নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার পরিণাম ও আইনের আশ্রয় যেভাবে নিবেন

০২ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:২৫

বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণা সমূহ প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধ হিসেবে এসবের রয়েছে আইনগত প্রতিকার। প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে, স্বামী বা স্ত্রী থাকা স্বত্বেও বিয়ে, দ্বিতীয় বিয়ে করলে ও পূর্বের বিয়ে গোপন রাখা, আইনসম্মতভাবে বিয়ে না করা, স্বামীর অজ্ঞাতে মিলামেশা করা, ফুসলিয়ে কোন বিবাহিত মহিলাকে নিয়ে যাওয়া, প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করা এমন সব ঘটনা অহরহ হচ্ছে।

দন্ডবিধিতে বিয়ে-সংক্রান্ত এমন সব অপরাধের শাস্তির বিধান আছে, যার অধিকাংশ অপরাধই জামিন অযোগ্য।

**প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করলে ১০ বছর কারাদন্ড:

কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নারীকে প্রতারণামূলকভাবে আইনসম্মত বিবাহিত বলে বিশ্বাস করান, কিন্তু আদৌ ওই বিয়ে আইনসম্মতভাবে না হয় এবং ওই নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদেন্ড দন্ডিত হবেন।

**স্বামী বা স্ত্রী থাকা স্বত্বেও বিয়ে করলে ৭ বছর কারাদন্ডঃ

যদি কোনো ব্যক্তি এক স্বামী বা এক স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও পুনরায় বিয়ে করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং অর্থদেন্ড দন্ডিত হবেন।

তবে যে সাবেক স্বামী বা স্ত্রীর জীবদ্দশায় বিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, বিয়ের সময় পর্যন্ত সে স্বামী বা স্ত্রী যদি সাত বছর পর্যন্ত নিখোঁজ থাকেন এবং সেই ব্যক্তি বেঁচে আছেন বলে কোনো সংবাদ না পান, তাহলে এ ধারার আওতায় তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধী বলে গণ্য হবেন না।

**দ্বিতীয় বিয়ে করলে ও পূর্বের বিয়ে গোপন রাখলে শাস্তি ১০ বছর:

যদি কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় বা পরবর্তী বিয়ে করার সময় প্রথম বা আগের বিয়ের তথ্য গোপন রাখেন, তা যদি দ্বিতীয় বিবাহিত ব্যক্তি জানতে পারেন, তাহলে অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদ-ে দ-িত হবেন এবং অর্থদ-েও দ-িত হবেন।

**আইনসম্মত বিয়ে না হলে ৭ বছর জেল:

যদি কোনো ব্যক্তি আইনসম্মত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীত প্রতারণামূলকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন, তাহলে অপরাধী সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদ- এবং অর্থদ-ে দ-িত হবেন।

**কোনো নারীর সঙ্গে তার স্বামীর সম্মতি ব্যতীত/ অজ্ঞাতে যৌনসঙ্গম করলে ৭ বছর জেল:

যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো নারীর সঙ্গে তার স্বামীর সম্মতি ব্যতীত যৌনসঙ্গম করে এবং অনুরূপ যৌনসঙ্গম যদি ধর্ষণের অপরাধ না হয়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের দায়ে দায়ী হবে, যার শাস্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদ-সহ উভয় দ-। এ ক্ষেত্রে নির্যাতিতাকে অন্য লোকের স্ত্রী হতে হবে। তবে ব্যভিচারের ক্ষেত্রে স্ত্রীলোকের কোনো শাস্তির বিধান আইনে নেই।

**ফুসলিয়ে কোন বিবাহিত মহিলাকে নিয়ে গেলে ২ বছরের জেল:

কোনো বিবাহিত নারীকে অন্যের স্ত্রী জানা সত্ত্বেও ফুসলিয়ে বা প্ররোচনার মাধ্যমে যৌনসঙ্গম করার উদ্দেশ্যে কোথাও নিয়ে যাওয়া এবং তাকে অপরাধজনক উদ্দেশ্যে আটক রাখা অপরাধ। এ ধারা অনুযায়ী অপরাধী ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদ- এবং অর্থদ-সহ উভয় ধরনের শাস্তি পাবে।

**প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করলে ১ বছরের জেল:

কোনো মুসলমান ব্যক্তি ১ম স্ত্রী থাকলে সালিসি পরিষদের অনুমতি ছাড়া এবং প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া আরেকটি বিয়ে করেন, তিনি ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৬ (৫) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করবেন। অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে ওই ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দ- হতে পারে।

