![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নেহালের পায়ের নিচে কলমটা পড়েছে! কিন্তু নেহাল সেদিকে কোন খেয়াল না করে গরুর মত লিখে যাচ্ছে! রুপুর মেজাজ খারাপ হচ্ছে! তারকাছে মাত্র একটাই কলম, ছেলেদের বেঞ্চ-মেয়েদের বেঞ্চগুলা একদম পাশাপাশি, বেহায়া কলম ব্যাটা এমন জায়গায় পড়েছে যে নিজে গিয়েও নিয়ে আসা যাচ্ছে না। রুপু নেহালকে কখন থেকে ইশারা করে যাচ্ছে, কে শুনে কার কথা! জলির কাছ থেকে একটা কলম নিয়েছিল কিন্তু তারও কালি নেই!! স্যার কিছুক্ষণ পড়েই খাতা দেখতে চাইবেন, এখন কি হবে?!
রুপুর মন মেজাজ ভালো নেই। গতরাতেও অনেকক্ষণ কেঁদেছে। কে জানি বারবার আম্মুর ফোনে ফোন দিয়ে তাকে চায়! প্রথম প্রথম ধরছিল না, কিন্তু এক বিরক্তি কতদিন সহ্য করা যায়!
হ্যালো কে?
-তুমি রুপু?
হু ।
-তুমি তো আমাকে চিনবা না, কিন্তু আমি তোমাকে চিনি!
চিনবো না ফোন দিছেন কেন?
-না চিনলে কথা বলা যায় না?! তোমার সাথে একটু পরিচিত হতাম!
পরিচিত হয়ে?
এত রুড হচ্ছ কেন?! আমরা কি বন্ধু হতে পারি না?!
রুপুর মেজাজ এত খারাপ হল বলার বাইরে! আজাইরা লোকজন! খেয়ে দেয়ে কাজ নাই, মাঝরাতে বিড়ম্বনা! বন্ধু শব্দটা এত সস্তা হয়ে যাচ্ছে আজকাল! মনে হয় মুদির দোকানে গিয়ে বললেই হল দু টাকার বন্ধুত্ব দিন!
আম্মুও অযথা রুপুকে বকলো! সে নাকি যাকে তাকে তার নাম্বার দিয়ে বেড়ায়! রুপুকে কে যেনো ফিসফিসিয়ে বলে দিয়ে গেল তার এখন কাঁদবার সময়! সব মানুষের নাকি একটা ব্যাক্তিগত নদী থাকে! রুপুর কোন নদী নেই! রুপুর সাতটা ব্যাক্তিগত সাগর আছে!! কেউ জানে না! উহু, নীল তোয়ালেটা জানে! প্রিয় গল্পের বইটা জানে! চোখের পাতা জানে! গাল জানে! চিবুক জানে! আচ্ছা কেউ কি বাদ পড়ে গেল ?! হুম... কেউ একজন! রুপু জানলো না! রুপু ঠিক ঠিক বুঝতে পারছে কেউ একজন বাদ পড়েছে! কে সে?!
গনেশ স্যারের হইচই শুনে রুপুর ঘোর ভাঙে! স্যর, এক হাতে নেহালের কান ধরে আরেকখাতে পিটাচ্ছেন! “হারামজাদা! ক্লাসে বসে রঙঢং করো! তোরে করতে দিলাম অঙ্ক, তুই রুপুর ছবি আঁকলি বসে বসে! পিরিত উথলাইয়া পড়ে!”
পুরো ঘটনাটা বুঝতে রুপুর কিছুটা সময় লাগলো! নেহাল ভাঙাভাঙা কণ্ঠে বলল, আজকে রুপুর জন্মদিন! তাই ওর জন্য উপহার বানাচ্ছিলাম! এটা শুনে স্যার আরও খেপে গেলেন! তলে তলে এদ্দুর?! জন্মদিন!! তগর বিয়ার দিন কবে?! তোর বাপরে কাল আসতে বলবি! পোলার কীর্তি কলাপ দেখে যাক!
