নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
আমরা এখন ২০১৪ সাল অতিক্রম করছি। প্রথম মহাযুদ্ধ শুরুর শতবর্ষ পূর্তির বছর। এখন থেকে ঠিক ১০০ বছর আগে ১৯১৪ সালের ২৮ জুন অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান যুবরাজ আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দ সারায়েভোর রেলস্টেশনে সন্ত্রাসী আততায়ীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারানোর মধ্যদিয়ে ইউরোপে এই বহুজাতিক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তার আগেই বিশ্বপরিস্থিতিতে এক জটিল দ্বান্দ্বিক অবস্থা বিরাজ করছিল। জার্মান-অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় এলায়েন্স এবং ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির ভয়ে ভীত রাশিয়ার মধ্যকার জটিল রাজনৈতিক সমীকরণে মহাযুদ্ধের মূল প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল ব্রিটিশরা। জার্মানী তার সেনাবাহিনী ও নৌবহরের শক্তি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করেছিল বলা হলেও ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ নৌবহরের আকার (১৮৫ ওয়ার শিপ) জার্মান নৌবহরের (৯৭ ওয়ারশিপ) দ্বিগুণ বড় ছিল। প্রথম মহাযুদ্ধের ইউরোপীয় প্রেক্ষাপট যা-ই হোক, এই যুদ্ধের মধ্য দিয়েই মুসলমানদের হাজার খিলাফতের পতন ত্বরান্বিত করে মধ্যপ্রাচ্যে ইউরোপীয় আন্ডেট ও উপনিবেশের ভিত্তি তৈরি হয়। যুদ্ধে ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলোর মধ্যে জয়পরাজয় নির্ধারিত হলেও উসমানীয় খেলাফতের বিশাল অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে তারা লিগ অব নেশন’সকে ব্যবহার করে। যুদ্ধ সমাপ্তির পর ১৯২০ সালের এপ্রিলের ১৯ থেকে ২৬ তারিখে ইতালীর সানরিমোতে অনুষ্ঠিত লিগ অব নেশনসর সভায় মধ্যপ্রাচ্যে অটোমান সাম্রাজ্যের টেরিটরিগুলোর ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ এই যুদ্ধে মূল কুশীলবের ভূমিকায় ইউরোপের দেশগুলো থাকলেও উসমানীয় খেলাফতকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দিয়ে ভবিষ্যতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যেন এক ধরনের গোপন সমঝোতা ছিল। উসমানীয় খেলাফতের চূড়ান্ত পতন এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিষ্কণ্টক করতে ইঙ্গ-মার্কিন পরাশক্তিকে জার্মান নাৎসিবাদের সাইনবোর্ড সামনে রেখে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল মাত্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানীর পারমানবিক বোমা ব্যবহারের ভীতি তৈরি করা হলেও যুদ্ধের শেষ প্রান্তে এসে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বিশ্বের প্রথম পারমানবিক বোমার ব্যবহার করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সভ্যতা ধ্বংসের মারণাস্ত্রের বাস্তব প্রায়োগিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এর ধ্বংস ক্ষমতা নিশ্চিত করার প্রথম সুযোগটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করেছিল। এরপর থেকে বিশ্বের সামরিক-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নেতৃত্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই আছে। তবে গত সাড়ে ৬ দশকে বিশ্বনেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ক্রমে ক্ষয়িষ্ণু ও দুর্বল হয়েছে। পররাষ্ট্রনীতিতে পর্যায়ক্রমে ভুল সিদ্ধান্ত, আটলান্টিকের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে একের পর এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ ও রাজনৈতিক ও কৌশলগত পরাজয়ের মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত বিশ্বের একক পরাশক্তি হিসেবে টিকে থাকার পরও অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে মার্কিনীদের অবস্থান এখন ক্রমাবনতিশীল। প্রথম