নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
৫ই জানুয়ারী বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বাংলাদেশের বর্তমান সরকার দেশটিতে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। এ ব্যবস্থা মূলত স্বৈরতান্ত্রিক শাসন কায়েমের মূলভিত্তি। এ ধরনের শাসন ব্যবস্থায় শাসক গোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত সংবিধান সংশোধন করে দেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ান-পার্টি স্টেট বা একদলীয় রাষ্ট্র ঘোষণা করে থাকে। একদলীয় সরকার ব্যবস্থার সাধারণ নীতি হচ্ছে, বিরোধী দলকে খণ্ডিত করা এবং অতিরিক্ত বল প্রয়োগের মাধ্যমে বিরোধী মতের বাকস্বাধীনতা সীমিত করা। এ দু’টি কাজ সম্পাদনের মাধ্যমেই মূলত একটি একদলীয় সরকার তার স্বৈরতান্ত্রিক চরিত্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে থাকে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হলে বাংলাদেশও বর্তমানের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে শেষ পর্যন্ত ‘এক দলের রাষ্ট্র’ বা একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে- বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে বিখ্যাত থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান ‘উডু্র উইলসন সেন্টার’-এর সিনিয়র পলিসি স্কলার ও দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম বি মাইলাম। রাষ্ট্রদূত মাইলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রে ফেরার একমাত্র শর্তই হচ্ছে আরেকটি সর্বজনীন নির্বাচন, যেখানে প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দলসহ ছোটবড় সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ থাকবে। আর সত্যিকারের গণতন্ত্রে ফিরতে হলে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে নেতৃত্বের সকল পর্যায়ের রাজনৈতিক মানসিকতায় পরিবর্তন প্রয়োজন।্থগতকাল মানবজমিন-এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ (১৯৯০-১৯৯৩) ও পাকিস্তানে (১৯৯৮-২০০১) যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক মার্কিন কূটনৈতিক উইলিয়াম বি মাইলাম যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক, বাংলাদেশে চীন ও রাশিয়ার ভূমিকা, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ প্রভৃতি বিষয়ে এ প্রতিনিধির বিভিন্ন প্রশ্নের লিখিত জবাবে উল্লিখিত মন্তব্য করেন।‘বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারির একপাক্ষিক নির্বাচন এবং নির্বাচনোত্তর বাংলাদেশে ভারত, চীন ও রাশিয়ার ভূমিকা’ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত মাইলাম বলেন, প্রথমত আমি মনে করি না যে বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনকে ঘিরে ভারত, চীন ও রাশিয়ার অবস্থানকে একত্রে মিলিয়ে দেখার সুযোগ আছে। কেননা চীন ও রাশিয়া মূলত একদলীয়, কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্র। তৃতীয় কোনও দেশে একদলীয় নির্বাচন বা একদলীয় সরকার কায়েম হলো কিনা, কিংবা এর ফলে ওই দেশটির সরকার স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠলো কিনা, এসব বিষয়ে এ দেশ দু’টির (চীন ও রশিয়া) সরকারের খুব কমই মাথাব্যথা আছে। অধিকন্তু, এ দেশ দু’টি নিজ নিজ দেশেই মানবাধিকার ও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার ব্যবস্থার তোয়াক্কা করে না বিধায় এসব ইস্যুকে তারা স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। বরং, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনোত্তর সরকারের সঙ্গে এ দেশ দু’টি তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থে আরও ঘনিষ্ঠতর সম্পর্ক বজায় রাখবে- এটাই স্বাভাবিক। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন ও নির্বাচনোত্তর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিষয়ে উইলিয়াম বি মাইলাম বলেন, কিন্তু, ভারতের কথা আলাদা। এটি একটি কার্যকর গণতন্ত্র এবং নিশ্চিতভাবেই তার সীমান্তের পূর্ব দিকে একটি একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সম্ভাবনা নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্কের কারণে এ বিষয়ে ভারতকে ততটা উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছে না। বরং, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমানহারে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থানকেই ভারত হুমকি হিসেবে দেখছে; বিশেষ করে বিএনপির মিত্র জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় নীতির দুর্বলতা হচ্ছে, ভারত তার পূর্ব সীমান্তে একটি একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে নিজের জন্য যতটা না হুমকি মনে করছে, তার চেয়ে বাংলাদেশে সম্ভাব্য ইসলামিক রাজনীতির উত্থানকে মনে করছে অধিকতর হুমকি বলে।