নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অতি সাধারণ একজন মানুষ হবার প্রচেষ্টায়......................।

আজ তুমি অন্যের...........প্রীতি!

তুহিন সরকার

অমরে একুশে..............\nআমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি............\nএকাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। প্রজন্মের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। “রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ অনিঃশেষ” সাঈদী/জব্বার সহ অন্যান্য সকল মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি। জয়বাংলা।

তুহিন সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রেকিং নিউজ- মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী কুখ্যাত রাজাকার বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরীর ফাঁসি।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯

ব্রেকিং নিউজ....................................ব্রেকিং নিউজ.........................................

মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী কুখ্যাত রাজাকার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরীর ফাঁসি



আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলার তৃতীয় রায় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এর সপ্তম রায়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়, আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টা ৪৩ মিনিটে।। এ মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা চৌধুরী) বিরুদ্ধে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ মামলার ১৭২ পৃষ্টার রায়ের সার-সংক্ষেপ পড়া শুরু করেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক।

দ্বিতীয় অংশ পড়েন ট্রাইব্যুনালের অপর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর চুড়ান্ত রায় দেন ।

সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলায় আনীত ২৩ টি অভিযোগের মধ্যে ৯টি (২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,১৭,১৮নং) অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবেপ্রমাণিত,(৩,৫,৬,৮) নং অভিযোগে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। (২,৪,৭) নং অভিযোগে ২০ বছর করে ৬০ বছর সাজা দেন। ১৭, ১৮) নং অভিযোগে ৫ বছর করে ১০ বছর সাজা দেন। ৮ টি (১,১০,১১,১২,১৪,১৯,২০,২৩) নং অভিযোগ গুলো প্রমাণিত হয়নি এবং ( ৯, ১৩, ১৫, ১৬, ২১ ও ২২) এই ৬ টি অভিযোগের কোনো সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এজন্য মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোন মন্তব্য করেননি।

অভিযোগগুলো সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত। অভিযোগ গুলো প্রমাণিত হয়নি।


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এ বিএনপির কোন নেতার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলার প্রথম রায়।

রায়ের তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়াঃ-

শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর থেকে গণজাগরণ মঞ্চের বিজয় মিছিল।

গণজাগরণ মঞ্চ।

* সঠিক বিচার হয়েছে- অ্যার্টনি জেনারেল।

* ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি- আসামি পক্ষের আইনজীবী।

* এই রায়ে আমরা মর্মাহত, সঠিক বিচার পাইনি আপিল করা হবে- মওদুদ আহমদ্

* রায় ঘোষণার আগেই অনলাইনে রায়ের কপি প্রকাশের অভিযোগটি রায়কে বিতর্কিত করতে সুগভীর ষড়যন্ত্রের অংশ- আইন প্রতিমন্ত্রী।

* সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদন্ডে জাতির প্রত্যাশা পুরণ হয়েছে- মাহবুবউল আলম হানিফ।

* কেউ আইনের উধের্ব নয়, এরায়ে তা আবারও প্রমাণিত হলো- তথ্যমন্ত্রী।

* রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে- ইমরান এইচ সরকার।

গত ১৪ আগস্ট ২০১৩ খ্রিঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়। ওই দিন রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখে ট্রাইব্যুনাল বলেন, যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে। প্রায় দেড় মাস পর এবং বিচার শুরুর দেড় বছর পর আজ মঙ্গলবার এই বিএনপির সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের আলোচিত এই মামলার রায় হল।

এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম আলোচিত মামলা। বিচার চলাকালে নানা মন্তব্য ও বক্তব্য দিয়ে সব সময় আলোচনায় ছিলেন সাকা চৌধুরী। বিচারকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, আসামির কাঠগড়ায় বসে বিচারকাজ, সাক্ষী ও চলমান রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করা, আইনজীবীকে বাদ দিয়ে নিজেই মামলা পরিচালনা করা—বিচার চলাকালে এজলাসে এমন বহু ঘটনার জন্ম দিয়েছেন তিনি।

