নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবতে ভাল লাগে

ভাবুক ভাই

ভাবতে ভাল লাগে

ভাবুক ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহ কর্তৃক গুনাহগার বান্দাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া প্রসংগে তাফহীমুল কুরআনের ব্যাখ্যা

১৯ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:১৪

(আরবী টেক্সটগুলোতে ফন্টজনিত কিছু সমস্যা থাকতে পারে, এছাড়া কিছু টাইপিং mistake থাকতে পারে। আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)



বাকারাঃ

خَتَمَ اللّٰهُ عَلَىٰ قُلُوۡبِهِمۡ وَعَلٰى سَمۡعِهِمۡ‌ؕ وَعَلٰٓى اَبۡصَارِهِمۡ غِشَاوَةٌ‌ۚ وَّلَهُمۡ عَذَابٌ عَظِيۡمٌ

আয়াত ৭) আল্লাহ তাদের হৃদয়ে ও কানে মোহর মেরে দিয়েছেন ৷ ১০ এবং তাদের চোখের ওপর আবরণ পড়ে গেছে ৷ তারা কঠিন শাস্তি পাওয়ার যোগ্য ৷

টীকা ১০ . আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছিলেন বলেই তারা মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল – এটা এ বক্তব্যের অর্থ নয় ৷ বরং এর অর্থ হচ্ছে, যখন তারা ওপরে বর্ণিত মৌলিক বিষয়গুলো প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং নিজেদের জন্য কুরআনের উপস্থাপিত পথের পরিবর্তে অন্য পথ বেছে নিয়েছিল তখন আল্লাহ তাদের হৃদয়ে ও কানে মোহর মেরে দিয়েছিলেন ৷ যে ব্যক্তি কখনো ইসলাম প্রচারের কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন তিনি অবশ্যি এ মোহর লাগার অবস্থার ব্যাপারে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করে থাকবেন ৷আপনার উপস্থাপিত পথ যাচাই করার পর কোন ব্যক্তি একবার যখন তাকে প্রত্যাখ্যান করে তখন উল্‌টো পথে তার মন-মানস এমনভাবে দৌড়াতে থাকে যার ফলে আপনার কোন কথা আর তার বোধগম্য হয় না ৷ আপনার দাওয়াতের জন্য তার কান হয়ে যায় বধির ও কালা ৷ আপনার কার্যপদ্ধতির গুণাবলী দেখার ব্যাপারে তার চোখ হয়ে যায় অন্ধ ৷ তখন সুস্পষ্টভাবে অনুভূত হয় যে , সত্যিই তার হৃদয়ের দুয়ারে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে৷

﴿ اللّٰهُ يَسۡتَهۡزِئُ بِهِمۡ وَيَمُدُّهُمۡ فِىۡ طُغۡيٰنِهِمۡ يَعۡمَهُوۡنَ‏﴾

আয়াত ১৫) আল্লাহ এদের সাথে তামাশা করছেন, এদের রশি দীর্ঘায়িত বা ঢিল দিয়ে যাচ্ছেন এবং এরা নিজেদের আল্লাহদ্রোহিতার মধ্যে অন্ধের মতো পথ হাতড়ে মরছে ৷

﴿ اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ اشۡتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالۡهُدٰى فَمَا رَبِحَتۡ تِّجَارَتُهُمۡ وَمَا كَانُوۡا مُهۡتَدِيۡنَ﴾



আয়াত ১৬) এরাই হিদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহী কিনে নিয়েছে, কিন্তু এ সওদাটি তাদের জন্য লাভজনক নয় এবং এরা মোটেই সঠিক পথে অবস্থান করছে না৷

﴿ مَثَلُهُمۡ كَمَثَلِ الَّذِىۡ اسۡتَوۡقَدَ نَارًا‌ۚ فَلَمَّآ اَضَآءَتۡ مَا حَوۡلَهٗ ذَهَبَ اللّٰهُ بِنُوۡرِهِمۡ وَتَرَكَهُمۡ فِىۡ ظُلُمٰتٍ لَّا يُبۡصِرُوۡنَ﴾

আয়াত ১৭) এদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে, যেমন এক ব্যক্তি আগুন জ্বালালো এবং যখনই সেই আগুন চারপাশ আলোকিত করলো তখন আল্লাহ তাদের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিলেন এবং তাদের ছেড়ে দিলেন এমন অবস্থায় যখন অন্ধকারের মধ্যে তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না৷ ১৬

টীকাঃ ১৬ . যখন আল্লাহর এক বান্দা আলো জ্বালালেন এবং হককে বাতিল থেকে , সত্যেকে মিথ্যা থেকে ও সরল সোজা পথকে ভুল পথ থেকে ছেটে সুস্পষ্টরূপে আলাদা করে ফেললেন তখন চক্ষুষ্মান ব্যক্তিদের কাছে সত্য উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো সুস্পষ্ট দিবালোকের মতো৷ কিন্তু প্রবৃত্তি পূজার অন্ধ মুনাফিকরা এ আলোয় কিছুই দেখতে পেলো না ৷ "আল্লাহ তাদের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিলেন " – বাক্যের কারণে কেউ যেন এ ভুল ধারণা পোষণ না করেন যে, তাদের অন্ধকারে হাতড়ে মরার জন্য তারা নিজেরা দায়ী নয় ৷ যে ব্যক্তি নিজে হক ও সত্যের প্রত্যাশী নয়, নিজেই হিদায়াতের পরিবর্তে গোমরাহীকে নিজের বুকে আঁকড়ে ধরে এবং সত্যের আলোকোজ্জ্বল চেহারা দেখার আগ্রহ যার মোটেই নেই , আল্লাহ তারই দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নেন৷ সত্যের আলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সে নিজেই যখন বাতিলের অন্ধকারে হাতড়ে মরতে চায় তখন আল্লাহও তাকে তারই সুযোগ দেন ৷



আন-আম

﴿وَمِنۡهُمۡ مَّنۡ يَّسۡتَمِعُ اِلَيۡكَ‌‌ۚ وَجَعَلۡنَا عَلٰى قُلُوۡبِهِمۡ اَكِنَّةً اَنۡ يَّفۡقَهُوۡهُ وَفِىۡۤ اٰذَانِهِمۡ وَقۡرًا‌ؕ وَاِنۡ يَّرَوۡا كُلَّ اٰيَةٍ لَّا يُؤۡمِنُوۡا بِهَا‌ؕ حَتّٰۤى اِذَا جَآءُوۡكَ يُجَادِلُوۡنَكَ يَقُوۡلُ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡۤا اِنۡ هٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِيۡرُ الۡاَوَّلِيۡنَ﴾

