নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মূর্খ সমাজপতি গাঁয়ে, গগনে দেখি ক্ষয়িষ্ণু চাঁদ বিচ্যুত যৌবনে জোছনা আমায় করেছে উম্মাদ

উপপাদ্য

ইমেইল: [email protected]

উপপাদ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিলিপিন্স কলিং: আমি কেন আবু বকর হতে পারলাম না, আমি কেনো উমর হতে পারলাম না

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩

খুব তাড়াহুরা করে দৌড়াচ্ছি। এই রকম দৌড় আমাকে প্রায়ই দিতে হয়। যত আগে যাবো তত আগের ট্রেন ধরতে পারবো। কারন দেড়ি হয়ে যাচ্ছে, তাই দৌড়ানো ছাড়া গতি নেই। ট্রেনকে এখানে সবাই টিউব বলে। সম্ভবত আন্ডারগ্রাউন্ডের যে পথ ধরে ট্রেনগুলো চলে সেটা দেখতে টিউবের মতো এজন্য টিউব বলা হয়। আমি দৌড়াচ্ছি শেফার্ডস বুশ টিউব স্টেশনে যাব বলে। পথিমধ্যে থমকে দাঁড়ালাম।



"প্লিজ ডোনেট ফর ফিলিপিন্স, প্লিজ ডোনেট ফর ফিলিপিন্স"



ফিলিপিনোদের সাথে আমর খুব যে উঠা বসা হয় তা না। কিন্তু আমি একসময় কজন ফিলিপিনোর সাথে কাজ করেছি। যেমন তাদের একজন ললিতো। ললিত একদিন বললো, আমরা বাংলাদেশী মুসলিমরা কিভাবে রোজা রাখি। আমি পুরা প্রসেসটা তাকে বুঝিয়ে দিলাম। সে বললো তারা ফিলিপিনা ক্যাথলিকরাও রোজা রাখে কিন্তু একটু অন্যরকম ভাবে। সো বাংলাদেশি ও ফিলিপিনো ভাই ভাই। এমন অদ্ভুত যুক্তি আমি জিবনেও শুনিনি। তবুও এমন সহজ সরল মানুষটাকে আমার খুব ভালো লাগতো।



আরেকজনের নাম জুন, তার বার্থ ডে পার্টিতে ওর মায়ের হাতের বানানো একটা কেক যেটা কলা দিয়ে তৈরি করা হয় নামটা মনে পড়ছে না সেটা খেয়ে আমার মনে হয়েছিলো জিবনে এত মজার কেক খাইনি। আমিতো বলেই ফেললাম আমাকে আরো কেক দিতে হবে নেক্সট উইকে। জুন কথা রেখেছিলো ও আমার জন্য এক সপ্তাহ পরে ঠিকই তার মায়ের হাতের বাননো কেক নিয়ে হাজির হয়েছিলো।

আমি বিস্মিত হয়েছিলাম।



ললিতো বা জুনের সাথে অনেক দিন দেখা নাই। কিন্তু যখনই শেফার্ডস বুশ সেন্ট্রাল লাইন স্টেশানের সামনে দেখলাম এক ফিলিপিনোকে মার্জিত সুরে পথচারীদেরকে বলছে,

"প্লিজ ডোনেট জেনেরাসলি ফর ফিলিপিন্স।"



আমার কাছে মনে হলো জুন কিংবা ললিতো আমাকে বলছে, বন্ধু ফিলিপিনকে সাহায্য করো।



আমি পকেটে হাত ঢোকালাম, আমার পকেটে ৩৮০ পাউন্ডের মতো, সারা সপ্তাহের অমানুষিক পরিশ্রমের টাকা। আমি সেখান থেকে খুচরা খুঁজছি। তারপর সেখান থেকে সবচেয়ে ছোট ১০ পাউন্ডের একটা নোট বের করে ডোনেশন বাক্সে দিলাম। মেয়েটি অতি কৃতজ্ঞতার সাথে থ্যাংক ইউ বললো।



আমি প্রত্তোত্তরে কিছু বলেছিলাম কিনা মনে পড়ছে না। কারন ততক্ষনে আমর চোখে জল। আমি কাঁদছি কারন আমার পকেটে ৩৮০ পাউন্ড, যেই মাত্র পকেটে হাত দিয়েছি অমনিই মনে পড়ে গেলো বাংলাদেশে আমার দরিদ্র নগন্য এক স্কুল শিক্ষক পিতার ক্লান্ত শ্রান্ত চেহারা, মনে পড়ে গেলো হত দরিদ্র প্রান্তিক আমার মায়ের মুখ, বোনদের স্কুল কলেজ যাওয়ার খরচা পাতি।



আমি দ্রুত এসকেলেটর দিয়ে হাটার চেস্টা করছি, চোখ ঝাপসা হয়ে আছে। আমি নিরবে চোখের জল ফেলে হাঁটছি। মনে হচ্ছে এসকেলেটরের মতো করে আমি ও আমার মনুষত্ব নিচের দিকে যাচ্ছে দ্রুত থেকে দ্রুততর। কেন পারিনা, কেন পারিনা কিছু করতে তাদের জন্য।



হে ইশ্বর আমি কেন আবু বকর হতে পারলাম না। আমি কেনো ওমর হতে পারলাম না।



অ.ট:

বিনীত নিবেদন,

ফিলিপিনে সুপার টাইফুন হাইয়ান আঘাত করেছে। প্রায় ১০ লাখ মানুষনা খেয়ে দিনাতিপাত করছে। টাকা এ মুহুর্তে খুবই অপ্রয়োজনী বস্তু। খাবরের জন্য দীর্ঘ লাইন দিচ্ছেনারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ। যদি পারেন একটু সাহায্য করুন। নিশ্চয় আপনার এ সাহায্যটুকু ইশ্বরের দরজায় টাক টাক করে নক করবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪০

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: :( :(

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩২

উপপাদ্য বলেছেন: ধন্যবাদ পোকা ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.