নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুনিয়াটা এমনই হয়, যে অন্যায় করলো, বিচারক তার কথাই শুনলো, তার পক্ষেই রায় দিলো....
"ওহাবী" কি? কাদেরকে বলে এবং তাদের আক্বিদা কি রকম হয়- জেনে নিন....
আধুনিক কালের শয়তানের শিং (মুহম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদী) এর জন্ম ১৭০৩ সালে নজদ প্রদেশে। তাঁর অনুসারীদের বলা হয় ওহাবী। ১৮০১ ইং ওহাবীরা কারবালার পবিত্র ভূমি হতে হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর পবিত্র মাযার শরীফ ভেঙ্গে দেয়। ১৮০৩ সালে মক্কা শরীফ আক্রমণ করে কাবা শরীফ-এর গিলাফ ছিড়ে ফেলে।আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম, আওলিয়ায়ে কিরাম ও ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের মাযার শরীফসমূহ ভেঙ্গে ফেলে। ১৮০৪ সালে মদীনা শরীফ আক্রমণ করে। এই পবিত্র স্থানটি ১৮১৩ সাল পর্যন্ত ওহাবীদের দখলে ছিল। তাদের অধীনে থাকা অবস্থায় তারা জান্নাতুল বাক্বীর সকল মাযার শরীফসমূহ ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিল। এমনকি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রওযা শরীফ-এর উপরও ঘৃণিত কালো থাবা বিস্তার করেছিল। ওহাবীরা যে কুফরী কর্মে লিপ্ত হয়েছিল তা পবিত্র কুরআন শরীফে ঘোষিত কাফিরগণও এরূপ অপকর্মে লিপ্ত হয়নি। —
কা’বা শরীফের পূর্ব দিকের একটি মরুময় ঘৃণিত অঞ্চলকে নজদ বলে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ অধিবাসীরা আল্লাহ পাক-এর গযবপ্রাপ্ত এবং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অভিশপ্ত। মক্কা বিজয়ের পর হযরত নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নজদকে আরবের অন্যান্য দেশ হতে পৃথক করে ঘৃণিত অঞ্চল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যেমন তিনি খানায়ে কা’বার সঙ্গে সম্পর্ক করে বলেন, রোকনে ইয়ামনী, রোকনে শামী ও রোকনে ইরাকী। কিন্তু এখানে রোকনে নজদী বলে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’বা শরীফের দিক চিহ্নিত করেননি। কারণ নজদীরা প্রকৃত কা’বা শরীফ পন্থী ছিল না।
রাসুল পাক (সঃ) –এর ইসলাম প্রচার কালে কা’বা শরীফের চতুর্দিকে কাফিররা ইসলামী আদর্শে মুগ্ধ হয়ে দ্বীন ইসলামে দীক্ষিত হন। আর মক্কা শরীফ হতে দূর দূরান্তে অবস্থারত অধিবাসীরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চরিত্র মুবারক ও আদর্শ মুবারকে মুগ্ধ হয়ে কালাম পাক-এর মহাবানীতে উদ্ধুদ্ধ হয়ে তারা ওফদ নাম ধারন করত মক্কা শরীফ অভিমুখে রওয়ানা হন।
সে সময় তাঁদের কারো কারো মুখে উচ্চারিত হচ্ছিল “ইয়া নবী আল্লাহ” আর কারো মুখে উচ্চারিত হতো আযানের বাক্যবলীর আল্লাহু আকবার। তাঁরা দূরদূরান্ত হতে কা’বা শরীফ-এর আঙ্গিনাতে ঊপস্থিত হয়ে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাত মুবারকে বাইয়াত গ্রহন করত দ্বীন ইসলাম গ্রহন করে ধন্য হয়েছেন। এমনকি “নসীবাইনের” জ্বিন জাতি পর্যন্ত রসূলে পাক হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাত মুবারকে বাইয়াত গ্রহন করেন। কিন্তু কম বখত কোন নজদী হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে ইসলাম গ্রহন করেনি। বরং নজদীরা ঈমান লাভের পরিবর্তে ঈমানদারগণকে নির্মমভাবে শহীদ করতো। এ কথার জ্বলন্ত প্রমাণ নজদের বীরে মাঊনাতে ৭০ জন ঈমানদার মুবাল্লিগ হাফিযে কুরআন ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকে শহীদ করা ও “রজি” এর ঘটনাতে হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে শুলে ঝুলিয়ে শহীদ করা। এ দুটি ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা বুখারী শরীফের মধ্যে বর্ণিত আছে।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নজদ ও নজদীদের সম্পর্কে কি কি অভিমত পোষণ করেন সে ব্যাপারে ছহীহ সনদ সূত্রে কয়েকটি হাদীছ শরীফ নিম্নে বর্ণিত হলো-