রুপু নেহালের আঁকা ছবিটা দেখলও! সে নিজে এত সুন্দরী তার ধারনা ছিল না! নিজের প্রেমে পড়ে যেতে ইচ্ছে হল! চিবুকের কাছে তিলটা নেহাল কোত্থেকে জানি আমদানি করেছে, তাকে এত মানিয়েছে!
সে শুধু নেহালকে আড়ালে ডেকে একটা কথাই বলল, আমাকে ভালবাসিস?
উপরে নিচে মাথা নেড়ে, হু!
বিয়ে করতে চাস?!
হু!!
রুপুর মাথায় রক্ত উঠে গেল! মাথার রক্ত চোখ দিয়ে বেরুতেই সে কিছু না বলে আড়ালে চলে এল! তারপর থেকে সে জানে একটা লোহিত সাগর ও তার আছে! এটা জানানোর জন্য কোন একদিন নেহালকে একটা ধন্যবাদ দিতে হবে!!
**** **** **** ****
দীপ্ত ভাই রুপুর হাতে একটা চিঠি গুঁজে দিয়ে গেছে! দীপ্ত ভাই রুপুর অনেক দিনের পরিচিত, একই কোচিং এ পড়ে বহুদিন! খুব ই সহজ স্বাভাবিক সম্পর্ক! তারমাঝে বাধা হয়ে দাঁড়াল ছোট্ট একটা চিঠির ছোট্ট একটা লাইন! “”বন্ধুত্ব+ প্রেম=??!! জবাব দিও!” রুপু জবাব দিয়েছে!! ১০ টাকার একটা নোটের উপর লিখে দিয়েছে “প্লিজ, মাছের বাজার থেকে দশটাকার ‘প্রেন্ধুত্ব’ কিনে আনো ভাইয়া!, সম্ভবত এটাই তুমি চাচ্ছ!”
**** **** **** ****
রুপুকে আমি চিনি! পৃথিবীর দুইভাগ জল বুকে বয়ে বেড়ানো স্থলবঞ্চিত একটা মানুষ! নভেম্বর মাস ভালো সময় নয়! সিডরের মাস ! দূর থেকে দেখেই বুঝলাম, হুম ঘূর্ণিঝড় এসেছিল!
-কি হইছে রে রুপু?
কিছু না!
-মন খারাপ?
হু!
-তোর মন খারাপ থাকলে তোকে পূর্ণ চাঁদের মত লাগে!
একদম FLIRT করবি না!
-কই FLIRT করলাম! এটা সত্যি কথা! দেখ, তুই চাইলে আমি চাঁদও এনে দিতে পারি!!
তাই!!! যা নিয়ে আয় তো চাঁদ! আমার লাগবে! খিদা লাগছে! চাঁদ রুটির মত খাব! চাঁদ খেলে মন ভালও হবে!
আমি প্রস্তুত হয়েই ছিলাম! বলা মাত্রই পকেট থেকে আয়না বের করে ওর মুখের সামনে ধরে বললাম, এই যে চাঁদ!
রুপু সামান্য হাসল! বাদ দে তো, এসব ভাল্লাগে না!
-মন কি বেশি খারাপ?
হুম!
-আচ্ছা তুই সেদিন রাতে যে লিস্টটা বানালি তার শেষ নামটা পেলি?!
কিসের লিস্ট?!!
-তোর গোপন কান্নার কথা জানে তাদের লিস্ট! নীল তোয়ালে, চোখের পাতা, গাল, চিবুক এর পরের জন কে তুই ভেবে পাস নি!
তুই কি করে জানলি?!! তুই কি জানিস শেষ নামটা কে?