৫ই জানুয়ারির নির্বাচন-পূর্ব বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মতপার্থক্যের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাইলাম আরও বলেন, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পার্থক্যটা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশে ইসলামি রাজনীতির উত্থান নিঃসন্দেহে একটি বিপদ যা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তার চেয়েও বড় বিপদ হলো অগণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার, যাকে দেশটির বেশির ভাগ মানুষ বৈধ মনে করবে না। এর ফলে দেশটিতে একটি দীর্ঘমেয়াদি অস্থিতিশীলতা লেগে থাকবে এবং এ ধরনের অগণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা একদলীয় সরকার শিগগিরই একনায়কতান্ত্রিক হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, অন্তত আমি এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একদলীয় সরকার ব্যবস্থা হচ্ছে স্বৈরশাসন কায়েমের মূলভিত্তি। এ ধরনের শাসন ব্যবস্থায় বাংলাদেশ কি অধিকতর স্থিতিশীল থাকবে, নাকি আরও বেশি অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে সেটা পরিষ্কার নয়। মূলত এ বিষয়েই ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন-পূর্ব বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল।৫ই জানুয়ারির নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্র সরকার সবসময়ই মনে করে, একটি উন্নয়নশীল, আধুনিক, স্থিতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থরক্ষা করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তার এ নীতিতেই অবিচল আছে, যদিও বিগত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোত্তম নীতি কি হওয়া উচিত তা নিয়ে ওয়াশিংটনে আলাপ-আলোচনা চলছে।ভারত-যুক্তরাষ্ট্র মিত্রতা সম্পর্কে মাইলাম বলেন, আমার কাছে এটা স্পষ্ট মনে হয়, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের মিত্রই থাকবে। আর মিত্রতা থাকলেই সবসময় সব বিষয়ে সকলকেই একমত হতে হবে তা কিন্তু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশে একটি নয়া নির্বাচন বিষয়ে দেশটির বর্তমান সরকারকে আরও বেশি চাপ দেয়ার প্রয়োজন বলে মনে করে তবে সেখানে ভারতের আপত্তি বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলেই আমি মনে করি। রাষ্ট্রদূত মাইলাম জোর দিয়ে বলেন, আমার মনে হয় এ বিষয়ে দেশ দু’টি (যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত) এখনি আলোচনা শুরু করে দিয়েছে।কিভাবে বাংলাদেশ গণতন্ত্রে ফিরতে পারে? বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কি- এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রে ফেরার বিষয়টি এখন এক জটিল পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। সত্যি বলতে, আমার মতে বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রের পথ থেকে ক্রমান্বয়ে দূরে সরে যাচ্ছে। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে এখন একটি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম রয়েছে, যা ক্রমশই স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠছে। একটি একদলীয় সরকার ব্যবস্থা শুধুমাত্র জনসংখ্যার ভোটারসংখ্যার বহুজনীনতাকেই প্রতিনিধিত্ব করে। তাই একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কোনক্রমেই গণতন্ত্র নয়। একদলীয় সরকার ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত অপ্রতিরোধ্যভাবেই একটি দেশকে ‘ওয়ান-পার্টি স্টেট’ বা ‘একদলীয় রাষ্ট্রে’ পরিণত করে, যা স্বাভাবিক কারণেই ওই সরকারকে একনায়কতান্ত্রিক শাসকে পরিণত করে। এ ধরনের শাসন ব্যবস্থায় পরবর্তী পদক্ষেপ হয়ে থাকে দেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে একদলীয় রাষ্ট্র ঘোষণা করা। এর জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হয়। আর তা একদলীয় সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় কোন কঠিন কিছু নয়। ‘বাংলাদেশের বর্তমান গণতন্ত্রহীনতায় কার দায় কতটুকু?’ জবাবে উইলিয়াম বি মাইলাম, ‘বাংলাদেশের বর্তমান গণতন্ত্রহীনতার দায়ভার শাসক দলকেই নিতে হবে। কেননা, ক্ষমতাসীন দলই সর্বশক্তি নিয়োগ করে বিগত ৫ই জানুয়ারির একদলীয় নির্বাচনের পথ বেছে নিয়েছে। সংবিধানের আওতায় নির্বাচন স্থগিত করার সুযোগ ছিল। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সব দলকে সঙ্গে নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন করার যে সাংবিধানিক বিকল্প ছিল ক্ষমতাসীন সরকার সেটা গ্রহণ করেনি। একই ভাবে বাংলাদেশের বর্তমান একদলীয় সরকার ব্যবস্থার জন্য প্রধান বিরোধী দলও সমানভাবে দায়ী। কেননা, তারা যে কোনও পরিস্থিতিতেই হোক না কেন বাংলাদেশের মানুষের ওপর আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ার পরও যদি তারা নির্বাচনে অংশ নিতো তাহলে দেশের মানুষ অন্তত তাদের এমন সংখ্যায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করতো যে তারা দেশকে বর্তমানের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে রক্ষা করতে পারতো।’বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত মাইলাম বলেন, সত্যি বলতে, আমি বাংলাদেশে সত্যিকার গণতন্ত্রের আশা খুব ক্ষীণ দেখি। যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে গণতান্ত্রিক মানসিকতা তৈরি না হবে তদ্দিন পর্যন্ত বাংলাদেশে সত্যিকার গণতন্ত্রের আশা সুদূরপরাহতই থাকবে। আমার মতে, সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপটিই হলো যুগ যুগ ধরে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বিদ্যমান পরিবারতান্ত্রিক নেতৃত্বের ধারা থেকে বাংলাদেশকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি আশা করি, বাংলাদেশের জনগণই একদিন রাজনৈতিক দলগুলোকে পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়া আসতে বাধ্য করবে।উইলিয়াম বি মাইলাম আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যখন সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে কেবল তখনই টেকসই গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। আর (বাংলাদেশের বেলায়) তা তখনই সম্ভব যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের মানসিকতায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে। যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজ নিজ রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ উৎসাহিত করবে, বিচার বিভাগ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ রাষ্ট্র কাঠামোর গণতান্ত্রিক বিনির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করনে প্রাধিকার দেবে।‘বাংলাদেশে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের শক্তিশালী ভূমিকা ভারসাম্যকরণে যুক্তরাষ্ট্র কি উদ্যোগ নিতে পারে?’ -এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম বলেন, প্রথমেই বলে রাখি এখানে উল্লিখিত আমার সকল মতামত একান্তই আমার, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিংবা উইলসন সেন্টারের নয়। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের দুই বৃহত্তম গণতন্ত্র। বাংলাদেশে এই দেশ দু’টির বেশ কিছু সাধারণ স্বার্থ রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের আকাঙ্ক্ষা একই রকম; আধুনিকায়ন, উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি। কিন্তু এ সামঞ্জস্যতার মধ্যেও বেশ কিছু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একমত পোষণ করে না। এদের একটি হলো বাংলাদেশের বিগত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন একটি আধুনিক, উন্নত, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণের সঠিক পন্থা নয়।‘আমি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিনিধি নই’ বলে নিজের অবস্থান আবারও পরিষ্কার করে নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি না যে, বাংলাদেশের বিগত নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কখনও ভারতের অবস্থানকে মেনে নেবে। এটা অনস্বীকার্য, বাংলাদেশের বৃহত্তম নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে দেশটিতে নিঃসন্দেহে ভারতের অপ্রতিরোধ্য শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। এ অবস্থায় আমি মনে করি, বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন একদলীয় সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া উচিত, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশের ‘সিরিয়াস উন্নয়ন অংশীদার’ হওয়া সম্ভব নয়। আর শেষ বিচারে এর মানে হলো, শুধুমাত্র বহুদলীয় সরকার ব্যবস্থাই নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে এমন একটি সরকার চায়, যা নির্বাচিত সংসদ কর্তৃক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে এবং যার অধীনে গণতন্ত্র বিনির্মাণে শক্তিশালী ভূমিকা পালনকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনঃনির্মাণ এবং আরও শক্তিশালী করা হবে।
©somewhere in net ltd.