নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ভারতীয় কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তি চরম আত্মঘাতী হয়েছে।এ চুক্তিতে মাত্র ১০ শতাংশ প্রাপ্তির ভিত্তিতে ৯০ শতাংশ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।চুক্তির দুর্বলতার কারণে ভবিষ্যতে ভারতীয় মুশরিকরা এখানে সামরিক মহড়াও চালাতে পারবে।দুই ব্লকে অনুসন্ধান কাজে ১৪ কোটি ডলার তথা ১১ শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের মোট সম্পদের ৮০ শতাংশ মালিকানা ভারত নিয়ে যাবে।ভারতের আধিপত্যবাদী, লুণ্ঠন ও সন্ত্রাসী তৎপরতা রোধে পবিত্র ঈমানী চেতনার বিকল্প নেইগত ১৭ই ফেব্রুয়ারি (২০১৪ ঈ.) সোমবার রাজধানীর পেট্রোসেন্টারে বাংলাদেশ সরকার, পেট্রোবাংলা এবং ওএনজিসি-বিদেশ, অয়েল ইনডিয়া ও বাপেক্সের মধ্যে এই দুটি অনুসন্ধান, উৎপাদন ও বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) হয়। এর মধ্যে দিয়ে কোনো ভারতীয় প্রতিষ্ঠান প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তেল, গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুযোগ পায়।বঙ্গোপসাগরের ৪নং এবং ৯নং নামে চিন্তিত দুটি গ্যাস ব্লকের জন্য চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। ৪নং ব্লকের পানির গভীরতা ১০ থেকে ১০০ মিটার আর ৯নং ব্লকের পানির গভীরতা ১০০ থেকে ৩০০ মিটার। এতে করে ভারতীয় রাষ্ট্রীয়সংস্থা দুটি ব্লকের ১৪০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় গ্যাস তেলসহ খনিজ সম্পদের উপর কর্তৃত্ব লাভ করলো। তারা দুই ব্লকে অনুসন্ধান কাজে ১৪ কোটি ডলার এবং বাংলাদেশী টাকায় এগারো শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এতে করে মোট সম্পদের আশি শতাংশ মালিকানা থাকবে তাদের। অগভীর সমুদ্রের ব্লক-৪এর আয়তন ৭ হাজার ২৬৯ বর্গকিলোমিটার এবং ব্লক-৯এর আয়তন ৭ হাজার ২৬ কিলোমিটার।সরকার পিএসসি ২০১২ সংশোধন করে এর চুক্তি সম্পাদন হয়েছে। সংশোধিত পিএসসি ২০১২তে বিদেশী কোম্পানিগুলোর জন্য অবিশ্বাস্য সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। কোম্পানিগুলোর উচ্চ মুনাফা ও কর্তৃত্ব নিশ্চিত করতে যে সব বাড়তি সুবিধা দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে আছে প্রথমতঃ গ্যাসের ক্রয়মূল্য অর্থাৎ বাংলাদেশ যে দামে গ্যাস কিনবে এর মূল্য আগের চুক্তির তুলনায় শতকরা ৬০-৭০ ভাগ বাড়ানো হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ প্রতি বছর গ্যাসের মূল্য শতকরা ৫ ভাগ হারে বৃদ্ধির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তৃতীয়তঃ পরিশোধ পর্বে বিদেশী কোম্পানিগুলোর অংশীদারিত্ব শতকরা ৫৫ ভাগ থেকে বৃদ্ধি করে শতকরা ৭০ ভাগ করা হয়েছে। চতুর্থতঃ ইচ্ছামতো মূল্যে ৩য় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রির অনুমতি দেয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিরাপত্তার প্রধান অবলম্বন। অথচ এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিদেশী কোম্পানিগুলোকে এতো বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে, ফলে নিজ দেশের গ্যাস সম্পদ কেনার ক্ষমতাও বাংলাদেশের থাকবে না। কিনতে গেলে ভয়াবহ আর্থিক বোঝার সম্মুখীন হতে হবে। আবার ব্লকের কর্তৃত্ব রাখার অজুহাতে রাজনৈতিক সামরিক মহড়াও যুক্ত হতে পারে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে এই গ্যাস সম্পদ বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় স্বাধীনতা চরম হুমকির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।নিজ দেশসহ অন্যান্য দেশেও এই কোম্পানিটি বির্তকিত। তারপরও এই বিতর্কিত কোম্পানির সাথে চুক্তি করা হয়েছে। অর্থাৎ ওএনজিসি’র সঙ্গে সব জেনে শুনেই চুক্তিটি করা হয়েছে। চুক্তিতে অনেক বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বলা যায়- আগাগোড়া সর্বাধিক সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কার স্বার্থে, কেন- এর জবাব নেই। তা না হলে মাত্র ১০ শতাংশ প্রাপ্যতার ভিত্তিতে ৯০ শতাংশ বিদেশী কোম্পানিকে দেয়া হবে কেন?মুনাফার জন্য ওএনজিসি ঝুঁকির বিষয় বিবেচনা করে না, তারা হীন কর্মে লিপ্ত থেকে অনুসন্ধান কাজ করে। তারা পরিবেশ ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ যন্ত্রপাতি ও দ্রব্যাদি দিয়ে কাজ করে। বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় তেল গ্যাস অনুসন্ধানী ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এক্ষেত্রে শক্ত আইন রয়েছে। কিন্তু এসব বিধি আদৌ মানছে না ওএনজিসি। ফলে বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক সংস্থার দেয়া চিঠির কোনো উত্তরও তারা দেয়ার প্রয়োজনবোধ করে না। এ ধরনের একটি বিতর্কিত ও নিম্নশ্রেণীর প্রতিষ্ঠানের সাথে সরকার কেন চুক্তিবদ্ধ হলো তা দেশবাসীর জানার অধিকার রয়েছে। পুঁজির অভাবের কথা বলে এমন চুক্তি স্বাক্ষর করা হলো। কিন্তু ওএনজিসি চুক্তির মেয়াদে ৮ বছরে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে, তার প্রায় দ্বিগুণ অর্থ দেশের গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে অলস হয়ে পড়ে আছে। চুক্তির ফলে বঙ্গোপসাগরের গ্যাস তেল সম্পদ যে শুধু বিদেশী কোম্পানির দখলে চলে যাচ্ছে তাই নয়, বরঞ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং শিল্পায়নের জন্য গ্যাস সম্পদকে কাজে লাগানোর পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে। আমদানি করা গ্যাসের চেয়ে বেশি খরচ হবে নিজের দেশের গ্যাস কিনতে। উপরন্তু চুক্তির কারণে বাংলাদেশের আর্থিক বোঝা সীমাহীন হবে।আমরা সরকারকে এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষর থেকে বিরত থাকার জন্য বলবো এবং এর পরিবর্তে জাতীয় সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রয়োজনে সাবকন্ট্রাক্টের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কার্যক্রম গ্রহণের পরামর্শ দিবো। এ ধরনের পিএসসি প্রক্রিয়া বঙ্গোপসাগরের বিশাল সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ। এর জন্য জনগণকেই জনসচেতন হতে হবে। তীব্র প্রতিবাদী ভূমিকা নিতে হবে। দেশের স্বার্থ বিরোধী ও স্বাধীনতা বিপন্নকারী সব চুক্তি রুখে দিতে হবে। স্মরণ রাখতে হবে, ‘সমস্ত বিধর্মীরাই মুসলমান উনাদের চরম শত্রু।’
©somewhere in net ltd.