নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উননুর

সামাইশি

সময় বয়ে যায়, ক্ষয়ে যায় জীবন, মন, সৃষ্টি, ক্লেদের গ্লানি জমা হোল যত যথাপি ঝরে যায় বৃষ্টি।

সামাইশি › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাখা বাবা

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫

প্রানের টানে প্রিয় মাতৃভূমিতে এসেছি মাস খানেক এরও বেশি হোল। এসেই মনে হচ্ছে চিড়িয়া খানার বন্দী খাচার মধ্যে ছিটকে পড়েছি। কোথাও যেতে পারছিনা। সব প্রোগ্রাম বাতিল করতে হচ্ছে। গ্রামে বাবা ভাইয়ের কবর জিয়ারত করা হোল না। ছোট ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করতে হোল। অধিকাংশ আত্বীয়জনদের সঙ্গে সাক্ষাত হোলনা উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য। পরিস্থিতর উদ্ভব হয়েছে দুই দল আওয়ামী লিগ, বিএনপি তথা দুই নেত্রীর জন্য। আজকাল একটা মাউথ ওয়াটারিং (মুখ রোচক) উক্তি প্রচলিত হয়েছে যে রাজনীতিবিদ, দুই দল তথা দুই নেত্রী যত অনিষ্টের মূল। বা! আর আমরা সবাই যেন তুলসী পাতা ধোয়া। আমি সেই সব তথাকথিতের দলে নেই। আমার সোজা সাপ্টা কথা। আমাদের দেশটা রাজনীতিবিদরাই চালাবেন। তারাই এ অবধি দেশটাকে নিয়ে এসেছেন। তারা আমাদের দেশেরই নাগরিক, কারো না কারো বাবামা, ভাইবোন্, চাচামামা এবং ফুপাফুপু। তাই আমরা যতই নাক সিটকইনা কেন, ওনাদের হাতেই আমাদের ভবিষ্যত। আরেক সস্তা, নিজেকে জাহির করার আত্বরম্ভ উপায় হোল দুই দল, দুই নেত্রী, দুই দলের সরকারের সময়কালকে এক পাল্লা বরাবর করে মাপা। এত অত্যন্ত:হাস্যকর। আমি বিস্তারিত ঘাটাঘাটি করতে চাই না। ছোট একটা উদাহরণ দিই। শ্রেণী কক্ষে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে একজন আরেক জনকে আঘাত করে বসলো। কারণ জিজ্ঞেস করায় আবার শরীরে

সরাসরি আঘাত। এবার দ্বিতীয় জন প্রথমে আঘাতকারীকে মৃদু ধাক্কা দিলো। পরে প্রধান শিক্ষক দুইজনকেই স্কুল থেকে বহিস্কার করলেন। দুই জনকে সমান অপরাধী করার প্রয়াস তা কি ঠিক হোল। ভাবা যায় ষোলো কোটি মানুষের একটি অনুন্নয়নশীল দেশে একটি সরকারের পাচ বছর মেয়াদে এক মেগাওয়াট বিদ্যুত জেনারেট হয়না। অবিশ্বাস্য অকল্পনীয়, অভাবনীয়। যাও টঙ্গীতে আশি মেগাওয়াট কেন্দ্র হয়েছিল তার পরিনতি কি এবং নেপথ্যে কি হয়েছিল তা দেশবাসীর সকলের জানা। এবারের সরকারে শেখ হাসিনা যেই প্রকল্পই উদ্ভবোধন করেন তাইই দেখা যায় পূর্ববর্তী বিএনপি সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। আমার মুখের গায়ের জোরের কথা নয়, পরিসংখ্যানের