বাপের বেটা সাকাঃ-

চট্টগ্রামের সালাউদ্দিন কাদেরের বাবা মুসলিম লীগ নেতা স্বাধীনতাবিরোধী ফজলুল কাদের চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের পর গ্রেপ্তার হয়ে বন্দি থাকা অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। মুসলিম লীগের পর বিভিন্ন দল হয়ে বিএনপির বর্তমান স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরী

সাকা চৌধুরীর বিচারিক কার্য্যক্রমঃ-

২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৬ ডিসেম্বর ২০১০খ্রিঃ সাকা চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১০ সালের ২৬ জুলাই সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। ২০১০ সালের ১৯ ডিসেম্বর অন্য মামলায় আটকের পর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই বছরের ১৪ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে ১৭ নভেম্বর তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৫টি অভিযোগ উত্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১১ সালের ৪ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ৫৫ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রের সঙ্গে ১ হাজার ২৭৫ পৃষ্ঠার আনুষাঙ্গিক নথিপত্রসহ ১৮টি সিডি উপস্থাপন করা হয় এতে। ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ তার বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ, হত্যা, লুটপাট, দেশান্তর, অগ্নিসংযোগসহ সুনির্দিষ্ট ৭২টি ঘটনায় ২৩টি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ৩(২)(এ), ৩(২)(সি), ৩(২)(জি) এবং ৩(২)(এইচ) ধারায় এসব অভিযোগ গঠন করা হয়। তার আগে ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি। ২০১২ সালের ১৪ মে ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এরপর দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় চলতি বছরের ২৪ জুলাই। এ সময়ের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ৪১ জন, আসামিপক্ষে চারজন। ২৮ জুলাই/২০১২খ্রিস্টাব্দ থেকে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়ে ১৪ আগস্ট/২০১৩খ্রিস্টাব্দে তা শেষ হয়। সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলামসহ প্রসিকিউশনের মোট ৪১ জন সাক্ষী। আরো চারজন সাক্ষীর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে ট্রাইব্যুনাল।

যুক্তিতর্কে (আর্গুমেন্ট) প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ ট্রাইব্যুনালে বলেছেন, সাকা চৌধুরী সব জায়গাতেই উপস্থিত হয়ে ঘটনা ঘটিয়েছেন। কোথায়ও তিনি নিজে গুলি করেছেন। আবার কোথায়ও বা তিনি চিনিয়ে দিয়েছেন। তিনি সর্বত্রই ছিলেন। তার পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করছেন, প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছে তা তাঁরা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

কুখ্যাত রাজাকার খুনী সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সর্বোচ্চসংখ্যক ২৩টি অভিযোগ গঠন করা হয়।

সাকা চৌধূরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলায় উত্থাপিত ২৩ টি অভিযোগঃ-

২৩টি অভিযোগের মধ্যে ১৭ টি অভিযোগের সাক্ষী উপস্থাপন করেন। ৯, ১৩, ১৫, ১৬, ২১ ও ২২ নম্বর অভিযোগে কোনো সাক্ষী উপস্থাপন করেনি প্রসিকিউশন। ১৭ টি অভিযোগের উপর রায় প্রদান করেন মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।


১ নং অভিযোগঃ-

রাউজানের আন্ধারমানিকে অরবিন্দ সরকার, মতিলাল সরকার, অরুণ চৌধুরী, শান্তি কুসুম চৌধুরী, যোগেশ চন্দ্র দে, কুমিল্লা গ্রামের পরিতোষ দাস ও সুনীলকে ১৯৭১ সালের ৪ অথবা ৫ এপ্রিল অপহরণ করে গুডস হিলে নিয়ে সালাউদ্দিন কাদেরের উপস্থিতিতে অমানুষিক নির‌্যাতন করা হয়। এদের মধ্যে সুনীল কমবয়সী হওয়ায় তাকে ছুরিকাঘাতে মারাত্মক আহত করা হয়। বাকি ছয়জনকে মৃত্যু পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়। নিহতরা নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের হওয়ায় এ ঘটনায় গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ।



২ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে রাউজানের মধ্যগহিরা হিন্দুপাড়ায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামটি ঘিরে ফেলে। পরে ডা. মাখনলাল শর্মার বাড়ির আঙিনায় নিরস্ত্র হিন্দুদের একত্রিত করে সালাউদ্দিন কাদেরের উপস্থিতিতেই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের নির্বিচারে গুলি করে। এ ঘটনায় পঞ্চবালা শর্মা, সুনীল শর্মা, জ্যেতিলাল শর্মা ও দুলাল শর্মা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। ডা. মাখনলাল শর্মা ঘটনার তিন-চারদিন পর মারা যান। জয়ন্ত কুমার শর্মা গুরুতর আহত হন এবং পরবর্তীতে প্রতিবন্ধী হয়ে যান। এ ঘটনায় গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত,২০ বছর সাজা।)



৩ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে রাউজানের গহিরা এলাকায় কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহের বাড়ি ঘিরে ফেলা হয়। সালাউদ্দিন কাদেরের উপস্থিতিতে প্রার্থনারত অবস্থা থেকে নূতন চন্দ্রকে টেনে বাইরে নিয়ে আসা হয়। সালাউদ্দিন কাদেরের নির্দেশে পাকিস্তানি সেনারা নূতন চন্দ্রের ওপর গুলি চালানোর পর তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তাকে গুলি করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত, মৃত্যুদন্ড।)

৪ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীসহ রাউজানের জগৎমল্লপাড়ায় যান সালাউদ্দিন কাদের। ওই দিন সকালবেলায় সালাউদ্দিনের অন্য দুই সহযোগীকে ওই গ্রামে পাঠিয়ে একটি মিটিংয়ে যোগ দেয়ার জন্য বলা হয় গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের। পরে গ্রামটি ঘিরে ফেলে কিরণ বিকাশ চৌধুরীর বাড়ির আঙিনায় জমায়েত হওয়া হিন্দুদের ওপর নির্বচারে গুলি চালানো হলে তেজেন্দ্র লাল নন্দী, সমীর কান্তি চৌধুরী, অশোক চৌধুরীসহ ৩২ জন নিহত হন।

এছাড়া অমলেন্দ্র বিকাশ চৌধুরী, জ্যোৎস্না বালা চৌধুরী ও ছবি রাণী দাস গুরুতর আহত হন।এরা প্রত্যেকে পরে ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। এরপর গ্রামের বিভিন্ন বাড়িঘর লুটপাট করা হয় এবং আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় পরিকল্পনা, সহযোগিতা, গণহত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও দেশান্তরে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত,২০ বছর সাজা।)



৫ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার সহযোগীরা পথ দেখিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে রাউজানের সুলতানপুর গ্রামের হিন্দুবসতিপূর্ণ বণিকপাড়ায় নিয়ে যান। সেখানে হিন্দুদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হলে নেপাল চন্দ্র ধর, মণীন্দ্র লাল ধর, উপেন্দ্র লাল ধর ও অনীল বরণ ধর নিহত হয়। পরে বিভিন্ন বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়। ঘটনার সময় লুকিয়ে থাকা সনাতন বিশ্বাস ও তার পরিবার পরে পালিয়ে ভারতে চলে যান। এই ঘটনায় গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত, মৃত্যুদন্ড।)

