![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
A man who has no backlink.
সংসারের গপ্পো: পর্ব -১
সংসার একটা জটিল জায়গা। চোখের সামনে বহু চালাক ব্যাক্তিকেও সংসারে হোঁচট খাইতে দেখেছি। আমি বোকাসোকা মানুষ। আল্লাহর খাস রহমত ছাড়া যার পক্ষে ১ টা কদমও বাড়ানো সম্ভব না। নয়তো এই ২ আঙ্গুল বুদ্ধি নিয়া কবেই সংসারের প্যাঁচে গিট্টু খাইয়া হা-হুতাশ করতাম।
.
সেদিন বউ-শাশুড়ী কি বিষয় নিয়ে যেন তুমুল হাসাহাসি। আমি আর আব্বা এদের হাসি দেখে বোকা বোকা হাসি। আমি দুজনের হাসির ভেতর কৃত্তিমতা আছে কিনা চেক করতেছিলাম। নাহ! বেশ হৃদ্যতা নিয়ে হাসতেছে। এবং হাসির মূল কারণটা কেন জানি বাপ-বেটার কাছ থেকে গোপন রাখতে চাইতেছে। বিষয়টা বাপ-বেটা দুজনেই অনুধাবন করতে পেরে, আমরা খাওয়ায় মনোযোগ দিলাম।
.
সেদিন বাদ ফজর দাওয়াতের মেহনতে বের হয়েছিলাম। ঘরে ফিরে দেখি হাতের কাজ-কর্ম সেরে বউ-শাশুড়ী তেলাওয়াতে মশগুল। আমাকে দেখে যেকোন একজন উঠে যাবে। নাস্তা খাওয়ানোর জন্য। তাই দ্রুততার সাথে আবার বের হয়ে অন্য ঘরে চলে গেছি। যাতে এদের তেলাওয়াতে ডিষ্টার্ব না হয়।
.
এরা দুজন কাজকর্মের মধ্যে একটা দারুণ রুটিন করে নিছে। দুজনে মিলে কাজকর্ম গুছিয়ে তেলাওয়াতে বসে যায়। নামাযের সময় হলে একজন আরেকজনকে ছুটি দিয়ে দেয়। বলেন, আম্মু আপনি গোসলে চলে যান / বা, নামায পড়ে নিন। আমি এর মধ্যে গুছিয়ে ফেলবো। অথবা আম্মাকে তার পুত্রবধুকে একইভাবে ছুটি দিয়ে দেয়।
.
আব্বার একটা ব্যাপার খুব খেয়াল করার মতো। আব্বা কখনো এদেরকে বউ-শাশুড়ী উল্লেখ করে না। বলে, মা-মেয়ে। যেমন, সেদিন সকালে আব্বা বলতেছে, দেখি তোমরা মা-মেয়ে মিলে কি পাক করছো। খাইতে দাও কয়টা।
নাহ। বড় হয়ে যাচ্ছে। আজকে আর না ....
.
===== *** =====
সংসারের গপ্পো - ০২:
.
বিরতিহীন ব্যস্ততার দরুণ দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছি না। তাই পর্বটা কনটিনিউ হচ্ছে না। সংসারের ঘটনাগুলো লেখার পেছনে একটা গভীর উদ্দেশ্য আছে। সেটা পরের পর্বে বলবো।
.
(চোখে চোখে কথা)
.
‘চোখে চোখে কথা’ বিষয়টা শুনলেই আমাদের কল্পনাচোখে প্রেমিক-প্রেমিকার কথা মনে পড়ে। আসলে প্রেমিক প্রেমিকার চোখাচোখির মধ্যে কাম বিষয়টা কাজ করে। সেটা ইচ্ছাকৃত হোক কিংবা অবচেতন মন থেকেই হোক। তাই এর পিওর এবং গভীর স্বাদ স্বামী-স্ত্রী ছাড়া কেউ পাওয়ার কথা না।
.
