![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রচনা: শখের মৃৱশিল্প
ভূমিকা: মানুষ যখন কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকে, সুন্দর করে তৈরি করে, সুন্দর সুর করে গেয়ে থাকে, তখন তাকে শিল্প বলা হয়। শিল্পের এই কাজকে বলা হয় শিল্পকলা। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বলা হয় মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প।
মৃৎশিল্পের উপকরণ: মৃৎশিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। তবে সব মাটি দিয়ে এই কাজ হয় না। দোআঁশ মাটি তেমন আঠালো নয়, আর বেলে মাটি ঝরঝরে তাই এগুলো দিয়ে মাটির শিল্প হয় না। মৃৎশিল্পের জন্য দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এঁটেল মাটি বেশ আঠালো। আবার এঁটেল মাটি হলেই যে তা দিয়ে শিল্পের কাজ করা যাবে, তাও নয়। এর জন্য দরকার যত্ন আর শ্রম। দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। পাশাপাশি প্রয়োজন কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। এই যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের মধ্যে অন্যতম হলো একটা কাঠের চাকা। এই চাকায় নরম মাটির তাল লাগিয়ে নানা আকারের মাটির পাত্র ও জিনিস তৈরি করেন কুমোরেরা।
বিভিন্ন রকম মৃৎশিল্প: মৃৎশিল্পের মূল কারিগর আমাদের দেশের কুমোর সম্প্রদায়। যুগ যুগ ধরে কুমোরেরা বংশপরম্পরায় তৈরি করে আসছেন নানা রকম মৃৎশিল্প। এসব মৃৎশিল্পের মধ্যে রয়েছে মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠে তৈরির নানা ছাঁচ ইত্যাদি। এ ছাড়া কুমোরেরা তৈরি করে আসছেন উৎসব-পার্বণের জন্য নানা রঙের বাহারি মাটির জিনিস ও তৈজসপত্র।
বাংলাদেশের প্রাচীন মৃৎশিল্প: হাঁড়ি, কলসি ছাড়াও বাংলাদেশে একসময় গড়ে উঠেছিল পোড়ামাটির ফলকের সুন্দর কাজ। এর অন্য নাম টেরাকোটা। এই টেরাকোটা বাংলার অনেক পুরোনো শিল্প। নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো এই টেরাকোটা।
শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের বৌদ্ধস্তূপ ও দিনাজপুরের কান্তজির মন্দিরে এই টেরাকোটার কাজ রয়েছে। তা ছাড়া বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে পাওয়া গেছে পোড়ামাটির অপূর্ব সুন্দর কাজ। পোড়ামাটির এই ফলক বাংলার প্রাচীন মৃৎশিল্প। সম্প্রতি নরসিংদীর উয়ারী বটেশ্বরে পাওয়া গেছে প্রায় হাজার বছর আগের সভ্যতার নিদর্শন। মাটির খুঁড়ে পাওয়া গেছে নানা ধরনের মাটির সুন্দর পাত্র আর ফলক।
মৃৎশিল্পের বর্তমান ব্যবহার: আজকাল যদিও প্রাচীন আমলের মতো ওরকম টেরাকোটা হচ্ছে না, তবে পোড়ামাটির নকশার কদর বেড়েছে।
বড় বড় সরকারি-বেসরকারি ভবনে আজকাল সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য নানা রকম নকশা করা মাটির ফলক ব্যবহূত হচ্ছে। আমাদের দেশের কুমোরেরাই এসব তৈরি করেছেন।
উপসংহার: মৃৎশিল্পের কাজ এ দেশে শুরু হয়েছে হাজার বছর আগে। এই শিল্প আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্ব। এ দেশের মানুষের মন যে শিল্পীর মন, মৃৎশিল্প তারই পরিচয় বহন করে। এই শিল্পের চর্চা ও সম্প্রসারণে আমাদের এগিয়ে আসা দরকার।
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫১
ওয়াজীহ উদ্দীন বলেছেন: প্রশ্ন: মাটির শিল্প বলতে কী বোঝো?
উত্তর: কোনো কিছু যখন সুন্দর করে আঁকা হয়, সুন্দর করে তৈরি করা হয়, তখন তা হয়ে ওঠে শিল্প। আর শিল্পের এই কাজকে বলা হয় শিল্পকলা। বাংলাদেশে অনেক রকম শিল্পকলা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন ও অন্যতম হলো মাটির শিল্প। মাটি দিয়ে তৈরি এই শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সরাই, মটকা, পিঠা তৈরির ছাঁচ ইত্যাদি। এই শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। আর এই শিল্পের প্রধান শিল্পী হলো আমাদের কুমার সম্প্রদায়। কুমার সম্প্রদায়ের হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞানে মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকর্মকে মাটির শিল্প বলা হয়। মাটির শিল্পের আরেক নাম হলো মৃৎশিল্প।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্ম কোনটি?
