নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজ নেত্রীকে দায়মুক্তি দিতে মরিয়া আইজিপি মামুন!

০১ লা আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:৪৮


দোষ স্বীকার করে ‘রাজসাক্ষী’ হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পড়ে আমি হতাশ হয়ে গেলাম। অনেক তথ্য দিয়েছেন, অনেক বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য দিয়েছেন কিন্তু মূল জায়গায় তিনি ঠিকই তার নেত্রীকে দায়মুক্তি দিয়ে গেলেন! কিভাবে তা করেছেন তা দেখা যাক:

এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির দ্বিতীয় পাতায় তিনি বলেছেন, "গত ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় আমি ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ হিসাবে কর্মরত ছিলাম। তৎকালীন আইজিপি জনাব জাবেদ পাটোয়ারী রাতের বেলায় ব্যালেট বক্সে প্রায় ৫০% এর মত ব্যালেট রাতের বেলায় রাখার পরামর্শ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদান করেন মর্মে শুনেছি। মাঠ পর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে উক্ত বিষয়ে রাতে ব্যালেট বক্সে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রেরণ করা হয়... "

এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির দ্বিতীয় পাতায় বলেছেন, " RAB কর্তৃক কোন ব্যক্তিকে উঠিয়ে আনা বা গুম করার নির্দেশনা বা ক্রসফায়ারে হত্যা করার মতো সিরিয়াস নির্দেশনাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসতো বলে শুনেছি। আমার সময় আমি এই ধরনের আদেশ পাই নাই।..."


স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পঞ্চম পাতায় ০৪/৮/২৪ তারিখে গণভবনে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে শেষে বলেন

,"...বৈঠকে ঢাকা শহর, ঢাকার প্রবেশ মুখে কঠোর অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিস্তারিত কোন আলোচনা হয় নি"

একেবারে শেষে উল্লেখ করেন, "বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে দমন করতে গিয়ে সরকারের নির্দেশনায় এবং অতি উৎসাহী পুলিশ ও পুলিশ বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ..."


এসব জবানবন্দি কতটা আত্মঘাতী তা জনসাধারণের কাছে ধরা না পড়লেও ২/১ টা ফৌজদারি ট্রায়াল করেছেন এমন আইনজীবীদের ভাবিয়ে তুলবে। এসবের মাধ্যমে তিনি কার্যত দিনের ভোট রাতে করা এবং খুন/গুম নিয়ে তার প্রধানমন্ত্রীকে দায়মুক্তি দিয়েছেন। কারণ, সাক্ষ্য আইনে
শোনা সাক্ষী (hearsay witness) ঘটনার নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয় না, যদি না শোনা সাক্ষীর সাক্ষ্য সাধারণত অন্য সাক্ষ্য এবং প্রমাণাদি (যেমন: বস্তুগত সাক্ষ্য, দলিলগত সাক্ষ্য) দ্বারা ঘটনাটি সমর্থিত হয়।

তিনি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, "তৎকালীন আইজিপি জনাব জাবেদ পাটোয়ারী রাতের বেলায় ব্যালেট বক্সে প্রায় ৫০% এর মত ব্যালেট রাতের বেলায় রাখার পরামর্শ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদান করেন মর্মে শুনেছি।" মানে তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হয়েও বিষয়টি জানতেন না এবং জাবেদ পাটোয়ারী পরামর্শ দিয়েছেন মর্মে শুনেছেন! দেখুন অবস্থা!

তারপর বললেন, "RAB কর্তৃক কোন ব্যক্তিকে উঠিয়ে আনা বা গুম করার নির্দেশনা বা ক্রসফায়ারে হত্যা করার মতো সিরিয়াস নির্দেশনাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসতো বলে শুনেছি। আমার সময় আমি এই ধরনের আদেশ পাই নাই।..."

গুম/খুনের নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসতো বলে শুনেছেন! নেত্রীর দায়মুক্তির জন্য আরো আগ বাড়িয়ে বললেন, "আমার সময় আমি এই ধরনের আদেশ পাই নাই"

সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তার নেত্রীর সম্পৃক্ততার কথা আনলেও যেভাবে আসার কথা তা কি আদৌও আসছে? তিনি বারবার যদু-মধু-কদুকে ফোকাস করে গিয়ে কাকে আড়াল করতে চেয়েছেন? সর্বশেষ ৪/৮/২৫ তারিখ রাতে গণভবনের মিটিংয়ে বিষয়ে বললেন, ,"...বৈঠকে ঢাকা শহর, ঢাকার প্রবেশ মুখে কঠোর অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিস্তারিত কোন আলোচনা হয় নি" বাহ!

আর শেষে দায়টা শুধু নিজের বাহিনীর অতিউৎসাহীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন! ক্ষমা চাইলেন। ক্ষমা চাইতে তো অসুবিধে নেই কারণ দোষ স্বীকার করে ‘রাজসাক্ষী’ হওয়ায় ক্ষমা তো তিনি পাবেনই! কিন্তু ‘সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশের’ শর্তে ক্ষমা করার আদেশ যে আদেশ ট্রাইবুনাল দিলে তাতে এটা গ্রহণযোগ্য হবে কিনা? তার জবানবন্দি কোনভাবেই সম্পূর্ণ সত্যের প্রকাশ হতে পারে না।
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খানের ফেইসবুকে প্রকাশিত জবানবন্দি যদি সত্যিই হয়ে থাকে (অবশ্য জাতীয়/আন্তর্জাতিক মিড়িয়ার সংবাদ পর্যালোচনা করলে এটি বিশ্বাসযোগ্য মনে না হওয়ার কারণ নেই) তাহলে আমি বলবো,"ডাল মে কুছ কালা হ্যায়"।

বিচারাধীন বিষয় নিয়ে এর বেশি মন্তব্য করা সমীচীন নয়। আশাকরি প্রসিকিউশন আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে। ট্রাইবুনালের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আশাকরি জনগণ ন্যায় বিচার পাবে। কিন্তু ট্রাইবুনালকে/ বিচার প্রক্রিয়াকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে প্রসিকিউশন/সরকারকে আরো যত্নশীল হতে হবে বলে মনে করি।

- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সকাল ৮:০৫

রাসেল বলেছেন: এসব নিষ্পাপ মানুষদের ঘৃণা করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। তারা উচ্চ শিক্ষিত, সমাজের প্রধান, বিচারক। অবশ্যই তারা এবং তাদের পরিবার লজ্জা বোধ করছে না। এই ব্লগে, তাদের অনেক দালাল আছে। ১৯৭১ সালের অর্জনের মতো এটি ২০২৪ সালের বৃথা যাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.