যত রকম ব্যস্ততাই থাকুক বিকালের সময়টুকু ঘরে দেয়ার চেষ্টা করি। পুরষ্কার হিসেবে চা-নাস্তা পাই। মাঝে মাঝে স্পেশাল রেসিপি। কারণ গিন্নী সুযোগ পেলেই ল্যাপটপে বসে রেসিপির সাইটগুলো ঘাটতে থাকে। তাই তার ডায়েরীটা বিভিন্ন রেসিপিতে ভর্তি। আমি প্রায়ই খোঁচা দিয়ে বলি, রেসিপিগুলোর স্বাদ তো আর পাবো না, কারণ এগুলো কি আর ঘরে পাকানো হবে !! ডায়রীটাই দাও, চুবিয়েই একটু পানি খাই। তাতে যদি নেট বিলের টাকাটা উসুল হয়।
.
সেই খাতিরে চায়ের সাথে অনিয়মিত ‘টা’-ও মিলে। সেদিন বিকালে গিন্নী শুধু চা নিয়েই এলো। চায়ে ২ চুমুক দিয়ে শরীর ঝাড়া দিয়ে উঠলো। কারণ অতিরিক্ত মিষ্টি। হয়তো ভুলে চিনি বেশি পড়ে গেছে। কিন্তু সেটা মুখে বলতে পারতেছি না। চা-টা ফেলেও দিতে পারছি না। কারণ চা-টা ফেরত দিলে যদি বেচারি কষ্ট পায়। আজকে শুধু চা দিলাম, সেটাও ভালো হলো না। এই ভেবে হয়তো নিজেই নিজের মনটাকে ছোট করে বসে থাকবে। শেষ বিকেলের হাসিখুশি খোশগল্পের পরিবেশটা হয়তো নষ্ট হয়ে যাবে। তাই চুপচাপ ভাবছি কি করা যায়।
.
আরেকটা চুমুক দিয়ে টেবিলে চা-কাপটা রাখতে রাখতে গিন্নীর চোখে চোখ রাখলাম। জাস্ট কয়েক সেকেন্ড। মূহূর্ত পরেই, চোখ কাপের দিকে ফিরিয়ে গিন্নী বলে উঠলো, থাক! এই চা খেতে হবে না। চিনি মনে হয় বেশি হয়ে গেছে। চিনি দেয়ার সময় বেশি পড়ে গেছে। এ কথা বলেই কাপটা টেবিল থেকে নিয়ে রেখে এলো। মাগরিব পর্যন্ত বাকী সময়টুকু আড্ডা দিয়ে কাটিয়ে দিলাম।
.
রাতে ভাত খাবারে ব্যাপারে আমার ব্যাপক অলসতা। গিন্নী ভাত খেতে ডাকলে, প্রায়ই আমি ব্যাপক অলসতা আর আকুতি নিয়ে চোখে চোখ রেখে চুপ করে বসে থাকি। অত:পর গিন্নী কোমরে দুইহাত রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, ঘাড় কাত করে বলবে, বুজঝি। পিচ্চি বাবুটারে আজকেও তুলে তুলে খাইয়ে দিতে হবে ...
===== *** =====
সংসারের গপ্পো - ০৩: (রমযান ও আমার ঘর)
.
সারাবছর ধরেই গিন্নীর তেলাওয়াত চলতে থাকে। সেটা রমজান আসার পর ৩ গুণ, ৪ গুণ কিংবা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবার তার একটু মন খারাপ। অসুস্থতা ও বিভিন্ন ঝামেলার দরুণ তেলাওয়াত বেশি করতে পারেনি। জিজ্ঞেস করলাম, কত পারা হইছে? বললো, ১৬ পারা। সংসারের সব কাজ সামলানোর পরও গড়ে ২ পারা করে পড়তেছে। কিয়ামুল লাইন মিস হয় না। তারাবীর এহতেমাম। সময়কে কোন সময় অপচয় করতে দেখিনি। আর... হাসিমুখ সবসময় লেগেই আছে। অল্পে তুষ্ট থাকা মেয়েরা মারাত্মক রকম সুখী হয়। তাদের মুখ থেকে আপনি কোনদিন না পাওয়ার আক্ষেপ শোনবেন না। কোনদিন ক্যালকুলেশন করবে না, আমার কি পাওয়ার ছিলো, কি পাচ্ছি আর কি পাচ্ছি না ? বরং এদেরকে দেখবেন কোন আমল ছোটে গেলে আফসোস করতে। ঠিক যেন তার স্বর্ণের গয়না হারিয়ে গেছে।
তার আমল দেখে আমি নিজের কমজোরির জন্য লজ্জা অনুভব করি। তাই তার ঘরের কাছে সহায়তা করার চেষ্টা করি। মাঝে মধ্যে ভাবি, এই নিয়ামত আল্লাহ আমাকে কোন আ’মলের জন্য দিলো? নাকি পরীক্ষাস্বরূপ যে এর কি কদর আমি করতে পারি? মাঝেই মধ্যেই চিন্তায় পড়ে যাই !