আয়াত ২৫) এদের কিছু লোক কান পেতে তোমার কথা শোনে কিন্তু অবস্থা হচ্ছে এই যে, আমি তাদের অন্তরের ওপর আবরণ ফেলে দিয়েছি যার ফলে তারা এর কিছুই বোঝেনা এবং তাদের কানে ভার রেখে দিয়েছি ( যার ফলে সবকিছু শোনার পরও তারা কিছুই শোনে না)৷ ১৭ তারা যে নিদর্শনই প্রত্যক্ষ করুক তার ওপর ঈমান আনবে না৷ এমনকি যখন তারা তোমার কাছে এসে তোমার সাথে ঝগড়া করে তখন তাদের মধ্য থেকে যারা অস্বীকার করার সিন্ধান্ত করে ফেলেছে তারা (সমস্ত কথা শোনার পর) একথাই বলে যে, এটি প্রাচীন কালের একটি গালগল্প ছাড়া আর কিছুই নয়৷ ১৮



টীকা ১৭. এখানে একথাটি সামনে রাখতে হবে যে, প্রাকৃতিক আইনের আওতায় দুনিয়ায় যা কিছু ঘটে সবকিছুকেই আল্লাহ নিজের কাজ বলে দাবী করেন৷ কারণ এ আইন আসলে আল্লাহর তৈরী এবং এর আওতায় যা কিছু সংঘটিত হয় তা মূলত আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমেই বাস্তব রূপ লাভ করে৷ হঠকারী ও সত্য অস্বীকারকারীদের সবকিছু শোনার পরও কিছু না শোনা এবং সত্যের আহবায়কের কোন কথা তাদের মনের গহনে প্রবেশ না করা তাদের একগুঁয়েমি, গোঁড়ামি ও স্তবিরকতার স্বাভাবিক ফল৷ যে ব্যক্তি জিদ ও হঠকারিতার শিকার হয় এবং সকল প্রকার পক্ষপাতিত্ব ও একদেশদর্শিতা পরিহার করে সত্যনিষ্ট মানুষেরর দৃষ্টিভংগী অবলম্বন করতে প্রস্তুত হয় না৷ তার মনের দরজা তার কামনা ও প্রবৃত্তি বিরোধী প্রতিটি সত্যের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, এটিই প্রকৃতির আইন৷ একথাটি বলার সময় আমরা বলি, অমুক ব্যক্তির মনের দুয়ার বন্ধ হয়ে গেছে৷ আর আল্লাহ একথাটি বলার সময় বলেন, তার মনের দরজা আমি বন্ধ করে দিয়েছি৷ কারণ আমরা কেবলমাত্র ঘটনা বর্ণনা করি আর আল্লাহ বর্ণনা করেণ ঘটনার অভ্যন্তরেরর প্রকৃত সত্য৷

টীকাঃ ১৮. মূর্খ ও নির্বোধদের সত্যের দিকে আহবান জানালে তারা সাধারণত বলে থাকে, তুমি আর নতুন কথা কি বললে? এসব তো সে পুরনো কথা যা আমরা আগে থেকেই শুনে আসছি৷ যেন এ নির্বোধের মতে কোন কথা সত্য হতে হলে তা একবারে আনকোরা নতুন হওয়া চাই এবং পুরনো কোন কথা সত্য হতে পারে না৷ অথচ সত্য প্রতি যুগেই এক এবং চিরকাল একই থাকবে৷ আল্লাহর দেয়া জ্ঞানের ভিত্তিতে যারা মানব জাতিকে পথ দেখাবার জন্য এগিয়ে এসেছেন তারা ইতিহাসের এই জ্ঞানের উৎস থেকে লাভবান হয়ে কিছু পেশ করবেন তিনিও এই একই পুরনো কথার পুনরাবৃত্তিই করবেন৷ অবশ্যি নতুন ও উদ্ভট অলীক কথা কেবল তারাই উদ্ভাবন করতে পারবেন যারা আল্লাহর আলোক থেকে বঞ্চিত হয়ে আদি ও চিরন্তন সত্য প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হবেন এবং নিজেদের কিছু মনগড়া মতবাদকে সত্যের নামে মানুষের সামনে উপস্থাপন করবেন৷ এ ধরনের লোকেরাই নিসন্দেহে এমন নতুন ও আজগুবী কথা বলতে পারেন, যা তাদের পূর্বে দুনিয়ার কেউ কোনদিন বলেনি৷

﴿وَالَّذِيۡنَ كَذَّبُوۡا بِاٰيٰتِنَا صُمٌّ وَّبُكۡمٌ فِىۡ الظُّلُمٰتِ‌ؕ مَنۡ يَّشَاِ اللّٰهُ يُضۡلِلۡهُؕ وَمَنۡ يَّشَاۡ يَجۡعَلۡهُ عَلٰى صِرَاطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ﴾

আয়াত ৩৯) কিন্তু যারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা বলে তারা বধীর ও বোবা, তারা অন্ধকারে ডুবে আছে,২৭ আল্লাহ যাকে চান বিপথগামী করেন আবার যাকে চান সত্য সরল পথে পরিচালিত করেন৷২৮

টীকা ২৭. অর্থাৎ তোমরা যদি নিছক তামাশা দেখার জন্য নয় বরং এ নবী যে বিষয়ের দিকে আহবান জানাচ্ছেন তা সত্য কিনা যথার্থই তা জানার জন্য নিদর্শন দেখতে চাও, তাহলে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখো, তোমাদের চারদিকে অসংখ্য নিদর্শন ছড়িয়ে আছে৷ পৃথিবীর বুকে বিচরণশীল প্রাণীকুল এবং শূন্যে উড়ে চলা পাখিদের কোন একটি শ্রেণীকে নিয়ে তাদের জীবন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করো৷ দেখো, কীভাবে তাদেরকে অবস্থা ও পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তাদের আকৃতি নির্মাণ করা হয়েছে৷ কীভাবে তাদের জীবিকা দানের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কীভাবে তাদের জন্য ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷ তারা তার সীমানা পেরিয়ে এগিয়ে যেতেও পারে না, পিছিয়ে আসতেও পারে না৷ কীভাবে তাদের এক একটি প্রাণীকে এবং এক একটি ছোট ছোট কীট-পতংগকেও তার নিজের স্থানে সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পথপ্রদর্শণ করা হচ্ছে৷ কীভাবে একটি নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী তার থেকে কাজ আদায় করে নেয়া হচ্ছে৷ কীভাবে তাকে একটি নিয়ম-শৃংখলার আওতাধীন করে রাখা হয়েছে৷ কীভাবে তার জন্ম, মৃত্যু ও বংশ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা যথা নিয়মে চলছে৷ আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শনের মধ্য থেকে যদি কেবলমাত্র এ একটি নিদর্শন সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করো তাহলে তোমরা জানতে পারবে যে, আল্লাহর একত্ব এবং তাঁর গুণাবলীর যে ধারণা এ নবী তোমাদের সামনে পেশ করছেন এবং সে ধারণা অনুযায়ী দুনিয়ার জীবন যাপন করার জন্য যে কর্মনীতি অবলম্বন করার দিকে তোমাদের আহবান জানাচ্ছেন, তা-ই যথার্থ ও প্রকৃত সত্য৷ কিন্তু তোমরা নিজেদের চোখ মেলে এগুলো দেখও না আর কেউ বুঝাতে এলে তার কথা মেনেও নাও না৷ তোমরা তো মুখ গুঁজে পড়ে আছো মুর্খতার নিকষ অন্ধকারে৷ অথচ তোমরা চাইছো আল্লাহর বিস্ময়কর ক্ষমতার তেলেসমাতি দেখিয়ে তোমরা মন মাতিয়ে রাখা হোক৷

