নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Tuhin Sarwar, A freelance journalist, has extensively reported on Bangladesh\'s internal elections, and human rights violations for several international outlets

তুহিন সারোয়ার

Tuhin Sarwar, A freelance journalist, he has extensively reported on several international outlets.

তুহিন সারোয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাজীপুরে এম,টাচ বিডি লিঃ এর প্রতারনার ফাঁদ

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

গাজীপুরে চান্দনা চৌরাস্তা ঢাকা টাঙ্গাইল রোড়ে কে,এস সুপার মার্কেটের ২য় তলায় অবস্থিত এম,টাচ বিডি লিমিটেড নামের একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি অনুমোদন ছাড়াই তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এই কোম্পানির নানা আর্থিক লাভ ও কমিশনের আশ্বাসে সাধারণ মানুষ গ্রাহক, পণ্য বিক্রি ও অর্থ লেনদেনে জড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকভাবে।স্বল্প বিনিয়োগে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এম,টাচ বিডি লিমিটেড বিপুলসংখ্যক মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে গাজীপুরের লক্ষ লক্ষ মানুষ। অত্যন্ত লোভনীয়, অকল্পনীয় অফার আর অল্পদিনে কোটি পতি হবার স্বপ্ন নিয়ে ঝুঁকছে গাজীপুরসহ দেশের হাজার হাজার বেকার যুবক। আলাদীনের যাদুর প্রদীপ এর মত রাতারাতি কোটিপতি হতে অফিসটির সামনে শত শত লোকের ভিড়, যারা কিনা প্রাথমিক শিক্ষায় ও শিক্ষিত না, অর্থাৎ অধিকাংশ লোক গ্রাম থেকে কারো মাধ্যমে এসেছে আর নয়তো চা দোকানদার, ফুুটপাতের দোকানদার, রিক্সা চালক ও ভ্যান গাড়ী চালক এরা সবাই অফিসিয়াল পোশাক পড়ে দাড়িয়ে থাকে। দেশের কোথাও লাইসেন্স ছাড়া এসব কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা ও নতুন গ্রাহক তৈরি নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছে না এম,টাচ বিডি লিমিটেড নামের এই প্রতিষ্ঠানটি। এ কোম্পানি কৌশলে নতুন গ্রাহক তৈরি, পণ্য বিক্রি ও অর্থ লেনদেনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।গাজীপুরে এসকল কোম্পানীর প্রকোপের কারণে অনেকে খুব নির্মমভাবে প্রতারিত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়ে বিদেশে মুদ্রা পাচারের অভিযোগও উঠছে এদের বিরুদ্ধে। (সুত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ- ২৫ ও ২৬ জানুয়ারী) অফিসের সামনে দাড়ানো সিলেট জেলার হবিগঞ্জ থানার সন্দিপপুর কায়স্ত (২২) কোড নং-(৬৫৪৩) কে প্রশ্ন করা হয় এখানে আসার কারণ জানতে চেয়ে। তিনি বলেন আমি চাকরীর জন্য এসেছি। তেইশ হাজার পাঁচশত টাকা (২৩,৫০০) টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছি। টাকার মানি রিসিট দেয় কিনা জিগ্যেস করলে তিনি মানিব্যাগ থেকে একটি ছোট চিরকুট দেখিয়ে বলেন এটাই প্রমাণ।