কথা। ছিয়ানব্বইএ আওয়ামী লিগ সরকার আঠারোটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। পরবর্তিতে বিএনপি সরকার সব বন্ধ করে রেখেছিল। পূর্বের তুলনায় এবারের আওয়ামী লিগ সরকারের গুনগত মান ও পারদর্শিতা পূর্ববর্তী সরকার সমূহ থেকে অনেক ভালো। অনেক অনেক বাঘা বাঘা চিন্হিত দুর্নীতিপরায়ন মন্ত্রীদের কোন থাই হয় নাই এবারের সরকারে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মন্ত্রীর নিরারম্ভর জীবন এবং অনেক মন্ত্রীর পারফরমেন্স সফলতার নিরিখেই পড়ে। ছাত্র লিগ, যুব লিগ, শ্রমিক লিগ কোন লিগ বলে ছাড় নেই অপরাধ করলে।সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আমার মুখের কথা নয়, পত্রিকার পাতা ওল্টালেই প্রমান পাওয়া যাবে। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হোল আওয়ামী লীগের ভিশন ২০২১। কোন রাজনৈতিক দল একটা দেশকে কিভাবে গড়ে তুলবে তার সুনিদৃষ্ট লক্ষ্য স্থির করে পর্যায় ক্রমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হচ্ছে ভিশন। অনেকেই হয়ত ভিশন ২০২১ কে হেসে উড়িয়ে দিবেন। কিন্তু এর আলোকে এবারের সরকারের দেশের জন্য অর্জিত উন্নয়ন খেয়াল করলেই এর সারবত্তা বুজা যাবে।

যাক অনেক গৌড়চন্দ্রিকা হোল এবং সুপ্রিয় পাঠক হয়ত ইতিমধ্যে বুজেছেন যে আমি তথাকথিত এক পাল্লায় মাপার পক্ষপাতি নই। আজকের বিরোধী দলের নেত্রীর উক্তি "একমাত্র পাগল ও শিশু ছাড়া কেও নিরপেক্ষ নয়" আমার এ লেখার বক্তব্যের সমার্থক। আমাদের দেশে মিডিয়া তথাকথিত নিরপেক্ষতার ধ্বজা বাহক। আমি মনে করি আজকের দেশের এ পরিস্থিতির জন্য মিডিয়া অনেকাংশেই দায়ী। আজকে মিডিয়াকে সুস্পষ্ট করে বলতে হবে কে ভুল আর কে

সঠিক এবং সঠিকের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিতে হবে। এর সুর ধরে সুপ্রিয় পাঠক নিশ্চয়ই বুজতে পারতেছেন কোন এক এক দলের প্রতি আমার সমর্থন রয়েছে। কিন্তু তাই বলে আমি অন্ধ সমর্থক নই যে সব অগ্রহনযোগ্য বিষয় ও চোখ বুজে সমর্থন দিয়ে যাবো। আমি ২০ বছর যাবত দেশের বাইরে, এশিয়ার এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পি এইচ ডি ধারী এবং বর্তমানে কানাডা প্রবাসী। এ পর্যায়ে আমি লেখাটির মূল বক্তব্যে আসব। দেশে বর্তমানে যে ডেড লক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এবং এ অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে কি কি অবস্থা উদ্ভুত হতে পারে সেদিকে আলোকপাত

করা যাক।

১ দেশে গৃহ যুদ্ধ বেধে যাবে। পাকিস্তান বগল দাবা বাজাবে এবং তাদের অনুগত দেশ বানাতে চাইবে বাংলাদেশকে।

২ গার্মেন্টস এ প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ গুলো খুশিতে আটখান হবে।

৩ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভয়ারন্যে পরিনত হবে।

৪ দেশের দক্ষিন পূর্ব পার্বত্য এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

৫ মেয়েরা ঘরের কোনে বসে কেবল ঘানি টানবে। পড়ালেখার ইচ্ছা হলে ইউসুফজাই মালালার মত গুলি খেতে হবে।

৬ দেশে মহামারী ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে।

৭ সোনার সবুজ শ্যামল বাংলায় হলদে সর্ষে ফুল, চন্দ্র মল্লিকা, হাসনা হেনা, জবা, গন্ধরাজ, বকুল, শিউলি ফুলের