অনুমতির জন্য ফি দিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। উল্লেখ্য, সালিশি পরিষদে যদি বর্তমান স্ত্রী অনুমতি না দেন, তাহলে কোনোভাবেই দ্বিতীয় বিয়ে করা যাবে না।

দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে প্রথম স্ত্রী যদি সন্তানদের নিয়ে আলাদাভাবে বসবাস করেন তবুও স্বামীকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ দিতে হবে। স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ দিতে স্বামী আইনত বাধ্য থাকিবে। ভরণপোষণ ছাড়াও স্ত্রী ও সন্তানরা উত্তরাধিকারীর অধিকার লাভ করবেন এবং মোহরানার টাকা পরিশোধ করা না হলে বকেয়া ভূমি রাজস্ব আদায়ের মতো আদায় করা হবে।

এমনকি পূর্বের স্ত্রী তার স্বামীর থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন। মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন ১৯৩৯ অনুযায়ী ভুক্তভোগী ওই স্ত্রী তার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

**কোথায় কীভাবে আইনের আশ্রয় নিতে হবে?

বিয়ে-সংক্রান্ত অপরাধের জন্য অভিযোগ থানা বা আদালতে গিয়ে চাওয়া যাবে। থানায় এজাহার হিসেবে মামলা দায়ের করতে হবে। যদি মামলা না নিতে চায় তাহলে সরাসরি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গিয়ে মামলা দায়ের করা যাবে। কেউ কেউ থানায় না গিয়ে সরাসরি আদালতে মামলা করে থাকেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।


- এম টি উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:৩৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: **স্বামীর অজ্ঞাতে মিলামেশা করলে ৭ বছর জেল:- এটা কোন ধারায়? এমন আইন আছে বলে তো পড়িনি !!!!

০২ রা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৮:৩৮

এম টি উল্লাহ বলেছেন: কোনো নারীর সঙ্গে তার স্বামীর সম্মতি ব্যতীত/ অজ্ঞাতে হবে

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আইন আছে। আইনের মারপ্যাচও আছে।

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:৪২

এম ডি মুসা বলেছেন: খুব ভালো দরকারি পোস্ট

৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৪৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুবই উপকারী পোস্ট। একটা সিচুয়েশন বলি। দয়া করে প্রতিকার বা কোর্স অব অ্যাকশন বলবেন।


করিম বিদেশে থাকে।
দেশে এসে মেরিনাকে বিয়ে করলো।
কিছুদিন পর এক মেয়ে এসে মেরিনাকে বললো, করিম আমার স্বামী। তুমি করিমকে ছেড়ে চলে যাও।
করিম এখনো বিদেশে থাকে।
বিবাহের ৭ বছর চলছে।
গত ৪ বছর ধরে করিম বিদেশে আছে। ৪ বছরে সর্বসাকুল্যে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছে। মেরিনার সাথে যোগাযোগ ও ভরণপোষণ বন্ধ প্রায় ১ বছর হলো। করিম মাদকসেবী এবং মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। বিদেশেও সে এটা করেই বেড়ায়। অন্য মেয়েটাও বিদেশে করিমের সাথে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মেরিনা এখন করিমের কাছ থেকে মুক্তি পেতে চায়। ৫ বছরের এক মেয়ে আছে। ৩ লাখ টাকার কাবিন। এর মধ্যেই মেরিনার নিজের ২ লাখ টাকা করিমকে বিদেশে পাঠানো হয়েছিল করিমের বিপদের সময়ে।

১। মেরিনা কীভাবে কাবিনের ৩ লাখ ও পাঠানো ২ লাখ সহ বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পন্ন করতে পারে?

২। আদালতে না গিয়ে স্থানীয় সালিশীরা করিমের অনুপস্থিতিতে বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পন্ন করলে পরবর্তীতে করিম কি মেরিনার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থায় যেতে পারবে? অর্থাৎ, মেরিনাকে কোনো বিপদে ফেলতে পারবে?

প্রশ্নগুলোর উত্তর পেলে উপকৃত হবো।

০২ রা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪১

এম টি উল্লাহ বলেছেন: মেরিনাকে আদালতে কাবিনের টাকার জন্য মামলা করতে হবে। সালিশের মাধ্যমে নয়, মেরিনা ব্যক্তিগতভাবেও তালাক দিলে করিমের কিছুই করার নাই বরং মেরিনার অনুমতি না নিয়ে বিয়ে করে সে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে, মেরিনা সেজন্যও আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। এমনকি করিম বাচ্চার ভরণপোষণের খরচ দিতেও আইনত বাধ্য। বিস্তারিত জানতে কল করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.