নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
অধিকৃত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। গাজার পূর্বাঞ্চলীয় শিজাইয়া এলাকায় গতকাল কামান ও ট্যাংকের প্রচন্ড গোলাবর্ষণে শিশুসহ অন্তত ৬২ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এ নিয়ে গাজায় গত ১৩ দিনের ইসরাইলি আগ্রাসনে অন্তত ৪১২ ফিলিস্তিনি শহীদ ও অপর প্রায় ২,৭০০ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল নিহতদের মধ্যে প্রবীণ এক হামাস নেতার ছেলে, ছেলের বউ এবং নিহত দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। সেইসঙ্গে শহীদ হয়েছেন একজন ফিলিস্তিনি ক্যামেরাম্যান ও একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তারা আরো জানিয়েছেন, কয়েক ডজন আহত ফিলিস্তিনিকে দ্রুত গাজার কেন্দ্রীয় হাসপাতাল আশ-শেফায় ভর্তি করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শিজাইয়ার কাছে ইহুদিবাদীদের ট্যাংক পৌঁছানোর পর শনিবার মধ্যরাত থেকে প্রচ- গোলাবর্ষণ শুরু হয়। ওই অঞ্চলে অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসক দলের যাতায়াত বিপদজনক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় অধিবাসী আহমেদ রাবিয়া বলেন, রাস্তায় অনেক হতাহত পড়ে আছেন কিন্তু তাদের সাহায্য করা বা উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।হাসাসের সামরিক শাখা ইজাদ্দিন আল-কাসসাম বিগ্রেড বলেছে, তাদের অসমসাহসী যোদ্ধারা শিজাইয়া ও তার আশপাশের এলাকা থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে গুলি বিনিময় চালিয়ে যাচ্ছেন।এদিকে এ এলাকার অসহায় ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউ কেউ জাতিসংঘের স্কুলগুলোতে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন। দুই সপ্তাহ আগে ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই এ সব স্কুলকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ শনিবার বলেছে, গাজায় হতাহতের এক তৃতীয়াংশই শিশু। তেল আবিবের রক্তপিপাসু বাহিনী যে পৈশাচিক হত্যায় নেমেছে সে কথা জাতিসংঘের এ বক্তব্যের মধ্য দিয়েই ফুটে উঠেছে।‘৩ দিনে গাজার এক ইঞ্চি ভূমিও দখল করতে পারেনি ইসরাইল’ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনারা তিনদিনের স্থল অভিযানে গাজা উপত্যকার এক ইঞ্চি ভূমিও দখল করতে পারেনি। এ কথা জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের জিহাদ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু আহমাদ। তিনি বলেছেন, “দখলদার ইসরাইল মারাত্মক বিপদের মধ্যে রয়েছে। প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইহুদিবাদীদেরকে এমন এক কানাগলিতে আটকে ফেলেছে যেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজছে তেল আবিব।” গাজায় হামাসের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইরত ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, “গাজার অবস্থা এখন আর আগের মতো নেই। দখলদার সেনারা গত তিন দিন ধরে অন্তত গাজার এক মিটার এলাকায় প্রবেশের বহু চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি।” গত ৮ জুলাই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পাশবিক বিমান হামলা শুরু করে দখলদার ইসরাইল। টানা ১০ দিনের হামলায় প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও জিহাদের কোনো ক্ষতি করতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে স্থল অভিযান শুরু করে তেল আবিব। কিন্তু তিন দিনে তারা হামাস যোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে তেমন কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি।আবু আহমাদ আরো বলেন, গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলা ভয়াবহভাবে ব্যর্থ হয়েছে। একথা ইহুদিবাদী সরকারই স্বীকার করেছে। এসব হামলায় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। ইহুদিবাদীরা কাপুরুষোচিতভাবে শুধুমাত্র নারী ও শিশুদের হত্যা করে যাচ্ছে।৭ সেনা নিহত হয়েছে : ইসরাইলের স্বীকারোক্তিইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনাবাহিনী তাদের আরো দুই সেনার নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, এর ফলে ইসরাইলি সূত্রমতে, হামাসের পাল্টা হামলায় তাদের সাত সেনা ও এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হলো। হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা অবশ্য ১৫ জন ইসরাইলি সেনাকে খতম করার কথা জানিয়েছে। ইহুদিবাদী সেনারা গতকাল সকালে বলেছে, হামাসের নিক্ষিপ্ত ট্যাংক বিধ্বংসী গোলার আঘাতে তাদের একটি ট্যাংক ধ্বংস ও ২১ বছর বয়সি সেনা বার রাহাভ নিহত হয়। এছাড়া, এক বন্দুকযুদ্ধে ২০ বছর বয়সি বানাইয়া রুবেল নিহত হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় টানা ১০ দিন বিমান হামলা চালানোর পর বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে স্থল আগ্রাসন শুরু করেছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। আর স্থল আগ্রাসন চালাতে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয় তেল আবিব। হামাসের যোদ্ধারা এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, গাজায় ঢোকার চেষ্টা করলে ইসরাইলকে জাহান্নামের দরজা দেখিয়ে দেয়া হবে।এদিকে হামাস ১৫ জন ইসরাইলি সেনাকে হত্যা করার যে দাবি করেছে একজন ইহুদিবাদী সেনা মুখপাত্র সে সম্পর্কে কোনো কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, ইসরাইলিদের এই ‘অপারগতা’ প্রকাশের পেছনেই আসল রহস্য লুকিয়ে আছে এবং হামাসে দাবির সত্যতা প্রমাণিত হচ্ছে। ১০ দিনের বিমান হামলার সময় হামাস কখনো কোনো ইসরাইল সেনাকে হত্যার দাবি করেনি। ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনাপ্রধান লে. জেনারেল বেনি গানতেজ গত শুক্রবার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, গাজায় স্থল অভিযান জোরদার করার পর ‘কঠিন কিছু মুহূর্ত’ আসতে পারে।ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনাবাহিনী এর আগে নিজেকে ‘অজেয়’ বলে যে দাবি করত তা ২০০৬ সালের যুদ্ধে মিথ্যা প্রমাণ করেছিল লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ। এবার হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড ইসরাইলি ট্যাংক ধ্বংস ও সৈন্য হত্যা করে আবার বিশ্বকে জানান দিল, ইসরাইল কাগুজে বাঘ ছাড়া আর কিছু নয়।হামাসের হামলায় এ পর্যন্ত ৬ ইসরাইলি ট্যাংক ধ্বংসফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হামলায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের আরো একটি ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে। হামাস বলেছে, গত বৃহস্পতিবার গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত তারা রকেট চালিত গ্রেনেড দিয়ে ছয়টি ট্যাংকে হামলা চালিয়েছে। হামাসের প্রচ- প্রতিরোধে ইসরাইল বিমান হামলা ও কামানের গোলাবর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে। হামাসও পাল্টা জবাব হিসেবে রকেট হামলা জোরদার করেছে। হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলন এ পর্যন্ত ইসরাইলের অভ্যন্তরে ১,৭০০ রকেট ছুঁড়েছে। এসব রকেট তেল আবিব, হাইফা, আশকেলোন, এশকোল ও আশদোদসহ বিভিন্ন শহরে আঘাত হেনেছে এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ওদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইল গতকাল আরো দুই সেনা নিহত হওয়ার খবর স্বীকার করেছে। তাদের হিসাব মতে- এ পর্যন্ত সাতজন ইসরাইলি সেনা নিহত হলো। তবে, হামাস বলছে- ভিন্ন ভিন্ন অভিযানে কয়েক ডজন ইহুদি সেনাকে তারা হত্যা করেছে। এর পাশাপাশি প্রচুর গোলাবারুদও দখল করেছে তারা। হামাস পরিষ্কার ভাষায় বলেছে, তারা ইসরাইলের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং অস্ত্রশস্ত্রের মজুদও গড়ে তুলছে।গাজায় আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে এবার ইসরাইলে বিক্ষোভফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে এবার খোদ ইসরাইলেই বিক্ষোভ হয়েছে। হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিক দখলদার ইসরাইলের তেল আবিব ও হাইফা শহরের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে। শনিবার বন্দরনগরী হাইফার উত্তরাঞ্চলে বিক্ষোভের সময় ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী ও ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অজ্ঞাতসংখ্যক বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে এবং অন্তত ৩০ জনকে আটক করে পুলিশ।অবরুদ্ধ গাজার ওপর অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তেল আবিবেও হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। তবে সেখানে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। এসব বিষয়ে ইসরাইল ও পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ব্যাপক গোপনীয়তা রক্ষা করছে।ইসরাইলের বাইরে লন্ডনেও বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে সেøাগান দেয়। এছাড়া, গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা ও মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর নীরবতার সমালোচনা করেন তারা।ইসরাইলকে সতর্ক ওবামারইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানালেও ফিলিস্তিনের গাজা ভূ-খ-ে লড়াই ছড়িয়ে পড়া ও বেসামরিক নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ইহুদি রাষ্ট্রটিকে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে ওবামা তার এই মনোভাব প্রকাশ করেন। হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবামা বলেন, গাজায় বেসামরিক নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় তিনি ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘কোনো জাতিই নিজ দেশের সীমান্তে রকেট নিক্ষেপ মেনে নেবে না।’ তবে গাজায় অভিযানরত ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে অভিযান এমনভাবে পরিচালনা করতে বলেছেন যেন ‘বেসামরিক নিহতের সংখ্যা কম হয়।’ ওবামা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের বন্ধুরা এবং আমাদের মিত্ররা লড়াইয়ের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পাওয়া এবং আরো নিরপরাধ মানুষ হারানোর ঝুঁকিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’আমেরিকার ডেনভারে ব্যাপক বিক্ষোভঅবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত ও পাশবিক হামলার প্রতিবাদে আমেরিকার কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ডেনভারে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী অবিলম্বে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধের আহবান জানিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং ‘ফিলিস্তিন মুক্ত কর’ ও ‘দখরদারিত্ব অপরাধ’ ইত্যাদি সেøাগান দেন।আসিয়া আব্দুল- নদী নামে একজন প্রতিবাদকারী যার পুরো পরিবার এখন গাজায় রয়েছেন তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, গাজা এখন মৃত্যুপুরি। সেখানে জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তাদের খাবার নেই, ওষুধ নেই ও পরিধেয় বস্ত্র নেই। কলোরাডোর কয়েকটি ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন এ প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করে। ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো গাজায় ইসরাইলি বর্বরোচিত হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
©somewhere in net ltd.