টীকা ২৮. আল্লাহর বিপথগামী করার অর্থ হচ্ছে একজন মুর্খতার ও অজ্ঞতাপ্রিয় ব্যক্তিকে আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অধ্যয়ন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা৷ আর একজন পক্ষপাতদুষ্ট, বিদ্বেষী ও সত্যবিরোধী জ্ঞানান্বেষী কখনো আল্লাহর নিদর্শণ পর্যবেক্ষণ করলেও সত্যের পক্ষে পৌছার নিশানীগুলো তার দৃষ্টির অগোচরে থেকে যাবে এবং বিভ্রান্তির অক্টোপাসে জড়িয়ে ফেলার মতো জিনিসগুলো তাকে সত্য থেকে দূরে টেনে যেতে থাকবে৷ অপরদিকে আল্লাহর হেদায়াত তথা সত্য-সরল পথে পরিচালিত করার অর্থ হচ্ছে এই যে, একজন সত্যান্বেষী ব্যক্তি জ্ঞানের উপকরণসমূহ থেকে লাভবান হবার সুযোগ লাভ করে এবং আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে সত্যের লক্ষ্যে পৌছার নিশানী গুলো লাভ করে যেতে থাকে৷ এ তিনটি অবস্থার অসংখ্যা দৃষ্টান্ত আজকাল প্রায়ই আমাদের সামনে এসে থাকে৷ এমন বহু লোক আছে যাদের সামনে পৃথিবীর বস্তুনিচয় ও প্রাণীকূলের মধ্যে তাদের জন্য আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শণ ছড়িয়ে রয়েছে কিন্তু তারা জন্তু-জানোয়ারের মতো সেগুলো দেখে থাকে এবং সেখান থেকে কোন শিক্ষা গ্রহণ করে না৷ বহু লোক প্রাণীবিদ্যা (Zoology), উদ্ভিদ বিদ্যা (Botany), জীববিদ্যা (Biology), ভূতত্ব (Geology), মহাকাশ বিদ্যা (Astronomy), শরীর বিজ্ঞান (physiology), শবব্যবচ্ছেদ বিদ্যা (Anatomy) এবং বিজ্ঞানের আরো বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় ব্যাপক অধ্যয়ন করেন, ইতিহাস, প্রত্বতত্ব ও সমাজ বিজ্ঞানে গবেষণা করেন এবং এমন সব নির্দশন তাদের সামনে আসে যেগুলো হৃদয়কে ঈমানের আলোয় ভরে দেয়৷ কিন্তু যেহেতু তারা বিদ্বেষ ও পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতা নিয়ে অধ্যায়নের সূচনা করেন এবং তাদের সামনে বৈষয়িক লাভ ছাড়া আর কিছুই থাকে না, তাই এ অধ্যয়ন ও পর্যবেক্ষণকালে তারা সত্যের দোরগোড়ায় পৌছাবার মতো কোন নিদর্শন পায় না৷ বরং তাদের সামনে যে নিদর্শনটিই উপস্থিত হয় সেটিই তাদের নাস্তিকতা, আল্লাহ বিমুখতা, বস্তুবাদিতা ও প্রকৃতিবাদিতার দিকে টেনে নিয়ে যায়৷ তাদের মোকাবিলায় এমন লোকের সংখ্যাও একেবারে নগণ্য নয় যারা সচেতন বুদ্ধি বিবেকের সাথে চোখ মেলে বিশ্ব প্রকৃতির এ সুবিশাল কর্মক্ষেত্র পর্যবেক্ষণ করেন এবং বলে ওঠেন:

''সচেতন দৃষ্টি সমুখে গাছের প্রতিটি সবুজ পাতা

একেকটি গ্রন্থ যেন স্রষ্টা-সন্ধানের এনেছে বারতা"৷



আ’রাফঃ

﴿ اَوَلَمۡ يَهۡدِ لِلَّذِيۡنَ يَرِثُوۡنَ الۡاَرۡضَ مِنۡۢ بَعۡدِ اَهۡلِهَاۤ اَنۡ لَّوۡ نَشَآءُ اَصَبۡنٰهُمۡ بِذُنُوۡبِهِمۡ‌ۚ وَنَطۡبَعُ عَلٰى قُلُوۡبِهِمۡ فَهُمۡ لَا يَسۡمَعُوۡنَ‏﴾

আয়াত ১০০) পৃথিবীর পূর্ববর্তী অধিবাসীদের পর যারা তার উত্তরাধিকারী হয়, তারা কি এ বাস্তবতা থেকে ততটুকুও শেখেনি যে আমি চাইলে তাদের অপরাধের দরুন তাদেরকে পাকড়াও করতে পারি৷ ৭৯ (কিন্তু তারা শিক্ষনীয় বিষয়াবলীর ব্যাপারে অবজ্ঞা ও অবহেলা প্রদর্শন করে থাকে৷) আর আমি তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেই৷ ফলে তার কিছুই শোনে না৷ ৮০

টীকা ৮০. অর্থাৎ যখন তারা ইতিহাস জেনে এবং শিক্ষনীয় ধ্বংসস্তুপ প্রত্যক্ষ করেও শিক্ষা গ্রহণ করে না এবং নিজেরাই নিজেদের কে বিস্মৃতির মধ্যে নিক্ষেপ করে তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের চিন্তা করার বুঝার ও কোন উপদেশ দাতার উপদেশ শুনার সুযোগ মেলে না৷ যে ব্যক্তি নিজের চোখ বন্ধ করে নেয়, প্রখর সূর্যালোকেও তার চোখ আলো ছড়াতে পারে না এবং যে ব্যক্তি নিজে শুনতে চায় না তাকে আর কেউ শুনাতে পারে না, এটিই আল্লাহর অমোঘ প্রাকৃতিক আইন৷

