নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সদা সুন্দর চিরন্তন

অসত্যের কাছে নত নাহি হবে শির ভয়ে কাপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর। -নজরুল

ওয়েলকামজুয়েল

লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।

ওয়েলকামজুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্ব রাজনীতিতে খেলাফতের আগমন

৩০ শে জুন, ২০১৪ রাত ১১:৪১

ইরাকে আসলে কী হতে যাচ্ছে -এ প্রশ্ন এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় দেড় মাস ধরে আইএসআইএল (ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এন্ড দ্য ল্যাভেন্ট) ইরাকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর ও এলাকা দখল করে নিয়েছে। ইরাকের উত্তরাঞ্চলে সংগঠনটি বহুদিন ধরেই ক্ষমতা বিস্তার করে আসছিল। সুন্নিদের এ গ্রুপটি গত দেড় মাসে দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল করে নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই সোমবার সংগঠনটি ইরাক ও সিরিয়ায় ‘খেলাফত’-এর ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্বের সবাইকে এই খেলাফতের আনুগত্য স্বীকার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।এ ঘোষণাকে এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণভাবে দেখা হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত সপ্তাহে কায়রো-জর্ডান হয়ে টানা তিনদিন ইরাক সফর করলেন। পরে তিনি ইসরায়েল হয়ে সৌদি আরবে গেলেন। এ সফরের মাত্র দুদিন পরই এমন ঘোষণা দিল সংগঠনটি।যুক্তরাষ্ট্রে নাইন ইলেভেনের হামলার পরবর্তীতে যেভাবে আন্তর্জাতিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বসন্ত্রাসবাদ বিরোধী রাজনীতির শুরু হয়েছিল, তাতে করে দেশে দেশে সন্ত্রাস বা ‘জিহাদি’’ তৎপরতা আরো ছড়িয়ে পড়ে বটে। একইসাথে তৃতীয় বিশ্বসহ স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর সাথে বিশেষত মুসলিম দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পররাষ্ট্রনীতিও হয়ে ওঠে এই সন্ত্রাস ইস্যু।নাইন ইলেভেনের ঘটনার পর এর প্রতিক্রিয়াও কম ভয়াবহ হয়নি। এতে সবচেয়ে বড় দুটি ঘটনা ঘটে। আফগানিস্তান ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ।‘জিহাদি’ তৎপরতা প্রতিহত করার বিষয়টি যেমন করে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির স্বার্থগত উপায় হয়ে উঠেছে, তেমনি এর উল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে জিহাদের বিস্তারও ঘটেছে।সুদান, উত্তর আফ্রিকা, মিশর, লিবিয়া, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশগুলোতে যখন জিহাদি তৎপরতা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসছিল, সে মুহূর্তে আইএসআইএলের খেলাফত রাষ্ট্রের ঘোষণা নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর সবচেয়ে বড় ধরনের ঘটনা। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো এ ঘোষণাকে ঠিক এভাবেই আখ্যায়িত করেছে।সিরিয়ায় আসাদ বিরোধী চলমান গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিরতা তৈরি হয়েছে, তার সাথে ইরাকের অস্থিতিশীলতা আরো ভয়াবহ করে তোলে পুরো দৃশ্যপটকে। এর সাথে বর্তমানে যোগ হয়েছে আইএসআইএলের খেলাফত ঘোষণা।হযরত মুহাম্মদ (স.)- এর পরে যে খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থার পত্তন ঘটে, সেটি একটি সাম্রাজ্যিক রূপ ধারণ করে উমাইয়া এবং আব্বাসি আমলে। উমাইয়া ও আব্বাসি -এ দুই খেলাফত ব্যবস্থারই মূল কেন্দ্র ছিল সিরিয়া ও ইরাক। আব্বাসি আমলের পতনের পরও স্পেনকে ঘিরে উমাইয়া খিলাফত বহুদিন ধরে টিকে থাকে। এর পাশাপাশি আরো ছোট ছোট কয়েকটি খিলাফত অঞ্চল গড়ে ওঠে। ফাতেমি ও সেলজুক ব্যবস্থা। এ দুটোও ফেলাফত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে। তবে ঠিক এ সময়ে একইসাথে গড়ে ওঠে ওসমানি খেলাফত। যেটাকে অনেকে অটোমান সাম্রাজ্যও বলেন।আজকে ইরাকে ও সিরিয়ায় আইএসআইএল যে সশস্ত্র ‘জিহাদি’ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, তার উদ্দেশ্যই হল মূলত সেই আব্বাসি খেলাফত ব্যবস্থাকে পুনরুদ্ধার করা। যে কারণে তারা এর নামও দিয়েছে ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এন্ড দ্য ল্যাভেন্ট। ল্যাভেন্ট মূলত শাম দেশকে বুঝানো হয়। শাম মানে আজকের সিরিয়া। তবে বর্তমানে যে সিরিয়া দেখা যায়, আব্বাসি আমলে সেই সিরিয়া বা শামের সীমান্ত ছিল অনেকখানি বিস্তৃত। একবারে জর্ডান, ফিলিস্তিন, উমান, কাতারসহ ভূমধ্যসাগরের এই পাশটুকু সিরিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল। আইএসআইএল চাচ্ছে সেই অঞ্চলকেই পুনরুদ্ধার করতে।এই ঐতিহাসিক কারণেই আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো আইএসআইএলের এ ঘোষণাকে খুবই গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেছে।বিবিসি যেমন লিখেছে, “খেলাফত প্রতিষ্ঠার এই ঘোষণা ধর্মীয়, সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত।”কট্টরপন্থী সুন্নি বিদ্রোহীদের সশস্ত্র এই সংগঠনটির মুখপাত্র আবু মুহাম্মদ আল আদনানি জানিয়েছেন, সুন্নি রেডিক্যাল প্রজন্মরা মূলত এমন একটি মুহূর্তের স্বপ্নই দেখছিল, যেদিন মুসলমানরা “অত্যাচার আর জুলুম নিপীড়নের ভিত কাঁপিয়ে দেবে।”আল আদনানি বলেছেন, “ইসলামি রাষ্ট্রের সুরা কাউন্সিল বৈঠক করে এই বিষয়ে আলোচনা করেছে। তারা একটি ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুসলমানদের এই রাষ্ট্রের জন্য একজন খলিফা নিয়োগ করা হচ্ছে।”বিবিসি মন্তব্য করে বলছে, এই নতুন খেলাফতের ঘোষণা নানান তর্ক-বিতর্ক, সংশয়-আচ্ছন্নতা ও বিরোধের জন্ম দেবে। সবচেয়ে যেটা করবে সেটা হল, এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে মূলত পুরো আধুনিক মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারটিই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্য বিশেষত ইরান, ইরাক, সিরিয়া, উমান ও সুদানে শিয়া-সুন্নি সংঘাত মারাত্মকভাবে জারি রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্বই শেষে পর্যন্ত সেখানে শিয়া-সুন্নি সংঘাতে পর্যবসিত হয়।এ বিরোধের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্র এবং আঞ্চলিক ও বিশ্বরাজনীতির গতি-প্রকৃতিও অন্যরকম হতে বাধ্য।আইএসআইএল খেলাফতের শুধু নিছক একটি ঘোষণাই দেয়নি, রীতিমত সংগঠনটির অডিও বার্তায় বলা হয়েছে, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো থেকে ইরাকের পূর্বাঞ্চলীয় দায়ালা প্রদেশ পর্যন্ত ইসলামি রাষ্ট্র সম্প্রসারণ করা হবে। একইসাথে এ খেলাফতের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করতে এবং গোটা মুসলিম বিশ্বকে আইএসআইএলের এ খেলাফতকে স্বীকৃতি দিতে বলা হয়েছে।গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, ১৯১৮ সালে যে অটোমান সাম্রাজ্য বা ওসমানি খেলাফতের পতন হল, এর সাথে যুক্ত ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঘটনা। সরাসরি সে সময় তুরস্ক জার্মানির সাথে যুক্ত হয়ে ব্রিটেন ফ্রান্স ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তুরস্ক।আইএসআইএলের এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে যেমন করে শিয়া-সুন্নি ক্ষমতার বিরোধ আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। একইভাবে ধর্মীয় সম্প্রদায়গত এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ভৌগলিক সীমানা ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে বিশ্বসম্প্রদায়ের নতুন ধরনের তৎপরতাও দেখা যেতে পারে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০১৪ রাত ১১:৫২

