![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Time marches on but / memories stays, Torturing silenty the rest / of our days।
সেই তিনটার মধ্যে আরেকটা দখল করলো বয়স্ক এক ব্যক্তি।আরো দুজন প্রয়োজন, কিন্তু বেশকিছুক্ষন সময় যাবার পরেও যখন দুজন পাওয়া গেল না,;তখন সুমি নিজেই দুজনের ভাড়া দিবে বলে ড্রাইভার কে তারাতারি যেতে বললো। সকাল খুব অবাক হলো,কারন মেয়েরা যতই খরুচে স্বভাবের হোক না কেন এরকম পরিস্থিতিতে কখনো অতিরিক্ত ভাড়া দিতে সে দেখেনি। এতেই বোঝা যাচ্ছে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য কতটা মরিয়া সে। সিএনজি স্টার্ট দেয়ার পর পরই আরো দুটি মেয়ে হাজির।যাক সুমির টাকাটা বাঁচলো।
অগত্যা,আমি আর বয়স্ক চাচা ড্রাইভারের দুপাশে বসলাম।মেয়ে তিনটা আরামসে পিছনের সিটে হেলান দিল।
মেয়েরা আসলে গিরগিটির মতো।স্বার্থ হাসিলের জন্য খুব সহজেই বদলাতে পারে। যেমন,সম-অধিকার নিয়ে রাজনীতি করতে চায় আবার তাদের জন্য সংরক্ষিত আসনও রাখা হয়। সমান অধিকার নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথ চলতে চায়, সেখানেও মহিলা সিট একদম সামনে রক্ষিত। সমান অধিকার নিয়ে পড়ালেখা করতে চায়,এখানেও সুযোগ-সুবিধা বেশি। আর এখন চোখের সামনে বৃদ্ধ লোকটি নিজের আরামদায়ক আসন ছেড়ে ঝুঁকিপূর্ণ সিটে এসে বসলো। সমঅধিকারের প্রেক্ষিতে মেয়েদুটির কি উচিত ছিলনা, অষ্টাদশী হিসেবে নিজে সামনে বসে বয়ঃবৃদ্ধ লোকটাকে পিছন আরামদায়ক স্থানে বসার সুযোগ দেয়া? আর তাছাড়া সুযোগ দেয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না,যানবাহনের সিট আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে বুকিং হয়। সে দিক দিয়েও মেয়ে দুটি পিছনের সিটে বসার সুযোগ পায়না। তারপরেও "আমরা মেয়েমানুষ" এই অজুহাতে ঠিকই পিছন সিট পেয়ে গেল। কি অদ্ভুত!!
এই সম-অধিকার চাওয়া আর অজুহাত দিয়ে সুবিধা নেয়ারর ব্যাপারটা সকালের কাছে নিজেই প্রতিমা গড়ে, নিজেই বিসর্জন দেয়ার মতো মনে হয়। আবার খুব কমন একটা ডায়লগ ছেলেদের অপ্রস্তুত করার জন্য..."ঘরে মা-বোন নেই?" এটা মেয়েরা যখন কোন ছেলের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হয় অথবা নিজের মনের মতো কাজ করাতে পারে না তখন শেলের মতো ছুঁড়ে দেয়। আর ছেলেরাও একদম বোল্ড আউট। সেসব মেয়েদের গিয়ে সকালের বলতে ইচ্ছা করে, "হ্যাঁ, মা-বোন আছে। কিন্তু 'ঘরে'; যেটা তোমরা নিজ মুখেই স্বীকার করলে।
সৃষ্টিকর্তা প্রথম নারী সৃষ্টি করেছেন জান্নাতের ভিতর,আর প্রথম পুরুষ জান্নাতের বাইরে। এ থেকেও কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ছেলেরা বাইরের আর মেয়েরা ঘরের।
