এই উপাদানগুলো বিদ্যমান আছে মর্মে ম্যাজিষ্ট্রেট সন্তুষ্ট হলে তিনি হস্তক্ষেপ করার অধিকারী হন ।

- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
আইনজীবী (ঢাকা)
০১৭৩৩ ৫৯৪ ২৭০

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ২:০৪

কনফুসিয়াস বলেছেন: ধন্যবাদ, এমন একটি জরুরি বিষয়ে লিখার জন্য।

আমার জিজ্ঞসা, যদি প্রভাবশালী পক্ষ তাৎক্ষনিক ভাবে জোরপূর্বক দখল করতে চায় সেক্ষেত্রে কি করনীয় এবং কোন প্রকার পূর্বাবাস ছাড়া।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৮

এম টি উল্লাহ বলেছেন: সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দিন। তাও সম্ভব না হলে এই ১৪৫ ধারায় মামলা করতে হবে। একান্তই দখল হয়ে গেলে দখল উদ্ধারের দেওয়ানী মামলা করতে হবে। দেরিতে উত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত। আর ফৌজদারি প্রতিকারও আছে অনধিকার প্রবেশ পূর্বক ক্ষতিসাধন করার ক্ষেত্রে।

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: সম্পত্তি থাকলেই সমস্যা।

৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২০

কামরুননাহার কলি বলেছেন: আমার একটি প্রশ্ন ছিলো ভাইয়া?
আমি আপনাকে বলছি যদি আমার সমস্যার কথাটি একটু বলতে পারেন তাহলে খুব উপকার হতো।
ধরেন আমার দাদার সম্পত্তি প্রায় ৪০/৫০ বছর আগে হতে পারে এর থেকে কম অথবা বেশি সময়। তখন আমার বাবা, চাচা ফুফুরা ছোট্ট ছোট্ট ছিলো তাদের কিছুই বোঝার ক্ষমতা ছিলো না। আমার দাদা তখন কলকাতা তার একজন চাচাতো ভাইকে নিয়ে ব্যবসা করতেন। তারপর আমি যতটুক শুনেছি দাদা কলকাতায় কোন একটা অসুখ করে কিছু দিন পর মারা গেছেন। তারপর আমার দাদি একা হয়ে যায় আর ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে সকালে সে বাপের বাড়ি চলে যেতেন আসনে সন্ধ্যায়। এরকম করে ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করিয়ে মানুষ করেছেন বুজেনিতো সে কালের সহজ সরল মানুষ। কিন্তু আমার নামার বিশাল একটা সম্পত্তি ছিলো। আমার দাদার সেই চাচাতো ভাই সেই জমিটায় কৃষিকাজ করতো। আমার দাদির ঐ সম্পত্তির ধারে কাছেও জাননি কখনো। ঐ লোকেই সেটা তখন দখন করে খেয়েছেন। েএভাবেই চলতেই ছিলো। তারপর আমার বাবা চাচা বা ফুফুরাও ঐ সম্পত্তির প্রতি কোন খেয়াল রাখেননি। সেই লোক মারা গেছে বহু বছর আগে। তারপর তার ছেলেরা সেই সম্পত্তি দখল করেছেন। আমার বাবা চাচারা আর ওটা নিয়ে জামেলায় জড়াননি বা তারা চায়না জড়াতে। কিন্তু এতো বছর পর আমরা এই প্রজন্মরা কি সেটা আনতে পারবো। শুনেছি সেই সম্পত্তিটা অনেক বার জরিপও করে নিয়েছে ঐ দখল কারীরা। কিন্তু আমারা সব ভাইবোনেরা চাই ঐ সম্পত্তিটা আমাদের হোক। কিন্তু সেটা কিভাবে উদ্ধার করবো তাদের হাত থেকে। আমি যতটুক শুনেছি, ঐ সম্পত্তি আমার দাদা বা আমার দাদি কেউ কখন লিখে দেয়নি বা টিপসইও করেনি কোন কাগজের উপর। অনেকে বলে এটা জরিপ হওয়ার পর এটা উদ্ধার করা যাবেনা। কিন্তু এখন আমরা চাচ্ছিনা ওটা থেকে বঞ্চিত হই। আমরা আমাদের অধিকারটা আদায় করতে চাই কি ভাবে পারবো যদি একটু বলে দিতেন।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৪৪

এম টি উল্লাহ বলেছেন: দেরিতে উত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত। আপনার প্রথম দায়িত্ব হলো উক্ত জমি সংক্রান্তে যাবতীয় কাগজপত্র ( খতিয়ান, পর্চা, দলিল, নামজারী) সংগ্রহ করা। তারপর উক্ত কাগজসমূহ নিয়ে আইনজীবীর সহযোগিতা নিন। ঢাকার মধ্যে হলে আমার সহযোগিতাও দিতে পারেন। আপনার বর্ণনা এবং কাগজপত্র ঠিক থাকলে প্রতিকার আছে এবং আপনারা আইনগতভাবে পাওয়ার হকদার।

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩৮

কনফুসিয়াস বলেছেন: ভাই প্রশ্নের তো কোন উত্তর পেলাম না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.