৬ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল বিকাল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে রাউজানের হিন্দু বসতি ঊনসত্তরপাড়া গ্রামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় সালাউদ্দিন কাদের ও তার কয়েকজন সহযোগী। মিটিংয়ে যোগ দেয়ার কথা বলে গ্রামের ক্ষিতিশ মহাজনের পুকুরপাড়ে নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের ওপর ব্রাশফায়ার করে ৭০ জনকে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে চন্দ্র কুমার পাল, গোপাল মালী, সন্তোষ মালী, বলরাম মালীসহ ৫০ জনের পরিচয় জানা গেলেও বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জানুতি বালা পাল কোমড়ে গুলিবিদ্ধ হলেও বেঁচে যান। বেঁচে যাওয়া আরো অনেক হিন্দু পরিবারসহ পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এ ঘটনায় গণহত্যা, দেশান্তরে বাধ্যসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে আসামির বিরুদ্ধে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত, মৃত্যুদন্ড।)

৭ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সঙ্গে নিয়ে রাউজান পৌরসভা এলাকায় সতীশ চন্দ্র পালিতের বাড়িতে যান সালাউদ্দিন কাদের। এসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সতীশের কথা কাটাকাটির পরে সালাউদ্দিন কাদের পাকিস্তানি সেনাদের বলেন, ‘এ ভয়ঙ্কর লোক এবং একে মেরে ফেলা উচিত’। এসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সতীশ চন্দ্রকে বাড়ির ভেতরে যেতে বলে এবং তিনি ভেতরে যাওয়ার পথেই তাকে গুলি করে হত্যা করে। পরে লাশ ঘরের ভেতরে রেখে ওই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার পরে সতীশ চন্দ্রের পরিবার পালিয়ে ভারতে চলে যায়। এ ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে সতীশ চন্দ্রের হত্যা ও বাড়ি পোড়ানোতে সহযোগিতা এবং দেশান্তরে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত,২০ বছর সাজা।)

৮ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজাফফর তার পরিবারসহ রাউজার থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসার পথে হাটহাজারীর তিন রাস্তার মোড় এলাকায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে ও সহযোগিতায় শেখ মুজাফফর ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে তাদের প্রাইভেট কার থেকে নামিয়ে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরে বিভিন্ন সময়ে তাদের মুক্তির জন্য সালাউদ্দিন কাদেরের বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা দু’জন কখনো ফিরে আসেনি। পরে তাদের দুজনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে শেখ মুজাফফর ও শেখ আলমগীরকে অপহরণ ও হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত, মৃত্যুদন্ড।)

৯ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তানি সেনাসদস্যদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটি জিপগাড়িতে করে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী রাজাকার ক্যাম্পে যান সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তিনি ওই রাজাকার ক্যাম্পে অবস্থান করার সময় মুন্সীরহাট থেকে শান্তি দেবকে ধরে নিয়ে বণিকপাড়ায় নিয়ে হত্যা করা হয়। একই সময়ে সেনাবাহিনী কণিকপাড়ার রাম বাবুর বাড়ি ও কদুরখালির হিন্দু পাড়ার বাড়ি লুট করে এবং পুড়িয়ে দেয়। এসব এলাকার অনেক হিন্দু পরে ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এসব ঘটনায় গণহত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ ও দেশান্তরে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

(সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এজন্য মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোন মন্তব্য করেননি।)



১০ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল রাউজানের ডাবুরা গ্রামের মানিক ধরের বাড়িতে লুটপাট এবং ওই এলাকার চেয়ারম্যান সাধন ধরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এসময় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সেখানে ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের।

(প্রমাণিত হয়নি।)

১১ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর হিন্দু বসতিপূর্ণ শাকপুরা গ্রামে সালাউদ্দিন কাদের ও তার বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীর নির্দেশনা অনুযায়ী পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও রাজাকাররা যৌথভাবে আক্রমণ চালায়। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালায় এবং বেয়নেট চার্জ করে তারা। এ ঘটনায় ফয়েজ আহমেদ, জালাল আহমেদ, হাবিলদার সেকান্দার আলী, অরবিন্দ ধরসহ ৭৬ জনকে শাকপুরা প্রাইমারী স্কুলের নিকটবর্তী জঙ্গল ও ধানক্ষেতে নিয়ে হত্যা করা হয়। বেঁচে যাওয়া অনেকে ভারতে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় গণহত্যা ও দেশান্তরে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে।