মহাযুদ্ধে মার্কিনীদের নিরপেক্ষ ভূমিকার কারণেই দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বশীল শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে সক্ষম হয়েছিল। আর দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী নীতির যে প্রতিফলন বিশ্বব্যবস্থায় পড়েছে তাই এখন বিশ্বকে একটি তৃতীয় মহাযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। পঞ্চাশের দশকের কোরীয় যুদ্ধ, সত্তরের দশকের ভিয়েতনাম যুদ্ধ এবং গত দশক থেকে চলমান ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধসহ মধ্যপ্রাচ্যের চলমান বিভীষিকাময় সংঘাত এবং ইসরাইলের সামরিক ঔদ্ধত্যের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রান্ত ও অপরিণামদর্শী পররাষ্ট্রনীতির দায় সবচে বেশি। ইঙ্গ-মার্কিন ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পেলেস্টাইনের আরবদের জায়গাজমি দখল করে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের সূচনা হয়েছিল, ছিল মূলত একটি হেজিমনিক বিশ্বব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, আইন-কানুন, কনভেনশন ও যুক্তিবুদ্ধির তোয়াক্কা না করেই গত সাড়ে ৬ দশক ধরে এই বিশ্বব্যবস্থা চালু রেখেছে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীচক্র। তবে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব এবং পারমানবিক সামর্থ্য অর্জনের মধ্য দিয়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বব্যবস্থায় একটি প্যারালাল ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক হয়েছিল। যে কোন সময় পারমানবিক যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার সার্বক্ষণিক ঝুঁকি বা স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার টানটান উত্তেজনা পার হয়ে গত নব্বইয়ের দশকের শুরুতে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতনের পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন একমেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব পারমানবিক যুদ্ধের ঝুঁকি ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ থেকে মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতনের সাথে সাথে ব্লকভুক্ত দেশগুলোর সামরিক জোট ওয়ারশ জোটও ভেঙ্গে যায়। কিন্তু মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর কার্যক্রম সীমিত করার বদলে তা আরো বিস্তৃত হতে শুরু করে। সেই সাথে ন্যাটো নতুন উদ্যমে নতুন ওয়ার ফ্রন্ট খোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে হয়ে ওঠে।রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ব একটি ইউনিপোলার ব্যবস্থায় পদার্পণের সাথে সাথেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা শক্তিগুলো মুসলমানদের নতুন টার্গেট হিসেবে গ্রহণ করে মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক যুদ্ধ ও সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। তথাকথিত ওয়ার অন টেররিজম শুরুর আগে নাইন-ইলেভেনের মতো সন্ত্রাসী ঘটনাকে অনুঘটক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তবে নাইন-ইলেভেন বা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্যকেন্দ্রের টুইন টাওয়ারে কারা হামলা চালিয়েছিল সে বিষয়ে সন্দেহাতীত কোন তথ্য-প্রমাণ এখনো মার্কিন প্রশাসন হাজির করতে পারেনি। মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি অন্তহীন যুদ্ধ শুরু করতে মার্কিন নিওকন এবং র্যাডিকের ইহুদি জায়নবাদিদের এই ঘটনার প্রয়োজন ছিল। ঠিক একইভাবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে জার্মানীতে হিটলার নির্বাচিত হওয়ার পর জার্মানীর রাজনৈতিক উচ্চৈভীলাষ পূরণ করার লক্ষ্যে কমিউনিস্ট ও ইহুদিদের মতো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিধন শুরু করতে রাইখস্টাগে আগুন ধরিয়ে দেয়ার মতো ঘটনার প্রয়োজন ছিল। ১৯৩৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারিতে রাইখস্টাগ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়ার সাথে জড়িত হিসেবে বার্লিনে সদ্য আগত কথিত একজন ডাচ কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যকে ধরা হয় এবং মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। এরপর শুরু হয় হিটলারের কমিউনিস্ট ও ইহুদি বিরোধী অভিযান। এছাড়া ৩ জন বুলগেরীয় নাগরিককেও এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। হিটলারের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কমিউনিস্টদের বেকায়দায় ফেলতে রাইখস্টাগে আগুন লাগানোর ঘটনাকে কাজে লাগাতে হিটলার নিজেই ‘ফল্স ফ্লাগ’ অপারেশন হিসেবে এই ঘটনা ঘটিয়েছিল বলে একটি ব্যাপক পাবলিক কনসেপশন রয়েছে। একইভাবে নাইন-ইলেভেন বিমান হামলার ঘটনাও ইহুদিদের পরিকল্পনায় মার্কিন নিওকনদের সাজানো নাটক হিসেবে গণ্য করছেন অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষক। ব্লেইম গেম এবং দায় চাপানোর মধ্য দিয়ে সম্ভাবনাময় প্রতিপক্ষকে নির্মূলের এই পদ্ধতি পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বহু দশক ধরে ব্যাপকভাবে কাজে লাগাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত আরববষন্ত ও সাম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী জাতিগত সংঘাতের পেছনেও সিআইএ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বশংবদ আঞ্চলিক শাসকদের ফল্স ফ্লাগ অপারেশনকেই দায়ী করছেন অনেকে। প্রথম মহাযুদ্ধে সারায়েভোতে অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান যুবরাজ ফ্রাঞ্চ ফার্দিনান্দের হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত ৬ জন সার্বীয় নাগরিক এবং একজন বসনীয় মুসলমানকে বিচারের মুখোমুখি করা হলে বেশিরভাগই দোষী সাব্যস্ত হয় এবং মৃত্যুদ- দেয়া হয়। তবে বসনীয় মুসলমান মেহেমেদবাসিচকে প্রথমে ১৫ বছরের জেল দেয়া হলেও ১৯১৯ সালে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সার্বিয়ায় উস্তাসা গেরিলা গ্রুপের হাতে ১৯৪৩ সালে তার মৃত্যু হয়। প্রতিটি মহাযুদ্ধের পেছনেই অনেক নাটকীয় ও রহস্যময় ঘটনাবলীর যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। বিগত দু’টি মহাযুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুসলমানরা। মুসলমানরা যতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফিলিস্তিনে একটি ইহুদি রাষ্ট্র গঠন করা পশ্চিমাদের জন্য ততই সহজগম্য হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাড়ে ৬ দশক পেরিয়ে আসার পরও ইসরাইল যখন প্রতিবেশীদের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি, রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বাভাবিক স্বীকৃতি ও আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে, পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে মুসলমানদের একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক উত্থান ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং ফিলিস্তিনী গেরিলারা ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ইসরাইলের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। তখন ইসরাইল ও তার মিত্ররা একটি নতুন বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করতে চাচ্ছে, যার মাধ্যমে আরো কয়েক দশকের জন্য মুসলমানদের উত্থান অগ্রগতি ও ঐক্য বাধাগ্রস্ত করার মাধ্যমে ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।