মিশকাত শরীফের দ্বিতীয় খণ্ডের ইয়ামান ও শামের বর্ণনা অধ্যায়ে বুখারী শরীফের বরাত দিয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইব্নে উমর(রা) থেকে বর্ণিত, একদিন দয়ার সাগর রাসুলুল্লাহ(স) সব প্রদেশের জন্য দোয়া করলেন, “হে আল্লাহ, আমাদের শাম প্রদেশে বরকত দাও। হে আল্লাহ, আমাদের ইয়ামান প্রদেশে বরকত দাও” শুধু নজদ প্রদেশের জন্য করলেন না, উপস্থিত সাহাবীর মধ্যে একজন বললেন,”ইয়া রাসুলুল্লাহ(স), আমাদের নজদের জন্য দোয়া করুন।” পুনরায় হুযুর(স) ইয়ামান ও শামের জন্য দোয়া করলেন, নজদের জন্য করলেন না। এভাবে ৩ বার নজদের জন্য দোয়ার প্রার্থনা করা সত্ত্বেও তিনি শুধু ইয়ামান ও শামের জন্য দোয়া করলেন, নজদের জন্য করলেন না। বরং শেষে বললেন,” যে অঞ্চল সৃষ্টির আদিকাল থেকেই অনুগ্রহ বঞ্চিত, তার জন্য কি করে দোয়া করি, ওখানেই ইসলামের ভিতকে নাড়াদানকারী ভূকম্পন ও ফিত্না আরম্ভ হবে, ওখানেই শয়তানী দলের আবির্ভাব হবে(ওখান থেকেই শয়তানের দুটি শিং বের হবে)।“
সেখানকারই তথাকথিত শেখ নজদী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ঘুমন্ত অবস্থায় শহীদ করার জন্য আবু জাহিলকে কুপরামর্শ দিয়েছিল। তাই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম যখনই পূর্বমূখী হতেন, তখনই তিনি পূর্ব দিককে অভিশপ্ত আখ্যায়িত করে বদ দুয়া করতেন।
হুযূর পাক (সঃ)- এর উক্ত হাদীছ শরীফটির দ্বিতীয় অংশে বলেন, ওখান থেকেই শয়তানের দুটি শিং বের হবে। দ্বিতীয় বাক্যটির মধ্যে করনুশ শয়তান বা শয়তানের প্রথম শিং মিথ্যা নুবুওওয়াতের দাবীদার মুসায়লামাতুল কাজ্জাবকে এবং দ্বিতীয় শিং দ্বারা মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীকে বুঝানো হয়েছে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ভবিষ্যদ্বানীটি অক্ষরে অক্ষরে বাস্তব রূপ ধারণ করেছে।
অনুরূপ, মিশকাত শরীফের ১ম খণ্ডের কিসাস শীর্ষক আলোচনায় মুরতাদদের(ধর্মদ্রোহী) হত্যা অধ্যায়ে নাসায়ী শরীফের উদ্ধৃতি দিয়ে হযরত আবু বারযা(রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত যে, "একবার হুযুর(স) কিছু গনীমাতের মাল বণ্টন করছিলেন, তখন পেছন থেকে একজন লোক বললেন, হে মুহাম্মাদ, আপনি ন্যায় সংগত বণ্টন করেন নি। হুযুর(স) রাগান্বিত হয়ে বললেন, আমার থেকে বেশি ন্যায় পরায়ন ও ইনসাফকারী ব্যক্তি পাওয়া যাবে না। তারপর বললেন, শেষ জমানায় এর বংশ থেকে একটি গোত্রের উদ্ভব হবে, যারা কুরান পাঠ করবে, কিন্তু কুরআন তাদের কণ্ঠের নিচে পৌছবে না।(অর্থাৎ কলবে বসবে না) তারা ইসলাম থেকে এমন ভাবে দূরে সরে যাবে, যেমন করে তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তারপর বললেন মাথামুণ্ডানো এদের বিশেষ চিহ্ন। এদের একের পর এক বের হতেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত এদের শেষ দলটি দাজ্জালের সাথে মিলিত হবে। যদি তোমরা তাদের সাক্ষাত পাও তবে যেনে রেখ, তারা হল সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে নৃশংস।"
নবীজী(স) আরো বলেছেন, "যদি আমি তাদের পেতাম তবে আদ গোত্রের মত হত্যা করতাম"।
এ হাদিসে এদের পরিচয় বর্ণনা করা হয়েছে। মাথামুণ্ডানো ছাড়া এখনো কোন ওহাবী পাওয়া মুশকিল। এই ভবিষ্যতবাণী অনুসারে দ্বাদশ হিজরীতে নজদে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর জন্ম হয়। তিনি আহলে হেরমাইন ও অন্যান্য মুসলমানদের উপর কি ধরণের অত্যাচার করেছে, তার বিস্তারিত বিবরণ জানতে হলে “সায়ফুল জব্বার” ও “বোয়ারেকে মুহাম্মাদিয়া আলা ইরগামাতিন নজদিয়াহ” ইত্যাদি ইতিহাস গ্রন্থাবলী দেখুন। এছাড়া আল্লামা শামী(র) তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কিতাব রদ্দুল মুখতার এর ৩য় খণ্ডে বর্ণনা করেছেন।
প্রথম শিংকে (মুসায়লামাতুল কাজ্জাবকে) দমন করা হয় হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর খিলাফত কালে।
©somewhere in net ltd.