(প্রমাণিত হয়নি।)



১২ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ৫ মে মাসে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পথ দেখিয়ে জগৎমল্লপাড়ায় নিয়ে যায় সালাউদ্দিন কাদের। তার উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে বিজয়কৃষ্ণ চৌধুরী, বিভূতি ভূষণ চৌধুরী, হরেন্দ্র লাল চৌধুরীকে হত্যা করে। এ ঘটনায় গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।

(প্রমাণিত হয়নি।)



১৩ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ১০ মে সন্ধ্যার দিকে সালাউদ্দিন কাদের, তার বাবা ও সহযোগী শান্তি কমিটির সদস্য অলি আহমেদের নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সমর্থক অধ্যুষিত ঘাসি মাঝিরপাড়া এলাকায় পৌঁছায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সেখানে বিভিন্নজনের বাড়িতে লুটপাট চালায় তারা। এসময় অন্তত পাঁচজন নারীকে ধর্ষণ করা হয়। এছাড়া ছয়জনকে গুলি করে হত্যা ও দুই জনকে গুরুতর আহত করা হয়। এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- নুরুল আমীন, আবুল কালাম, জানে আলম, মিয়া খাঁ, আয়েশা খাতুন ও সালেহ জহুর। আহতরা হলেন মুন্সী মিয়া ও খায়রুল বাশার। এ ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

(সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এজন্য মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোন মন্তব্য করেননি।)



১৪ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ২০ মে বিকাল ৪টার দিকে সালাউদ্দিন কাদেরের সহযোগিতায় রাউজানের পাথেরহাটের কর্তা দিঘীর পাড়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক মো. হানিফের বাড়িতে গিয়ে তাকে অপহরণ করে গুডস হিলে নিয়ে আসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। হানিফকে ছাড়িয়ে আনার জন্য নাজমা খাতুন নামে এক নারীকে সেখানে পাঠান হানিফের স্ত্রী। নাজমা ফিরে এসে জানান হানিফের মুক্তিপণ হিসেবে ১ হাজার টাকা চেয়েছেন সালাউদ্দিন কাদের। তিনি আরো জানান, হানিফকে নির‌্যাতন করা হচ্ছে গুডস হিলে। হানিফ পরে কখনো ফিরে আসেননি। এ ঘটনায় অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে।

(প্রমাণিত হয়নি।)



১৫ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে শেখ মায়মুন আলীকে চন্দনপুরে তার বন্ধু ক্যাপ্টেন বখতিয়ারের বাড়ি থেকে অপহরণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এসময় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের। শেখ মায়মুন আলীকে গুডস হিলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ছাড়িয়ে আনে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা। এ ঘটনায় অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

(সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এজন্য মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোন মন্তব্য করেননি।)



১৬ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম শহরের জামাল খান এলাকা থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গুডস হিলে নিয়ে আসা হয় ওমর ফারুককে। সেখানে তাকে নির্যাতনের পরে সালাউদ্দিন কাদেরের নির্দেশে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে ফজলুল কাদেরের ছেলের বিরুদ্ধে।

(সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এজন্য মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোন মন্তব্য করেননি।)



১৭ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ৫ জুলাই সন্ধ্যা ৭টা-সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন সহযোগী ও পাকিস্তানি সেনাকে নিয়ে কোতোয়ালি থানার হাজারী লেনে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বাড়ি থেকে নাজিমুদ্দিন আহমেদ, সিরাজ, ওয়াহিদ ওরফে জানু পাগলাকে অপহরণ করা হয়। তাদেরকে গুডস হিলে নিয়ে নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে একসময় ওয়াহিদ ওরফে জানুকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে নাজিমুদ্দিন ও সিরাজকে স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। এ ঘটনায় অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত, ৫ বছর সাজা।)

