![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“ফু”
“ফু”
আরো কয়েকবার , কানের কাছে এসে ক্রমাগত ফু দিয়ে ঘুম ভাঙ্গানোর তরিকা মেয়েটা কোথা থেকে পেলো কে জানে ? প্রচন্ড বিরক্তির উদ্রেক হয় , তবে ঐ ফুতে কি যেন আছে । বিরক্তি নিয়ে ঘুম ভাঙ্গলেও চোখ খুলে ওর মুখে যেই হাসিটা লেগে থাকতে দেখি , সকাল সকাল ওষুধের মতো কাজ করে ।
ধীরে ধীরে বিছানায় উঠে বসি । এতক্ষণে “ফু” থেরাপির সমাপ্তি ঘটে । ও আমার আগেই প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে , এরপর টেবিলে খাবার দিয়ে আমাকে ঘুম থেকে তুলতে আসে । যেন আমাকে তৈরি হতে সাহায্য করতে পারে । আজকে যে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি ওকে বলা হয় নি , বলা উচিত ছিল কি না ঠিক বুঝতে পারছি না । ও ,গোছল সেরে অফিসে যাওয়ার জন্য নিজে তৈরি হয়ে নিচ্ছে । আমি যে বিছানা ছেড়ে তখনো উঠিনি ওর চোখে তা পড়ে নি । পড়লে হয়তো আবার “ফু” থেরাপি চলতো ।
খেয়াল না করায় বেশ হয়েছে । বিছানার পাশের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম , রাস্তার ও পাশে খেলার মাঠ । মরা পাতার আস্তরণ পরে গেছে মাঠে । আচ্ছা , গাছগুলোর কষ্ট হয় না ? এতোদিনের সম্পর্ক যে পাতাগুলোর সাথে , ওরা সব ঝরে যায় । তিলে তিলে শুকিয়ে সকল সম্পর্ক ছেদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । পুরাতনকে ভুলে নতুনকে এতো সহজে বরণ করে নিতে পারে ?
মানুষেরা পারে না , রক্তের সম্পর্ক থাকে , মনের সম্পর্ক থাকে - মানুষের সাথে মানুষের । এতো সহজে কি ভুলা যায় ?
এইবার “ফু” এর বদলে সজোরে একখান তালি কানের কাছে এসে বাজালো সম্প্রীতি । উদ্ভট সব কাজ করে কি যে মজা পায় ।
ও , অফিসের জন্য পুরো তৈরি , তবে চশমা চোখে দিয়ে অফিসে যায় না । কাজের সময় শুধু চোখে চশমা দেয় । চশমা ছাড়া ওকে একেবারেই মানায় না , কেন মানায় না বা মানানোর কি-ই বা আছে জানি না । শুধু মেনে নিতে পারি না ।
“চশমা পড়ো । ” আচমকা বলে উঠলাম , তবে এই কথা যে বলবো ও বুঝতেই পারছিল । ভেংচি কেটে খাবার টেবিলে চলে গেলো । আজব মেয়ে একটা ,
জীবনে কি পূন্য করেছিলাম জানি না । কিংবা কি পুন্য করার সম্ভাবনা আছে যার জন্য এমন পুরষ্কার পেয়েছি ।
বিছানায় পুনরায় শুয়ে বলতে লাগলাম “আজ অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি ।” আশা করেছিলাম ফিরতি কোন প্রশ্ন শুনবো , না শুনে মর্মাহত হতে হলো । সম্প্রীতির আচরণ অনুমান করা যায় না , নিজেকে তখন বেশ ছোট মনে হয় ।
“ভালো তো টানা কয়দিনই বা অফিস করা যায় ? বিশ্রাম নাও । আমারও একদিন ছুটি নিতে হবে । সারাদিন বাসায় ঘুমাবো ।” খাওয়া শেষে রুমে ঢুকলো এইকথা বলতে বলতে ।
ও অফিসের জন্য বেরিয়ে গেলো , আমি তখনো বিছানায় শুয়ে । আমি কতটা অপারগ , কতটা দূর্বল , হীন । ওকে অফিসে এগিয়ে দিয়ে আসতে পারতাম হয়তো , কিন্তু সেই সুযোগ নেই । উল্টো আমাকে অফিসে নামিয়ে দিয়ে আসে সম্ভব হলে ।
মনের সাথে শরীরের ছোট খাটো যুধ মন জয়ী হলো , শরীরটাকে বিছানা থেকে টেনে তুলে পাশে রাখা হুইল চেয়ারে নিয়ে ফেললো । চাকা ঘুরিয়ে বারান্দায় গেলো অদ্ভূত মেয়েটার প্রতিদিনের মতো একইভাবে অফিস যাওয়া দেখতে ।
ওর ঐ হাসির নিচে কি অনেক না পাওয়ার কথা জমে থাকে ? ওর ঐ ফুতে আমি যেই ভালোবাসার ছোয়া পাই , ও কি আদৌ তা বিলিয়ে দেয় নাকি সবই মেকি ? বেঁচে থাকার জন্য বেঁচে থাকা ? কাউকে অসুখী হওয়া থেকে বিরত রাখা ।
নিজেকে মোমবাতির মতো পুড়িয়ে একটি ঘর হয়তো শুধু কিছুক্ষণ আলোকিত করা যায় , কিন্তু সূর্যের মতো করে কি প্রতিদিন শত প্রানীর বেঁচের থাকার একমাত্র কারণ হওয়া সম্ভব ?
তোমাকে ছাড়া সম্ভব না সম্প্রীতি কিন্তু যদি জানতে পারি ঐ হাসির নিচে শুধুই বেদনা তবে ধরে রেখে লাভটাই বা কি ?
মাঠের গাছের আরেকটি পাতা রাস্তায় পড়লো , একটি কুকুর সেই পাতা মাড়িয়ে সামনে এগুতে থাকলো । গলির রাতের পাহাড়াদার , কালো কাকের মতো তার গায়ের রঙ ।
২৮ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৪৭
জাবের তুহিন বলেছেন: লিখা পড়ে নাকি ছেলেটা অথবা মেয়েটার জন্য ?
২| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ২:৪২
অতঃপর হৃদয় বলেছেন:
২৮ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৪৯
জাবের তুহিন বলেছেন: অতঃপর হৃদয় ভেঙ্গেছে ?
৩| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ২:৫৯
উম্মে সায়মা বলেছেন: প্রথম দিকে খুব সাধারণ একটা প্রেমের গল্প মনে হয়েছ। পরের অংশে ভালো একটা টার্ন এসেছে। ভালো লাগল।
পুরাতনকে ভুলে নতুনকে এতো সহজে বরণ করে নিতে পারে ?
এ দর্শনটা মনে ধরেছে।
শুভ কামনা।
২৮ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৪৬
জাবের তুহিন বলেছেন: কোন লাইন মনে ধরায় , বেশ খুশি হয়েছি ।
লিখাটা পড়ার জন্য , ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১:৪৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: মন খারাপ হয়ে গেল পড়ে