তাওবাঃ

﴿رَضُوۡا بِاَنۡ يَّكُوۡنُوۡا مَعَ الۡخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلٰى قُلُوۡبِهِمۡ فَهُمۡ لَا يَفۡقَهُوۡنَ﴾

আয়াত ৮৭) তারা গৃহবাসীনি মেয়েদের সাথে শামিল হয়ে ঘরে থাকতে চেয়েছে এবং তাদের দিলে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে৷ তাই তারা কিছুই বুঝতে পারছে না৷ ৮৯

টীকা ৮৯ . অর্থাৎ যদিও এটা বড়ই লজ্জার ব্যাপার ছিল যে, স্বাস্থ্যবান, বলিষ্ঠ, সুঠামদেহী ও সামর্থবান লোকেরা ঈমানদের দাবীদার হওয়া সত্ত্বেও কাজের সময মাঠে ময়দানে বের হবার পরিবর্তে ঘরের মধ্যে ঢুকে বসে থাকবে এবং মেয়েদের দলে শামিল হবে, তবুও যেহেতু এ লোকেরা জেনে বুঝে নিজেদের জন্য এ পথটি পছন্দ করে নিয়েছেল তাই প্রাকৃতিক আইন অনুযায়ী তাদের থেকে এমন সব পবিত্র অনুভূতি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে যেগুলোর উপস্থিতিতে মানুষ এ ধরনের ঘৃন্য আচরণ করতে লজ্জাবোধ করে৷

﴿ وَّلَا عَلَى الَّذِيۡنَ اِذَا مَاۤ اَتَوۡكَ لِتَحۡمِلَهُمۡ قُلۡتَ لَاۤ اَجِدُ مَاۤ اَحۡمِلُكُمۡ عَلَيۡهِ تَوَلَّوا وَّاَعۡيُنُهُمۡ تَفِيۡضُ مِنَ الدَّمۡعِ حَزَنًا اَلَّا يَجِدُوۡا مَا يُنۡفِقُوۡنَؕ‏﴾

আয়াত ৯২) অনুরূপভাবে তাদের বিরুদ্ধে ও অভিযোগের কোন সুযোগ নেই যারা নিজেরা এসে তোমার কাছে আবেদন করেছিল, তাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করতে কিন্তু তুমি বলেছিলে আমি তোমাদের জন্য বাহনের ব্যবস্থা করতে পারছি না৷ তখন তারা বাধ্য হয়ে ফিরে গিয়েছিল৷ তখন তাদের অবস্থা এ ছিল যে , তাদের চোখে দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল এবং নিজেদের অর্থ ব্যয়ে জিহাদে শরীক হতে অসমর্থ হবার দরূন তাদের মনে বড়ই কষ্ট ছিল৷ ৯৩

﴿إِنَّمَا السَّبِيلُ عَلَى الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ وَهُمْ أَغْنِيَاءُ ۚ رَضُوا بِأَن يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطَبَعَ اللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ﴾

আয়াত ৯৩) অবশ্যি অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে যারা বিত্তশালী হবার পরও জিহাদে অংশগ্রহণ করা থেকে তোমার কাছে অব্যাহতি চাচ্ছে৷ তারা পুরবাসিনীদের সাথে থাকাই পছন্দ করেছে৷ আল্লাহ তাদের দিলে মোহর মেরে দিয়েছেন তাই তারা এখন কিছুই জানে না ৷(যে আল্লাহর কাজে তাদের এহেন কর্মনীতি গ্রহণের ফল কী দাঁড়াবে৷)

ইউনুসঃ

﴿ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِهٖ رُسُلاً اِلٰى قَوۡمِهِمۡ فَجَآءُوۡهُمۡ بِالۡبَيِّنٰتِ فَمَا كَانُوۡا لِيُؤۡمِنُوۡا بِمَا كَذَّبُوۡا بِهٖ مِنۡ قَبۡلُ‌ؕ كَذٰلِكَ نَطۡبَعُ عَلٰى قُلُوۡبِ الۡمُعۡتَدِيۡنَ﴾

আয়াত ৭৪) তারপর নূহের পর আমি বিভিন্ন পয়গম্বরকে তাদের কওমের কাছে পাঠাই এবং তারা সুষ্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে তাদের কাছে আসে৷ কিন্তু যে জিনিসকে তারা আগেই মিথ্যা বলেছিল তাকে আর মেনে নিতে প্রস্তুত হলো না৷ এভাবে আমি সীমা অতিক্রমকারীদের দিলে মোহর মেরে দেই৷ ৭১

৭১ . সীমা অতিক্রমকারী লোক তাদেরকে বলে যারা একবার ভূল করার পর আবার নিজের কথার বক্রতা , একগুয়েমী ও হকগুয়েমী, ও হঠকারীতার কারণে নিজের ভূলের ওপর অবিচল থাকে এবং যে কথা মেনে নিতে একবার অস্বীকার করেছে তাকে আর কোন প্রকার উপদেশ অনুরোধ -উপরোধ ও কোন উন্নত থেকে উন্নত পর্যায়ের যুক্তি প্রদানের মাধ্যমে মেনে নিতে চায় না৷ এ ধরনের লোকদের ওপর শেষ পর্যন্ত আল্লাহর এমন লানত পড়ে যে, তাদের আর কোনদিন সঠিক পথে চলার সুযোগ হয় না৷

রাদঃ

﴿وَيَقُوۡلُ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا لَوۡلَاۤ اُنۡزِلَ عَلَيۡهِ اٰيَةٌ مِّنۡ رَّبِّهٖؕ قُلۡ اِنَّ اللّٰهَ يُضِلُّ مَنۡ يَّشَآءُ وَيَهۡدِىۡۤ اِلَيۡهِ مَنۡ اَنَابَ‌ۖ‌ۚ﴾

আয়াত ২৭) যারা (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাত মেনে নিতে) অস্বীকার করেছে তারা বলে, “এ ব্যক্তির কাছে এর রবের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেন ?” ৪৩ বলো, আল্লাহ যাকে চান গোমরাহ করে দেন এবং তিনি তাকেই তাঁর দিকে আসার পথ দেখান যে তাঁর দিকে রুজু করে৷ ৪৪