১৮ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে একদিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চাঁদগাঁও থানাধীন মোহরা গ্রামের মো. সালাহউদ্দিনকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে করে গুডস হিলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে সালাউদ্দিন কাদেরের উপস্থিতিতে আটকে রেখে নির‌্যাতন করে পাকিস্তানি সেনারা। পরে তাকে হত্যার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

(সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত, ৫ বছর সাজা।)

১৯ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাকিস্তানী সেনা সদস্যরা হাটহাজারী এলাকা থেকে কিন ভাই নুর মোহাম্মদ, নুরুল আলম ও মাহবুব আলমকে অপহরণ করে গুডস হিলে নিয়ে আসে। সেখানে তাদের আটকে রেখে নির‌্যাতন করা হয়। পরে এক হাজার টাকার বিনিময়ে নুর আলম ও নুর মোহাম্মদকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে নূর মোহাম্মদ জানতে পারেন, তার ভাই মাহবুব আলমকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা, অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে।

(প্রমাণিত হয়নি।)



[sb২০ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই বিকাল ৩টা/৪টার দিকে কদুর খালী গ্রাম থেকে এখলাস মিয়াকে আটক করে বোয়ালখালী রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আসে রাজাকাররা। পরে তাকে গুডস হিলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মৃত্যু পর‌্যন্ত নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

(প্রমাণিত হয়নি।)



sb২১ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের অগাস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে রাউজানের বিনাজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরীকে পাকিস্তানি সেনা সদস্যরা আটক করে গুডস হিলে নিয়ে যায়। তাকে ৩/৪ দিন ধরে নির‌্যাতন করা হয় এবং পরে ছেড়ে দেয়া হয়। নির‌্যাতনের ফলে ফজলুল হক পরবর্তীতে প্রতিবন্ধী হয়ে যান। এ ঘটনায় অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে।

(সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এজন্য মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোন মন্তব্য করেননি।)



sb২২ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সালাউদ্দিন কাদের ও তার সহযোগী আল-শামস বাহিনীর সদস্যরা চট্টগ্রামের সদরঘাট এলাকার আব্দুল হাকিম চৌধুরীর বাড়ি থেকে মো. নুরু চৌধুরীকে অপহরণ করে গুডস হিলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে আটকে রেখে নির‌্যাতনের পরে তার বাবার কাছ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

(সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এজন্য মহামান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোন মন্তব্য করেননি।)

sb২৩ নং অভিযোগঃ-

১৯৭১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জামাল খান এলাকা থেকে এম সলিমুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির এক হিন্দু কর্মচারীকে নির‌্যাতন করে সালাউদ্দিন কাদেরের সহযোগীরা। তাতে বাধা দিলে এম সলিমুল্লাহকে হুমকি দেয়া হয় এবং পরে আটক গুডস হিলে নিয়ে সারারাত নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

(প্রমাণিত হয়নি।)

ফরমাল চার্জে ৪৩৭ ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগঃ-

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত মাত্র পাঁচ মাসে রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৪৩৭ ব্যক্তিকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল ফরমাল চার্জে। তাঁর বিরুদ্ধে রাউজানের শাকপুরা, ঊনসত্তরপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়। শুধু রাউজানেই ৯টি গণহত্যা চালানোর অভিযোগ ছিল ফরমাল চার্জে। সাকা চৌধুরীর উপস্থিতি ও নির্দেশে তাঁর সহযোগীরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ওই সব ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করে রাষ্ট্রপক্ষ। মূলত হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নিশ্চিহ্ন করা এবং হিন্দুদের দেশান্তরে বাধ্য করার জন্যই ওই সব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ। অভিযোগে বলা হয়, সাকা চৌধুরীর চট্টগ্রামের বাসভবন ‘গুডস হিল’কে টর্চার সেন্টার করা হয়েছিল। সেখানে ক্রমাগতভাবে শহরের মুক্তিযোদ্ধা, হিন্দু লোকজন, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও নারীদের ধরে নিয়ে টর্চারের পর হত্যা করা হতো।