নাইন-ইলেভেনের ঘটনার মধ্য দিয়েই মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল জায়নবাদি ইহুদিরা। ইরাক ও আফগানিস্তান দখলের পর ইরানে হামলার ধারাবাহিক পরিকল্পনা হিসেবে ফিলিস্তিন ও লেবাননের মুজাহিদ গ্রুপ হেজবুল্লাহ হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার মিশন হিসেবে ২০০৭ সালে অপারেশন কাস্ট লিড পরিচালনা করা হয়েছিল। তবে হেজবুল্লাহ গেরিলাদের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও উন্নত প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইসরাইলি সেনাবাহিনী চরমভাবে মার খেয়ে পশ্চাদ পসারণের পর সিনারিও বদলাতে বাধ্য হয় ইসলাইল ও তার পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকরা। তারপরও ২০০৭ সালের ২৭ জানুয়ারিতে একটি সাক্ষাৎকারে ইসরাইলি সেনা গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক চীফ এফ্রাইম ফেলভি বলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। তার মতে, ‘প্রথম মহাযুদ্ধ ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ থেকে চলমান মহাযুদ্ধের পার্থক্য হচ্ছে, সেসব যুদ্ধে সারাবিশ্বের মানুষ জানতো যে একটি যুদ্ধ চলছে। এখন তেলআবিব, বার্সিলোনা বা বুয়েন্স আইরেসের রাস্তায় চলমান লোকজন এখন বুঝতেই পারছেন না যে একটি যুদ্ধ চলছে। লন্ডনে, মাদ্রিদে বা নিইইয়র্কে মাঝেমধ্যে মুসলমান জঙ্গিদের সন্ত্রাসী হামলা হয়, তারপর সবকিছু আগের মতোই ঠিকঠাক।’ মুসলমান জঙ্গিদের হামলায় বিশ্বের পর্যটন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং মুসলমান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে প্রায় ২৫ বছর সময় লাগবে বলে মন্তব্য করেন হেলভি। সাবেক মোসাদ প্রধানের বক্তব্য থেকে ওয়ার অন টেররিজমের গেমপ্লান সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা পাওয়া সম্ভব। বিগত দুইটি মহাযুদ্ধে জায়নবাদি ইহুদিরা বড় ধরনের অনুঘটক না হলেও চলমান বিশ্ব সংঘাতের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও অনুঘটক হিসেবে ইসরাইলকেই গণ্য করা হচ্ছে। ইসরাইলের স্বার্থে ইহুদি লবিস্ট ও থিঙ্কট্যাঙ্কের পরামর্শে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অন্তহীন যুদ্ধের পরিকল্পনা নিয়েছে। আফগানিস্তানের তালেবানদের কমিউনিস্ট বিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধে আল-কায়েদার মতো মুসলমান জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সিআইএর ভূমিকার কথা এখন সর্বজন বিদিত। সেই আল-কায়েদাকে দমনের নামে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে মার্কিনীদের দশকব্যাপী যুদ্ধ চলছে। এখন সিরিয়া ও ইরাকে যেসব জাতিগত সংঘাত চলছে তার পেছনেও পশ্চিমাদের ‘ফল্স ফ্লাগ’ ওয়ার পরিকল্পনার ভূমিকাকেই দায়ী করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।গাজায় সপ্তাহব্যাপী বিমান হামলার পর গত ৫ দিন ধরে স্থল হামলা চলছে। ইতিমধ্যে ৫ শতাধিক ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক, শিশু ও নারী। ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনীদের ভবিষ্যতের প্রতিরোধ যুদ্ধ নির্মূল করতে শিশু ও নারীদের হত্যার টার্গেট নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা যায়। অন্যদিকে ইসরাইলিরা সমকালীন ইতিহাসের সবচেয়ে নির্মম ঠান্ডা মাথার এই হত্যাকান্ডের দৃশ্য সীমান্তের ওপারে পাহাড়ের উপর থেকে পিকনিক মুডে উপভোগ করার খবরও মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে। মার্কিন মানবাধিকারকর্মী ও লেখকদের কেউ কেউ গাজায় ইসরাইলের বর্বর গণহত্যাকে মার্কিনী ও ইসরাইলের যৌথ যুদ্ধাপরাধ হিসাবে গণ্য করছেন। মার্কিন লেখক এরিক জুয়েস তার সাম্প্রতিক এক নিবন্ধের শিরোনাম দিয়েছেন, ‘আমেরিকা ইজ গিলটি, ইফ উই ডোন্ট প্রসিকিউট ওবামা,’ আমরা যদি ওবামার বিচার না করি আমেরিকাই দোষী হবে। অন্যদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর চলমান গাজা অভিযানের সাফল্য সম্পর্কে খোদ ইহুদি সাংবাদিকদের কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ইসরাইলি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক গিলাদ আজমন মনে করছেন, মিশরের সিসির যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নেয়ার মাধ্যমে ইসরাইল আবারো হামাসের কাছে নৈতিক পরাজয় মেনে নিয়েছে। আরেকজন অভিজ্ঞ বিশ্লেষক প্রশ্ন রেখেছেন, হামাসের কৌশল ও প্রযুক্তি যদি ইসরাইলকে ছাড়িয়ে যায়, তাহলে এই যুদ্ধের শেষ পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? তবে ভবিষ্যৎ যা-ই হোক, চলমান বিশ্বপরিস্থিতিতে আরেকটি অসম বিশ্বযুদ্ধের আলামত ফুটে উঠতে শুরু করেছে। একদিকে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমাদের ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যখন ক্রমে ঘনীভূত হচ্ছে ঠিক তখন ইউক্রেনের আকাশে মালয়েশীয় যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করে মার্কিন ও ইউরোপীয় নাগরিকসহ প্রায় ৩শ’ যাত্রী নিহতের ঘটনা পরিস্থিতির নাটকীয় মোড় নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই মার্কিন ও রাশিয়ার মধ্যে ব্লেইম গেম চলছে। মালয়েশীয় বিমান ধ্বংসের পেছনেও ইসরাইলের হাত রয়েছে বলে ইতিমধ্যে মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ, পরাশক্তিগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্বে ইন্ধন দিয়ে ইসরাইল এখন একটি ব্যাপক ভিত্তিক (বিশ্বযুদ্ধ) যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে। অন্যদিকে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বিশ্ববিবেককে কষাঘাতে জজর্রিত করলেও বিশ্বমোড়লরা হত্যাকান্ডে নির্বিচার সমর্থন দিয়ে চলেছে। এ ধরনের নৃসংশ পরিস্থিতি থেকে গাজার নারী, শিশু ও বাস্তুহারা মানুষের মুক্তির পক্ষে সারাবিশ্বের জনমত যেভাবে জেগে উঠছে, তার একটি ইতিবাচক ফলাফল ইতিহাসের অমোঘ দাবি। এটি যদি বিশ্বযুদ্ধ হয়, এই যুদ্ধে মুসলমান ও বিশ্বমানবতার বিজয় ছাড়া অন্য কোন বিকল্প পথ নেই।
২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২৬
অ রণ্য বলেছেন: আপনার এই সুদীর্ঘ লেখাটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। অনেক পরিশ্রমসাধ্য লেখা এটি। অথচ কেউ মতামত অব্দি জানাল না।
লিখতে থাকুন এবং শেয়ার করুন আমাদের সাথে। ঠিক যারা পড়ার তারা খুঁজে নিয়ে পড়বে।
আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ এই বিশেষ শ্রমটুকু আমাদের আমাদের জন্য স্বীকার করার জন্য।
৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৫০
মুদ্দাকির বলেছেন: লেখাটা ভালো লেগেছে। একটু প্যারা করে লিখলে পড়তে আরাম হত। যাইহোক , আল্লাহ না করুক, কিন্তু যদি আবার একটা বিশ্ব যুদ্ধ হয়ই । কে কোন দলে থাকবে বলে আপনার মনে হয়?? আর আমারতো মনে হয় আবারো মুসলিমরাই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে, আপনি কি মনে করেন ??
৪| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৩৬
ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: মতামতের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
লেখা বা সেয়ার করার উদ্দেশ্য হচ্ছে চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে মানবতার মুখোশ ধারীদের বিশ্ব বিবেকের কাছে তাদের দুরিভিসন্ধির পেক্ষাপট আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করা।
সবাইকে আবারও ধন্যবাদ
৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৪৪
তারেক বলেছেন: বিশ্বব্যাপি একটা যুদ্ধ হবেই, আর সেটা হবে ধর্মভিত্তিক। একপাশে থাকবে মুসলমান + খ্রীস্টানদের একাংশ, আরপাশে থাকবে ইহুদী + খ্রীস্টানদের বাকীঅংশ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:২২
ইলি বিডি বলেছেন: এটি যদি বিশ্বযুদ্ধ হয়, এই যুদ্ধে মুসলমান ও বিশ্বমানবতার বিজয় ছাড়া অন্য কোন বিকল্প পথ নেই।
দারুণ লিখেছেন, ধন্যবাদ।