হুম জানি! রুপু, জানিস তো প্রত্যেক মানুষের একটা ব্যাক্তিগত নদী আছে! নেহাল, দীপ্ত ভাই বা ফোনের ওপাশের মানুষের ব্যাক্তিগত নদীগুলো তোতে মোহনা হয়ে বসে আছে! সময় পালটাবে, মানুষেরা পালটাবে, কিন্তু নদী কি কখনো পাল্টায়? তাই তো কাঁদবি, রাতে রাতে কাঁদবি! এতগুলা মানুষের কান্না তোকে কাঁদতে হবে! জানিস, আমি না কাঁদতে পারি না! তোর যেমন দুইভাগ জল আমার শুধু একভাগ স্থল! কাঁদতে না পারা যে কি কষ্ট তোকে যদি বুঝাতে পারতাম! তুই কাঁদ! নীল তোয়ালে সব জানে, চোকের পাতা, চিবুক আর আমিও জানি!!
রুপুর হঠাত খুব মায়া হল! এই একভাগ স্থলসম্পন্ন মানুষটার জন্য তার খুব কাঁদতে ইচ্ছা হচ্ছে! কিন্তু সে হাসল! কান্নার ঘ্রানে মোড়ানো গজদাঁতের হাসি! সে হাসি আজকে রাতের চাঁদটার মতই সুন্দর!
কতগুলো সাপ শীতল পায়ে নড়ে চড়ে উঠলো! কোথা থেকে জানি তীব্র হাস্নাহেনার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, সম্ভবত কারো হাসি থেকে!
২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৭
বৃত্তে বন্দী বলেছেন:
৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
বটবৃক্ষ~ বলেছেন: খুব চমৎকার বর্ননাভংগি! সংক্ষিপ্ত সুন্দর গল্প!!
তবে এই অংশটার মানে ঠিক বুঝলামনা!!>>
রুপুর মাথায় রক্ত উঠে গেল! মাথার রক্ত চোখ দিয়ে বেরুতেই সে কিছু না বলে আড়ালে চলে এল! তারপর থেকে সে জানে একটা লোহিত সাগর ও তার আছে! এটা জানানোর জন্য কোন একদিন নেহালকে একটা ধন্যবাদ দিতে হবে!!
নেহালকে কি রুপুর ভালোলাগতোনা??নাকি??
প্রশ্ণ করে গল্পের কাহিনি বুঝতে চাওয়াটা লেখকের জন্যে বিব্রতকর কিনা জানিনা!! তবু জানতে চাইলাম!!
আর শেষের কথোপকথন গুলো কি কোন মেয়ে বন্ধুর সাথে??? নাকি সে নেহাল!!? পুরাই কনফিউজড হয়ে গেসি!!
দু:খিত!!
গল্প চালিয়ে যান!!
জেনারেল হননি??
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৫
বৃত্তে বন্দী বলেছেন: নেহালকে রুপুর শুধু বন্ধু হিসেবেই তুমুল ভালোলাগতো । তাই ভালোবাসার কথায় রাগ উঠে গেলেও দুইভাগ জলের অধিকারিণী হিসেবে কান্নাই সে বেছে নেয়!! শেষের কথোপকথন ভালোবাসার মানুষের সাথে!
প্রশ্ন উত্তর অমনোযোগী পাঠক- অমনোযোগী লেখন দুজনের জন্যেই বিব্রতকর!! হুম জেনারেল
৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
শব্দ চয়ন কিংবা উপমার ক্ষেত্রে ভিন্নতা আনার চেষ্টাকে সাধুবাদ।
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৬
বৃত্তে বন্দী বলেছেন: ধন্যবাদের জন্য যেমনি স্বাগতম তেমনি সাধুবাদের জন্য বলতে হয় সুস্বাগতম!!
৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০২
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: আপনি অনেক ভালো লিখেন। লিখতে থাকুন।
শুভ ব্লগিং
৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৭
বৃত্তে বন্দী বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৭
অনিন্দ্য অন্তর অপু (অঅঅ) বলেছেন: ১০ টাকার একটা নোটের উপর লিখে দিয়েছে “প্লিজ, মাছের বাজার থেকে দশটাকার ‘প্রেন্ধুত্ব’ কিনে আনো ভাইয়া!, সম্ভবত এটাই তুমি চাচ্ছ!”
অন্যরকম । গল্প বলার ভিন্নতা ভালো লেগেছে