নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুনিয়াটা এমনই হয়, যে অন্যায় করলো, বিচারক তার কথাই শুনলো, তার পক্ষেই রায় দিলো....
অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সুলতান উসমান মৃত্যুর পূর্বে তার পূত্র এবং সিংহাসনের উত্তরাধীকারী ওরহান এর নিকট একটি পত্র লিখে যান। পত্রটি- বংশ পরম্পরায় সকল অটোম্যান সম্রাটদের নিকট- সিংহাসনে অরোহনের পূর্বে হস্তান্তর করা হতো। পত্রের সেই চিরন্তন বানীগুলোকে ধারন করে অটোম্যানরা প্রায় 700 বছর ধরে দুনিয়ার সবচেয়ে বৃহত্তম সাম্রাজ্যটি গৌরব এবং সম্মানের সঙ্গে শাসন করেছেন। পাঠকগণের জ্ঞাতার্থে চিঠিটি তুলে ধরলাম-
প্রিয়পুত্র!
তোমার জীবনের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের ওপর সর্বদা ধর্মীয় বিষয়গুলোকে অধিকতর মর্যাদা প্রদান করিও। মনে রাখবে ধর্মীয় নীতি নৈতিকতার সাহায্যেই তুমি কেবল একটি শক্তিশালী নৈতিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তুলতে পারবে। ধর্মীয় বিষয়াদি তদারকীর দায়িত্ব কখনো গুনাগার, পাপী, দায়িত্বজ্ঞানহীন, অনভিজ্ঞ, ভিন্নমতের মানুষ কিংবা- অলস ব্যক্তিদের ওপর অর্পন করবে না। এই ধরনের লোকজনকে ভুলেও রাষ্ট্র ক্ষমতার কোন পদে বসাবে না। কারন যে মানুষ তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে ভয় করে না সেই মানুষ কখনো আল্লার বান্দাদেরকে সম্মান করতে জানেনা। একজন পাপী যদি অনবরত পাপ করতে থাকে সে ক্ষেত্রে সে কখনোই কারো অনুগত হতে পারেনা। পন্ডিত ব্যক্তিগণ, ধার্মিক মানুষজন, শিল্পী এবং সাহিত্যিকগণ হলেন রাষ্ট্রের ভিত্তি। তাদের প্রতি সবসময় সম্মান, শ্রদ্ধা এবং দয়া প্রদর্শন করবে।
সব সময় খুজেঁ খুজেঁ গুণী ব্যক্তিদেরকে বের করে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক-স্থাপন করবে এবং তাদেরকে অর্থবিত্ত দিয়ে নিজেকে সম্মানীত করার চেষ্টা করবে। এই সকল লোকের মাধ্যমে তোমার রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নীতিমালা সমূহ বাস্তবায়ন করবে। হে পূত্র- তুমি আমার জীবন থেকে শিক্ষা নাও- এই জনপদে আমার নেতৃত্ব ছিলো অতিশয় দূর্বল। মহান আল্লাহর অনুগ্রহ নিয়ে আমি তোমাকে বর্তমানের গৌরবময় স্থানে রেখে গেলাম- অথচ এই স্থানে পৌছানোর কোন যোগ্যতাই আমার ছিলো না। তুমি আমার জীবন যাত্রা এবং কর্মপন্থা অবলম্বন করো, দ্বীনে মোহাম্মদীকে রক্ষা করো এবং বিশ্বাসী মানুষ ও ফুলকে সুরক্ষা করো এবং ভালবাসো। মহান আল্লার অধিকারের দিকে ভুলেও নজর দিবেনা এবং আল্লার অধিকারের প্রতি সম্মান রাখবে এবং তার বান্দাদেরকে সম্মান করবে। আমি যেভাবে তোমাকে আদেশ ও উপদেশ দিয়ে গেলাম তদ্রুপ তোমার পরবর্তী উত্তরাধীকারীকেও তুমি এই ওসিয়তগুলো পৌছে দেবে। প্রতিটি কর্ম সম্পাদনে