উত্তর: শিল্প বলতে আমরা বুঝি কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকা, সুন্দর করে গাওয়া, সুন্দর করে তৈরি করা। আর শিল্পের এই কাজকে বলা হয় শিল্পকলা। আমাদের দেশে নানা শিল্পকলা রয়েছে, রয়েছে নানা ধরনের শিল্পকর্ম। এসব শিল্পকর্মের মধ্যে বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার পরিচয় পাওয়া যায় মাটির শিল্পে। এটা এ দেশের নিজস্ব শিল্প। বৈশাখী মেলায় ও নানা পার্বণে যেসব মাটির জিনিস বিক্রি হয়, সেসব কিছুই মাটির শিল্প। গ্রামের কুমারেরা নিপুণভাবে এসব তৈরি করেন। প্রাচীনকাল থেকেই এ দেশে মৃৎশিল্প বা মাটির শিল্পের চর্চা হয়ে আসছে। ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড় ও বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে যেসব পোড়ামাটির ফলক বা টেরাকোটার নিদর্শন রয়েছে, তা মাটি দিয়েই তৈরি। কাজেই বলা যায়, বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্ম হচ্ছে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প।
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫১
ওয়াজীহ উদ্দীন বলেছেন: মূলভাব: মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বলা হয় মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প। বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার পরিচয় পাওয়া যায় এই মাটির শিল্পে। মৃৎশিল্প আমাদের এ দেশের নিজস্ব শিল্প। তোমরা নিশ্চয় বৈশাখী মেলায় কিংবা নানা পার্বণে বিভিন্ন মেলায় মাটির তৈরি নানা রকম পুতুল, নকশা করা হাঁড়ি, মাটির ফল, তৈজসপত্র বিক্রি হতে দেখেছ। মাটির তৈরি এসব জিনিসই মৃৎশিল্প। গ্রামের কুমাররা নিপুণভাবে এসব তৈরি করেন। প্রাচীনকাল থেকে এ দেশে মৃৎশিল্পের চর্চা হচ্ছে। ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড়, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে দেখা যায় পোড়ামাটির ফলক। পোড়ামাটির এসব ফলককে বলা হয় টেরাকোটা। মাটির শিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্য।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৮
ওয়াজীহ উদ্দীন বলেছেন:
প্রশ্ন: মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান কী?
উত্তর: মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বলা হয় মৃৎশিল্প। এ শিল্পের প্রধান উপাদান হলো মাটি। তবে সব মাটি দিয়ে এ কাজ হয় না। দোঁআশ মাটি তেমন আঠালো নয়, আর বেলে মাটি ঝরঝরে, তাই এগুলো দিয়ে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প হয় না। মৃৎশিল্পের জন্য দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো। আবার এঁটেল মাটি হলেই যে তা দিয়ে শিল্পের কাজ করা যাবে তাও নয়। এর জন্য দরকার অনেক যত্ন আর শ্রম। দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। প্রয়োজন কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান মাটি হলেও এর সঙ্গে দরকার একটা কাঠের চাকা। এই চাকায় নরম মাটির তাল লাগিয়ে নানা আকারের মাটির পাত্র ও নানা জিনিস তৈরি করে কুমোরেরা।
প্রশ্ন: কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম লেখ।
উত্তর: মৃৎশিল্প আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প। এ দেশের কুমোর সম্প্রদায় যুগযুগ ধরে তৈরি করে আসছে নানা রঙের, নানা বর্ণের বিভিন্ন রকমের মাটির তৈরি জিনিসপত্র। আমাদের দেশের কুমোরদের তৈরি কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম হলো: মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, মটকা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সুরাই, জালা, পিঠা তৈরির ছাঁচ, পুতুল ও নানা রকম পশু-পাখি, মাছ ইত্যাদি। এ ছাড়াও আমাদের দেশে এক সময় গড়ে উঠেছিল অনিন্দ্যসুন্দর মৃৎশিল্প টেরাকোটা। বাংলার অনেক পুরনো মৃৎশিল্প এই টেরাকোটা।
প্রশ্ন: টেরাকোটা কী?
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে আমাদের এই বাংলাদেশে মৃৎশিল্পের চর্চা হয়ে আসছে। প্রাচীন মৃিশল্পের মধ্যে অন্যতম হলো টেরাকোটা। টেরাকোটা একটি ল্যাটিন শব্দ। ‘টেরা’ অর্থ মাটি আর কোটা অর্থ পোড়ানো। পোড়ামাটির তৈরি মানুষের ব্যবহারের সব রকমের জিনিস টেরাকোটা হিসেবে পরিচিত। নকশা করা মাটির ফলক বা জিনিস ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো টেরাকোটা।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের কোথায় পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প দেখতে পাওয়া যায়?
উত্তর: হাঁড়ি-কলসি ছাড়াও আমাদের দেশে এক সময় গড়ে উঠেছিল সুন্দর পোড়া মাটির ফলকের কাজ। এর অন্য নাম টেরাকোটা। নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো এই শিল্প। বাংলাদেশের ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর বৌদ্ধ স্তূপ, দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির ও বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প দেখতে পাওয়া যায়। সম্প্রতি নরসিংদির ওয়ারী বটেশ্বরে মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেছে নানা ধরনের সুন্দর মাটির পাত্র আর ফলক।