ছেলেরা কখনো কোন মেয়েকে,"ঘরে বাপ-ভাই নেই?" একথা বলেছে বলে শোনা যায়নি। কারন, এটা মানায় না;ঠিক তাই। যার যেটা মানায়,যার যেটা কর্তব্য তার সেটাই করা উচিত।
আদিকাল থেকেই নিয়ম,ছেলেরা কঠিন - কস্টকর কাজ গুলো করবে আর মেয়েরা তুলনামূলক কম কস্টকর গুলো। তাই ছেলেদের শারীরিক গঠনও মজবুত, ফুসফুস বড় বেশি অক্সিজেন সঞ্চয়ের জন্য,নাক মেয়েদের তুলনায় চ্যাপ্টা বেশি অক্সিজেন গ্রহনের জন্য, যাতে দৌড়াতে বা শিকার করতে সুবিধা হয়। এভাবে যকৃত,মস্তিষ্ক, হৃৎপিন্ড সবই ছেলেদের বেশি। তাই মেয়েরা যদি ছেলেদের কাজগুলো করতে চায় তাহলে তাদের মেয়েলি ভাব গুলো ধীরে ধীরে দুর হয়ে যায়। অর্থাৎ তাদের নারীসুলভ আচরন-শারীরিক গঠন গুলো আর থাকে না।
যুক্তরাষ্ট্রের এক আর্টিকেলে নারী-বডিবিল্ডাদের ব্যাপারে লিখেছিল। সেখানে বলা হয়েছে, নারী-বডিবিল্ডাদের শরীরে ধীরে ধীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায় আর ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে গেলে একটি মেয়ের আর কিই বা থাকে।
লেজকাটা শিয়াল তো লেজওয়ালা শিয়ালকে নিজের লেজ কাটতে বলবেই,তাই বলে তো আর নিজে অবিবেচকের মতো কাজ করলে হবে না।
সকালের চিন্তায় ছেদ পড়লো সি.এন.জিটা থামানোর কারনে। সুমি নেমে গেল, সকাল একটা দোকানে ঢুকে পড়লো। যাতে সুমির সন্দেহের উদ্রেক না হয়। সুমি হেঁটে হেঁটে চলে গেল বাজারের শেষ প্রান্তে। তারমানে গন্তব্য আর বেশি দুরে নেই। সপ্তাহের এই একটা দিন সকাল ধূমপান করে। গোল্ডলিফ ব্রান্ড ছাড়া অন্য কোন ব্রান্ডের সিগারেট সে ছোঁওয়নি। সাধারনত, যারা শখের বসে সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন ধূমপান করে তারা নিত্যনতুন ব্রান্ড ট্রাই করে। এদিক থেকে সকাল একেবারে আলাদা। গোল্ড লিফ পছন্দ করে নামের কারনে আর মোটামুটি নাগালের মধ্যেই দামের কারনে। সিগারেটের স্বাদ সকাল অনুভব করতে পারে না। গোল্ডলিফ নামটার মধ্যেই কেমন যেন হোমরা-চোমরা ভাব আছে।
৬ টাকার বিনিময়ে কিছুটা সময় নস্ট করলো সকাল। তারপর যে পথে সুমি গেছে সে পথেই সকালও চলল। বাজারের শেষ প্রান্তে গিয়ে মোড় ঘুরতেই প্রচুর লোক সমেত একটি বাড়ি চোখে পড়ল। ধীর পায়ে এগিয়ে গেল সকাল। কাওকে জিজ্ঞেস করা সকালের স্বভাব বিরোধী, তাই নিজেই খোঁজ নিয়ে দেখতে চায় ঘটনা কি। মূল বাড়ির ভিতরে ঢুকে কান্নার আওয়াজ পেল। আওয়াজ অনুসরন করে গিয়ে দেখলো সুমি পাগলের মতো কান্না করছে।
আশে পাশের কথা শুনে বুঝতে পারলো মেয়েটির আসল নাম রাবেয়া। তার বাবা মারা গেছে আজ ভোরে।স্টাইলিশ মেয়ে হলেই স্মার্ট জাতীয় নাম রাখার পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে, ভাবলো সকাল।
হঠাৎ কান্না থেমে গেল। রাবেয়া দরজার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সকাল। মুচকি হাসি দিয়েই ঘুরে দাঁড়াল সকাল।
সমাপ্ত
©somewhere in net ltd.