বেনিইয়ামিন সিয়াম বলেছেন: ভাই, আগে বাংলাদেশের কথা বলেন, পরে বিশ্বর কথা বইলেন

২| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৬

লোডশেডিং বলেছেন: অসত্যের কাছে নত নাহি হবে শির ভয়ে কাপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর। -নজরুল

যার নামে ব্লগ শুরু করেছেন তিনি খেলফত মার্কা ইসলামে বিশ্বাস করতেন না। মুসলমানদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার নাম খেলাফত। বর্তমান যুগে এসব মধ্যযুগীয় তত্ত্ব টেকে না। বদল হোন্ সবাইকে নিয়ে চলতে শিখুন।

৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:২১

ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: নজরুল সম্বন্ধে কতটুকু ধারণা আছে@লোডশেডিং

৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৮

দাম বলেছেন: Click This Link


ভাই আপনি খিলাফার ইতিহাস নিয়ে আর একটু ঘাটাঘাটি করেন। আর কেউই আব্বাসি খিলাফত কে রিভাইভ করাচ্ছে না। তারা শরিয়ার একটি হুকুম বাস্তবায়ন করছেন। কিন্তু দু:খের বিষয় হল ঘটনা প্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে এটা একটা সেট আপ।

৫| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:২০

ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: অবশ্যই করব। উপদেশের জন্য ধন্যবাদ @দাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.