৪৪. অর্থাৎ যে নিজেই আল্লাহর দিকে রুজু হয় না বরং তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাকে জোর করে সত্য-সঠিক পথ দেখানো আল্লাহর রীতি নয়৷ এ ধরনের লোকেরা সত্য-সঠিক পথ পরিত্যাগ করে উদভ্রান্তের মতো যেসব ভুল পথে ঘুরে বেড়াতে চায় আল্লাহ তাদেরকে সেই সব পথে ঘুরে বেড়াবার সুযোগ দান করেন৷ একজন সত্য-সন্ধানীর জন্য যেসব কার্যকারণ সত্য পথলাভের সহায়ক হয়, একজন অসত্য ও ভ্রান্ত পথ প্রত্যাশী ব্যক্তির জন্য সেগুলো বিভ্রান্তি ও গোমরাহীর কারণে পরিণত করে দেয়া হয়৷ উজ্জ্বল প্রদীপ তার সামনে এলেও তা তাকে পথ দেখাবার পরিবর্তে তার চোখকে অন্ধ করে দেবার কাজ করে৷ আল্লাহ কর্তৃক কোন ব্যক্তিকে গোমরাহ করার অর্থ এটাই৷

নিদর্শন দেখতে চাওয়ার জবাবে একথা বলা নজিরবিহীন বাকশৈলীর পরিচায়ক৷ তারা বলছিল, কোন নিদর্শন দেখাও, তাহেল আমরা তোমার কথা বিশ্বাস করতে পারি৷ জবাবে বলা হয়েছে, মূর্খের দল! তোমাদের সত্য পথ না পাওয়ার আসল কারণ এ নয় যে, তোমাদের সামনে কোন নিদর্শন নেই বরং এর কারণ হচ্ছে, তোমাদের মধ্যে সত্য পথ লাভের কোন আকাংখাই নেই৷ নিদর্শন তো চতুরদিকে অসংখ্য ছড়িয়ে আছে৷ কিন্তু সেগুলোর কোনটিই তোমাদের পথপ্রদর্শকে পরিণত হয় না৷ কারণ আল্লাহর পথে চলার ইচ্ছাই তোমাদের নেই৷ এখন যদি কোন নিদর্শক আসে তাহলে তা তোমাদের জন্য কেমন করে উপকারী হতে পারে? কোন নিদর্শন দেখানো হয়নি বলে তোমরা অভিযোগ করছো৷ কিন্তু যারা আল্লাহর পথের সন্ধান করে ফিরছে তারা নিদর্শন দেখতে পাচ্ছে এবং নিদর্শনসমূহ দেখেই তারা সত্য পথের সন্ধান লাভ করছে৷

ইব্রাহীমঃ

﴿وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا بِلِسَانِ قَوۡمِهٖ لِيُبَيِّنَ لَهُمۡ‌ؕ فَيُضِلُّ اللّٰهُ مَنۡ يَّشَآءُ وَيَهۡدِىۡ مَنۡ يَّشَآءُ‌ؕ وَهُوَ الۡعَزِيۡزُ الۡحَكِيۡمُ﴾

আয়াত ৪) আমি নিজের বাণী পৌছাবার জন্য যখনই কোন রসূল পাঠিয়েছি, সে তার নিজের সম্প্রদায়েরই ভাষায় বাণী পৌছিয়েছে, যাতে সে তাদেরকে খুব ভালো করে পরিষ্কারভাবে বুঝাতে পারে৷ ৫ তারপর আল্লাহ যাকে চান তাকে পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হেদায়াত দান করেন৷ ৬ তিনি প্রবল পরাক্রান্ত ও জ্ঞানী৷৭

টীকা ৬. অর্থাৎ সমগ্র জাতি যে ভাষা বোঝে নবী সে ভাষায় তার সমগ্র প্রচার কার্য পরিচালনা ও উপদেশ দান করা সত্ত্বেও সবাই হেদায়াত লাভ করে না৷ কারণ কোন বাণী কেবলমাত্র সহজবোধ্য হলেই যে, সকল শ্রোতা তা মেনে নেবে এমন কোন কথা নেই৷ সঠিক পথের সন্ধান লাভ ও পথভ্রষ্ট হওয়ার মূল সূত্র রয়েছে আল্লাহর হাতে৷ তিনি যাকে চান নিজের বাণীর সাহায্যে সঠিক পথে পরিচালিত করেন এবং যার জন্য চান এ একই বাণীকে তার জন্য পথভ্রষ্টাতার উপকরণে পরিণত করেন৷

টীকা ৭. অর্থাৎ লোকেরা নিজে নিজেই সৎপথ লাভ করবে বা পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে, এটা সম্ভব নয়৷ কারণ তারা পুরোপুরি স্বাধীন নয়৷ বরং আল্লাহর কর্তৃত্বের অধীন৷ কিন্তু আল্লাহ নিজের এ কর্তৃত্বের অধীন৷ কিন্তু আল্লাহ নিজের এ কর্তৃত্বের অন্ধের মতো প্রয়োগ করেন না৷ কোন যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই তিনি যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দান করবেন এবং যাকে ইচ্ছা প্রথভ্রষ্ট করবেন এটা তাঁর রীতি নয় কর্তৃত্বশীল ও বিজয়ী হওয়ার সাথে সাথে তিনি জ্ঞানী এবং প্রাজ্ঞাও৷ তাঁর কাছ থেকে কোন বঞ্চিত করে ভ্রষ্টতার মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয় সে নিজেই নিজের ভ্রষ্টতাপ্রীতির কারণে এহেন আচরণ লাভের অধিকারী হয়৷

﴿يُثَبِّتُ اللّٰهُ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا بِالۡقَوۡلِ الثَّابِتِ فِىۡ الۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا وَفِىۡ الۡاٰخِرَةِ‌ۚ وَيُضِلُّ اللّٰهُ الظّٰلِمِيۡنَ‌ۙ وَيَفۡعَلُ اللّٰهُ مَا يَشَآءُ‏﴾

আয়াত ২৭) ঈমানদারদেরকে আল্লাহ একটি শাশ্বত বাণীর ভিত্তিতে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানে প্রতিষ্ঠা দান করেন৷ ৩৯ আর জালেমদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন৷ ৪০ আল্লাহ যা চান তাই করেন৷

টীকা ৪০. অর্থাৎ যেসব জালেম কালেমায়ে তাইয়েবা বাদ দিয়ে কোন মন্দ কালেমার অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের বুদ্ধিবৃত্তি ও মন-মানসকে দিশেহারা করে দেন এবং তাদের প্রচেষ্টাবলীর মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টি করেন৷ তারা কোন দিক দিয়েও চিন্তা কর্মের সঠিক পথে পাড়ি জমাতে পারে না৷ তাদের কোন তীরও সঠিক লক্ষ্যস্থলে লাগে না৷