চিরকুটে (মানি রিসিট)দেখা যায় কলমে লেখা শুধু নাম কোড নং এবং একটি স্বাক্ষর আর তারিখ। মানি রিসিট নামক চিরকুটে নেই কোন প্রতিষ্ঠানের নাম,নেই কোন টাকার অংক উল্লেখ,নেই কোন সীল মোহর,নেই ন্বাক্ষর কারীর পূর্ন নাম। আর এভাবেই কোন প্রমান ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।টাকা জামানত নিয়ে বোকা বানিয়ে যাচ্ছে দেশের সহজ সরল মানুষদের। নওগা জেলার নজরুল ইসলাম জানান,তিনি গার্মেন্টস কর্মী। ৩ মাস আগে তিনি ২৩,৫০০ টাকা দিয়ে এ ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন।এখন পযর্ন্ত কোন ইনকাম করতে পারেননি। প্রতিদিন নতুন নতুন গ্রাহকদের নিয়ে এসে এ কার্যালয়ে প্রতিদিন ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে।গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের রেকার চালক লাল মিয়া জানান, এম,চাট বাংলাদেশ লিমিটেডের জি,এম লিমনের লোভনীয় কথাবার্তায় এবং অফিস দেখিয়ে তেইশ হাজার পাঁচশত টাকা (২৩৫০০)দিয়ে লোভনীয় অফারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় তার এক আতœীয়কে। পরে অফিসে গিয়ে পুলিশ পরিচয় পেয়ে তার আতœীয়কে টাকা য়েরৎ দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার আনোয়ার (২৪) এই প্রতিনিধিকে জানায় এ পর্যন্ত এ অফার বিশ্বাস করে অন্যদের মত আমি ৩০ হাজার টাকা প্রদান করি। পরে তাদের কথা মত গ্রাহক তৈরী করতে না পারায় আমি কোন ইনকাম করতে পারছিনা। অফিসের যোগাযোগ করলে জি.এম. বলে গ্রাহক নিয়ে আসুন। এলাকার স্থানীয় বাসিন্ধারা জানান, এম,টাচ বিডি লিমিটেড নামের কোম্পানির ব্যাবসা যেভাবে ব্যাবসা করছে তাতে করে এর ভয়াবহতা আমরা ইতোমধ্যেই টের পেয়েছি।এ রকম তিনটি প্রতিষ্ঠানের নাম এখনো অনেক মানুষ ভুলতে পারেনি, যেমন ‘আইটিসিএল’ ‘যুবক’ও ডেসটিনি গ্রুপের এমএলএম কার্যক্রম আরও বেশিসংখ্যক মানুষের বিপুল অঙ্কের অর্থ লোপাট করে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ একমাস অনুসন্ধানে কালে জানা যায়, এম,চাট বিডি লিঃএর মালিক তুষার। আরেক বিতর্ককিত মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি লাইফওয়ে বাংলাদেশ লিঃ এর চান্দনা চৌরাস্তা উনিশে টাউয়ার অফিসের কাজ করা অবস্থায় গ্রাহকদের কাছ থেকে চাকুরী দেবার নাম করে জনপ্রতি ৩০/৪০ হাজার টাকা জামানত সংগ্রহ করে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেবার অভিযোগে গত বছর র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। জয়দবেপুর থানা পুলিশের হাতে প্রতারনার মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেবার অভিযোগ গ্রেফতারও হয় তুষার। সে অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার ছিলেন এ,এস,আই, বিশ্বজিৎ। পরে তুষার জামিনে বের হয়ে আসে। পরে লাইফওয়ে বাংলাদেশ লিঃ থেকে বিতারিত হয়ে জেলার কোনাবাড়ী এলাকায় অফিস খুলে নতুন নামে আবার প্রতারনার ব্যাবসা শুরু করে তুষার।সেখানেও প্রতারনার অভিযোগে আবারও গ্রেফতার হয় র‌্যাবের হাতে।এখানেই শেষ নয়, জেল থেকে বের হয়ে এসে সে আবারও গাজীপুরে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা টাঙ্গাইল রোড়ে কে,এস সুপার মার্কেটের ২য় তলায় অফিস নিয়ে এম,টাচ বিডি লিঃ নামে আবারও ব্যাবসা চালিয়ে আসছে। নির্বিঘেœ ব্যাবসা চালিয়ে যেতে কৌশলে বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজনৈতীক নেতাদের নাম ব্যাবহার করে আসছে প্রতিষ্ঠানটির মালিক তুষার। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তুষারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ও ব্যর্থ হন এই প্রতিবেদক। এম,টাচ বিডি লিঃ মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যাবসার সরকারী অনুমোদন আছে কিনা তা জানতে চাইলে জি,এম,লিমন জানান, আমরা জজকোর্ট থেকে অনুমোদন নিয়ে ব্যাবসা করছি। জর্জকোর্ট মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যাবসার অনুমোদন দেয় কিনা জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে এই প্রতিবেদককে হুমকি প্রদান করে বলেন,আপনি নিউজ করবেন ? করেন। অফিসের সামনের দেয়ালে লাগানো এলাকার রাজনৈতীক ব্যাক্তিত্ব মোঃ শামীমের রাজনৈতীক পোষ্টার দেখিয়ে বলেন এই কোম্পানীর মালিক আওয়ামীলীগ নেতা শামীমের, ক্ষমতা থাকলে আপনি তার সাথে কথা বলুন। পরে খোজ নিয়ে জানা যায় শামীম ১৬ নং ওয়ার্ডের গাজীপুর শ্রমীক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক। কোন সাংবাদিক নিউজ অনুসন্ধানের জন্য গেলে এভাবেই ক্ষমতাসীন রাজনৈতীক নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে সাংবাদিক কর্মীদের ভয় দেখানো হয়। যেন কেউ তাদের নামে কোন কিছু বলতে না পারে।এবিষয়ে মোঃ শাহীন মিয়ার সেল নাম্বারে যোগাযোগ করে কোম্পানীর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এম,টাচ বিডি লিমিটেড নামের কোন মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানির সাথে আমি জড়িত নেই। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। হয়ত তারা আমার নাম ব্যাবহার করছে। এব্যাপারে সদর থানার অফিসার্স ইন্চার্জ খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা এই প্রতিনিধিকে ফোনে জানান, এবিষয়টা আমি জানিনা। তবে কথা দিলাম অভিযোগ পেলে আমি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করব।উল্লেখ্যঃ- বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ গত ৬ জুলাই ২০১৫ ইং সোমবার জাতীয় সংসদে বলেন,বাণিজ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক বাতিল হওয়া মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম ) কোম্পানিগুলো হাইকোর্টে রিট করে প্রতারণার ফাঁদ পেতে নিরীহ মানুষকে ঠকাচ্ছে।মন্ত্রী আরও বলেন, আরজেএসসি অফিস থেকে আবেদনকৃত কোম্পানিগুলোর ওপর সরেজমিনে পরিদর্শন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মাত্র ৪টি কোম্পানিকে দেশে এমএলএম ব্যবসা করার অনুমোদন দিয়েছিলো।পরবর্তীতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংগঠনের কার্যক্রম সন্তোষজনক না হওয়ায় ২০১৫ সালের ৪ মার্চ তাদের লাইসেন্সও বাতিল করা হয়। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় যেন কেউ এই পথে পা না দেয় সেজন্য দেশবাসীকে সর্তক করছি ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.