পরিবর্তে আফগানী তালিবানি, তেহরিকে তালিবানি বোমা ফুটবে প্রতিদিন।

উপরেউল্লিখিত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কয়েকটি সুনিদৃষ্ট প্রস্তাবনা নিম্নে পেশ করা হইলো। নীতি নির্ধারকদের চোখে পড়লে ভেবে দেখতে পারেন। চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াসের উক্তি "ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র উদ্যোগ থেকেই বৃহত্তর সফলতা অর্জিত হয়" থেকে অনুপ্রানিত হয়ে আমার এ লেখার প্রয়াস।

সংকট উত্তরণের প্রস্তাবনা সমূহ

১ বর্তমান সর্বদলীয় সরকারে বেগম খালেদা জিয়ার উপ প্রধান মন্ত্রী পদে যোগদান এবং চাইলে তাকে স্বরাষ্ট্র ও স্থানীয় সরকার

মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়া।

২ বর্তমান সর্বদলীয় সরকারে শেখ হাসিনা ব্যতিরেকে আওয়ামী লীগের গ্রহনযোগ্য অন্য যে কাওকে প্রধান মন্ত্রীর পদ দেয়া।

৩ এতে একমত না হলে বিগত সংসদ নির্বাচনের সদস্যের অনুপাতে বিভিন্ন দলের নির্বাচিত নিদৃষ্ট সংখ্যক সদস্য নিয়ে সরকার

গঠন করে সংখ্যা গরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে প্রধান মন্ত্রী নির্বাচিত করে অন্তর্বর্তী সরকার দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করা

৪ এতেও এক মত না হলে শেখ হাসিনার পরিবর্তে প্রেসিডেন্টকে অন্তর্বর্তী সরকারে এক যোগে প্রধান মন্ত্রীর পদ দেয়া যেতে পারে। এবং নির্বাচনে অংশগ্রহন কারী প্রত্যেক দলের নির্বাচিত সদস্যের মধ্য হতে আনুপাতিক হারে সদস্য নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার

গঠন করা যেতে পারে।

৫ এতেও সুরাহা না হলে প্রেসিডেন্টের নিকট বর্তমান সরকারের পদত্যাগ করা, এবং প্রেসিডেন্ট তিন বাহিনী প্রধানের সাথে আলোচনা করে অসাংবিধানিক উপায়ে ১/১১ এর ন্যায় অনিদৃষ্ট কালের জন্য অবৈধ সরকার পরিচালনা করা।

৬ লাস্ট বাট নট দি লিস্ট হোল সংসদ অধিবেশন ডেকে সংবিধান সংশোধন করে শুধু এই বার এবং শেষ বারের মত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা। সেক্ষেত্রে বি এন পি কে ঐক্যমতে আসতে হবে যে যতদিন বাংলাদেশ থাকবে এর পরের বার থেকে নির্বাচন কালীন অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন পরিচালিত হবে। নির্দলীয় অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নয়। এই জন্য সব দল মিলে নির্বাচন কমিশনকে সর্বতোভাবে শক্তিশালী করে নিতে

হবে। যাতে করে নির্বাচন কালীন সরকারের প্রধান মন্ত্রীর সর্বময় ক্ষমতা না থাকে।আমার দৃঢ় বিশ্বাস উপরের প্রস্তাবনা সমূহের মধ্যে নিশ্চয়ই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি নিহিত রয়েছে।এতক্ষণে নিশ্চয়ই সুপ্রিয় পাঠক আমার লেখার পুরো শিরপ্নাম বুজতে পেরেছেন এবং তা হোল " হাসিনা খালেদা বাংলাদেশ বাচাও বা হাখা বাবা " বাংলাদেশের জয় হউক।

গীতিকারের সুরে সুর মিলিয়ে চলুন গেয়ে উঠি " তাই গর্জে ওঠো আবারো, পেছনে ফেলে সামনে বাড়ো, জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো, সময়ের লাগাম লাগাম ধরে আগে বাড়ো"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.