নাহলঃ

﴿ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمُ اسۡتَحَبُّوۡا الۡحَيٰوةَ الدُّنۡيَا عَلَى الۡاٰخِرَةِۙ وَاَنَّ اللّٰهَ لَا يَهۡدِىۡ الۡقَوۡمَ الۡكٰفِرِيۡنَ‏﴾

আয়াত ১০৭) এটা এজন্য যে, তারা আখেরাতের মুকাবিলায় দুনিয়ার জীবন পছন্দ করে নিয়েছে এবং আল্লাহর নিয়ম হলো, তিনি এমনসব লোককে মুক্তির পথ দেখান না যারা তাঁর নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়৷

﴿ اُولٰۤٮِٕكَ الَّذِيۡنَ طَبَعَ اللّٰهُ عَلٰى قُلُوۡبِهِمۡ وَسَمۡعِهِمۡ وَاَبۡصَارِهِمۡ‌ۚ وَاُولٰۤٮِٕكَ هُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ‏﴾

আয়াত ১০৮) এরা হচ্ছে এমনসব লোক যাদের অন্তর, কান ও চোখের ওপর আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন৷ এরা গাফলতির মধ্যে ডুবে গেছে৷

﴿ لَا جَرَمَ اَنَّهُمۡ فِىۡ الۡاٰخِرَةِ هُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ﴾

আয়াত ১০৯) নিসন্দেহে আখেরাতে এরাই ক্ষতিগ্রস্ত১১০

টীকা ১১০. যারা সত্যের পথ কঠিন করে দেখে ঈমান থেকে ফিরে গিয়েছিল এবং তারপর নিজেদের কাফের ও মুশরিক জাতির সাথে মিশে গিয়েছিল তাদের জন্য এ বাক্যাংশটি বলা হয়েছে ৷

ইসরাঈলঃ

﴿ وَاِذَا قَرَاۡتَ الۡقُرۡاٰنَ جَعَلۡنَا بَيۡنَكَ وَبَيۡنَ الَّذِيۡنَ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَةِ حِجَابًا مَّسۡتُوۡرًاۙ‏﴾

আয়াত ৪৫) যখন তুমি কুরআন পড়ো তখন আমি তোমার ও যারা আখেরাতের প্রতি ঈমান আনে না তাদের মাঝখানে একটি পর্দা ঝুলিয়ে দেই৷৫১

টীকা ৫১. অর্থাৎ আখেরাতের প্রতি ঈমান আনার স্বাভাবিক ফলশ্রুতিতে মানুষের মনের দরজায় তালা লেগে যায় এবং কুরআন যে দাওয়াত পেশ করে তার কানে তা প্রবেশ করে না ৷ কুরআনের দাওয়াতের মূল কথাই তো হচ্ছে এই যে, দুনিয়াবী জীবনের বাইরের দিকটি দেখে প্রতারিত হয়ো না ৷ এখানে কোন হিসেব ও জবাব গ্রহণকারীর অস্তিত্ব দৃষ্টিগোচর না হলেও একথা মনে করো না যে, তোমাকে কারো সামনে নিজের দায়িত্বপালনের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে না ৷ এখানে যদি কুফরী, শিরক, নাস্তিক্যবাদ, তাওহীদ ইত্যাদি সবরকমের মতবাদ স্বাধীনভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে এবং এর ফলে পার্থিব দৃষ্টিতে কোন বিশেষ ফারাক দেখা দেয় না বলে মনে হয়, তাহলে একথা মনে করো না যে, তাদের কোন আলাদা ও স্থায়ী ফলাফলই নেই ৷ এখানে যদি ফাসেকী ও অনাচারমূলক এবং আনুগত্য ও তাকওয়ার সবরকম কর্মনীতি অবলম্বন করা যেতে পারে এবং বাস্তব এদের মধ্য থেকে কোন একটি কর্মনীতির কোন অনিবার্য ফল দেখা না দেয়, তাহলে ও একথা মনে করো না যে আদতে কোন কার্যকর ও অপরিবর্তনশীল নৈতিক আইন নেই ৷ আসলে হিসেব নেয়া ও জাবাবদিহি করা সবকিছুই হবে কিন্তু তা হবে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে ৷ একমাত্র তাওহীদের মতবাদ সত্য ও স্থায়ীত্ব লাভকারী এবং বাদবাকি সব মতবাদই বাতিল ৷ কিন্তু তাদের আসল ও চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হবে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে এবং এ বাহ্যিক পর্দার পেছনে যে সত্য লুকিয়ে আছে তা সেখানে প্রকাশিত হবে ৷ একটি অনড় ও অপরিবর্তনশীল নৈতিক আইন নিশ্চয়ই আছে যার দৃষ্টিতে পাপাচার মানুষের জন্য ক্ষতিকর এবং আল্লাহর আনুগত্য লাভজনক ৷ কিন্তু সেই আইন অনুযায়ী শেষ ও চূড়ান্ত ফায়সালাও হবে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে ৷ কাজেই তোমরা দুনিয়ার এ সাময়িক জীবনের মোহে মুগ্ধ হয়ে যেয়ো না এবং এর সন্দেহপূর্ণ ফলাফলের ওপর নির্ভর করো না ৷ বরং সবশেষে নিজেদের অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন রবের সামনে তোমাদের যে জবাবদিহি করতে হবে সেদিকে নজর রাখো এবং যে সঠিক আকীদাগত ও নৈতিক দৃষ্টিভংগী তোমাদের আখেরাতের পরীক্ষায় সফলকাম করবে তা অবলম্বন করো ৷-এ হচ্ছে কুরআনের দাওয়াত ৷ এখন যে ব্যক্তি আদৌ আখেরাতকেই মেনে নিতে প্রস্তুত নয় এবং এ দুনিয়ার ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য ও অভিজ্ঞতালব্ধ যাবতীয় বস্তু বিষয়ের মধ্যেই যার সমস্ত আস্থা ও বিশ্বাস সীমাবদ্ধ, সে কখনো কুরআনের এ দাওয়াতকে বিবেচনাযোগ্য মনে করতে পারে না ৷ এ আওয়াজ হামেশা তার কানের পর্দায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে উৎক্ষিপ্ত হতে থাকবে, কখনো মনোরাজ্যে প্রবশে করার পথ পাবে না ৷ এটি একটি মনস্তাত্বিক সত্য ৷ সর্বশক্তিমান আল্লাহ এ মনস্তাত্বিক সত্যকে এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, যে ব্যক্তি আখেরাত মানে না আমি তার অন্তর ও কান কুরআনের দাওয়াতের জন্য বন্ধ করে দিই ৷ অর্থাৎ এটি আমার প্রাকৃতিক আইন ৷ আখেরাত অস্বীকারকারীর ওপর এ আইনটি এভাবে প্রবর্তিত হয় ৷ একথাও মনে থাকা দরকার যে, এটি মক্কার কাফেরদের নিজেদেরই উক্তি ছিল ৷ আল্লাহ তাদের কথাটি তাদের ওপর উল্টে দিয়েছেন মাত্র ৷ সূরা ' হা -মীম-সাজদা'য় তাদের এ উক্তি উদ্ধৃত হয়েছে:

﴿وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ وَفِي آذَانِنَا وَقْرٌ وَمِن بَيْنِنَا وَبَيْنِكَ حِجَابٌ فَاعْمَلْ إِنَّنَا عَامِلُونَ﴾

অর্থাৎ "তারা বলে হে মুহাম্মাদ ! তুমি যে জিনিসের দিকে দাওয়াত দিচ্ছো, তার জন্য আমাদের মনের দুয়ার বন্ধ, আমাদের কান বধির এবং আমাদের ও তোমার মধ্যে অন্তরাল সৃষ্টি হয়ে গেছে ৷ কাজেই তুমি তোমার কাজ করো, আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি"৷ (আয়াত: ৫)

এখানে তাদের এ উক্তিটির পুনরাবৃত্তি করে আল্লাহ বলছেন, এই যে অবস্থাটিকে তোমরা নিজেদের প্রশংসার্হ গুণ মনে করে বর্ণনা করছো, এটিতো আসলে একটি অভিশাপ, তোমাদের আখেরাত অস্বীকৃতির বদৌলতে যথার্থ প্রাকৃতিক বিধান অনুযায়ী এটি তোমাদের ওপর পড়ছে ৷

রূমঃ

﴿ وَلَقَدۡ ضَرَبۡنَا لِلنَّاسِ فِىۡ هٰذَا الۡقُرۡاٰنِ مِنۡ كُلِّ مَثَلٍ‌ؕ وَلَٮِٕنۡ جِئۡتَهُمۡ بِاٰيَةٍ لَّيَقُوۡلَنَّ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡۤا اِنۡ اَنۡتُمۡ اِلَّا مُبۡطِلُوۡنَ‏﴾

আয়াত ৫৮) আমি এ কুরআনে বিভিন্নভাবে লোকদেরকে বুঝিয়েছি৷ তুমি যে কোন নিদর্শনই আনো না কেন, অবিশ্বাসীরা একথাই বলবে, তোমরা মিথ্যাশ্রয়ী৷

﴿كَذٰلِكَ يَطۡبَعُ اللّٰهُ عَلٰى قُلُوۡبِ الَّذِيۡنَ لَا يَعۡلَمُوۡنَ﴾

আয়াত ৫৯) এভাবে যারা জ্ঞানহীন তাদের অন্তরে আল্লাহ মোহর মেরে দেন৷

﴿ فَاصۡبِرۡ اِنَّ وَعۡدَ اللّٰهِ حَقٌّ‌ وَّلَا يَسۡتَخِفَّنَّكَ الَّذِيۡنَ لَا يُوۡقِنُوۡنَ‏﴾

আয়াত ৬০) কাজেই ( হে নবী!) সবর করো, অবশ্যই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য ৮৪ এবং যারা বিশ্বাস করে না তারা যেন কখনোই তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে৷ ৮৫

টীকা ৮৪ . ওপরের ৪৭ নং আয়াতে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে৷ সেখানে মহান আল্লাহ নিজের এ নিয়ম বর্ণনা করেছেন যে, যারাই আল্লাহর রসূলদের নিয়ে আসা এসব সুস্পষ্ট নিদর্শনের মোকাবিলা করেছে মিথ্যাচার, হাসি-তামাসা ও হঠকারিতাঁর মাধ্যমে আল্লাহ অবশ্যই এ ধরনের অপরাধীদের থেকে প্রতিশোধ নিয়েছেন৷ ----------আর আল্লাহ মুমিনদের সাহায্য করবেন এটা তাঁর ওপর মু'মিনদের অধিকার---------------৷

ফাতেরঃ

﴿ اَفَمَنۡ زُيِّنَ لَهٗ سُوۡٓءُ عَمَلِهٖ فَرَاٰهُ حَسَنًاؕ فَاِنَّ اللّٰهَ يُضِلُّ مَنۡ يَّشَآءُ وَيَهۡدِىۡ مَنۡ يَّشَآءُ‌ۖ فَلَا تَذۡهَبۡ نَفۡسُكَ عَلَيۡهِمۡ حَسَرٰتٍؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِيۡمٌۢ بِمَا يَصۡنَعُوۡنَ﴾

আয়াত ৮) এমন ১৫ ব্যক্তির বিভ্রান্তির কোন শেষ আছে কি) যার জন্য তার খারাপ কাজকে শোভন করে দেয়া হয়েছে এবং সে তাকে ভালা মনে করছে? ১৬ আসলে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্তিতে লিপ্ত করেন এবং তাকে চান সঠিক পথ দেখিয়ে দেন৷ কাজেই (হে নবী!) অযথা ওদের জন্য দুঃখে ও শোকে তুমি প্রাণপাত কর না৷ ১৭ ওরা যা কিছু করছে আল্লাহ তা ভালোভাবে জানেন৷১৮

টীকা ১৬. অর্থাৎ এমন এক ধরনের বিভ্রান্ত ও দুস্কৃতকারী লোক আছে যে খারাপ কাজ করে ঠিকই কিন্তু সে জানে এবং স্বীকার করে যে সে যা কিছু করছে খারাপই করছে৷ এ ধরনের লোককে বুঝালেও ঠিক হয়ে যেতে পারে এবং কখনো নিজের বিবেকের তাড়নায় ও সে সঠিক পথে চলে আসতে পারে৷ কারণ তার শুধুমাত্র অভ্যাসই বিগড়েছে, মন মানসিকতা বিগড়ে যায়নি৷ কিন্তু আর এক ধরনের দুস্কৃতকারী আছে, যার মন মানসিতকাই বিগড়ে গেছে৷ তার ভালমন্দের পার্থক্যবোধই খতম হয়ে গেছে৷ গোনাহের জীবন তার কাছে প্রিয় ও গৌরবময়৷ সৎকাজকে সে ঘৃনা করে এবং অসৎকাজকে যথার্থ সভ্যতা ও সংস্কৃতি মনে করে৷ সৎবৃত্তি ও তাকওয়াকে সে প্রাচীনত্ব এবং আল্লাহর হুকুম অমান্য করা ও অশ্লীল কাজ করাকে প্রগতিশীলতা মনে করে৷ তার দৃষ্টিতে হিদায়াত গোমরাহীতে এবং গোমরাহ হিদায়াতে পরিণত হয়৷ এ ধরনের লোকের ওপর কোন উপদেশ কার্যকর হয় না৷ সে নিজের নির্বুদ্ধিতার ওপর নিজেই সতর্ক হয় না এবং কেউ তাকে বোঝালেও বোঝে না৷ এ ধরনের লোকের পেছনে লেগে থাকা অর্থহীন৷ তাকে সৎপথে আনার চিন্তায় প্রাণপাত না করে সত্যের আহবায়ককে এমনসব লোকের প্রতি দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন যাদের বিবেক এখনো বেঁচে আছে এবং যারা সত্যের আহবানের জন্য নিজেদের মনের দুয়ার বন্ধ করে দেয়নি৷