সর্বোচ্চ অভিযোগ ও সাক্ষীঃ-

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন বা বিচার শেষ হওয়া যেকোনো মামলার তুলনায় এটি সবচেয়ে বড় কলেবরের মামলা। ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সর্বোচ্চসংখ্যক ২৩টি অভিযোগ গঠন করা হয়।

সর্বোচ্চ অভিযোগের মতো সর্বাধিক সাক্ষীও এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। মোট সাক্ষী ছিলেন ৪৫ জন।

সাক্ষ্য দিয়েছেন যাঁরাঃ-

গত বছরের ১৪ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামানের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। প্রায় সোয়া এক বছর ধরে চলা সাক্ষ্য গ্রহণকালে রাষ্ট্রপক্ষে একে একে সাক্ষ্য দেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সলিমুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম সিরু বাঙালি, শহীদ নুতন চন্দ্র সিংহের ছেলে প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ ও ভাতিজা গৌরাঙ্গ সিংহ, শহীদজায়া বাসন্তি ঘোষ, শহীদপুত্র পরিতোষ কুমার পালিত, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট নির্মল চন্দ্র শর্মা, আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ (আব্বাস চেয়ারম্যান), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. সালেহ উদ্দিন, ব্যবসায়ী পরাগ ধর (ক্যামেরা ট্রায়াল), সাবেক ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা কাজী নূরুল আফসার, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম, অরুণাংশু বিমল চৌধুরী ও তাঁর ভাতিজা আশীষ চৌধুরী, অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র দাশ, সাংবাদিক নিজামউদ্দিন আহমদ, ফয়েজ আহমেদ সিদ্দিকী, একজন ক্ষতিগ্রস্ত নারী (ক্যামেরা ট্রায়াল), দেবব্রত সরকার, মুক্তিযোদ্ধা ও সংগীত শিল্পী সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম জুনু, শেখ মোরশেদ আনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বশর, অনীল বরণ ধর, মুক্তিযোদ্ধা বনগোপাল দাশ, বাবুল চক্রবর্তী বুলবুল, মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের চৌধুরী, মো. সোলায়মান, ডা. এ কে এম শফিউল্লাহ, সুবল চন্দ শর্মা, মো. নাজিম উদ্দিন, সুজিত মহাজন, মাহমুদ আলী, বিজয় কৃষ্ণ চৌধুরী, কামাল উদ্দিন এবং চপলা রানি। এসব ক্ষতিগ্রস্ত ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্যগ্রহণ ছাড়াও জব্দ করা বিভিন্ন দলিলের বিষয়ে চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এঁরা হলেন বাংলা একাডেমির সহকারী গ্রন্থাগারিক এজাব উদ্দিন মিয়া, চট্টগ্রামের রাউজান থানার এএসআই মো. এরশাদুল হক, এসআই মোল্লা আব্দুল হাই ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের বুক শর্টার কাওসার শেখ। এ ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জ্যোৎস্নাপাল চৌধুরী, জানতি বালা চৌধুরী, আবুল বশর এবং বাদল বিশ্বাসের দেওয়া বক্তব্যকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। এঁদের মধ্যে প্রথম তিনজন এরই মধ্যে মারা গেছেন। অপরজন ভারতে রয়েছেন বলে ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলামকে দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে ৪১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় চলতি বছরের ১৩ জুন।

সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেঃ-

সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য এক হাজার ১৫৩ জন সাক্ষীর দীর্ঘ তালিকা জমা দিয়েছিলেন তার আইনজীবীরা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওই তালিকা থেকে পাঁচজনকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেন। আসামিপক্ষের প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আসামি সাকা চৌধুরী নিজেই। পরে তার পক্ষে আরও তিনজন সাক্ষ্য দেন, তারা হলেন তার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু নিজাম আহমেদ, এশিয়া-প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাইয়ুম রেজা চৌধুরী এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোমেন চৌধুরী।সাকা চৌধুরী নিজে সাফাই সাক্ষ্য দেন। এ ছাড়া তাঁর পক্ষে তাঁর কলেজজীবনের বন্ধু নিজাম আহমেদ, এশিয়া-প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাইয়ুম রেজা চৌধুরী ও সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোমেন চৌধুরী সাক্ষ্য দেন।

সাকা চৌধুরী দাবি করেন, একাত্তরের ২৯ মার্চ তিনি ঢাকা ছেড়ে করাচি চলে যান; এরপর ঢাকায় ফিরেছেন ১৯৭৪ সালে। আসামিপক্ষের অন্য সাক্ষীরাও একই ধরনের জবানবন্দি দেন। দুই পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২৮ জুলাই যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। সাকা চৌধুরীকে অপরাধী দাবি করে সর্বোচ্চ সাজার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি এবং তাঁকে নিরপরাধ দাবি করে খালাসের জন্য আসামিপক্ষের পাল্টা যুক্তি শেষ হয় গত ১৪ আগস্ট।

সরব থাকবে গণজাগরণ মঞ্চ

মানবতাবিরোধীরা নির্বাচনের অযোগ্য

মুঈন-আশরাফের মামলার রায় যেকোনো দিন

বুদ্ধিজীবীঘাতক মঈন-আশরাফের

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:১৯

জাহিদুল হাসান বলেছেন: সাকার ফাসির খবরে সামুতে আসলাম কয়েকমাস পরে, দেখতে এখানকার এক্সপ্রেশন কেমন ! ৪০ মিনিট আগে পোষ্ট দিছেন, কোন কমেন্ট নাই। এখন কি এইরকমই কি সেই সামু !!! এত গুরুত্বপূর্ন খুশির খবরে কারো কোন মন্তব্য নাই !!!!!!!!!!!!!

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৪

তুহিন সরকার বলেছেন: খুশিতে অনেকে বাকরুদ্ধ.................


ধন্যবাদ হাসান সাহেব। ভাল থাকবেন, শুভকামনা রইল।

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৫

চলতি নিয়ম বলেছেন: হুমম ..............বাতাস পাল্টাইছে.....

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৯

তুহিন সরকার বলেছেন: হ্যাঁরে.....................ভাই!

চলতি নিয়মের জন্য শুভকামনা রইল।

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪১

আমিনুর রহমান বলেছেন: বিজয়ের শুভেচ্ছা তুহিন :)

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩

তুহিন সরকার বলেছেন: আপনার জন্য শুভেচ্ছাসহ শুভকামনা রইল রহমান সাহেব।।

ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন, শুভকামনা রইল।

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪

দুঃস্বপ্০০৭ বলেছেন: কাচ্ছি বিরিয়ানি খামু X(

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৭:০৭

তুহিন সরকার বলেছেন: কাচ্ছি আপনার পাওনা রইল।

ভাল থাকুন, শুভকামনা রইল।

৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯

দুঃস্বপ্০০৭ বলেছেন: ভাই রাজাকারদের নিয়া পোস্ট দিয়েননা সকালে আমি ছাগুদের গদাম দিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম।

ব্যাক্তি আক্রমনের দোহায় দিয়ে আমার পোস্টটা মুছে দিয়েছে। ছাগুদের গদাম দেওয়া নাকি ব্যাক্তি আক্রমন ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৭:১৪

তুহিন সরকার বলেছেন: সদা সত্য কথা বলুন ‍নির্ভয়ে........
বাধা-বিপত্তি আসতেই পারে।

আপনার নামের দুই ধরনের বৈশিষ্ট আছে, এ জন্যই আপনার কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে মনে হয়।

ধন্যবাদ ০০৭, ভাল থাকুন, শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.