.
সেদিন হুট করেই এই হাদিসটা চোখে পড়লো।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ ( সাঃ ) বলেছেন, "সমগ্র পৃথিবীটাই সম্পদে পরিপূর্ণ। এর মধ্যে কল্যাণকর ও উত্তম সম্পদ হল চরিত্রবান নেককার স্ত্রী।" (বুখারী, বিবাহ অধ্যায়-৩৯৮ পৃষ্টা; মুসলিম, বিবাহ অধ্যায়- ৩৪৪ পৃষ্ঠা।)
.
গত পর্বে বলেছিলাম, সংসারের গপ্পো কেন করি এটার ব্যাখ্যা করবো। আজকে ১ টা কারণ বলি। ছোট থেকে নিয়ে এই পযন্ত অনেকের মুখে শুনে আসছি, পর্দানশীল মেয়েরা নাকি বন্দী। এদেরকে নাকি বন্দী করে রাখা হয়। এরা নাকি দুনিয়ার স্বাদ পায় না। ব্যাপারটা যে সম্পূর্ণ ভুল সেটা পর্দাশীল দ্বীনদার মেয়েগুলো গল্প না শুনলে মানুষ জানবে কিভাবে? আল্লাহর যে বান্দিরা, দুনিয়ার মোহকে পাশ কাটিয়ে আমলে স্বাদ পেয়েছে। যমানার ফেতনায় পঁচতে থাকা দুনিয়া এদেরকে আকৃষ্ট করতে পারে না। আপনি এদের পায়ে কাছে সম্পূর্ণ দুনিয়া হাজির করলেও এরা আগ্রহ দেখাবে না। সিরিয়াস। কিন্তু আপনার হালকা দুষ্টামী, মিষ্টি কথা, কোলে মাথা রেখে চুলে আঙ্গুল বিলি করা, আপনার ল্যাপটপে রেসিপির সাইট ব্রাউজ করতে দেয়া, এই সামান্য জিনিসগুলো দিয়ে আপনি তার ভুবন ভোলানো হাসি দেখতে পারবেন। এই মনখোলা হাসি, দুনিয়ার জিন্দেগীতে আপনার না পাওয়ার যত ব্যাথা আর দু:খ-কষ্ট আছে সব মিটিয়ে দিবে।
এ জন্যই ইসলাম বিয়ের সময় দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিতে বলে।
... কিন্তু আমাদের আকলের কমজোরির কারণে আমরা রূপ-সৌন্দয আর সম্পদ খুঁজি। আফসোস!
.
রিসেন্ট একটা লেখার লিংক: তারকা ক্রিকেটার থেকে দ্বীনের দা’ঈ। হৃদয় ছুয়ে যাওয়া ঘটনা।
০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৫৩
তোফায়েল খান বলেছেন: আমার হাবিজাবি লেখায় আপনাকে স্বাগতম।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:০৩
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আমি বিয়ে করবো না। বিয়ে না করে এরকম পাওয়ার উপায় আছে? সর্টকার্ট?
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৪
মহিসন খান বলেছেন: আমিও এ রকম বেগম চাই। আল্লাহ যেন আমার প্রতি সদয় হোন। আমিন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৪৩
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