তুমি সর্বোচ্চ যতœশীলতার সঙ্গে পরিশ্রম করবে, কখনো নিষ্ঠুর হবে না, প্রতিটি কর্মে স্বচ্ছতা এবং ন্যয়বিচার নিশ্চিত করবে এবং সবশেষে ফলাফলের জন্য মহান আল্লার ওপর নির্ভর করবে। শত্রুর আক্রমন, প্রতিহিংসা, নিষ্ঠুরতা আর চক্রান্ত থেকে তোমার জনগণকে রক্ষা করবে। কখনো কারো সঙ্গে অসৌজন্যমূলক অসদাচরন করবেনা। জনগণকে সম্মান করবে এবং তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোম্যান সুলতান একটা স্টেজে জার্মানদেরকে সাহায্য করতে বাধ্য হন। আবার নবিজীর চল্লিশতম বংশধর শেরিফ বিন আলি ব্রিটিশদের সাহাজ্য নিয়ে অটোম্যান খলিফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।ইংজদের সহায়তায় আরব শেরিফ যুদ্ধের আগেই আরব মুসলমানদের শাসক হতে চেয়েছিলেন । যুদ্ধের সময়ে শেরিফ ইংরেজদের লিখিত চুক্ত বিশ্বাস করেন। একাধিক বার বিশ্বাস ভঙ্গের প্রমান পেয়েও তিনি বিশ্বাস করতে থাকেন আরব ভুমি থাকবে অক্ষত। সেখানে তিনিই হবেন একচ্ছত্র শাসক। অথচ যুদ্ধ শেষ হওয়ার অনেক আগেই রাশিয়া ফ্রান্স, ইংল্যান্ড নিজেদের মধ্যে মুসলিম দেশগুলো ভাগাভাগি করে নেয়। ফিলিস্তিন ভুখন্ড দিয়ে দেয় ইসরাইলকে। একে একে ইংরেজ আর ফরাসিদের হাতে পরে বাগদাদ, দামেস্ক, ফিলিস্তন সহ মুসলিম বিশ্বের আরও অনেক ভুখন্ড।ব্রিটিশরা আরব এবং ভারতীয় মুসলিমদেরকে দিয়ে অটোম্যান খিলাফতের বিরুদ্ধে করায়। ভারতের সাধারণ মুসলিমরা ব্রিটিশদের হয়ে যুদ্ধ করছিল আবার সাথে সাথে বারবার দেয়া ব্রিটিশদের প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করছিল - অটোম্যান সাম্রাজ্য থাকবে অক্ষত।এখানে মুসলিমরা ইমেপেরিয়লিস্ট এজেন্ডার বাস্তবায়নকারি হয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তারা ছিল বড় প্লেনের অংশ মাত্র,মোটেও খেলোয়াড় নয়। এখনকার সময়ের সৌদিআরব, কুয়েত আরব আমিরাতের মত যারা ভাবে আমেরিকা তাদের আদি এবং অকৃত্তিম বন্ধু। তারা ভাবে সাদ্দাম আমাদের জন্য হুমকি, অতএব সাদ্দামকে সরিয়ে দাও যে কোন মুল্যে।গাদ্দাফি আরবদের সম্মেলনে দাড়িয়ে বলেছিলেন- আমরা যারা এখানে বসে আছি, এরপর একে একে আমাদের পালা আসবে। নিয়তির কি পরিহাস ঠিক এরপরই এসেছে গাদ্দাফির পালা। গাদ্দাফির কথা শুনে বাশার আল আসাদ হাসছিলেন, হেসে সমরথন দিচ্ছিলেন। এরপর আসল তার পালা। এভাবে আরবদেরপালা চলছে। তেলের পরিমান এবং তেল সম্পদে প্রবেশাধীকারকে হিসেব করে এ যুদ্ধ চলবে।মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র বদল হবে আমেরিকা- রাশিয়ার প্রক্সি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। বাঘ আর সিংহের মধ্যে কে বেশী ফ্রেন্ডলি এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে মুসলিম উম্মাহ এখন খুব ব্যস্ত
©somewhere in net ltd.