টীকা ১৭. আগের বাক্য এবং এ বাক্যের মাঝখানে আল্লাহ যাকে চান গোমরাহীতে লিপ্ত করেন এবং যাকে চান সঠিক পথ দেখান- একথা বলা পরিস্কারভাবে এ অর্থই প্রকাশ করছে যে, যারা এতদূর মানবিক বিকৃতির শিকার হয় আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন এবং পথহারা হয়ে এমন সব পথে ঘুরে বেড়াবার জন্য তাদেরকে ছেড়ে দেন যেসব ভুল পথে ঘুরে বেড়ানোর জন্য তারা নিজেরাই জিদ ধরে৷ এ সত্যটি বুঝিয়ে দেবার পর মহান আল্লাহ নবী করীম (সা) কে বলেন এ ধরনের লোকদেরকে সঠিক পথে আনার সামর্থ তোমার নেই কাজেই তাদের ব্যাপারে সবর করো এবং আল্লাহ যেমন তাদের পরোয়া করছেন না তেমনি তোমরাও তাদের অবস্থা দেখে দুঃখিত ও শোকাভিভূত হয়ো না৷

এ ক্ষেত্রে দুটি কথা ভালভাবে বুঝে নিতে হবে৷ এক, এখানে যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা সাধারণ লোক ছিল না৷ তারা ছিল মক্কা মু'আযযমার সরদার৷ তারা নবী করীম (সা) এর দাওয়াতকে ব্যর্থ করে দেবার জন্য সব রকমের মিথ্যা প্রতারণা ও ফন্দি-ফিকিরের আশ্রয় নিয়ে চলছিল৷ তারা আসলে নবী করীম (সা) সম্পর্কে কোন ভুল ধারণা করত না৷ তিনি কিসের দিকে দাওয়াত দিচ্ছেন এবং তার মোকাবিলায় তারা নিজেরা কোন ধরনের মূর্খতা ও নৈতিক দুষ্কৃতির প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট রয়েছে তা তারা ভালভাবে জানত৷ এসব কিছু জানার ও বুঝার পর ঠান্ডা মাথায় তাদের সিদ্ধান্ত এই ছিল যে, মুহাম্মাদ (সা) এর কথা চলতে দেয়া যাবে না৷ এ উদ্দেশ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট অস্ত্র এবং সবচেয়ে হীন হাতিয়ার ব্যবহার করতে তারা একটুও কুন্ঠিত ছিল না৷ এখন একথা সুষ্পষ্ট, যারা জেনে বুঝে এবং নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে প্রতিদিন একটি নতুন মিথ্যা রচনা করে এবং কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তা ছড়িয়ে বেড়ায় তারা সারা দুনিয়ার মানুষকে ধোকা দিতে পারে কিন্তু নিজেকে তো তারা মিথ্যুক বলে জানে এবং তাদের নিজেদের কাছে একথা গোপন থাকে না যে, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে তারা একটি অপবাদ দিয়েছে সে তা থেকে মুক্ত৷ তারপর যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ মিথ্যা হাতিয়ার ব্যবহার করা হচ্ছে সে যদি এর জবাবে কখন সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে সরে গিয়ে কোন কথা না বলে তাহলে এ জালেমদের কাছে ও একথা কখনো গোপন থাকতে পারে না যে, তাদের মোকাবিলায় যিনি দাড়িয়ে আছেন তিনি একজন সত্যবাদী ও নিখাদ পুরুষ৷ এরপর ও নিজেদের কৃতকর্মের জন্য যারা এতটুকু লজ্জিত হয় না এবং অনবরত মিথ্যার মাধ্যমে সত্যের মোকাবিলা করে যেতে থাকে, তাদের এ নীতি নিজেই একথার সাক্ষ বহন করে যে, আল্লাহ লানত তাদের ওপর পড়েছে এবং ভালমন্দের কোন পার্থক্য বোধ তাদের মধ্যে নেই৷

দ্বিতীয় যে কথাটি এ প্রসংগে বুঝে নিতে হবে সেটি হচ্ছে এই যে, নিছক স্বীয় রসূল পাককে কাফেরদের প্রকৃত অবস্থা উপলদ্ধি করানই যদি আল্লাহর লক্ষ্য হত, তাহলে তিনি গোপনে কেবলমাত্র তাকেই একথা বুঝাতে পারতেন৷ এ উদ্দেশ্যে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে সুষ্পষ্ট অহীর মাধ্যমে তার উল্লেখের প্রয়োজন ছিল না৷ কুরআন মজীদে একথা বর্ণনা করবার এবং সারা দুনিয়ার মানুষকে তা শুনিয়ে দেবার উদ্দেশ্যই ছিল আসলে সাধারণ মানুষকে এই মর্মে সতর্ক করে দেয়া যে, যেসব নেতার পেছনে তোমরা চোখ বন্ধ করে ছুটে চলছো তারা কতখানি বিবৃত মানসিকতা সম্পন্ন লোক তাদের বেহুদা কাজকর্ম কেমন চিৎকার করে করে বলছে যে, তাদের ওপর আল্লাহর লানত পড়েছে৷

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:২৮

রিজ বলেছেন: ভাই এত বড় পোস্ট পড়ার সময় কই? বড় পোস্ট গুলো পর্ব আকারে কয়েক কিস্তিতে দিলে মনে হয় ভাল হয়।
by the way, জ্ঞান গর্ভ মূলক পোস্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:২৯

রিজ বলেছেন: ভাই এত বড় পোস্ট পড়ার সময় কই? বড় পোস্ট গুলো পর্ব আকারে কয়েক কিস্তিতে দিলে মনে হয় ভাল হয়।
by the way, জ্ঞান গর্ভ মূলক পোস্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.