নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অেচনা পথীক পলাশ

অেচনা পথীক পলাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাঈদীর শাস্তি যেন ফাঁসি হয়

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:১৮

স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতাকারী ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে মানুষ হত্যা, ধর্ষণসহ ২০টি অভিযোগে অভিযুক্ত রাজাকার জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসি হবে, এটাই প্রত্যাশা করছেন মানুষ।



তাদের আশা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী এ রাজাকারের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেবেন। এ রাজাকারের ফাঁসি কার্যকর হলে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের ‍আত্মা শান্তি পাবে বলেও মনে করছেন তারা।



আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যূনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায় দেওয়া হবে বৃহস্পতিবার। মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারী ও মানুষ হত্যাকারী এ রাজাকারের রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ‘ফাঁসি হবে’ এমনই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রামের মানুষ।



যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণের ২৩তম দিন বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাঈদীর মামলার রায়ের সময়সূচী ঘোষণা করেন।



স্বাধীনতা যুদ্ধে ভাই ও স্বামী হারিয়ে ‘শহীদ জায়া‘ হিসেবে পরিচিত হন বেগম মুশতারী শফী। যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবিতে রাজপথে এখনো আন্দোলন করছেন তিনি।



শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী বাংলানিউজকে বলেন, ‘সাঈদীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও ধর্ষণসহ ২০টি অভিযোগ রয়েছে। আমার বিবেক-বিবেচনাবোধ বলছে, এসব অভিযোগে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া দরকার। ট্রাইব্যুনালের রায়ে সাঈদীর উপযুক্ত শাস্তি মৃত্যুদন্ড হলে আমি স্বস্তি পাব আর আমার শহীদ স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে।’



চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সাঈদীর বিরুদ্ধে হত্যা ও নারী ধর্ষনসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে। এতগুলো অভিযোগ যার বিরুদ্ধে, তাকে তো সর্বোচ্চ শাস্তিই দেওয়া উচিত। দেশের স্বাধীনতা বিরোধীতাকারী এ রাজাকারের বিচারের রায়ে ফাঁসি হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’



সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠন করা অভিযোগ, ৮৮ পৃষ্ঠার সূচনা বক্তব্য এবং ৭৭ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিন হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, নয়জনেরও বেশি নারীকে ধর্ষণ, বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, ভাঙচুর এবং ১০০ থেকে ১৫০ হিন্দুকে ধর্মান্তরে বাধ্য করার ২০টি ঘটনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর ৩(২) ধারা অনুসারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।



একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাঈদীরা পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা করেছেন। তাই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হওয়া উচিত। বলেছেন মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান।



তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধে সাঈদী ও জামায়াত পরিকল্পিতভাবে মানুষ হত্যা করেছে। তারা জাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তারা গণহত্যাকারী একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধী। দল ও ব্যক্তি উভয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। জামায়াত এখনো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতার অবস্থান থেকে সরে আসেনি।’



সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগ, চট্টগ্রামের আহবায়ক শরীফ চৌহান বাংলানিউজকে বলেন, ‘একাত্তরের গণহত্যার অভিযোগে সাঈদী রাজাকারের সর্বনিম্ন শাস্তিও যেন ফাঁসি হয়। সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে দেশে গণআন্দোলন শুরু হয়েছে। গণমানুষের প্রত্যাশা বিচারের রায়ে সাঈদীর ফাঁসি হবে। না হলে মানুষ আবার রাজপথে নেমে আসবে।’



একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক শওকত বাঙালি এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের একটাই প্রত্যাশা। তা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসি। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনরত লাখো তরুণের এর বাইরে আর কোনো প্রত্যাশা নেই।’



একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গঠনের পর প্রায় পৌনে ৩ বছরের কাছাকাছি সময়ে এসে তৃতীয় কোনো অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে।



বাকি দুই মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে গত বছরের ২২ মার্চ গঠিত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে ২১ জানুয়ারি ফাঁসির আদেশ দিয়ে জামায়াতের সাবেক রোকন (সদস্য) আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন ওই ট্রাইব্যুনাল।



একই ট্রাইব্যুনাল গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.